আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
0 views
Published in by (597,330 points)
হাকীমুল উম্মত থানভী রাহ কর্তৃক লিখিত, ’বেহেশতী জেওর‘ কিতাবে হায়েয নেফাস ও ইস্তেহাযা সম্পর্কে বেশ কিছু মাস’আলা মাসাঈল বর্ণনা করা হয়েছে। সেগুলো আমরা এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করছি

 
হায়েয ও ইস্তেহাযা

(১) মাসআলাঃ
মেয়ে বালেগ হইলে প্রত্যেক মাসে স্বাভাবিক নিয়ম অনুসারে পেশাবের রাস্তা দিয়ে যে রক্তস্রাব হয়ে থাকে, তাহাকে হায়েয বা ঋতু বলে।

(২) মাসআলাঃ
হায়েযের মুদ্দত কমপক্ষে তিন দিন তিন রাত; ঊর্ধ্ব সংখ্যায় দশ দিন দশ রাত। অতএব, যদি তিন দিন তিন রাত অর্থাৎ, ৭২ ঘণ্টার চেয়ে কম রক্তস্রাব হয়, তবে তাহা হায়েয বলিয়া গণ্য হইবে না, উহাকে এস্তেহাযা বলা হইবে। (ইহাতে নামায, রোযা ত্যাগ করিতে পারিবে না।) এইরূপে যদি দশ দিন দশ রাতের চেয়ে অর্থাৎ ২৪০ ঘণ্টার বেশী রক্তস্রাব হয়, তবে অতিরিক্ত রক্তস্রাবকে হায়েয বলা যাইবে না, উহাকে এস্তেহাযা বলা হইবে। (ঐ সময়ে গোছল করিয়া নামায পড়িতে হইবে এবং রোযার মাস হইলে রোযা রাখিতে হইবে।)

(৩)মাসআলাঃ
যদি ৩ দিন ৩ রাত হইতে সামান্যও কম হয়, তবুও হায়েয হইবে না। যেমন শুক্রবার সূর্যোদয়ের সময় শুরু হইয়াছে এবং সোমবার সূর্য উদয়ের সামান্য পূর্বে বন্ধ হইয়াছে। ইহা হায়েয না; বরং ইস্তেহাযা।

(৪) মাসআলাঃ
হায়েযের মুদ্দতের ভিতর লাল, হলদে, সবুজ, কালো, মেটে যে কোন রং দেখা যাউক না কেন, হায়েযের রক্ত বলিয়া গণ্য হইবে। যখন সম্পূর্ণ সাদা রং দেখা দিবে, তখন বুঝিতে হইবে যে, হায়েয বন্ধ হইয়াছে।

(৫) মাসআলাঃ
নয় বৎসরের আগে মেয়েদের হায়েয আসে না। অতএব, যদি কোন ছোট মেয়ের নয় বৎসরের কম বয়সে রক্তস্রাব দেখা দেয় তবে উহা হায়েয হইবে না, উহা ইস্তেহাযা হইবে। এইরূপে পঞ্চান্ন বৎসরের পরে সাধারণতঃ মেয়েদের হায়েয আসে না, কিন্তু যদি কোন মেয়েলোকের পঞ্চান্ন বৎসরের পরেও রক্তস্রাব দেখা দেয় এবং রক্তের রং লাল কালো হয়, তবে উহাকে হায়েযই ধরিতে হইবে। আর যদি হলদে, সবুজ বা মেটে রংয়ের হয়, তবে হায়েয হইবে না, এস্তেহাযা হইবে। অবশ্য যদি ঐ মেয়েলোকটির উহার পূর্বেও হলদে, সবুজ বা মেটে রংয়ের স্রাব হওয়ার অভ্যাস থাকিয়া থাকে, তবে তাহা ৫৫ বৎসরের পরেও হায়েয ধরিতে হইবে। আর যদি অভ্যাসের বিপরীত হয়, তবে হায়েয হইবে না বরং ইস্তেহাযা হইবে।

(৬)মাসআলাঃ
যে মেয়েলোকের হামেশা তিন বা চারি দিন হায়েয আসার অভ্যাস ছিল, তাহার যদি কোন মাসে রক্ত বেশী আসে, কিন্তু দশ দিনের বেশী না হয়, সব কয় দিনকেই হায়েয গণ্য করিতেই হইবে, কিন্তু দশ দিন দশ রাতের চেয়ে বেশী আসিলে পূর্ব অভ্যাসের কয় দিন হায়েয হইবে, বাকী কয় দিন ইস্তেহাযা। যেমন, হয়ত কোন মেয়েলোকের বরাবর তিন দিন জারি হওয়ার অভ্যাস ছিল, হঠাৎ এক মাসে তাহার নয় দিন দশ রাত্রের চেয়ে এক মুহূর্তও বেশী রক্ত দেখা গিয়া থাকে, তবে তাহার তিন দিন তিন রাতের রক্তকে হায়েয গণ্য করিতে হইবে, অতিরিক্ত দিনগুলির রক্তকে ইস্তেহাযা বলিতে হইবে এবং ঐ দিনগুলির নামায কাযা ওয়াজিব হইবে।

