আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
86 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (8 points)
আসসালামু আলাইকুম
আমার হাসব্যান্ড বর্তমানে একটি সরকারি চাকুরি করছেন। তিনি অন্য কোনো চাকুরীর জন্য এপ্লাই করলে সেখানে বর্তমানে যে চাকুরী করছেন সেটার কথা উল্লেখ করেন না,কারণ উল্লেখ করলে তখন অফিস থেকে চাকরির পরীক্ষার জন্য অনুমতিপত্র চাইতে হবে। অনুমতিপত্র ওরা দিতে চায়না। সম্প্রতি একটি ভাইভার অনুমতিপত্র চাওয়াতে তার একটি ন্যায্য ট্যুর এবং ভাতা দেয়নি। কিন্তু অফিস থেকে বলা আছে যদি অন্য কোথাও চাকরি হয় তাহলে চলে যেতে পারবে। কিন্তু চাকুরীর পরীক্ষার অনুমতিপত্র দিতে অনেক ঝামেলা করে। তো এই ক্ষেত্রে কি অন্য কোথাও চাকরির ফরম পূরণ করার সময় বর্তমান চাকুরীর কথা উল্লেখ না করে ফরম পূরণ করা জায়েয হবে ? এটা কি প্রতারণার আওতায় পড়বে?

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মিথ্যা কথা বলা শরীয়ত অনুমোদিত নয়। 
নিঃসন্দেহে মিথ্যা বলা হারাম। 
শরিয়তে সত্যকে সর্বত্রই উৎসাহিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সত্য মুক্তি দেয়, মিথ্যা ধ্বংস আনে।

পবিত্র কুরআন শরিফে এসেছে   
لَّعْنَتَ اللَّهِ عَلَى الْكَاذِبِينَ [٣:٦١

তাদের প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত করি যারা মিথ্যাবাদী। {সূর আলেইমরান-৬১}

হাদিস শরিফে এসেছে,
 সাফওয়ান ইবন সুলাইম বলেন,
قِيلَ لِرَسُولِ اللَّهِ ﷺ : أَيَكُونُ الْمُؤْمِنُ جَبَانًا ؟ فَقَالَ: ( نَعَمْ ) ، فَقِيلَ لَهُ: أَيَكُونُ الْمُؤْمِنُ بَخِيلًا؟ فَقَالَ: ( نَعَمْ ) ، فَقِيلَ لَهُ: أَيَكُونُ الْمُؤْمِنُ كَذَّابًا ؟ فَقَالَ: ( لَا )
রসুলুল্লাহ ﷺ -কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, মুমিন কি কাপুরুষ হতে পারে? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। জিজ্ঞেস করা হয়েছে, মুমিন কি কৃপণ হতে পারে। তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। জিজ্ঞেস করা হয়েছে, মুমিন কি মিথ্যাবাদী হতে পারে? তিনি উত্তর দিলেন, না। (মুয়াত্তা মালিক ২/৯৯০) অর্থাৎ মুমিনের বিভিন্ন চারিত্রিক ত্রুটি থাকতে পারে, তবু সে মিথ্যা বলতে পারে না।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

আবুল ফরয ইবনুল জাওযী রাহ বলেনঃ

ﻭﺿﺎﺑﻄﻪ ﺃﻥ ﻛﻞ ﻣﻘﺼﻮﺩ ﻣﺤﻤﻮﺩ ﻻ ﻳﻤﻜﻦ ﺍﻟﺘﻮﺻﻞ ﺇﻟﻴﻪ ﺇﻻ ﺑﺎﻟﻜﺬﺏ، ﻓﻬﻮ ﻣﺒﺎﺡ ﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻤﻘﺼﻮﺩ ﻣﺒﺎﺣﺎ، ﻭﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﻭﺍﺟﺒﺎ، ﻓﻬﻮ ﻭﺍﺟﺐ 

