আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
127 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (13 points)
মেয়েরা কী পরিপূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করে নিজের বিজনেসের জন্য লাইভ করতে পারবে? এক্ষেত্রে তার কন্ঠ শোনা যাচ্ছে। এতে কী হারাম হবে? নবীজি (সাঃ) এর যুগে নারীরা কেউ কেউ ব্যবসা করতেন। এক্ষেত্রে তাদেরও তো প্রয়োজনে কথা বলতে হতো। এবিষয়ে জানতে চাই

1 Answer

0 votes
by (575,580 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

প্রথমেই আমরা একটি মাসয়ালা জেনে নেইঃ
শরীয়তের বিধান মতে  নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত ইসলামে যেমন ফরজ, পর্দা  পালন করাও অনুরুপ একটি ফরজ বিধান। সুতরাং বিনা ওজরে পর্দা লঙ্গন হয় এ ধরণের সকল প্রকার কাজই হারাম। অনলাইনে মহিলাদের ছবি আপলোড দিলে হাজারো পুরুষ সেই ছবি  দেখে। বেগানা মহিলাদেরকে দেখা যেমন নাজায়িজ তেমনি তাদের ছবি দেখাও নাজায়িজ, ইন্টারনেটের ছবি হোক অথবা অন্যকোন ছবি হোক সর্বাবস্থায় তাদের ছবি দেখা নাজায়েজ। 
,
ফটো বা ছবি দেখার দ্বারা পাপের পাশাপাশী তা হ্রদয় যন্ত্রনার কারণ হয়ে দাড়ায়। উপরন্তুু দেখা ও কল্পনার দ্বারা চোখের যিনার গুনাহ হতে থাকে। তাই মহিলাদের ছবি অনলাইনে  আপলোড করা, দেখা কোন মতেই জায়িজ নয়।
ইন্টারনেটে  মহিলাদের ছবি আপলোড করলে যত বেগানা পুরুষ আপলোডকৃত ছবি দেখবে তাদের সকলের সমপরিমাণ গোনাহ আপলোডকারীর আমল নামায় যোগ হবে।
[প্রমাণ : ফাতাওয়ায়ে রাহীমিয়া-৪/১০৬, কিফায়াতুল মুফতী ৫/৩৮৮, হিদায়া ৪,/৪৫৮, মিশকাত ২ /২৮০, সুরা নূর ১৮ /৩০]
.
আমাদের ইন্টারনেটের জগতকে দেখতে হবে অফলাইনের জীবনের অবস্থা অনুপাতে। যেমন অফলাইনে বেগানা নারীদের সাথে অহেতুক কথা বলা, তাদের সাথে দেখা করা, তাদের ছবি দেখা হারাম। তেমনি অনলাইনের বিধানও তা’ই হবে।

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِن

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩।

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত
فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُزِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ

রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}
.
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ مُوَرِّقٍ، عَنْ أَبِي الأَحْوَصِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ فَإِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .

আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মহিলারা হচ্ছে আওরাত (আবরণীয় বস্তু)। সে বাইরে বের হলে শাইতান তার দিকে চোখ তুলে তাকায়। — সহীহ, তিরমিজি ১১৭৩ মিশকাত (৩১০৯), ইরওয়া (২৭৩), তা’লীক আলা ইবনি খুযাইমা (১৬৮৫)
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
নারীদের কন্ঠ যেহেতু পর্দার অন্তর্ভুক্ত, তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এভাবে নিজের বিজনেসের জন্য মেয়েরা লাইভ করতে পারবেনা।

কারন সেই ভিডিও পুরুষ মানুষ দেখবে,শুনবে।
যাহা কোনোভাবেই জায়েজ নেই।   

এতে গুনাহের সহযোগিতা পাওয়া যাওয়ায় এটি জায়েজ হবেনা।

এ সংক্রান্ত আরো জানুনঃ- 

নবীজি (সাঃ) এর যুগে নারীরা কেউ কেউ ব্যবসা করতেন। এক্ষেত্রে তারা নিজের মাহরাম পুরুষকে দিয়ে ক্রেতার সাথে কথা বলাতেন।

এমন সুযোগ কারো না থাকলে সেক্ষেত্রে পরিপূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করে ক্রয় বিক্রয়ের কথা বলতেন।

তবে এটিকে যুক্তি হিসেবে দাড় করিয়ে মেয়েদের বিজনেসের জন্য লাইভ জায়েজ হবেনা 
কেননা সরাসরি পুরুষ মানুষের সাথে কথা বললে শুধু প্রয়োজনীয় কথাই হতো,অপ্রয়োজনীয় নয়। শুধু ক্রেতার সাথেই কথা হতো,তার কন্ঠস্বর পুরো দুনিয়া শুনতোনা,শুধু ক্রেতা/বিক্রেতা শুনতে পারতো।

মেয়েদের বিজনেসের জন্য লাইভ করলে সেক্ষেত্রে অনেক অপ্রয়োজনীয় কথাও হয়,তার কন্ঠস্বর শুধু ক্রেতা নয়, সকলেই শুনতে পায়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...