وَعَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِيِ عَمَّارٍ قَالَ: سَأَلت جابرَ بنَ عبدِ اللَّهِ عَنِ الضَّبُعِ أَصَيْدٌ هِيَ؟ فَقَالَ: نَعَمْ فَقُلْتُ: أَيُؤْكَلُ؟ فَقَالَ: نَعَمْ فَقُلْتُ: سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ: نَعَمْ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ وَالشَّافِعِيُّ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حديثٌ حسنٌ صَحِيح
’আবদুর রহমান ইবনু আবূ ’আম্মার (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনু ’আব্দুল্লাহ আল আনসারী (রাঃ)-কে যবু’ (অর্থাৎ- ধারালো নখ ও হিংস্র দাঁতবিশিষ্ট হায়েনা, বেজি, কাঠবিড়ালী এবং মরু অঞ্চলের হিংস্র প্রাণী) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, এটা শিকারী প্রাণী কিনা? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তবে যবু’ কি খাওয়া যায়? তিনি বললেন, হ্যাঁ। এরপর আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি এটা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ।
(আবূ দাঊদ ৩৮০১, নাসায়ী ২৮৩৬, তিরমিযী ৮৫১, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক্ব ৮৬৮২, আহমাদ ১৪৪২৫, সহীহ ইবনু খুযায়মাহ্ ২৬৪৫, দারাকুত্বনী ২৫৪৪, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১৬৬২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৯৮৭২।)
ব্যাখ্যা: (الضَّبُعُ) ‘‘হায়েনা (গোরখোদা)’’ (أَصَيْدٌ هِىَ) ‘‘তা কি শিকারী পশু’’। অর্থাৎ- মুহরিম তা হত্যা করলে কি ফিদিয়া দিতে হবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তা হত্যা করলে ফিদিয়া দিতে হবে।
আবূ দাঊদ-এর বর্ণনায় আছে- (وَِيُجْعَلُ فِيْهِ كَبْشٌ إِذَا صَادَهُ الْمُحْرِمُ) ‘‘মুহরিম তা শিকার করলে তাকে ফিদিয়া হিসেবে একটি মেষ দিতে হবে।
হাদীসটি সুস্পষ্ট দলীল যে, হায়েনা হত্যাকারী মুহরিমকে ফিদিয়া দিতে হবে। এ বিষয়ে চার ইমামের মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে। তবে ইমাম মালিক, শাফি‘ঈ ও আহমাদ-এর মতে তাকে একটি মেষ অথবা ছাগল দিতে হবে। পক্ষান্তরে ইমাম আবূ হানীফার মতে তার মূল্য দেয়া ওয়াজিব। হিদায়াতে উল্লেখ আছে যে, ইমাম আবূ হানীফা ও আবূ ইউসুফ-এর মতে যে অঞ্চলে শিকারী প্রাণী হত্যা করা হয় সে এলাকায় সেটার মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।
অতএব দু’জন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি সেটার মূল্য নির্ধারণ করবে। অতঃপর ইচ্ছা করলে সে ঐ মূল্য দ্বারা কোন পশু ক্রয় করবে যদি তা দ্বারা পশু ক্রয় করা যায় অথবা খাদ্য-দ্রব্য ক্রয় করে তা সাদাকা করবে অথবা তিনদিন সওম পালন করবে।
(أَيُؤْكَلُ) ‘‘তা কি খাওয়া যাবে?’’ তিরমিযী’র বর্ণনায় আছে- (قلت: آكلها؟) ‘‘আমি জিজ্ঞেস করলাম আমি কি তা খাবো?’’ (قال : نعم) ‘‘তিনি বললেনঃ হ্যাঁ’’।
অত্র হাদীসে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, হায়েনা খাওয়া হালাল। ইমাম শাফি‘ঈ ও ইমাম আহমাদ-এর অভিমত এটাই। ইমাম শাফি‘ঈ বলেনঃ লোকেরা তা খেতো এবং কোন প্রকার বাধা ব্যতীত সাফা-মারওয়ার মাঝে তা বেচাকেনা করত ‘আরবদের নিকট তা পছন্দনীয়।
পক্ষান্তরে ইমাম আবূ হানীফা ও ইমাম মালিক-এর মতে তা হারাম। তাদের দলীল সে হাদীস যাতে আছে যে, প্রত্যেক কর্তন দাঁতওয়ালা হিংস্র প্রাণী হারাম এবং খুযায়মাহ্ ইবনু জায বর্ণিত হাদীস।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كُلُّ ذِي نَابٍ منَ السِّباعِ فأكلُه حرامٌ» . رَوَاهُ مُسلم
আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তীক্ষ্ণ দাঁতধারী যে কোন হিংস্র জন্তু খাওয়া হারাম।
(সহীহ মুসলিম (১৯৩৩)-১৫, সুনান নাসায়ী ৪৩২৪, মুসনাদে আহমাদ ইবনু হাম্বাল ৭২২৩, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ৪৭৫, সহীহুল জামি‘ ৪৫২৫, ইবনু মাজাহ ৩২৩৩, ইরওয়া ২৪৮৬, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯৮৩৭।)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এক্ষেত্রে ধারালো নখ ও হিংস্র দাঁতবিশিষ্ট হায়েনা, বেজি, কাঠবিড়ালী এবং মরু অঞ্চলের হিংস্র প্রাণী উদ্দেশ্য।