আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
119 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (58 points)
আমার এক বন্ধু কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছে:

যখন সুদ হারাম হয়েছিল তখন স্বর্ণমুদ্রার প্রচলন ছিল। আর স্বর্ণমুদ্রার মান মোটামুটি কন্সট্যান্ট থাকে। এই যেমন: কেউ যদি ২ বছর আগে ২০ স্বর্ণমুদ্রা ধার নেয়, তবে ২ বছর পর ২০ স্বর্ণমুদ্রা তাকে ফেরত দিতে হত আর মানি ভ্যালুর যে ফ্লাকচুয়েশন তা তুলনামূলক ভাবে কাগজের তুলনায় অনেক কম।


কিন্তু বর্তমান ইকোনমি সিস্টেমে কাগজের নোট প্রচলন হয়। আর কাগজের নোটের মূল্য স্বর্ণমুদ্রার তুলনায় অনেক ভ্যারি করে। যেমন: আজ থেকে ১০ বছর আগে ১০০০ টাকার মূল্য আর আজকের ১০০০ টাকার মূল্য এক না। এই ভ্যালু ম্যাচ করার জন্য একটা ইন্টারেস্ট রেট ধরে ফিউচার ভ্যালু অফ মানি হিসাব করা হয়।
প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র‍্যাটুইটি ইত্যাদি ক্ষেত্রে একটা ইন্টারেস্ট দেয়া হয় চাকরি জীবন শেষে। ধরা যাক সেটা ৩০ বছর পর।
এখন এই ইন্টারেস্ট যদি গ্রহণ করা না হয় তবে আমার যে টাকা পাওয়ার কথা তার মূল্য কমে যাচ্ছে।
ধরা যাক, প্রভিডেন্ড ফান্ডের জন্য ৩০ বছর চাকরি জীবনে আমার থেকে প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা করে কেটে রাখছে। এই টাকা টা ৩০ বছর পর দেয়া হবে। এ হিসাবে সুদ ব্যতীত আমার পাওয়া উচিত ৩০*১২*৩০০০= ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ৩০ বছর আগের ৩ হাজার টাকার মূল্য আর এখন কার ৩ হাজার টাকার মূল্য সেইম না। তাই ভারসাম্য রক্ষা করতে কিছু টাকা বেশি দেয়া হয়। যেটাকে ইসলামি পরিভাষায় সুদ বলে।
কিন্তু ধরা যাক, টাকার বদলে স্বর্ন্মুদ্রা ব্যাবহার করা হল। প্রতি মাসে ৩০০০ টাকার বদলে ৩০০০ স্বর্ণমুদ্রা আর ৩০ বছর শেষে ১০ লাখ ৮০ হাজার স্বর্ণমুদ্রা পেল। এতে দেখা গেল তার এসেটের ভ্যালু মোটামুটি সেইম ই থাকছে। বা এই স্বর্নমুদ্রাকে টাকায় কনভার্ট করলে গত ৩০ বছরের ডেপ্রিসিয়েশন ভ্যালু টা এডজাস্ট হয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু কাগজের মুদ্রার ক্ষেত্রে এই ডেপ্রিসিয়েশন ভ্যালু টা এডজাস্ট করতে হলে সুদ লাগবেই।
উপরোক্ত পরিস্থিতি বিবেচনায় আমার প্রশ্ন:

১। টাইম ভ্যালু অফ মানি ক্যালকুলেশনের ব্যাপারে ইসলাম কি বলে?
২। টাকার ডেপ্রিসিয়েশন ভ্যালু এডজাস্টের ক্ষেত্রে ইসলামে সমাধান কি?

৩। উপরোক্ত পরিস্থিতির আলোকে প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র‍্যাটুইটি, পেনশন ইত্যাদির বিধান কি?