(৭) মাসআলাঃ
একজন মেয়েলোকের হায়েযের কোন নিয়ম ছিল না। কোন মাসে চারি দিন, কোন মাসে সাত দিন, কোন মাসে দশ দিনও হইত। ইহা সব হায়েয, কিন্তু হঠাৎ এক মাসে দশ দিন দশ রাতের চেয়ে বেশী স্রাব দেখা গেল, এখন দেখিতে হইবে, ইহার পূর্বের মাসে কয় দিন রক্ত আসিয়াছিল, এই মাসেও সেই কয় দিন হায়েয হইবে, বাকী দিনগুলি ইস্তেহাযা হইবে।

(৮) মাসআলাঃ
একজন মেয়েলোকের হামেশা প্রত্যেক মাসে চারি দিন স্রাব হইত; কিন্তু হঠাৎ এক মাসে পাঁচ দিন স্রাব দেখা গেল এবং তার পরের মাসে পনের দিন স্রাব হইল। অতএব, যে মাসে পনর দিন স্রাব দেখা গিয়াছে সেই মাসের পূর্বের মাসে পাঁচ দিন স্রাব হইয়াছে। এই পনের দিনের মধ্যে হইতে সেই হিসাবে পাঁচ দিনকে হায়েয গণ্য করিতে হইবে; অবশিষ্ট দশ দিন ইস্তেহাযায় গণ্য হইবে। পূর্বেকার অভ্যাস ধর্তব্য নহে। মনে করিতে হইবে যে, অভ্যাস পরিবর্তন হইয়া গিয়াছে এবং পাঁচ দিনের অভ্যাস হইয়াছে। এমতাবস্থায় দশ দিন দশ রাত পার হওয়ার পর গোছল করিয়া নামায শুরু করিবে এবং গত পাঁচ দিনের নামায কাযা পড়িবে।

(৯) মাসআলা ও মেয়েলোকদের হায়েয নেফাসের মাসআলা মাসায়েল ভালমত বুঝিয়া লওয়া একান্ত দরকার। অনেকেই লজ্জায় কাহারও নিকট জিজ্ঞাসা করে না। ভাল আলেমের নিকট এসব মাসআলা জানিয়া লওয়া কর্তব্য। মেয়েলোকদের জন্য কোন মাসে কত দিন রক্তস্রাব দেখা দিল, তাহা স্মরণ রাখাও একান্ত দরকার। কারণ, পরবর্তী মাসের হুকুম অনেক সময় পূর্ববর্তী মাসের ঘটনার উপর নির্ভর করে। যেমন, যদি কোন মেয়েলোকের কোন মাসে দশ দিনের চেয়ে বেশী রক্তস্রাব দেখা যায়, আর তার পূর্বের মাসের কথা স্মরণ না থাকে এবং পূর্বের অভ্যাসও স্মরণ না থাকে, তবে এই মাসআলা এত কঠিন হইয়া যায় যে, সাধারণ লোক ত দূরের কথা অনেক আলেমও তাহা বুঝিয়া উঠিতে পারে না। এই জন্যই এইরূপ ভুলকারিণীর মাসআলা এখানে লিখা হইল না। চেষ্টা করিতে হইবে যাহাতে ভুল না হয়। ভুল হইয়া গেলে উপযুক্ত আলেমের নিকট জিজ্ঞাসা করিবে।

(১০) মাসআলাঃ
একটি মেয়ে প্রথম প্রথম ঋতুস্রাব দেখিল। ইহার পূর্বে আর তার ঋতুস্রাব অর্থাৎ ঋতু হয় নাই। অতএব, যদি দশ দিন বা তার চেয়ে কম স্রাব হয়, তবে যে কয় দিন স্রাব হইবে, সব দিনই তাহার হায়েযের মধ্যে গণ্য হইবে। আর যদি দশ দিন দশ রাতের চেয়ে বেশী স্রাব হয়, তবে দশ দিন দশ রাত পুরা হায়েযের মধ্যে গণ্য হইয়া অবশিষ্ট যে কয় দিন বা ঘণ্টা বেশী হয়, তাহা ইস্তেহাযার মধ্যে গণ্য হইবে। (সুতরাং এই মেয়ের দশ দিন দশ রাত পূর্ণ হওয়া মাত্র গোছল করিতে হইবে এবং নামায পড়িতে হইবে।)

(১১) মাসআলাঃ
যদি কোন মেয়েলোকের প্রথমবারেই রক্তস্রাব আরম্ভ হইয়া আর বন্ধ না হয়, একাদিক্রমে কয়েক মাস যাবৎ জারী থাকে, তবে তাহার যে দিন হইতে রক্তস্রাব আরম্ভ হইয়াছে সেইদিন হইতে দশ দিন দশ রাত হায়েয ধরিতে হইবে এবং পরের বিশ দিন এস্তেহাযা ধরিতে হইবে। এইরূপে প্রত্যেক মাসে তাহার দশ দিন হায়েয, বিশ দিন এস্তেহাযা হিসাব করিতে হইবে।

