আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
95 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (58 points)
এক বন্ধুর সাথে আমার আলোচনা হচ্ছিল। আলোচনার সারসংক্ষেপ:


বন্ধু: ইস্তিখারার ফল এর এন্ড রেজাল্ট দিয়ে দেখতে হয়। দিন শেষে যাই হবে তাই ইস্তিখারার ফল হবে ধরে নিতে হবে। এজন্য স্বপ্ন দেখা জরুরি নয় বা পরিস্থিতি সহজ না কঠিন তাও ভেবে দেখা জরুরি নয়। কারণ, ইস্তিখারার দোয়াতে এমনটাই উল্লেখ আছে যা কল্যাণকর তাই যেন নির্ধারিত হয়।


আমি: হা, তবে এ ব্যাপারে শর্ত আছে। যে ব্যাপারে ইস্তিখারা করতে হবে তার ব্যাপারে আগে থেকে ঝোক থাকা যাবেনা। কিন্তু তুমি যদি আগে থেকেই তার ব্যাপারে ফ্যাসিনেটেড থাক তবে ইস্তিখারার ফল বুঝতে পারবানা। ইস্তিখারার ফলাফল হল কিছু চিহ্ন। যেমন: কাজ টা করতে গিয়ে যদি দেখ সহজে আগানো যাচ্ছেনা তার মানে ইস্তিখারার ফল নেগেটিভ। আর ইস্তিখারার ফল যদি পজিটিভ হয় তবে সব কিছু স্মুথ হবে। কল্যাণের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে। অকল্যাণ সম্পর্কে বিন্দুমাত্র সংশয় থাকবেনা। কল্যাণের পাল্লাই ভারি হবে। তবে এত সংকেত দেখার পরেও তুমি নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পার। যদি দেখ ওই ব্যাপারে আগানো কঠিন হচ্ছে তবুও জোর করে ওই ব্যাপারে আগাতে পার। তখন সেটাকে ইস্তিখারার ফল ধরা যাবেনা। বরং তাকদীর বলে গণ্য হবে।
ঘটনা: আমার বন্ধু শিয়া পরিবারে বিবাহ করতে চায়। যেহেতু আগে থেকেই পছন্দ। অনেকবার ইস্তিখারার নামাজ পড়ার পরেও পরিবার ধর্মীয় ইস্যুর কারণে বিয়েতে রাজি হচ্ছেনা। তারপরেও সে চেস্টা করে যাচ্ছে এবং আশা করছে সে সফল হবে। কিন্তু শিয়া পরিবারের বিয়েতে কোন কল্যাণ আছে বলে জানা নেই।


আমার প্রশ্ন:

১। মানুষ কি ইস্তিখারার ফলাফলের বিপরীত সিদ্ধান্ত নিতে পারে? যেহেতু, আল্লাহ কুরানে বলেছেন মানুষ তাই পায় যার জন্য সে চেস্টা করে। আবার এটাও বলেছেন আল্লাহ চাইলে পৃথিবীর সবাই মুসলমান হত। অর্থাৎ, মানুষ নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারে আর আল্লাহ তার পছন্দ বা সিদ্ধান্ত কারো উপর চাপিয়ে দেন না।
২। আমার বন্ধুর ইস্তিখারার ফলাফল কি নেগেটিভ ধরে নিতে হবে? যেহেতু, শিয়া পরিবারে বিয়েতে কোন কল্যাণ নেই।


৩। আমার যুক্তি কি ঠিক আছে?

1 Answer

0 votes
by (574,080 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/13381/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  
ইস্তেখারা অর্থ হল, ভালোকে তালাশ করা। অর্থাৎ যখন কারো সামনে দু’টি রাস্তা থাকে, সে জানেনা কোন রাস্তাটি তার জন্য মঙ্গলজনক, তাহলে এমতাবস্থায় সে ইস্তেখারা করে একটি রাস্তাকে নির্দিষ্ট করবে। সুতরাং কারো অসুখ মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে কি না? সেটা জানার জন্য ইস্তেখারা করার কোনো নিয়ম নাই। হ্যা এ বিষয়ে আল্লাহর মদদ ও সাহায্য কামনার স্বার্থে ইস্তেখারা করা যেতে পারে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
হযরত জাবির রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে

عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعَلِّمُنَا الِاسْتِخَارَةَ فِي الأُمُورِ كُلِّهَا، كَمَا يُعَلِّمُنَا السُّورَةَ مِنَ القُرْآنِ، يَقُولُ: " إِذَا هَمَّ أَحَدُكُمْ بِالأَمْرِ، فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ مِنْ غَيْرِ الفَرِيضَةِ، ثُمَّ لِيَقُلْ: 

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সব কাজে ইস্তিখারাহ্* শিক্ষা দিতেন। যেমন পবিত্র কুরআনের সূরাহ্ আমাদের শিখাতেন। তিনি বলেছেনঃ তোমাদের কেউ কোন কাজের ইচ্ছা করলে সে যেন ফরজ নয় এমন দু’রাক‘আত সালাত আদায় করার পর এ দু’আ পড়েঃ 

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ، وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ العَظِيمِ، فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ، وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ، وَأَنْتَ عَلَّامُ الغُيُوبِ، اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ خَيْرٌ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي - أَوْ قَالَ عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ - فَاقْدُرْهُ لِي وَيَسِّرْهُ لِي، ثُمَّ بَارِكْ لِي فِيهِ، وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ شَرٌّ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي - أَوْ قَالَ فِي عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ - فَاصْرِفْهُ عَنِّي وَاصْرِفْنِي عَنْهُ، وَاقْدُرْ لِي الخَيْرَ حَيْثُ كَانَ، ثُمَّ أَرْضِنِي " قَالَ: «وَيُسَمِّي حَاجَتَهُ»

ভাবার্থঃ‘‘প্রভু হে! আমি তোমার জ্ঞানের ওয়াসিলাহ্তে তোমার অনুমতি কামনা করছি; তোমার কুদরতের ওয়াসিলায় শক্তি চাচ্ছি আর তোমার অপার করুণা ভিক্ষা করছি। কারণ তুমিই সর্বশক্তিমান আর আমি দুর্বল। তুমিই জ্ঞানী আর আমি অজ্ঞ এবং তুমিই সর্বজ্ঞ। প্রভু হে! তুমি যদি মনে কর যে, এই জিনিসটি আমার দ্বীন ও দুনিয়ায়, ইহকালে ও পরকালে সত্বর কিংবা বিলম্বে আমার পক্ষে মঙ্গলজনক হবে তা হলে আমার জন্য তা নির্ধারিত করে দাও এবং তার প্রাপ্তি আমার জন্য সহজতর করে দাও। অতঃপর তুমি তাতে বারাকাত দাও। আর যদি তুমি মনে কর এই জিনিসটি আমার দ্বীন ও দুনিয়ায় ইহকালে ও পরকালে আমার জন্য ক্ষতিকর হবে শীঘ্র কিংবা বিলম্বে তাহলে তুমি তাকে আমা হতে দূর করে দাও এবং আমাকে তা হতে দূরে রাখো; অতঃপর তুমি আমার জন্য যা মঙ্গলজনক তা ব্যবস্থা কর- সেটা যেখান থেকেই হোক না কেন এবং আমাকে তার প্রতি সন্তুষ্টচিত্ত করে তোল।’’তিনি ইরশাদ করেন هَذَا الْأَمْرَ  তার প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করবে।(সহীহ বুখারী- (শামেলা);২/৫৭,হাদীস নং১১৬২,কিতাবুন-নাওয়াযিল-৪/৬২৯) 

বিস্তারিত জানুন-https://www.ifatwa.info/1472

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
(০১)
মানুষ ইস্তিখারার ফলাফলের বিপরীত সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। সেই ইখতিয়ার তার আছে। 
তবে সেটা তার জন্য কল্যাণকর নয়।

(০২)
এখানে ইস্তেখারার কোনো ফলাফল উল্লেখ নেই। সুতরাং উক্ত ইস্তেখারাকে পজিটিভ বা নেগেটিভ কোনোটিই বলতে পারছিনা।

উল্লেখ্য, মেয়েটি শীয়া অনুসারী হলে তাকে বিবাহ করাই জায়েজ নেই।

(০৩)
হ্যাঁ, আপনার যুক্তি ঠিক আছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...