৪। সুদ হারাম হবার সময় মুদ্রার ডেপ্রিসিয়েশন ভ্যালু বা টাইম ভ্যালু অফ মানি কিভাবে বিবেচনায় নেয়া হয়েছিল?
৫। যেহেতু, স্বর্ণমুদ্রার সময় সুদ হারাম হয়েছিল, তা কাগজের মুদ্রার ক্ষেত্রে কেন কার্যকরী হবে? যেহেতু, ২ ক্ষেত্রে ডেপ্রিসিয়েসন ভ্যালু ভিন্ন।


৬। কেউ যদি ৫ বছর বা ২০ বছর আগে ১ লাখ টাকা ধার নেয়, তবে ৫ বা ২০ বছর পরে যদি সে টাকা টা ফেরত দিতে যায় তবে এই ডেপ্রিসিয়েশন ভ্যালু এডজাস্ট করে কিভাবে টাকা ফেরত দিবে যাতে টাকার মূল্য টা সমান থাকে আর সুদ ও না দিতে হয়।


আশা করি, দলিল সহকারে বিস্তারিত বুঝিয়ে বলবেন।

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান হলো টাকার বিনিময়ে টাকা নিলে কোনো কমবেশি করা যাবেনা।
কম বেশি করলে সেটি সূদ হবে।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي الْخَلِيلِ، عَنْ مُسْلِمٍ الْمَكِّيِّ، عَنْ أَبِي الأَشْعَثِ الصَّنْعَانِيِّ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الذَّهَبُ بِالذَّهَبِ تِبْرُهَا وَعَيْنُهَا وَالْفِضَّةُ بِالْفِضَّةِ تِبْرُهَا وَعَيْنُهَا وَالْبُرُّ بِالْبُرِّ مُدْىٌ بِمُدْىٍ وَالشَّعِيرُ بِالشَّعِيرِ مُدْىٌ بِمُدْىٍ وَالتَّمْرُ بِالتَّمْرِ مُدْىٌ بِمُدْىٍ وَالْمِلْحُ بِالْمِلْحِ مُدْىٌ بِمُدْىٍ فَمَنْ زَادَ أَوِ ازْدَادَ فَقَدْ أَرْبَى وَلاَ بَأْسَ بِبَيْعِ الذَّهَبِ بِالْفِضَّةِ - وَالْفِضَّةُ أَكْثَرُهُمَا - يَدًا بِيَدٍ وَأَمَّا نَسِيئَةً فَلاَ وَلاَ بَأْسَ بِبَيْعِ الْبُرِّ بِالشَّعِيرِ وَالشَّعِيرُ أَكْثَرُهُمَا يَدًا بِيَدٍ وَأَمَّا نَسِيئَةً فَلاَ "

হাসান ইবন আলী (রহঃ) ........... উবাদা ইবন সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সোনা সোনার বিনিময়ে সমান সমান বিক্রি করবে, চাই তা সোনার পাত হোক বা স্বর্ণ মুদ্রাই হোক এবং রুপা রুপার বিনিময়ে সমান সমান বিক্রি করবে, চাই তা রুপার পাত হোক বা রৌপ্য মুদ্রাই হোক। আর গম গমের বিনিময়ে এক মুদ এক মুদের বিনিময়ে বিক্রি করতে হবে এবং যবের বিনিময়ে যবও এক মুদের বিনিময়ে এক মুদ বিক্রি করতে হবে। আর খেজুর খেজুরের বদলে এক মুদের বিনিময়ে এক মুদ বিক্রি করতে হবে। একই ভাবে লবণ লবণের বিনিময়ে এক মুদের বদলে এক মুদ বিক্রি করতে হবে। এই প্রকারের একই ধরনের জিনিসের মধ্যে যে ব্যক্তি বেশী নিবে বা দিবে, তা-ই সূদ হবে।

তবে সোনাকে রুপার বিনিময়ে এ অবস্থায় বিক্রি করা, যখন রুপা উভয় অংশের মধ্যে অধিক হবে, তবে তা দূষণীয় নয়। তবে এতে শর্ত হলো- লেন-দেন হাতে হাতে হতে হবে, বাকীতে বিক্রি জায়িয হবে না। একই রূপে গম যবের বিনিময়ে বিক্রি করা দূষণীয় নয়, যখন যবের অংশ উভয়ের মধ্যে অধিক হবে। তবে তা এ শর্তে যে, লেন-দেন হাতে হাতে হতে হবে এবং এতেও বাকী বিক্রি বৈধ নয়।
(আবু দাউদ ৩৩১৬)

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ خَالِدٍ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، عَنْ أَبِي الْأَشْعَثِ الصَّنْعَانِيِّ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِهَذَا الْخَبَرِ يَزِيدُ، وَيَنْقُصُ وَزَادَ قَالَ: فَإِذَا اخْتَلَفَتْ هَذِهِ الْأَصْنَافُ فَبِيعُوا، كَيْفَ شِئْتُمْ، إِذَا كَانَ يَدًا بِيَدٍ 