(১২) মাসআলাঃ
দুই হায়েযের মাঝখানে পাক থাকার মুদ্দৎ কমের পক্ষে পনের দিন, আর বেশীর কোন সীমা নাই। অতএব, যদি কোন মেয়েলোকের কোন কারণবশতঃ কয়েক মাস যাবৎ হায়েয বন্ধ থাকে, তবে যতক্ষণ পর্যন্ত ঋতুস্রাব না হইবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সে পাক থাকিবে।

(১৩) মাসআলাঃ
যদি কোন মেয়েলোকের তিন দিন তিন রাত রক্ত দেখা যায়, তারপর ১৫ দিন পাক থাকে; আবার তিন দিন তিন রাত রক্ত দেখে, তবে আগেকার তিন দিন তিন রাত এবং পনের দিনের পর তিন দিন তিন রাত হায়েয ধরিবে। আর মধ্যকার দিন পাক থাকার সময়।

(১৪) মাসআলাঃ
যদি কোন মেয়েলোক এক দিন বা দুই দিন ঋতুস্রাব দেখিয়া পনের দিন পাক থাকে এবং আবার এক দিন বা দুই দিন রক্ত দেখে, তবে সে যে পনের দিন পাক রহিয়াছে তাহা তো পবিত্রতারই সময়, আর এদিক-ওদিক যে কয়দিন রক্ত দেখিয়াছে, উহাও হায়েয নহে বরং ইস্তেহাযা।

(১৫) মাসআলাঃ
এক দিন, দুই দিন বা কয়েক দিন ঋতুস্রাব দেখা দিয়া যদি কয়েক দিন—পাঁচ দিন, সাত দিন বা দশ দিন, পনের দিনের কম রক্ত বন্ধ থাকিয়া আবার রক্ত দেখা দেয়, তবে মাঝের রক্তের বন্ধের দিনগুলিকে পাক ধরা যাইবে না, সে দিনগুলিকেও স্রাবেরই দিন ধরিতে হইবে। অতএব, যে কয় দিন হায়েযের নিয়ম ছিল, সেই কয় দিনকে হায়েয ধরিয়া বাকী দিনগুলিকে ইস্তেহাযা ধরিতে হইবে।
যেমন, একটি মেয়েলোকের নিয়ম ছিল, চাদের পহেলা, দোসা এবং তিসরা এই তিন দিন তাহার হায়েয আসিত। তারপর একমাসে এমন হইল যে, পহেলা তারিখে স্রাব দেখা দিয়া চৌদ্দ দিন রক্ত বন্ধ থাকিল, ষোল তারিখে আবার রক্ত দেখা দিল, এইরূপ অবস্থা হইলে মনে করিতে হইবে যেন, ষোল দিনই রক্তস্রাব অনবরত জারী রহিয়াছে। এই ষোল দিনের মধ্য হইতে প্রথম তিন দিনকে হায়েয ধরিয়া বাকী তের দিনকে ইস্তেহাযা ধরিতে হইবে। (অতএব, প্রথম তারিখে রক্ত দেখা দিলে নামায পড়া বন্ধ করিতে হইবে। পরে যখন দুই এক দিন পর রক্ত বন্ধ হইল, তখন গোছল করিয়া নামায পড়া আরম্ভ করিতে হইবে এবং ঐ এক দুই দিনের নামায কাযা পড়িতে হইবে। পরে যখন আবার ষোল তারিখে রক্ত দেখা দিল এবং সাব্যস্ত হইয়া গেল যে, প্রথমের তিন দিন হায়েয ছিল, পরের তের দিন ইস্তেহাযা ছিল, তখন জানা গেল যে, প্রথম তিন দিন নামায মা'ফ ছিল, সেই কয় দিনের নামাযের কাযা পড়ার দরকার নাই। তার পরের নামাযগুলি যদি গোছল করিয়া পড়িয়া থাকে, তবে নামায হইয়া গিয়াছে। আর যদি গোছল না করিয়া থাকে, তবে সেই কয় দিনের নামায কাযা পড়িতে হইবে। পরে যখন ষোল তারিখে রক্ত দেখা দিয়াছে, তখন রক্ত দেখা সত্ত্বেও গোছল করিয়া নামায পড়িতে হইবে। কারণ উহা হায়েযের রক্ত নহে—ইস্তেহাযার রক্ত, এই মেয়েলোকটির যদি ৪/৫/৬ তারিখে (এই তিন দিন) হায়েয আসার নিয়ম ছিল, তবে ৪/৫/৬ এই তিন দিন তাহার হায়েযের মধ্যে গণ্য হইবে। (যদিও এই তিন দিন রক্ত না দেখা গিয়া থাকে) আর প্রথম তিন দিন এবং পরে ১০ দিন ইস্তেহাযা ধরিবে। আর যদি কোনো নিয়মই না থাকিয়া থাকে বরং প্রথম বারেই এইরূপ হইয়া থাকে, তবে প্রথম দশ দিনকে হায়েয এবং পরের ছয় দিনকে ইস্তেহাযা ধরা হইবে।