প্রত্যেক ঐ ভালো উদ্দেশ্য যে পর্যন্ত মিথ্যার আশ্রয় ব্যতীত পৌছা  প্রায় অসম্ভব, সেখানে মিথ্যা বলা বৈধ।মাকসাদ(উদ্দেশ্য) মুবাহ হলে,মিথ্যা বলা মুবাহ।মাকসাদ ওয়াজিব হলে মিথ্যা বলা ওয়াজিব
(ফাতাওয়া দারাল ইফতা আল-মিছরিয়্যাহ)

★ব্যাখ্যাঃ
 কোন সৎ উদ্দেশ্য যদি মিথ্যার আশ্রয় ব্যতিরেকে সাধন সম্ভবপর হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া বৈধ নয়। পক্ষান্তরে সে সৎ উদ্দেশ্য যদি মিথ্যা বলা ছাড়া সাধন সম্ভব না হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে মিথ্যা বলা বৈধ। পরন্তু যদি বাঞ্ছিত লক্ষ্য বৈধ পর্যায়ের হয়, তাহলে মিথ্যা বলা বৈধ হবে। 

আর যদি অভীষ্ট লক্ষ্য ওয়াজেবের পর্যায়ভুক্ত হয়, তাহলে তা অর্জনের জন্য মিথ্যা বলাও ওয়াজেব হবে। যেমন কোন মুসলিম এমন অত্যাচারী থেকে আত্মগোপন করেছে, যে তাকে হত্যা করতে চায় অথবা তার মাল-ধন ছিনিয়ে নিতে চায় এবং সে তা লুকিয়ে রেখেছে। এখন যদি কেউ তার সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হয় [যে তার ঠিকানা জানে], তাহলে সে ক্ষেত্রে তাকে গোপন [ও নিরাপদ] রাখার জন্য তার পক্ষে মিথ্যা বলা ওয়াজেব। 

অনুরূপভাবে যদি কারো নিকট অপরের আমানত থাকে, আর কোন জালেম যদি তা বলপূর্বক ছিনিয়ে নিতে চায়, তাহলে তা গোপন করার জন্য মিথ্যা বলা ওয়াজেব। অবশ্য এ সমস্ত বিষয়ে সরাসরি স্পষ্টাক্ষরে মিথ্যা না বলে ‘তাওরিয়াহ’ করার পদ্ধতি অবলম্বন করাই উত্তম।

‘তাওরিয়াহ’ হল এমন বাক্য ব্যবহার করা, যার অর্থ ও উদ্দেশ্য শুদ্ধ তথা তাতে সে মিথ্যাবাদী নয়; যদিও বাহ্যিক শব্দার্থে এবং সম্বোধিত ব্যক্তির বুঝ মতে সে মিথ্যাবাদী হয়। 

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনার স্বামী যেখানে চাকুরীর জন্য এপ্লাই করবেন, সেখানে যদি বর্তমানে চাকুরী করছে কিনা,এমন কোনো প্রশ্ন স্পষ্ট আকারে উল্লেখ থাকে,সেক্ষেত্রে বর্তমান চাকুরির কথার স্থানে "না" লিখলে মিথ্যা বলার গুনাহ হবে।

এমতাবস্থায় তাকে তওবা করতে হবে।

আর যদি এমন কোনো প্রশ্ন স্পষ্ট আকারে উল্লেখ না থাকে,সেক্ষেত্রে বর্তমান চাকুরির তথ্য উল্লেখ না করলে কোনো সমস্যা নেই।
তার কোনো গুনাহ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
উস্তাদ, ফরমে সরাসরি প্রশ্ন করা থাকে যে চাকুরী করছে কিনা। কিন্তু ওই জায়গাটায় উত্তর স্কিপ করার অপশন থাকে। মানে কিছুই না লেখার অপশন থাকে। সেক্ষেত্রে আমার স্বামী সেই প্রশ্নটা স্কিপ করে, মানে সেখানে হ্যা,না কিছুই লেখে না,সেইক্ষেত্রে কি জায়েয হবে?
by (559,140 points)
স্কিপ করা জায়েজ হবে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...