‘উবাদাহ ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে পূর্বোক্ত হাদীসটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সূত্রে কিছুটা কম-বেশি করে বর্ণিত হয়েছে। এতে অতিরিক্ত রয়েছেঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এসব ক্ষেত্রে এক ধরণের বস্তু অন্য ধরণের বস্তুর সাথে বিনিময় হলে তোমরা ইচ্ছামত পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারো। তবে আদান-প্রদান হতে হবে নগদে।
(আবু দাউদ ৩৩৫০)

أن النقود الورقية؛ لها حكم الذهب والفضة في جريان الربا بنوعيه فيها، وكذا في وجوب الزكاة، وفي صحة كونها ثمنا في السلم، وغيره من المعاملات؛ وبهذا صدرت فتاوى المجامع الفقهية، وفتاوى العلماء المعاصرين، فقد جاء في قرار "مجلس المجمع الفقهي" برابطة العالم الإسلامي بمكة المكرمة الدورة الخامسة قرار رقم (6):

أولا: إنه بناء على أن الأصل في النقد هو الذهب والفضة, وبناء على أن علة الربا فيهما هي مطلق الثمنية، في أصح الأقوال عند فقهاء الشريعة.

وبما أن الثمنية لا تقتصر عند الفقهاء على الذهب والفضة, وإن كان معدنهما هو الأصل.

وبما أن العملة الورقية قد أصبحت ثمنا, وقامت مقام الذهب والفضة في التعامل بها, وبها تقوم الأشياء في هذا العصر؛ لاختفاء التعامل بالذهب والفضة, وتطمئن النفوس بتمولها، وادخارها, ويحصل الوفاء، والإبراء العام بها, رغم أن قيمتها ليست في ذاتها, وإنما في أمر خارج عنها, وهو حصول الثقة بها كوسيط في التداول والتبادل, وذلك هو سر مناطها بالثمنية.

وحيث إن التحقيق في علة جريان الربا في الذهب والفضة هو مطلق الثمنية, وهي متحققة في العملة الورقية.

 لذلك كله؛ فإن مجلس المجمع الفقهي يقرر: أن العملة الورقية نقد قائم بذاته, له حكم النقدين من الذهب والفضة؛ فتجب الزكاة فيها, ويجري الربا عليها بنوعيه -فضلا، ونسيئة-, كما يجرى ذلك في النقدين من الذهب والفضة تماما, باعتبار الثمنية في العملة الورقية قياسا عليهما؛ وبذلك تأخذ العملة الورقية أحكام النقود في كل الالتزامات التي تفرضها الشريعة فيها.

ثانيا: يعتبر الورق النقدي نقدا قائما بذاته، كقيام النقدية في الذهب والفضة، وغيرهما من الأثمان, كما يعتبر الورق النقدي أجناسا مختلفة، تتعدد بتعدد جهات الإصدار في البلدان المختلفة، بمعنى أن الورق النقدي السعودي جنس, وأن الورق النقدي الأمريكي جنس, وهكذا كل عملة ورقية جنس مستقل بذاته؛ وبذلك يجري فيها الربا بنوعيه -فضلا، ونسيئة-, كما يجري الربا بنوعية في النقدين -الذهب، والفضة-، وفي غيرهما من الأثمان. انتهى.

وكذلك مجمع الفقه الإسلامي بجدة، بقراره: 21 (9/ 3)، وتبعهم في ذلك مجمع الفقه الإسلامي بالهند، بقراره الصادر في 11/ 1989 م.

جاء في "أبحاث هيئة كبار العلماء" (1/85) .

" - حكمة تحريم الربا في النقدين ليست مقصورة عليهما ؛ بل تتعداهما إلى غيرهما من الأثمان كالفلوس والورق النقدي .

وقال الشيخ ابن باز رحمه الله :

" العملة الورقية منزلة الذهب والفضة في جريان الربا في بيع بعضها ببعض ، وفي بيع الذهب والفضة بها " انتهى .

