বিয়ে ও নামাজ বিষয়ক

Question

আস্সালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওবারাকাতুহ উস্তাদ। আমার ২টি প্রশ্ন  :

১)উস্তাদ আমার বয়স ২১ বছর। আমি অনেক দিন ধরে আমার বিয়ের জন্য চেষ্টা করছি। আম্মুকে দিয়ে কিছুদিনআগে আব্বুর কাছে বলিয়েছি।কিন্তু অনেক দিন ধরে খেয়াল করছি আমার আব্বু বিষয়টা একদমই গুরুত্ব দিচ্ছেনা। অনেক বার অনেক কে দিয়ে বলিয়েছি, দেখছি বলে আর কিছু করছেনা। পূর্বে আমাদের জীবনে এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস এ আব্বু অনেক গাফেলতি করছিলো  দেখবো দেখবো বলে,তাই অনেক ক্ষতি ও হয়েছে।  উস্তাদ আমার বাবা পরিবার এর ব্যাপারে অনেকটা বেখেয়াল বলতে গেলে।তাই আমার অনেক ভয় হয় এই বিষয় এ। এখন আমার আব্বুকে বিষয়টা কিভাবে বুঝাবো উস্তাদ দ্বীন নিয়ে চলা অনেক কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।।

২)উস্তাদ আমি ডক্টর জাকির নায়েক এর ভিডিও দেখেছিলাম সেখানে উনি বলেছিলেন ছেলে-মেয়েদের নামাজ এক। তাই আমি সেভাবেই পড়তাম। ক্লাস করে জানতে পারলাম পার্থক্য আছে। এরপর থেকে মেয়েদের মতো পড়ছি। কিন্তু আমি নামাজ পরে শান্তি পাচ্ছি না। কিন্তু হানাফি ফিকহ অনুযায়ী তো নামাজে পার্থক্য আছে আর আমরা তো হানাফি ফিকহ অনুসরণ করি। এক্ষেত্রে যদি হানাফি ফিকহ অনুযাই সব আমল করি কিন্তু নামাজ টা যদি শুধু ছেলেদের মতো পড়ি তাহলে কি আমার নামাজ কবুল হবে?

Answer 1

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

আলহামদুলিল্লাহ!

(১) বাবা কে বিয়ের জরুরত সম্পর্কে বুঝাতে থাকুন। আত্মীয় স্বজনদের মাধ্যমে বুঝানোর চেষ্টা করুন। এবং আল্লাহর কাছে দু'আ করতে থাকুন। আল্লাহ অবশ্যই আপনার দু'আকে কবুল করবেন।

(২) তাবেয়ী ইয়াযীদ বিন আবী হাবীব রহ. বলেন,

ﺃﺧﺒﺮﻧﺎﻩ ﺃﺑﻮ ﺑﻜﺮ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﻣﺤﻤﺪ ﺃﻧﺒﺄ ﺃﺑﻮ ﺍﻟﺤﺴﻴﻦ ﺍﻟﻔﺴﻮﻱ ﺛﻨﺎ ﺃﺑﻮ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻠﺆﻟﺆﻱ ﺛﻨﺎ ﺃﺑﻮ ﺩﺍﻭﺩ ﺛﻨﺎ ﺳﻠﻴﻤﺎﻥ ﺑﻦ ﺩﺍﻭﺩ ﺃﻧﺒﺄ ﺑﻦ ﻭﻫﺐ ﺃﻧﺒﺄ ﺣﻴﻮﺓ ﺑﻦ ﺷﺮﻳﺢ ﻋﻦ ﺳﺎﻟﻢ ﺑﻦ ﻏﻴﻼﻥ ﻋﻦ ﻳﺰﻳﺪ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺣﺒﻴﺐ : ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻣﺮ ﻋﻠﻰ ﺍﻣﺮﺃﺗﻴﻦ ﺗﺼﻠﻴﺎﻥ ﻓﻘﺎﻝ ﺇﺫﺍ ﺳﺠﺪﺗﻤﺎ ﻓﻀﻤﺎ ﺑﻌﺾ ﺍﻟﻠﺤﻢ ﺇﻟﻰ ﺍﻷﺭﺽ ﻓﺈﻥ ﺍﻟﻤﺮﺃﺓ ﻟﻴﺴﺖ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ ﻛﺎﻟﺮﺟﻞ ( ﺳﻨﻦ ﺍﻟﻜﺒﺮﻯ ﻟﻠﺒﻴﻬﻘﻰ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺤﻴﺾ،(ﺑﺎﺏ ﻣﺎ ﻳﺴﺘﺤﺐ ﻟﻠﻤﺮﺃﺓ ﻣﻦ ﺗﺮﻙ ﺍﻟﺘﺠﺎﻓﻲ ﻓﻲ ﺍﻟﺮﻛﻮﻉ ﻭﺍﻟﺴﺠﻮﺩ، ﺭﻗﻢ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ 3016- )

একবার রাসূল সা. দুই মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাদেরকে (সংশোধনের উদ্দেশ্য) বললেন-“যখন সেজদা করবে তখন শরীর যমীনের সাথে মিলিয়ে দিবে। কেননা মহিলারা এ ক্ষেত্রে পুরুষদের মত নয়। (সুনানুল বায়হাকী, হাদিস নং-৩০১৬, কিতাবুল মারাসিল লি ইমাম আবু দাউদ-৫৫, হাদিস নং-৮০)

প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস আলেম নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ “আওনুল বারী” (১/৫২০) তে লিখেছেন-“উল্লেখিত হাদিসটি সকল ইমামদের উসুল অনুযায়ী দলীল হিসেবে পেশ করায় যোগ্য”।

মুহাদ্দিস মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল আমীর ইয়ামানী “সুবুলুস সালাম” শরহু বুলুগিল মারাম” গ্রন্থে (১/৩৫১-৩৫২) এই হাদিসকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করে পুরুষ ও মহিলার সেজদার পার্থক্য করেছেন।

নারী পুরুষের নামাযের পার্থক্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- 498 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

হানাফি মাযহাবকে অনুসরণ করে ছেলেদের মত নামায পড়া যাবে না। যেই মাযহাবকে ফলো করবেন, সর্বক্ষেত্রে সেই মাযহাবকেই আপনার মানতে হবে। নিজ চাহিদা বা সুবিধা অনুযায়ী কোনো মাযহাবকে ফলো করা যাবে না।