(১৬) মাসআলাঃ
গর্ভাবস্থায় যদি কোন কারণবশতঃ রক্তস্রাব দেখা দেয়, তবে সেই রক্তকে হায়েয বলা যাইবে না, যে কয়েক দিনই হউক উহা ইস্তেহাযা।

(১৭) মাসআলাঃ
প্রসবের সময় বাচ্চা পয়দা হইবার পূর্বে যদি রক্তস্রাব হয় উহাকে ইস্তেহাযা বলা হইবে। এমন কি যতক্ষণ পর্যন্ত বাচ্চার বেশী অর্ধেক বাহিরে না আসিবে, ততক্ষণ পর্যন্ত যে রক্ত দেখা দিবে, তাহাকে ইস্তেহাযাই বলিতে হইবে।


হায়েযের আকামঃ
(১)মাসআলাঃ
হায়েযের মুদ্দতের মধ্যে ফরয, নফল কোন রকম নামায পড়া দুরুস্ত নহে এবং রোযা রাখাও দুরুস্ত নহে। শুধু এতটুকু পার্থক্য যে, হায়েযের মুদ্দতের মধ্যে যত ওয়াক্ত নামায আসে সব মাফ হইয়া যায়, তাহার আর কাযাও করিতে হয় না। কিন্তু যে কয়টি রোযা ছুটিয়া যায়, পরে তাহার কাযা করিতে হয়।

(২)মাসআলাঃ
তবে ওয়াক্তের ফরয নামাযের মধ্যেই যদি হায়েয আসিয়া পড়ে, ঐ নামায মাফ হইয়া যাইবে। পাক হওয়ার পর কাযা করিতে হইবে না। অবশ্য যদি নফল বা সুন্নত নামাযের মধ্যে হায়েয আসে, তবে সে নামাযের পুনরায় কাযা পড়িতে হইবে। এইরূপে রোযার মধ্যে যদি হায়েয আসে, এমন কি যদি মাত্র সামান্য বেলা থাকিতেও হায়েয আসে, তবুও সে রোযার ক্বাযা করিতে হইবে। এইরূপ অবস্থা হইলে নফল রোযারও কাযা করিতে হইবে।

(৩) মাসআলাঃ
ওয়াক্তের নামায এখনও পড়ে নাই, কিন্তু নামায পড়িবার মত ওয়াক্ত এখনও আছে, এমন সময় যদি হায়েয দেখা যায়, তবে ঐ ওয়াক্তের নামায মা'ফ হইয়া যাইবে।

(৪) মাসআলাঃ
হায়েযের মুদ্দতের মধ্যে স্ত্রী সঙ্গম জায়েয নহে; কিন্তু এক সঙ্গে খাওয়া, বসা, পাক করা, এক বিছানায় শয়ন (চুম্বন ও আলিঙ্গন করা) জায়েয আছে। (হায়েয অবস্থায় স্ত্রী সঙ্গম করিলে পাপ হয়, তাহা হইতে আত্মরক্ষা করিবার মত সংযম যদি স্বামীর না থাকে, তবে তাহার চুম্বন ও আলিঙ্গন করাও উচিত নহে।)

(৫) মাসআলাঃ
একজন মেয়েলোকের পাঁচ দিন বা নয় দিন হায়েয থাকার নিয়ম ছিল। নিয়ম মত ঋতুস্রাব হইয়া রক্ত বন্ধ হইয়া গিয়াছে। রক্ত বন্ধ হওয়া মাত্রই তাহার উপর গোছল করা ফরয হইবে। গোছল করার পূর্বে সহবাস জায়েয হইবে না। অবশ্য যদি কোন কারণবশতঃ গোছল করিতে না পারে এবং এত পরিমাণ সময় অতিবাহিত হইয়া যায়, তাহাতে এক ওয়াক্ত নামাযের কাযা তাহার যিম্মায় ফরয হইয়া পড়ে, তখন সহবাস জায়েয হইবে, ইহার পূর্বে নহে।

(৬) মাসআলাঃ
যে মেয়েলোকের পাঁচদিন হায়েয আসার নিয়ম আছে, তাহার যদি এক মাসে চারি দিন রক্ত দেখা দিয়া বন্ধ হইয়া যায়, তবে রক্ত বন্ধ হওয়া মাত্র গোছল করিয়া নামায পড়া ওয়াজিব। কিন্তু পাঁচ দিন পুরা না হওয়া পর্যন্ত সহবাস করা জায়েয হইবে না। কেননা, হয়ত আবার রক্ত দেখা দিতে পারে।