"مجموع فتاوى ابن باز" (19/158)

جاء في "المدونة" (3/5) :

" قُلْت : أَرَأَيْت إنْ اشْتَرَيْت فُلُوسًا بِدَرَاهِمَ فَافْتَرَقْنَا قَبْلَ أَنْ نَتَقَابَضَ قَالَ : لَا يَصْلُحُ هَذَا فِي قَوْلِ مَالِكٍ وَهَذَا فَاسِدٌ , قَالَ لِي مَالِكٌ فِي الْفُلُوسِ : لَا خَيْرَ فِيهَا نَظِرَةً [أي : مع تأجيل القبض] بِالذَّهَبِ وَلَا بِالْوَرِقِ , وَلَوْ أَنَّ النَّاسَ أَجَازُوا بَيْنَهُمْ الْجُلُودَ حَتَّى تَكُونَ لَهَا سِكَّةٌ وَعَيْنٌ لَكَرِهْتُهَا أَنْ تُبَاعَ بِالذَّهَبِ وَالْوَرِقِ نَظِرَةً . قُلْت : أَرَأَيْت إنْ اشْتَرَيْت خَاتَمَ فِضَّةٍ أَوْ خَاتَمَ ذَهَبٍ أَوْ تِبْرَ ذَهَبٍ بِفُلُوسٍ فَافْتَرَقْنَا قَبْلَ أَنْ نَتَقَابَضَ أَيَجُوزُ هَذَا فِي قَوْلِ مَالِكٍ ؟ قَالَ : لَا يَجُوزُ هَذَا فِي قَوْلِ مَالِكٍ لِأَنَّ مَالِكًا قَالَ : لَا يَجُوزُ فَلْسٌ بِفَلْسَيْنِ , وَلَا تَجُوزُ الْفُلُوسُ بِالذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَلَا بِالدَّنَانِيرِ نَظِرَةً " انتهى .

ومعنى هذا : أن الإمام مالك رحمه الله يرى أن الفلوس يجري فيها الربا كالذهب والفضة ، لأن الناس صاروا يتعاملون بها وصارت نقداً ، بل يرى أن الناس لو تعارفوا على جعل الجلود نقوداً يتعاملون بها لكان لها حكم الذهب والفضة ، وهذا يشبه الأوراق النقدية الآن ، فصار النقد من ورق ، والذي افترضه الإمام مالك أنه يكون من جلود .

فسبحان من وفق الإمام إلى هذا المثال !

وقال شيخ الإسلام ابن تيمية رحمه الله :

"وَالْأَظْهَرُ : أَنَّ الْعِلَّةَ فِي تَحْرِيمِ الرِّبَا فِي الدَّنَانِيرِ وَالدَّرَاهِمِ هُوَ الثمنية ؛ كَمَا قَالَهُ جُمْهُورُ الْعُلَمَاءِ، لَا الْوَزْنُ ...

وَالتَّعْلِيلُ بالثمنية تَعْلِيلٌ بِوَصْفٍ مُنَاسِبٍ ؛ فَإِنَّ الْمَقْصُودَ مِنْ الْأَثْمَانِ أَنْ تَكُونَ مِعْيَارًا لِلْأَمْوَالِ يَتَوَسَّلُ بِهَا إلَى مَعْرِفَةِ مَقَادِيرِ الْأَمْوَالِ وَلَا يَقْصِدُ الِانْتِفَاعَ بِعَيْنِهَا . فَمَتَى بِيعَ بَعْضُهَا بِبَعْضٍ إلَى أَجَلٍ قُصِدَ بِهَا التِّجَارَةُ الَّتِي تُنَاقِضُ مَقْصُودَ الثمنية " انتهى بتصرف يسير .

"مجموع الفتاوى" (29/471-472) .

وقال ابن القيم :

" وأما الدراهم والدنانير فقالت طائفة : العلة فيهما كونهما موزونين . وهذا مذهب أحمد في إحدى الروايتين عنه ومذهب أبي حنيفة . وطائفة قالت : العلة فيهما الثمنية . وهذا قول الشافعي ومالك وأحمد في الرواية الأخرى ، وهذا هو الصحيح ، بل الصواب " انتهى .

"إعلام الموقعين" (2/156) .

وجاء في قرار "مجلس المجمع الفقهي" برابطة العالم الإسلامي بمكة المكرمة الدورة الخامسة قرار رقم (6) :

أولاً : إنه بناء على أن الأصل في النقد هو الذهب والفضة , وبناء على أن علة الربا فيهما هي مطلق الثمنية في أصح الأقوال عند فقهاء الشريعة .

