আসসালামু আলাইকুম, ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়া তো ফরজে কেফায়া আর পর্যাপ্ত পরিমাণে ডাক্তার তো রয়েছেই। তাহলে একজন দ্বীনদ্বারের জন্য কীভাবে জায়েজ হয় এসব পেশায় যুক্ত হওয়ার জন্য সহশিক্ষায় জড়ানো কিংবা বেদ্বীন পরিবেশে জ্ঞান অর্জন করা? সেখানে তো প্রতি মুহূর্তে পর্দা নষ্ট হয়। চোখ, অন্তর, জবান, চেহারা কিছুরই হেফাজত করা সম্ভব নয়। চোখের হায়া দিনদিন কমে যায়। এমনকি পরীক্ষায় পাশ করার জন্য গায়রে মাহরামের গুপ্তাঙ্গের পর্যন্ত চিকিৎসা করতে হয়। একমাত্র আমি ছাড়া যদি অন্য কেউ না থাকে আর তার প্রাণ সংকটময় হয় তাহলে তখনই না তার সতর আমার জন্য চিকিৎসা করা জায়েজ। তা নাহলে শুধু পরীক্ষায় পাশ করার জন্য কি এটা জায়েজ হয়????
ছেলেমেয়ে একসাথে ঘেষে সার্জারি দেখা, অপারেশন থিয়াটারে পুরুষদের সাথে সার্জারি করা, পরীক্ষায় পাশ করতে গায়রে মাহরাম রোগীকে ধরে চিকিৎসা করা, এডমিশন পরীক্ষা বা ভাইভাতে মুখ খুলতে বাধ্য করা, গায়রে মাহরামের সাথে প্রতিনিয়ত কথা বলা, পড়ালেখায় শিরকি বিষয় থাকা, শিক্ষকদের বিভিন্ন ফেতনাময়ী কথাবার্তা এসব কিছু তো হারামের পর্যায়েই পড়ে। তাহলে এই পরিবেশে গিয়ে কি এই পেশায় যুক্ত হওয়া হালাল হয় আদৌ??? একটা হালাল পেশায় যুক্ত হয়ে সমাজে দাওয়াহ ছড়াতো গিয়ে কি এতগুলো হারামকে দেখেও না দেখার ভান করা যাবে? আমি কি একা সেই পরিবেশে ইমান নিয়ে টিকে থাকতে পারব? আমি যদিও সর্বোচ্চ পর্দাবৃত হয়ে থাকার চেষ্টা করি না কেন কোনো গায়রে মাহরামের যদি আমার দিকে তাকিয়ে কোনো খাহেশাত আসে তাহলে সেটার গুনাহও তো আমার কাঁধে নিতে হবে। আর সেই পরিবেশের তাহসীর তো আমার উপর পড়বেই। আমি নিজে ইমান নিয়ে শেষ পর্যন্ত ফিরতে পারবো কিনা তাও জানিনা। আগে তো নিজেকে বাঁচাব, অতঃপর পরিবার, পরে না হয় সমাজ। কিন্তু অন্যের ফিকিরে কি নিজেকে আগুনে ফেলে দেয়া ঠিক হবে? আমি সেই পরিবেশে এত গুনাহতে জর্জরিত থাকলে কি আল্লাহ আমার থেকে দ্বীনের খেদমত নিবেন? কিংবা আমাকে হেদায়েতের পথে টিকিয়ে রাখবেন? তাহলে দুনিয়াবি পড়ালেখা করতে গিয়ে কি এসব হারামে শিথিলতা পাওয়া যাবে??????
এখন নাকি পন্থা সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এমন দ্বীনি প্রতিষ্ঠান তৈরি করা যেখানে দুনিয়াবি পড়ালেখা কোনো ফেতনা ছাড়াই করা যাবে। আর যারা কিনা সমাজের উঁচু পদে আছেন তাদের দাওয়াহ দিয়ে দ্বীনের পথে ফেরানোর চেষ্টা করা। আর যারা কিনা ফতোয়া দেন এসব জায়েজ তাদের নসল তো আর ওইদিকে যাচ্ছে না। ওরা তো মাদ্রাসাতেই পড়ছে। তাহলে দাওয়াহর নিয়তে কেন ওলামাদের সন্তানেরা স্কুল-কলেজ-ভার্সিটিতে পড়ছে না? সিস্টেমের ভিতরে ঢুকে তো আর সিস্টেম চেঞ্জ সম্ভব নয়। সমাধান তো আলেমা হওয়ার পর জেনারেল লাইনের বিভিন্ন বিষয়ের উপর ইসলামি পদ্ধতি মেনে নানা উৎস থেকে জ্ঞানার্জন করে নিজেদের দক্ষতা বাড়ানো আর পরে দাওয়াহ দেয়া। কিন্তু আগে তো পরিবার, পরে প্রতিবেশী আর পরেই না সমাজ।
আমার মনে শুধু এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। আমি কি মাদ্রাসার পথ বেছে নিব নাকি জেনারেল লাইন। আমার তো মনে হয়েছে জেনারেলের পথে পা বাড়ানো ঠিক হবে না। কিন্তু আপনাদের এসব পড়াশোনা জায়েজের ফতোয়া আমাকে জেনারেল লাইনের প্রতি একটা টান অনুভব করাচ্ছে। তাই আমার এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আমাকে এখন কী করা উচিত একটু পরামর্শ দেন শায়খ।