(৭) মাসআলাঃ
যদি দশ দিন পুরা ঋতুস্রাব হইয়া হায়েয বন্ধ হয়, তবে গোছলের পূর্বেও সহবাস করা জায়েয হইবে।

(৮) মাসআলাঃ
যদি এক দিন বা দুই দিন রক্ত দেখা দিয়া বন্ধ হইয়া যায়, তবে গোছল করা ফরয নহে, ওযূ করিয়া নামায পড়িবে, কিন্তু সহবাস করা জায়েয হইবে না। তারপর যদি পনের দিন পাক থাকার আগে আবার রক্ত দেখা দেয়, তবে বুঝা যাইবে যে, উহা হায়েযের রক্ত ছিল।অতএব, হায়েযের কয়দিন বাদ দিয়া এখন গোছল করিয়া নামায পড়িবে। আর যদি পুরা পনের দিন পাক থাকিয়া থাকে, তবে বুঝা যাইবে যে, উহা ইস্তেহাযার রক্ত ছিল। অতএব, এক দিন বা দুই দিন রক্ত দেখার কারণে যে কয় ওয়াক্ত নামায পড়ে নাই, তাহার ক্বাযা পড়িতে হইবে।

(৯)মাসআলাঃ
কোন মেয়েলোকের তিন দিন হায়েয আসার নিয়ম ছিল। এক মাসে তাহার এইরূপ অবস্থা হইলো যে, তিন দিন পুরা হইয়া যাওয়া সত্ত্বেও রক্ত বন্ধ হইল না। এইরূপ অবস্থা হইলে তাহার তখন গোছলও করিতে হইবে না, নামাযও পড়িতে পারিবে না। যদি পুরা দশ দিনের মাথায়, অথবা তার চেয়ে কমে রক্ত বন্ধ হয়, তবে এইসব কয় দিনের নামায মাফ থাকিবে, কাযা পড়িতে হইবে না। মনে করিতে হইবে যে, নিয়মের পরিবর্তন হইয়া গিয়াছে। অতএব, এই কয় দিনই হায়েযের মধ্যে গণ্য হইবে। আর যদি দশ দিনের পরও রক্ত জারী থাকে, তবে এখন বুঝা যাইবে যে, হায়েয মাত্র তিন দিন ছিল, বাকী সব ইস্তেহাযা ছিল। অতএব দশ দিন শেষ হওয়ার পর গোছল করিবে এবং রক্ত জারী থাকা সত্ত্বেও নামায পড়িবে এবং গত সাত দিনের নামায ভাযা পড়িতে হইবে।

(১০) মাসআলাঃ
যদি দশ দিনের কম হায়েয হয় এবং এমন সময় রক্ত বন্ধ হয় যে, নামাযের ওয়াক্ত প্রায় শেষ হইয়া গিয়াছে, যদি তৎক্ষণাৎ খুব তাড়াতাড়ি গোছল করে, তবে এতটুকু সময় পাইতে পারে যে, নিয়্যত করিয়া শুধু “আল্লাহু আকবর" বলিয়া তাহ্রীমা বাঁধিয়া দাঁড়াইতে পারে, এর চেয়ে বেশী সময় নাই, তবে ঐ ওয়াক্তের নামায তাহার উপর ওয়াজিব এবং ক্বাযা পড়িতে হইবে। আর যদি এতটুকু সময়ও না পায় যে, গোছল করিয়া তাহরীমা বাধিতে পারে, তবে ঐ ওয়াক্তের নামায মাফ হইয়া যাইবে, কাযা পড়িতে হইবে না।

(১১) মাসআলাঃ
আর যদি পূর্ণ দশ দিনে হায়েযের রক্ত বন্ধ হয় এবং এমন সময় রক্ত বন্ধ হয় যে, গোছল করার সময় নাই, মাত্র একবার “আল্লাহু আকবর" বলার সময় আছে, তবুও ঐ ওয়াক্তের কাযা পড়িতে হইবে।

(১২) মাসআলাঃ
রমযান শরীফে দিনের বেলায় যদি হায়েযের রক্ত বন্ধ হয়, তবে তৎক্ষণাৎ গোছল করিবে এবং নামাযের ওয়াক্ত হইলে নামায পড়িবে এবং যদিও এই দিনের রোযা তাহার হইবে না কিন্তু দিনের অবশিষ্ট সময়ে তাহার জন্য কিছুই খাওয়া পেওয়া দুরুস্ত হইবে না, অন্যান্য রোযাদারের মত তাহারও ইফতারের সময় পর্যন্ত না খাইয়া থাকা ওয়াজিব হইবে। পরে কিন্তু এই দিনেরও কাযা রোযা রাখিতে হইবে।