وبما أن الثمنية لا تقتصر عند الفقهاء على الذهب والفضة , وإن كان معدنهما هو الأصل .

وبما أن العملة الورقية قد أصبحت ثمنا , وقامت مقام الذهب والفضة في التعامل بها , وبها تقوم الأشياء في هذا العصر , لاختفاء التعامل بالذهب والفضة , وتطمئن , النفوس بتمولها وادخارها , ويحصل الوفاء والإبراء العام بها , رغم أن قيمتها ليست في ذاتها , وإنما في أمر خارج عنها , وهو حصول الثقة بها كوسيط في التداول والتبادل , وذلك هو سر مناطها بالثمنية .

وحيث إن التحقيق في علة جريان الربا في الذهب والفضة هو مطلق الثمنية , وهي متحققة في العملة الورقية , لذلك كله فإن مجلس المجمع الفقهي يقرر أن العملة الورقية نقد قائم بذاته , له حكم النقدين من الذهب والفضة , فتجب الزكاة فيها , ويجري الربا عليها بنوعيه فضلا ونسيئة , كما يجرى ذلك في النقدين من الذهب والفضة تماما , باعتبار الثمنية في العملة الورقية قياسا عليهما . وبذلك تأخذ العملة الورقية أحكام النقود في كل الالتزامات التي تفرضها الشريعة فيها .

ثانياً : يعتبر الورق النقدي نقدا قائما بذاته كقيام النقدية في الذهب والفضة وغيرهما من الأثمان , كما يعتبر الورق النقدي أجناسا مختلفة تتعدد بتعدد جهات الإصدار في البلدان المختلفة . بمعنى أن الورق النقدي السعودي جنس , وأن الورق النقدي الأمريكي جنس , وهكذا كل عملة ورقية جنس مستقل بذاته , وبذلك يجري فيها الربا بنوعيه فضلا ونسيئة , كما يجري الربا بنوعية في النقدين الذهب والفضة وفي غيرهما من الأثمان" انتهى .

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(১-৫)
প্রশ্নে আপনি যেই হিসাব উল্লেখ করেছেন,তাহা হলো যুক্তি তথা কিয়াস।
কিয়াস অনুযায়ী উক্ত হিসাব সহীহ।

তবে ফুকাহায়ে কেরামগন এটিকে গ্রহন করেননি। 
ফুকাহায়ে কেরামগন টাকার বিনিময়ে টাকা আদান প্রদান করা হলে অতিরিক্তকে সূদ বলেই আখ্যায়িত করেছেন।
চাই ৫০ বছর পর ঋন পরিশোধ করুক,চাই টাকার ভ্যালু অনেকটাই কমে যাক।
তবুও অতিরিক্ত কে সূদই বলা হবে।

আমার যুক্তিতে না পড়লেও ফুকাহায়ে কেরামদের সর্বসম্মত এই মাসয়ালা আমাকে মানতেই হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ، حَدَّثَنَا حَفْصٌ، - يَعْنِي ابْنَ غِيَاثٍ - عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ عَبْدِ خَيْرٍ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ لَوْ كَانَ الدِّينُ بِالرَّأْىِ لَكَانَ أَسْفَلُ الْخُفِّ أَوْلَى بِالْمَسْحِ مِنْ أَعْلَاهُ وَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَمْسَحُ عَلَى ظَاهِرِ خُفَّيْهِ .

‘আলী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, ধর্মের মাপকাঠি যদি রায়ের (মানুষের মনগড়া অভিমত ও বিবেক-বিবেচনার) উপর নির্ভরশীল হত, তাহলে মোজার উপরিভাগের চেয়ে নীচের (তলার) দিক মাসাহ্ করাই উত্তম হত। অথচ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তাঁর (পায়ের) মোজাদ্বয়ের উপরিভাগ মাসাহ্ করতে দেখেছি।
(আবু দাউদ ১৬২. আহমাদ (হাঃ ৭৩৭, ১২৬৩), দারিমী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ জুতার উপর মাসাহ্ করা, হাঃ ৭১৫) এবং ‘আব্দুল্লাহ ইবনু আহমাদ যাওয়ায়িদে মুসনাদ (হাঃ ৯১৭, ১০১৩)

