এই কথাগুলো কি কেনায়া বাক্য কিনা আমি সেটা জানতে চাচ্ছি।
১/ আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় দুই বছর, ৩-৪ দিন পর আমার স্বামী দেশে আসবেন ( আমাদের বিয়ের ফোনে হয়েছিল। আমাদের বিয়ের পর এই প্রথম তিনি দেশে আসবেন )।
বিয়ের সময় কথা ছিল বিয়ের ৬ মাস পর দেশে আসবে। পাসপোর্ট নিয়ে কিছু সমস্যার কারণে এত দিন আসতে পারেনি।
তার যেহুতু বিয়ের ৬ মাস পর আসার কথা ছিল, এখন সে এই ৬ মাস যাওয়ার পর, বলতো আর ২ মাস পর আসবে, জুলাইয়ের মধ্যে আসবে, জুলাই শেষ হলে আবার বলতো ৬ মাস পর আসবে, এরকম করতে করতে সে আমাকে লাস্ট বলে যে, এই জানুয়ারিতে সে আসবে। এভাবে বার বার আসার কথা বলে সময় ঘুরানোর কারণে আমি তাকে অনেক বার বলছি যে, আমি তোমার জন্য জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করবো। এর পর আর অপেক্ষা করবো না। জানুয়ারির পর আমি চলে যাবো। জানুয়ারির পর আমি আবার বিয়ে করবো। এরকম কথা অনেক বার বলা হইছে।
পাসপোর্টের সমস্যার কারণে সে জানুয়ারিতে ও আসতে পারে নাই।
এছাড়াও তার কথা ছিল যে, সে দেশে একবারে আসবে, আর বাহিরে যাবে না। কিন্তু কিছু দিন ধরে সে হুট করে বলতেছে যে, আমি দেশে এসে ৬ মাস থেকে আবার ১ বছরের জন্য যাবো।
এটা নিয়ে আমাদের অনেক ঝামেলা হয়, যেহুতু সে আমাকে কথা দিয়া আসছে, একবারেই আসতেছে এখন আবার তার কথা ঘুরয়তাছে।
এ কথা বলায় আমি তাকে অনেক বার বলছি যে তুমি আবার ওই দেশে গেলে আমি তোমার সাথে থাকবো না। আমি আমার আম্মু, শাশুড়ি, নানু উনাদের সামনেও বলেছি, সে ওই দেশে গেলে যাই হোক আমি তার সাথে থাকবো না। দরকার পড়লে আমি আবার বিয়ে করবো। ( এ কথা গুলো বলার কারণ হচ্ছে, সে ওখানে এক খ্রিস্টান মেয়েকে বিয়ে করেছে, তাই আমি তাকে ওই দেশে আর যেতে দিতে চাই না)।
তাকে আমি এভাবেও জিজ্ঞাসা করছি আমি যদি তোমাকে ওই দেশে যেতে না দেই তাহলে কী তুমি আমার সাথে থাকবা না? সে বলছে আমি এক বছরের জন্য যেতেই হবে, এখন তুমি না থাকলে আমার কিছু করার নেই, এটা তোমার ব্যাপার।
আমি এটাও বলছিলাম আমি যদি যেতে না দেই তোমার বাবা ভাই যদি বলে আমাকে তাহলে আনার দরকার নাই তাইলে কি করবা ? সে বলছিল আমি নিজেই তো তোমারে আনবো না। উনারা কি বলবে।
একবার এরকম কথা হইছিল যে, তুমি এরকম করলে আমি তোমাকে নারী নির্যাতনের কেস দিবো, সে বলে কেস দিবা তুমি টাকা পাবা কোথায়? আমি বলছিলাম কেন তোমার কাবিনের টাকা দিয়ে। সে বলে আমি তোমাকে কাবিনের টাকা দিয়ে দিলে তো তোমার উপর আমার আর কোনো অধিকারী থাকলো না। সে বুঝতে চাইছে সে আমার সাথে সম্পর্ক শেষ করে আমাকে আমার মোহরানা দিয়ে দিবে।
আমার স্বামী আমার খালাতো ভাই হওয়ায় আমার এইসব কথা শুনে বলতো, আমার সাথে তো তুমি থাকবা না, তাহলে তোমার জন্য ছেলে দেখবো?
