আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
100 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমার এক বান্ধবী তাদের স্বামী স্ত্রীর উপর খুব খারাপ রকমের জাদু করা হয়েছে এ ব্যাপারে হাজিরাতে দেখে জানতে পেরেছে। সে ওই জাদু যার মাধ্যমে হাজিরা দেখেছে তাকে দিয়ে কাটিয়েছে। জাদুর চিকিৎসা করার সময় স্ত্রীকে জায়নামাজে একা রুমে বসে থাকতে বলা হয়েছে ওযু করে এবং যিনি জাদু কেটেছেন তিনি আমার বান্ধবীর কাছে জ্বীন পাঠিয়েছেন যারা কিনা এসে সব খারাপ কিছু নষ্ট করে দেই। এভাবে জায়নামাজে তাকে ২০/২৫ মিনিটের মত মাথা নিচু করে বসে থাকতে হয়েছে। এভাবে তার স্বামীর চিকিৎসা ও করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সমস্যা এখন আগের মত নেই। কিন্তু এতে করে কি শিরক হয়ে গেলো কিনা আমার বান্ধবী চিন্তিত।এই যে সাহায্য নেওয়া। যিনি চিকিৎসা করেছেন তিনি আল্লাহ্ ওয়ালা এবং জ্বীন যারা এসেছিলো তারাও নাকি মুসলিম জ্বীন।খারাপ জ্বীন না। দয়া করে যদি বলতেন এই কাজ করাটা ঈমান বিধ্বংসী কিনা?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/94396 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 

জিন থেকে সাহায্য নেওয়া তাদেরকে কাজে লাগানো ইত্যাদি জায়েজ কিনা,এই বিষয়ে উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে।       

কিছু কিছু উলামায়ে কেরামগন বলেন জিন থেকে সাহায্য নেওয়াতাদেরকে কাজে  লাগানো জায়েজ।

 জিনকে  নিজের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন মানুষকে সাহায্যকারী বা শ্রমিক হিসেবে কাজে লাগানো যায়তেমনি জিনকেও  শ্রমিক হিসেবে কাজ করানো যাবে। কাজ করিয়ে  তার পাওনা দিয়ে দিতে হবে। এটি জায়েজ আছে।

 

সোলায়মান (আ.) জিনদের নিয়ে বাহিনী তৈরি করেছিলেন এবং তাদের দিয়ে নির্মাণকাজ করিয়েছেন। সুতরাং জিনদের সাহায্য নেওয়া নাজায়েজ নয়। তবে এটি বৈধ প্রক্রিয়ায় হতে হবে। জিনকে দিয়ে হারাম কাজ করা যাবে নাআবার জিনের কোনো শর্তও মানা যাবে না। তবে আরো অনেক উলামায়ে কেরামগন ভিন্নমত পোষণ করেছেন।

তারা বলেন যে জিনদের সাহায্য চাওয়া কখনও শুধু হারামকখনও এর সাথে শিরককখনও কুফর। এটা কিভাবে সাহায্য চাইছেকিভাবে সাহায্য করছে এর ওপর নির্ভর করে।”

 

সুরা জিনে আল্লাহ তায়ালা বলেন –

وَأَنَّهُ كَانَ رِجَالٌ مِّنَ الْإِنسِ يَعُوذُونَ بِرِجَالٍ مِّنَ الْجِنِّ فَزَادُوهُمْ رَهَقًا

অনেক মানুষ অনেক জিনের আশ্রয় নিতফলে তারা জিনদের অহংকার বাড়িয়ে দিত। (সুরা জিনআয়াত ৬)

 

সুতরাং “জিনদের সাহায্য চাওয়া হারাম” তবে স্বাভাবিকভাবেই শয়তান/জিনরা তো এমনিতেই আমার কাজ করবে না। শয়তান বা জিনদের থেকে ফায়দা নিতে হলেতাদের কথা অনুযায়ী স্যাটানিক রিচ্যুয়াল পালন করতে হয়সেক্রিফাইস করতে হয়আল্লাহর নামে না করে তাদের নামে পশু জবাই করতে হয়। ইত্যাদি ইত্যাদি।

 