(১৩) মাসআলাঃ
যদি পূর্ণ দশ দিন হায়েয আসার পর রাত্রে পাক হয়, তবে যদি এতটুকু রাত বাকী থাকে যে, তাহাতে একবার “আল্লাহু আকবরও” বলিতে পারে না, তবুও সকালে রোযা ওয়াজিব হইবে। আর যদি দশ দিনের কম হায়েয আসে এবং এতটুকু রাত্র বাকী থাকে যে, তৎক্ষণাৎ গোছল করিতে পারে কিন্তু গোছলের পর একবারও "আল্লাহু আকবর" বলিতে পারে না, তবুও সকাল হইতে রোযা ওয়াজিব হইবে। এমতাবস্থায় গোছল না করিলেও রোযার নিয়্যত করিবে। রোযা ছাড়িবে না, সকালে গোছল করিবে। আর যদি রাত্রে ইহা হইতে কম থাকে যে, গোছলও করিতে পারে না, তবে সকালে রোযা রাখা জায়েয নহে। কিন্তু দিনে কোনকিছু পানাহার করাও দুরুস্ত নাই বরং দিনে রোযাদারের মত থাকিবে, পরে উহার ক্বাযা রাখিবে।

(১৪) মাসআলাঃ
ছিদ্রের বাহিরে যতক্ষণ পর্যন্ত রক্ত না আসিবে, ততক্ষণ পর্যন্ত হায়েয ধরা যাইবে না। অতএব, যদি কোন মেয়েলোক ছিদ্রের ভিতর রুই, তুলার গদ্দি রাখিয়া রক্তকে ছিদ্রের মধ্যেই বন্ধ করিয়া রাখিয়া থাকে, তবে যতক্ষণ পর্যন্ত রক্ত বাহিরে না আসিবে বা গন্দি টানিয়া বাহির না করিবে, ততক্ষণ পর্যন্ত হায়েয ধরা হইবে না। যখন রক্তের চিহ্ন বাহিরের চামড়া পর্যন্ত আসিবে বা তুলা টানিয়া বাহির করিবে, তখন হইতে হায়েয হিসাব হইবে।

(১৫) মাসআলাঃ
কোন মেয়েলোক এশার নামায পড়িয়া পাক অবস্থায় ছিদ্রের ভিতর রুই, তুলার গদি রাখিয়া ঘুমাইয়া পড়িয়াছে। সকালে ঘুম হইতে উঠিয়া যদি তূলার মধ্যে রক্তের চিহ্ণ দেখে, তবে যে সময় রক্তের চিহ্ণ দেখিবে, সেই সময় হইতেই হায়েয ধরা হইবে—ঘুমের সময় হইতে নহে।
 

ইস্তেহাযার হুকুম
(১) মাসআলাঃ
ইস্তেহাযার কারণে নামায ও রোযা কোনটাই ছাড়িতে পরিবে না। ইচ্ছা করিলে স্বামী-সহবাস করিতে পারিবে। অবশ্য সত্বর ওযু করিয়া নামায পড়িতে হইবে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য : নাক দিয়া রক্ত প্রবাহিত হইতে থাকিলে বা হামেশা পেশাব, পায়খানা, রক্ত বা বায়ু জারী থাকিলে যেরূপ মাযূরের হুকুম হয়, তদ্রূপ এস্তেহাযার রক্তের কারণেও মাযূরের হুকুম হইবে।


নেফাস
(১) মাসআলাঃ
সন্তান প্রসব হওয়ার পর পেশাবের রাস্তা দিয়া যে রক্তস্রাব হয়, তাহাকে নেফাস বলে। নেফাসের মুদ্দত ঊর্ধ্ব সংখ্যায় চল্লিশ দিন। চল্লিশ দিন অপেক্ষা বেশী নেফাস হইতে পারে না। কমের কোন সীমা নাই। যদি কাহারও এক দুই ঘন্টা মাত্র রক্তস্রাব হইয়া রক্ত বন্ধ হইয়া যায়, তবে মাত্র ঐ এক দুই ঘণ্টাকেই নেফাস বলা হইবে।

(২) মাসআলাঃ
যদি কাহারও প্রসবের পর রক্তস্রাব মাত্রই না হয়, তবুও তাহার উপর গোছল ফরয হইবে।

(৩) মাসআলাঃ
প্রসবের সময় সন্তানের অর্ধেকের বেশী বাহির হওয়ার পর যে রক্তস্রাব হইবে উহা নেফাস হইবে। আর যদি অর্ধেকের কম বাহির হওয়ার পর রক্তস্রাব হয়, তবে উহা ইস্তেহাযা হইবে। অতএব, যদি হুঁশ থাকে, তবে নামাযের ওয়াক্ত হইলে ঐ অবস্থায়ও ওযু করিয়া নামায পড়িতে হইবে। নামায না পড়িলে গোনাহ্গার হইবে; এমন কি ইশারায় হইলেও নামায পড়িতে হইবে। খবরদার! হুঁশ থাকিয়া নামায কাযা করিবে না। অবশ্য যদি নামায পড়িলে সন্তানের জীবন নাশ হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সন্তানের জীবন রক্ষার্থে নামায ছাড়িয়া দিবে (ঐ সময় ইস্তেগফার পড়িবে)।

