আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
73 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (11 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ। উস্তায

আমার আব্বাকে বুঝতে শেখার পর থেকেই দেখে আসছি সিকারেট খায়,কখনো সলাত আদায় করেন না।আম্মুকে দেখে আসছি সারাজীবন বোঝাতে যাতে সিকারেট না খান।ঠিকভাবে সলাত আদায় করেন ।আমাদের মসজিদের হুজুর প্রতিবেশী মুরব্বি সবাই প্রায়ই বুঝাতো।কিন্তু মাঝে মাঝে জুম্মা, শবে কদর,শবে বরাত ছাড়া কখনোই সলাত আদায় করেন না।

লজ্জায় পড়ে বাসায় কোন মেহমান আসলে মসজিদে যান এটা খুবই কম।আমার আম্মু কোনদিন সলাত ছাড়েন নি মাশাআল্লাহ। আমাদের ভাইবোন কেউই আব্বাকে মন থেকে ভালবাসতে পারি না কখনো।প্রতিবেশীর সাথে খুব খারাপ আচরন করে ঝগড়া হলে। আমাদের চাচাদের ঘরে কোন প্রতিবেশীর সাথে মিশতে দেয় না।আম্মু গোপনে সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করে।কোন বাসা থেকে কারো বিয়ে বা অন্য কোন উপলক্ষে মিস্টি বা অন্য কোন খাবার দিয়ে গেলে ফিরিয়ে দিতে বলে।আমরা ভাই বোনরা আমার বোনদের ছেলে মেয়েরা অনেক বলি সিকারেট না খাওয়ার জন্য কিন্তু শোনে না।এমনিকি ওয়াশ রুমে গেলে ও সিকারেট খায়।তার যাবতীয় কর্মকান্ডে তার প্রতি তীব্র ঘৃনা জন্মছে সবারই।সব কিছুর পরেও জন্মদাতা পিতা বলে কথা বলি একই ঘরে থাকি সবাই।ইদানীং তার উপর আমার বিরক্তি ঘৃনার মাএা বেড়ে গেছে।আম্মু যদি জায়নামাজ বিছিয়ে দেয় সলাতের জন্য আম্মুকে পাগল বলে এছাড়াও আরো খারাপ ভাষায় গালি দেয় মারার হুমকি দেয়।
সলাত আদায় না করতে বললে সিকারেট না খেতে বললে ঠিক আছে তখন আর কিছু বলে না।আমার পরিবারে তেমন কোন মুরব্বি নেই যে তাকে বুঝাবে কারো কথাই শোনে না।আমার বড় ফুফু আসলে বুঝান কিন্তু শোনেন না।আমার পিতার বংশের একটা বড় সমস্যা হলো অধিকাংশ মানুষ সলাত পড়েন না।অংহকারী,মানুষের সাথে রুঢ় ভাষায় কথা বলেন।আমাদের চাচাতো,ফুফাতো আমার  নিজেদের ভাইবোনদের মাঝেও রাগী,বদমেজাজী রুক্ষ স্বভাব কম বেশি সবার মাঝেই আছে।যদি সবাই উচ্চশিক্ষা,ধর্মীয় শিক্ষা  নেই বল্লেই চলে।কেউ যদি দ্বীনের পথে চলতে চায় তাকে ছোট করে কথা বলে অপমান অপদস্ত করে।

১।আমার আব্বার প্রতি আমার যে ঘৃনা,বিরক্তি আসে এর জন্য কি আমার গুনাহ হবে?তার প্রতি আসলে আমার কতটুকু দায়িত্ব পালন করা উচিত?

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ حُسْنًا ۖ وَإِن جَاهَدَاكَ لِتُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا ۚ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ [٢٩:٨]

আমি মানুষকে পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করার জোর নির্দেশ দিয়েছি। যদি তারা তোমাকে আমার সাথে এমন কিছু শরীক করার জোর প্রচেষ্টা চালায়, যার সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তবে তাদের আনুগত্য করো না। আমারই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর আমি তোমাদেরকে বলে দেব যা কিছু তোমরা করতে। [সূরা আনকাবুত-৮]

وَإِن جَاهَدَاكَ عَلَىٰ أَن تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا ۖ وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا ۖ وَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ ۚ ثُمَّ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ [٣١:١٥]

পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান তোমার নেই; তবে তুমি তাদের কথা মানবে না এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ভাবে সহাবস্থান করবে। যে আমার অভিমুখী হয়, তার পথ অনুসরণ করবে। অতঃপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন আমারই দিকে এবং তোমরা যা করতে, আমি সে বিষয়ে তোমাদেরকে জ্ঞাত করবো। [সূরা লুকমান-১৫]

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَتْ: قَدِمَتْ عَلَيَّ أُمِّي وَهِيَ مُشْرِكَةٌ فِي عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَاسْتَفْتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قُلْتُ: وَهِيَ رَاغِبَةٌ، أَفَأَصِلُ أُمِّي؟ قَالَ: «نَعَمْ صِلِي أُمَّكِ

আসমা বিনতে আবূ বাকর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর যুগে আমার আম্মা মুশরিক অবস্থায় আমার নিকট এলেন। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট ফাতওয়া চেয়ে বললাম, তিনি আমার প্রতি খুবই আকৃষ্ট, এমতাবস্থায় আমি কি তার সঙ্গে সদাচরণ করব? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তুমি তোমার মায়ের সঙ্গে সদাচরণ কর। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২৬২০]

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতেও আপনি আপনার বাবার সাথে সদাচরণ করবেন।
ধমক দিবেননা,গালি গালাজ করবেননা,উঁচু বাক্যে কথা বলবেননা।

প্রশ্নে উল্লেখিত কাজের দরুন আপনার বাবার প্রতি আপনার মনের মধ্যে যদি ঘৃনা,বিরক্তি আসে,সেক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হবেনা।
তবে তাহা বাবার সামনে মুখে প্রকাশ করা যাবেনা।

আপনার বাবা বৈধ আদেশ করলে তাহা মানবেন,খেদমতের প্রয়োজন হলে খিদমত করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...