আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
112 views
in পবিত্রতা (Purity) by (12 points)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ উস্তায

গতকাল একটি প্রতিষ্ঠানে ফিক্বহ কোর্সের এক্সামে একটি প্রশ্ন নিয়ে কনফিউশান তৈরী হয়েছে। প্রশ্নটি ছিলো এরকম

নেফাসের সময়সীমা কত?

ক) ৪০ দিন
খ) সর্বনিম্ন নেই✔️
গ) সর্বোচ্চ ৪০ দিন ✔️
ঘ) ব্লিডিং বন্ধ হয়ে গেলে

প্রশ্নটিতে একইসাথে একাধিক অপশন সিলেক্ট করার সুযোগ ছিলো। তাই পরীক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েকজন (খ) ও (গ) এএ সাথে (ঘ) নং অপশনও আন্সার করেছেন। ফলে তাদের উত্তরটি ভুল বলে ধরা হয়েছে। 

এক্ষেত্রে তাদের দাবি হলো যার যখন ব্লিডিং বন্ধ হয়ে যাবে সেটিই তার জন্য সময়সীমা, একইভাবে হায়েজের বিষয়টিও। কিন্তু প্রশ্নকারীর দাবি হলো সময়সীমা নির্দিষ্ট, যে যখন পবিত্র হবে সে তখন নামাজ,রোজা করতে পারবে,তবে সেটি তার সময়সীমা নয়। এটা একেকজনের একেকরকম হতে পারে,এমনকি একজনের ক্ষেত্রেই একেক সময় একেক রকম হতে পারে। বাট সময়সীমা তো নির্ধারিত। বাকি একেকজনের একেকরকম হতে পারে,সে সেই অনুযায়ী ইবাদত করবেন।

এই অভিজ্ঞতা থেকে আমার প্রশ্ন হচ্ছে,

১. এখানে প্রকৃতপক্ষে প্রশ্নকারী বা পরীক্ষার্থী কার যুক্তি সঠিক?

২. যদি পরীক্ষার্থী সঠিক হয় তাহলে তাদেরকে কি সেই প্রশ্নের মার্কস রিকভার করে দেওয়া উচিত?

৩. যদি প্রশ্নকারী সঠিক হয়,সেক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীকে বুঝানোর পরেও তারা যদি বুঝতে না চান, তাহলে কি প্রশ্নকারীর এক্ষেত্রে হক নষ্ট বা অন্য কোন গুনাহের আশংকা আছে উস্তায?

ক্ষমা করবেন উস্তায। প্রশ্নটি বেশি বড় হয়ে গেলো। জাঝাকাল্লাহু খইরন ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আখিরহ

1 Answer

0 votes
by (574,470 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
عَنْ أَنَسٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «وَقَّتَ لِلنُّفَسَاءِ أَرْبَعِينَ يَوْمًا، إِلَّا أَنْ تَرَى الطُّهْرَ قَبْلَ ذَلِكَ

হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নেফাসওয়ালী মহিলাদের মেয়াদ সাব্যস্ত করেছেন চল্লিশ দিন। তবে যদি এর আগে পবিত্র হয়ে যায়, তাহলে ভিন্ন কথা। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৬৪৯, আলমুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৮৩১১, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৮৫২, সুনানে কুবরালিলবায়হাকী, হাদীস নং-১৬১৯]


فى تنوير الابصار: والنفاس لغة : دمن ويخرج عقب ولد، لا حد لاقله، واكثره أربعين يوما (رد المحتار، كتاب الطهارة، باب الحيض-1/496-497)
সারমর্মঃ সন্তান ভুমিষ্ঠের পর যেই রক্ত বের হয়,সেটাকে নেফাস বলা হয়,তার সর্বোচ্চ মেয়াদ হল চল্লিশ দিন। 
,

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে আছে-

أقل النفاس ما يوجد ولو ساعة و أكثره أربعون

মর্মার্থ: নিফাসের সর্ব নিম্ন কোনো মেয়াদ নেই। আর সর্বোচ্চ মেয়াদ হলো চল্লিশ দিন। ( ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া১/৯১ )

আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহতে রয়েছে:-     

اتَّفَقَ الْفُقَهَاءُ عَلَى أَنَّهُ لاَ حَدَّ لأِقَل النِّفَاسِ، فَأَيُّ وَقْتٍ رَأَتِ الْمَرْأَةُ الطُّهْرَ اغْتَسَلَتْ، وَهِيَ طَاهِرٌ، وَاخْتَلَفُوا فِي أَكْثَرِهِ: فَيَرَى جَمْعٌ مِنَ الْعُلَمَاءِ أَنَّ أَكْثَرَ النِّفَاسِ أَرْبَعُونَ يَوْمًا. قَال أَبُو عِيسَى التِّرْمِذِيُّ: أَجْمَعَ أَهْل الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَنْ بَعْدَهُمْ

সমস্ত উলামায়ে কেরাম এ কথার উপর একমত যে,নেফাসের সর্বনিম্ন কোনো সীমারেখা নাই।সন্তান জন্মের পর যখনই মহিলা পবিত্রাকে দেখবে,তখনই গোসল করে পবিত্র হয়ে যাবে।নেফাসের সর্বোচ্ছ সীমারেখা কিএ নিয়ে ফুকাহাদের মধ্যে মতবেদ রয়েছে,সিংহভাগ উলামায়ে কেরাম মনে করেন,সর্বোচ্ছ চল্লিশদিন পর্যন্ত নেফাস হতে পারে।ইমাম তিরমিযি রাহ বলেন,সাহাবা এবং পরবর্তী যুগের উলামাদের ইজমা রয়েছে যে,নেফাসের সর্বোচ্ছ সীমারেখা চল্লিশদিন। (আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-২/১৫)

নেফাস এর সর্বোচ্চ মেয়াদ হল চল্লিশ দিন। যদি চল্লিশ দিনের মধ্যে রক্ত বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে যেদিন বন্ধ হবে, সেদিন গোসল করে নামায পড়া শুরু করে দিতে হবে।
 কিন্তু বন্ধ না হয়, তাহলে এর সর্বোচ্চ মেয়াদ হল চল্লিশ দিন। যদি চল্লিশ দিনেও বন্ধ না হয়, তাহলে চল্লিশ দিন পর বন্ধ না হলেও নামায পড়তে হবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
অনেক সময় প্রশ্ন কারী মেধা যাচাইয়ের জন্য অনেক সহজ প্রশ্নও দেয়,যেক্ষেত্রে তার উদ্দেশ্য থাকে তার মাথায় থাকা উত্তরটি কে কে দেয়,সেটা বুঝার জন্য।

এটা যে সব সময় সঠিক বিষয় হয়,তা নয়। 

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সাভাবিক অবস্থায় খ,গ,ঘ এর সমন্বয়ে মূলত জবাবটি তৈরী হবে।
কিন্তু প্রশ্নকারী মূলত একটি মৌলিক জবাব চেয়েছেন।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
মৌলিক হিসেবে ধরলে প্রশ্নকারী যুক্তি ঠিক আছে,তবে উত্তর দাতার জবাবও ভুল নয়।
সেটাও সঠিক।

(০২)
হ্যাঁ, রিকভার করে দেয়া যায়।
তবে আবশ্যক নয়।
কেননা প্রশ্নকারী মৌলিক ভাবে জবাব চেয়েছিলেন,আর জবাব দাতা ঠিক সেভাবে জবাব দেয়নি। 

(০৩)
হক নষ্ট বা অন্য কোন গুনাহের আশংকা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...