(৪) মাসআলাঃ
যদি কোন মেয়েলোকের গর্ভপাত হয় এবং সন্তানের এক আধটা অঙ্গ পরিষ্কার দেখা যায়, তবে গর্ভপাতের পর যে রক্তস্রাব হইবে উহাকে নেফাস ধরিতে হইবে। আর যদি সন্তানের মাত্রও আকৃতি না দেখা যায়, শুধু মাত্র একটা মাংসপিণ্ড দেখা যায়, তবে দেখিতে হইবে যে, ইতিপূর্বে অন্ততঃপক্ষে পনের দিন পাক ছিল কি না এবং রক্তস্রাব কমপক্ষে তিন দিন তিন রাত জারী থাকে কি না। যদি এরূপ হয়, তবে উহাকে হায়েয গণনা করিয়া হায়েযের কয় দিন নামায-রোযা পরিত্যাগ করিতে হইবে। আর যদি এইরূপ না হয়, তবে ঐ রক্তস্রাবকে ইস্তেহাযা ধরিতে হইবে।

(৫)মাসআলাঃ
যদি কোন মেয়েলোকের প্রসবান্তে চল্লিশ দিনের বেশী রক্তস্রাব হয় এবং তাহার ইহাই প্রথম প্রসব হয়, তবে চল্লিশ দিন পর্যন্ত নেফাস ধরিতে হইবে। চল্লিশ দিন যখন পুরা হইবে, তখন গোছল করিয়া নামায পড়িতে হইবে। আর যদি ইতিপূর্বে আরও সন্তান প্রসব হইয়া থাকে এবং তাহার নেফাসের মুদ্দতের কোন নিয়ম থাকে, তবে নিয়মের কয়দিন নেফাস হইবে, বেশী কয়দিন ইস্তেহাযা হইবে।

(৬)মাসআলাঃ
কোন মেয়েলোকের নিয়ম ছিল, প্রসবান্তে ত্রিশ দিন রক্তস্রাব হওয়ার, কিন্তু একবার ত্রিশ দিন চলিয়া যাওয়ার পরও রক্ত বন্ধ হইল না; তাহা হইলে এই মেয়েলোক এখন গোছল করিবে না, অপেক্ষা করিবে। যদি পূর্ণ চল্লিশ দিনের শেষে বা চল্লিশ দিনের ভিতর রক্ত বন্ধ হয়, তবে সব কয়দিনই নেফাসের মধ্যে গণ্য হইবে। আর যদি চল্লিশ দিনের বেশী রক্তস্রাব জারী থাকে, তবে ত্রিশ দিন নেফাসের মধ্যে গণ্য হইবে; অবশিষ্ট কয় দিন ইস্তেহাযা। চল্লিশ দিনের পর গোছল করিবে এবং নামায পড়িবে। ত্রিশ দিনের পরের দশ দিনের নামায কাযা পড়িবে।

(৭)মাসআলাঃ
যদি চল্লিশ দিনের পূর্বেই নেফাসের রক্তস্রাব বন্ধ হয়, তবে স্রাব বন্ধ হওয়া মাত্রই গোছল করিয়া নামায পড়িতে হইবে। গোছল করিলে যদি স্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা প্রবল হয়, তবে তায়াম্মুম করিয়া নামায পড়িবে। খবরদার! এক ওয়াক্ত নামাযও কাযা হইতে দিবে না।

(৮)মাসআলাঃ
নেফাসের মধ্যেও হায়েযের মত নামায একেবারে মাফ। কিন্তু রোযার কাযা রাখিতে হইবে এবং নামায, রোযা ও স্বামী-স্ত্রীর মিলন সবই হারাম।

(৯) মাসআলাঃ
কোন মেয়েলোকের যদি ছয় মাসের ভিতরে আগে পরে দুইটি সন্তান প্রসব হয়, যেমন প্রথম সন্তান প্রসব হওয়ার দুই চারি দিন পরে বা দশ বিশ দিন পরে যদি দ্বিতীয় সন্তান প্রসব হয়, তবে প্রথম সন্তান প্রসবের পর হইতেই নেফাসের মুদ্দত গণনা করিতে হইবে—দ্বিতীয় সন্তান হইতে নহে।

নেফাস ও হায়েয ইত্যাদির আকাম
(১) মাসআলাঃ
যে মেয়েলোক হায়েয বা নেফাসের অবস্থায় আছে, অথবা যাহার উপর গোছল ফরয হইয়াছে, তাহার জন্য মসজিদে প্রবেশ করা, কা'বা শরীফের তওয়াফ করা, কোরআন শরীফ পাঠ করা এবং স্পর্শ করা দুরুস্ত নাই, অবশ্য কোরআন শরীফ যদি বস্তোনির ভিতর থাকে অথবা রুমাল দ্বারা পেঁচানো থাকে, তবে জুয়দানের ও রুমালের উপর দিয়া ধরা জায়েয আছে; কিন্তু চামড়া, কাপড় বা কাগজ যদি কোরআন শরীফের সঙ্গে সেলাই করা না থাকে, তবে তাহা দ্বারা উপরোক্ত অবস্থায় কোরআন শরীফ স্পর্শ করা জায়েয আছে।