 অনেক কবিরাজকে দেখা যায়,তারা বলে- গরু লাগবেমুরগি লাগবেছাগল লাগবে। তাদের অনেকে নিজে এসব শয়তানের নামে বলি দেয়আর অনেকে বলে “জবাই করার পর রক্তটা আমাকে দিয়েন।” তাঁরা এই রক্ত শয়তানের উপাসনায় ব্যবহার করে। যাদুবিদ্যায় বিভিন্ন মৃত প্রাণীর রক্ত ব্যবহার করে।

 

আল্লাহ তায়ালা বলেন

وَيَوْمَ يَحْشُرُهُمْ جَمِيعًا يَا مَعْشَرَ الْجِنِّ قَدِ اسْتَكْثَرْتُم مِّنَ الْإِنسِ ۖ وَقَالَ أَوْلِيَاؤُهُم مِّنَ الْإِنسِ رَبَّنَا اسْتَمْتَعَ بَعْضُنَا بِبَعْضٍ وَبَلَغْنَا أَجَلَنَا الَّذِي أَجَّلْتَ لَنَا ۚ قَالَ النَّارُ مَثْوَاكُمْ خَالِدِينَ فِيهَا إِلَّا مَا شَاءَ اللَّهُ ۗ إِنَّ رَبَّكَ حَكِيمٌ عَلِيم.

যেদিন আল্লাহ সবাইকে একত্রিত করবেনহে জিন সম্প্রদায়তোমরা মানুষের মাঝে অনেককে তোমাদের অনুগামী করে নিয়েছ। মানুষদের মাঝে তাদের বন্ধুরা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, “আমরা পরস্পরে পরস্পরের মাধ্যমে উপকার লাভ করেছি।” আর এখন আপনি আমাদের জন্যে যে সময় নির্ধারণ করেছিলেনআমরা তাতে উপনীত হয়েছি।

 

তখন তাদের বলা হবে “আগুন হল তোমাদের বাসস্থান। সেখানে তোমরা চিরকাল অবস্থান করবেআর আল্লাহ যেমন চাইবে..” নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা প্রজ্ঞাময়মহাজ্ঞানী। (সুরা আন’আমআয়াত ১২৮)


সকাল-সন্ধ্যার আমল সম্পর্কে জানুন-https://ifatwa.info/45100/

 


★জিনকে  নিজের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন মানুষকে সাহায্যকারী বা শ্রমিক হিসেবে কাজে লাগানো যায়তেমনি জিনকেও  শ্রমিক হিসেবে কাজ করানো যাবে। এটি জায়েজ আছে। সুতরাং খারাপ জিনকে তাড়ানোর জন্য নেককার জিনকে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এটি বৈধ প্রক্রিয়ায় হতে হবে। জিনকে দিয়ে হারাম কাজ করা যাবে নাআবার জিনের কোনো হারাম শর্তও মানা যাবে না।


শিরক করা ছাড়া শরীয়তের গন্ডির মধ্যে থেকে জীনের সাহায্য নেয়া জায়েজ হবে।

আল্লাহ সবকিছুর খালিক ও মালিক,জগতের সব কিছু উনার হুকুমেই সংগঠিত হয়,তাবিজ বা ঔষধের অদ্য কোনো ক্ষমতা নেই।এমন আক্বিদা পোষণ করে জায়েয ও বৈধ কালামের মাধ্যমে চিকিৎসা হিসেবে ঝাড়-ফুঁক,তাবিজ ব্যবহার ও জীনের সাহায্য নেয়া বৈধ আছে।

জীনের সাহায্য নেয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ- 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত কবিরাজ যদি জ্বীনকে হাজির করতে ও অন্যান্য সব আমলে বৈধ কালাম ব্যবহার করে,শিরক ও শরীয়াহ বিরোধী কোনো বাক্য ব্যবহার না করে,শিরক ও শরীয়াহ বিরোধী কোনো কাজ না করে,এবং উক্ত বোন যদি আল্লাহ সবকিছুর খালিক ও মালিক,জগতের সব কিছু উনার হুকুমেই সংগঠিত হয়,কবিরাজ,জীন,তাবিজ, ঔষধের অদ্য কোনো ক্ষমতা নেই।এমন আক্বিদা পোষণ করে উক্ত কবিরাজের নিকট যায়,সেক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে শিরক হবেনা। সেক্ষেত্রে এই কাজ করাটা ঈমান বিধ্বংসী হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...