আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
111 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ
একটু বড় হওয়ার জন্য মাফ চেয়ে নিচ্ছি।
আমি ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়তাম। ২ জুন থেকে ফাইনাল শুরু হয়েছে। কিন্তু তার আগেই আমি পড়াশোনা ছেড়েছি। কারণ অনেক। অন্যতম হলো আমার পক্ষে দ্বীন ও দুনিয়া একসাথে মেইনটেইন করা সম্ভব হচ্ছিলোনা। বারবার শয়তানের ফাঁদে পরার মতো অবস্থা। তো বাসায় এগুলো জানানোর পর স্বাভাবিক ভাবেই আম্মু অনেক রেগে ছিলো। আব্বু রাজি হয়েছিলো। তো আমি তাদের আগেই বলেছিলাম যে আমার দাওয়াতি কাজ করার ইচ্ছা আছে।‌ আমি আমার বাবাকে বলেছিলাম যে আমি ইসলামের গভীর জ্ঞান অর্জন করবো আর দাওয়াতি কাজ করবো ইন শা আল্লাহ্। আব্বু রাজি বলা যায়। আর আম্মু এখন স্বাভাবিক হয়েছে, কথা বলছে। কিন্তু চাইনা আমি কোনো দাওয়াতি কাজ করি। তো গতকাল আব্বু একটা স্বপ্ন দেখেছিলেন। দেখলেন "একটা ঝুলন্ত বাঁশের ব্রীজ। সামনে আমার আব্বু পাড়ি দিচ্ছেন আর কিছুটা পিছনে আমি। হঠাৎ আমার জুতার ফিতা খুলে গেলে আমি তা পরতে শুরু করি। এরপর হঠাৎ করে ব্রীজের আমার পিছনে দিকে রশি কিংবা কিছু একটা ছিঁড়ে যায়। তখন ব্রীজটা আমার দিকে হেলে পরে। আমার বাবা ব্রীজ অলরেডি প্রায় ক্রস করে ফেলেছেন। আর আমি পেছনের দিকে যেতে যেতে নিচে পরে যায়। নিচে অনেক গভীরে অনেক। এইটা দেখে আমার আব্বু আমাকে চিল্লানো শুরু করে অনেক কান্নাকাটি করতে থাকে। ঐখানে অনেক মানুষ জড়ো হয়। আমি অনেক আহত হয়। (আহত হয়েছি কিনা নাকি নিহত সেটা আব্বু সিউর করে বলেনি)। পরে আমাকে ঐখানে থেকে হসপিটাল নিয়ে কিংবা অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়।"

এখন আমার প্রশ্ন: ১) আমার আব্বু অনুমতি দিলেও দাওয়াহ এর জন্য আম্মু দিতে চাচ্ছে না। এর পেছনের কারণ জানি‌না। এখন শুধু মাত্র আব্বুর অনুমতি পেলেই কি হবে? আম্মুর অনুমতি ছাড়া কি আমি দাওয়াতি কাজ করতে পারবো শরীয়তের ভিতর থেকে ইন শা আল্লাহ্?
২) আমাকে নিয়ে দেখা আমার বাবার স্বপ্নের এই ব্যাখ্যা কী?

1 Answer

0 votes
by (559,530 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://www.ifatwa.info/56156/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمَرْأَةُ إِذَا صَلَّتْ خَمْسَهَا وَصَامَتْ شَهْرَهَا وَأَحْصَنَتْ فَرْجَهَا وَأَطَاعَتْ بَعْلَهَا فَلْتَدْخُلْ مِنْ أَيِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شَاءَتْ»

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো মহিলা যদি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে, রমাযানের সিয়াম পালন করে, গুপ্তাঙ্গের হিফাযাত করে, স্বামীর একান্ত অনুগত হয়। তার জন্য জান্নাতের যে কোনো দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশের সুযোগ থাকবে।
(মিশকাত ৩২৫৪)

পুরুষ-নারী প্রতিটি মানুষের জন্য দাওয়াতি কাজ করা আবশ্যক,  তার সাধ্য ও সামর্থ্য অনুযায়ী। 