(২) মাসআলাঃ
যাহার ওযূ নাই তাহার জন্যও কোরআন শরীফ স্পর্শ করা জায়েয নহে, অবশ্য পড়াতে বাধা নাই ।

(৩) মাসআলাঃ
যদি টাকা পয়সা (বা নোটের মধ্যে) অথবা তরী, তাবীয বা যে-কোন পাতা বা কাগজের মধ্যে কোরআনের আয়াত লেখা থাকে, তবে তাহাও উপরোক্ত অবস্থাসমূহে অর্থাৎ, বিনা ওযূতে, হায়েয নেফাস এবং জানাবাতের অবস্থায় স্পর্শ করা জায়েয নহে। অবশ্য যদি এ সমস্ত জিনিস কোন থলির মধ্যে বা অন্য কোন পাত্রের মধ্যে থাকে, তবে সে থলি বা পাত্র ধরিতে বা উঠাইতে পারে।

(৪)মাসআলাঃ
(উপরোক্ত অবস্থাসমূহে পরনের কাপড়ের আঁচল দিয়া বা গায়ের জামার আস্তিন বা দামান দিয়াও কোরআন শরীফ স্পর্শ করা জায়েয নহে। )
অবশ্য যে কাপড়, চাদর, রুমাল উড়নী বা জামা পরিধানে নাই—পৃথক আছে, তাহা দ্বারা কোরআন শরীফ ধরা জায়েয আছে।

(৫) মাসআলাঃ
যদি পূর্ণ আয়াত না পড়ে; বরং আয়াতের সামান্য শব্দ অথবা অর্ধেক আয়াত পড়ে, তবে দুরুস্ত আছে, কিন্তু ঐ অর্ধেক আয়াত এত বড় না হওয়া চাই যে, ছোট একটি আয়াতের সামান হইয়া যায়।

(৬)মাসআলাঃ
হায়েয, নেফাস ও জানাবাত অবস্থায় আল্লাহর কাছে দো'আ করা জায়েয আছে। অতএব, কোরআনের যে আয়াতের মধ্যে দো'আ (প্রার্থনা) আছে সেই আয়াত যদি কেহ তেলাওয়াতরূপে না পড়িয়া দো'আ রূপে পড়িয়া তদ্দ্বারা দোআ চায়, তবে তাহা জায়েয আছে। যেমন, যদি কেহ উপরোক্ত অবস্থায় অর্থের দিকে লক্ষ্য করিয়া—
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ .
اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ
প্রার্থনারূপে পড়ে বা বা নারী দো' আ রূপে পড়ে, বা মোনাজাত রূপে পড়ে, তবে তাহা জায়েয আছে।

(৭) মাসআলাঃ
উক্ত অবস্থায় দো আয়ে কুনুত পড়া জায়েয আছে ।

(৮) মাসআলাঃ
যদি কোন মেয়েলোক মেয়েদেরে কোরআন শরীফ পড়ায়, তবে এমতাবস্থায় বানান করান পুরুস্ত আছে, মিলাইয়া পড়াইবার সময় পূর্ণ আয়াত পড়িবে না বরং একটা কিংবা দুইটা দুইটা শব্দের পর শ্বাস ছাড়িয়া দিবে এবং কাটিয়া কাটিয়া আয়াতকে মিলাইয়া বলিয়া দিবে।

(৯) মাসআলাঃ
উপরোক্ত অবস্থাসমূহে কলেমা শরীফ পড়া, দুরূদ শরীফ পড়া, অল্লাহ্র যেকের করা, এস্তেগফার পড়া, তসবীহ্ পড়া অর্থাৎ, সোবহানাল্লাহ্, আল্হামদু লিল্লাহ্, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবর, লা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আযীম ইত্যাদি পড়া জায়েয আছে।

(১০) মাসআলাঃ
হায়েযের অবস্থায়ও ওযু করিয়া পাক জায়গায় কেবলামুখী হইয়া বসিয়া নামাযের সময়টুকু আল্লাহর যেকেরে মশগুল থাকা মোস্তাহাব। যেন নামাযের অভ্যাস ছুটিয়া না যায়, পাক হওয়ার পর নামায পড়িতে ঘাবড়াইয়া না যায়।

(১১) মাসআলাঃ
কোন মেয়েলোকের উপর গোছল ফরয হইয়াছিল। গোছল না করিতেই হায়ে আসিয়া গেল। এই অবস্থায় তাহার আর গোছল করার দরকার নাই, যখন হায়েয হইতে পাক হইবে, তখন এক গোছলেই উভয় গোছল আদায় হইয়া যাইবে।

Please log in or register to answer this question.

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...