★প্রভিডেন্ট ফান্ড,পেনশনের এর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা সূদ নয়।   

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

(০৬)
এক্ষেত্রে টাকার মাধ্যমে ফেরত না দিয়ে কোনো স্বর্ন,রুপা,ধান,চাল বা অন্য কোনো পন্যের মাধ্যমে ফেরত দিবে।

এক্ষেত্রে পরবর্তীতে করজদাতা ফেরত পাওয়া জিনিসটি বাজারে বিক্রয় করে টাকা নিতে পারবে।

সেক্ষেত্রে সে লাভও পাবে,আবার সুদও হবেনা।

অর্থাৎ এক্ষেত্রে কোনো ভাবেই টাকার বিনিময়ে সরাসরি টাকা নেয়া যাবেনা,এক্ষেত্রে কোনো পন্য নিতে হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ صَالِحٍ الْوُحَاظِيُّ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ، ح وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ سَهْلٍ التَّمِيمِيُّ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الدَّارِمِيُّ، - وَاللَّفْظُ لَهُمَا - جَمِيعًا عَنْ يَحْيَى بْنِ حَسَّانَ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ، - وَهُوَ ابْنُ سَلاَّمٍ - أَخْبَرَنِي يَحْيَى، - وَهُوَ ابْنُ أَبِي كَثِيرٍ - قَالَ سَمِعْتُ عُقْبَةَ بْنَ عَبْدِ الْغَافِرِ، يَقُولُ سَمِعْتُ أَبَا سَعِيدٍ، يَقُولُ جَاءَ بِلاَلٌ بِتَمْرٍ بَرْنِيٍّ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مِنْ أَيْنَ هَذَا " . فَقَالَ بِلاَلٌ تَمْرٌ كَانَ عِنْدَنَا رَدِيءٌ فَبِعْتُ مِنْهُ صَاعَيْنِ بِصَاعٍ لِمَطْعَمِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ عِنْدَ ذَلِكَ " أَوَّهْ عَيْنُ الرِّبَا لاَ تَفْعَلْ وَلَكِنْ إِذَا أَرَدْتَ أَنْ تَشْتَرِيَ التَّمْرَ فَبِعْهُ بِبَيْعٍ آخَرَ ثُمَّ اشْتَرِ بِهِ "

ইসহাক ইবনু মানসূর, মুহাম্মাদ ইবনু সাহল তামীমী ও আবদুল্লাহ ইবনু আবদুর রহমান দারিমী (রহঃ) ..... আবূ সাঈদ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, বার্নী জাতীয় খেজুর নিয়ে বিলাল (রাযিঃ) আগমন করলেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, এ কোত্থেকে এনেছ? বিলাল (রাযিঃ) বলল, আমাদের নিকট নিম্ন শ্রেণীর খেজুর ছিল আমি তা থেকে দু’সা এক সা' এর বিনিময়ে বিক্রি করেছি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে খাওয়ানোর জন্যে। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেনঃ হায় আফসোস! এতো সাক্ষাত সুদ, এরূপ করো না, বরং যখন তুমি খেজুর ক্রয় করতে চাও, তখন এটাকে বিক্রি করবে, তারপর এর মূল্য দ্বারা ক্রয় করবে। ইবনু সাহল (রহঃ) তার বর্ণনায় 'তখন’ শব্দটি উল্লেখ করেননি। (মুসলিম ৩৯৭৫,ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৯৩৮, ইসলামিক সেন্টার ৩৯৩৭)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (58 points)
আরেকটি প্রশ্ন এ সাপেক্ষে করা যাচ্ছে:

যদি টাকা ধার দেয়ার সময় বলা হয়, এই টাকায় যত পরিমাণ স্বর্ণ পাওয়া যায়, টাকা ফেরত দেয়ার সময় তত গ্রাম স্বর্ণমূল্য পরিশোধ করতে হবে। অর্থাৎ, লেনদেনের পূর্বে চুক্তি।  এক্ষেত্রেও কি তা সুদ বলে গণ্য হবে? যদি স্বর্ণ না কিনে স্বর্ণের মূল্য দেয়া হয়। 
by (559,140 points)
এক্ষেত্রে আপনি যদি সরাসরি স্বর্ণ নেন,তাহলে তাহা জায়েজ হবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...