একজন নারীর দাওয়াতি কাজের সর্ব শ্রেষ্ঠ ক্ষেত্রে হল তার পরিবার, সন্তান-সন্ততি। তাকে স্বামীর প্রতি দায়িত্ব পালন, তার ঘর গোছানো, সম্পদ হেফাজত, সন্তান-সন্ততিদের লালন-পালন ইত্যাদি নানা কাজে সময় দিতে হয়। এগুলো তার প্রধানতম দায়িত্ব।
,
সুতরাং এ সকল দায়িত্ব ফেলে দিয়ে ঘরের বাহিরে,বা দূর দূরান্তে তাকে দাওয়াতের কাজ করে বেড়াতে হবে- ইসলাম তাকে এ দায়িত্ব দেয় নি।

আল্লাহ তা'আলা পুরুষ এবং নারী দু'টি ভিন্ন জাতিকে তৈরী করেছেন।এবং তাদের কাজকেও বন্টন করে দিয়েছেন।

এভাবে যে, সাধারণত পুরুষ বাহিরে কাজে ব্যস্ত থাকবে এবং নারীরা ঘরের ভিতর সামাল দিবে।এবং সন্তানসন্ততি কে শিক্ষাদীক্ষা দেয়ার মত মহান কাজ আঞ্জাম দিবে।

আল্লাহ তা'আলা বলেন,

وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى وَأَقِمْنَ الصَّلَاةَ وَآتِينَ الزَّكَاةَ وَأَطِعْنَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا

তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে-মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে। হে নবী পরিবারের সদস্যবর্গ। আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পূত-পবিত্র রাখতে।(সূরা আহযাব-৩৩)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
নারীরা ইচ্ছে করলে নিজ বাড়িতেও দ্বীনি তালিমের হালাকা করতে পারে সেখানে তার প্রতিবেশী মহিলারা অংশ গ্রহণ করবে। 

অথবা স্বামী বা অভিভাবকের অনুমতি সাপেক্ষে বাড়ির আশে পাশে নিরাপদ পরিবেশে অন্য কোথাও তালিমি বৈঠক করতে পারে যদি এতে নিজের বাড়ির দায়িত্বে ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয় এবং ফেতনা থেকে নিরাপদ থাকে।

★সুতরাং মেয়েরা ঘরের বাহিরে দাওয়াতি কাজ করার জন্য বাধ্য নয়।

যেখানে সে নিজের অনিরাপত্তার ভয় করে,সেখানে যাওয়ার তো অনুমতিই নেই।

ঘরের বউদেরকে ঘরের বাহিরে দাওয়াতি কাজের জন্য জোর পূর্বক বাধ্য করা যাবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনাকে এখন ঘরের বাহিরে গিয়ে দাওয়াতের কাজ করতে হবেনা।
আপনি নিজ বাড়িতে প্রথমে দ্বীনি তালিমের হালাকা করবেন, সেখানে আপনার আশেপাশের মহিলা আত্মীয় স্বজনেরা ও  প্রতিবেশী মহিলারা অংশ গ্রহণ করবে।
তালিম করবেন,নামাজ শিখাবেন,পূর্ণ পর্দা শিখাবেন,গায়রে মাহরাম মেইনটেইন করে চলা শিখাবেন, আপনার কুরআন তিলাওয়াত শুদ্ধ থাকলে তাদেরকে কুরআন তিলাওয়াত শিখাবেন,আপনার কুরআন তিলাওয়াত শুদ্ধ না থাকলে দ্রুত কোনো মাধ্যমে কুরআন তিলাওয়াত শুদ্ধ করে নিয়ে তাদেরকে কুরআন তিলাওয়াত শিখাবেন,স্বামী সন্তানের হক শিখাবেন,পবিত্রতার মাসয়ালা সহ তাদের প্রয়োজনীয় বিবিধ মাসয়ালা পড়ে তাদের জানাবেন। ফাজায়েলে আমাল এর পাশাপাশি আহকামুন নিসা বই পড়ে তালিম করবেন।
তাহলে তারা অনেক মাসয়ালাও জানতে পারবে।

এরপর চাইলে নিজ মাহরাম পুরুষ সহকারে মাস্তুরাত জামাতে যেতে পারেন।

(০২)
এটা আপনার বাবার মনের কল্পনা প্রসূত স্বপ্ন। কোনো সমস্যা নেই,ইনশাআল্লাহ। 

উক্ত স্বপ্নের কথা আপনার বাবা বা আপনি আর কাহারো সাথে শেয়ার করবেননা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...