আবার ওই দেশে যাওয়া নিয়ে আমদের মাঝে ঝামেলা হওয়ায় সে বলছি, আমরা তো এখনও এক সাথে থাকি নাই, এখনও যেহেতু কিছু হয় নাই, তুমি তাইলে জাওগা,
সে আমাকে এরকমও বলছে তুমি যদি আমার খালার মেয়ে না হইতা তাহলে আমি তোমাকে অনেক আগেই ছেড়ে দিতাম। তুমি বেয়াদব হয়ে গেছে, আমি কোনো বেয়াদবের সাথে থাকবো না। পড়ে সমস্যা হওয়ার থেকে দেশে এসে সবার সাথে কথা বলে ঠিক করবো তোমার সাথে থাকবো কি না। তুমি যাওগা, তোমার জন্য ছেলে দেখবো।
এই কথা গুলো দ্বারা কি আমাদের তালাক হয়েছে?
হয়ে থাকলে এখন আমাদের কি করনীয়?
২/ আমি আজকে কাজী অফিসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি আমাকে তালাকের অনুমতি দেওয়া আছে। এখন আমি যত দূর জানি আমার হাসবেন্ড জেনে আমাকে এই অনুমতি দেননি, কাজী এটা লিখেছে, উনি এই বিষয়ে কিছু জানেন ও না।
এখন আমি যদি তাকে জিজ্ঞেসা করি , সে আমাকে এই অনুমতি জেনে দিয়েছে কি না, সে যদি মানা করে, তাহলে কি আমার উপরের কথা দ্বারা তালাক হবে?
আর আমি যদি বলি আমার এই অনুমতি চাই না, তখন সে যদি আমাকে বলে, আমি তোমাকে এই অনুমতি দিতেছি না তাহলে কি কাবিনে যে কাজী অনুমতি উল্লেখ করেছেন সেটা বাদ হয়ে যাবে?
৩/ আমাদের যেহুতু ফোন বিয়ে হয়েছে। আজকে আমি কাজী কে জিজ্ঞাসা করলাম আমাদের বিয়েটা কি জায়েজ ছিল? উনি বলে আমাদের কাজ বিয়ে পড়ানো আপনি কোনো মুফতি থেকে এটা জেনে নিবেন, বা দেশে আসলে আবার বিয়ে করে নিয়েন। এখন আমার কথা হচ্ছে বিয়ে যদি জায়েজ না হয়ে থাকে তাহলে তো আমি এত দিন জিনার মধ্যে ছিলাম।
আমাদের বিয়েতে ওর বাবা, মা আমার বাবা, মা আমার এখানে উপস্থিত ছিলেন, একজন উকিল হিসেবেও ছিলেন। সবাই আমার এখানে ছিলেন। ওকে শুধু ভিডিও কল দেওয়া হয়। ওর ওখানে কেও ছিল না। শুধু ও একা ছিল। উকিল, ওর বাবা মা আমার বাবা মা সাক্ষী সবাই আমার এখানে উপস্থিত ছিলেন , ওর ওখানে কেও ছিলো না।
আমাদের কাবিন আর বিয়ে দুইটাই হয়েছিল। সে ভিডিও কলে কবুল বলেছিল। আর একটা অঙ্গীকার নামা ছিল যেখানে ও ওর বাবাকে আমার সাথে বিয়ে দেওয়ার অনুমতি দিচ্ছ।
আমাদের বিয়ে কি হয়েছে?
৪/আর ফোনের এই বিয়েটা যদি ইসলামের শরিয়ত অনুযায়ী জায়েজ না হয়ে থাকে, তাহলে তো আমাদের বিয়েই হয়নি । তাহলে আমাদের উপরের কথা দ্বারা কি তালাক হবে?