আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
124 views
in পবিত্রতা (Purity) by (45 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।

১. আমার বিছানার চাদরের এক পাশে টিকটিকির পায়খানা পড়েছিল। আমি শুকনা মনে করে মসারি দিয়ে বাড়ি দেই এতে পায়খানা পড়ে যাশ কিন্তু সামান্য পায়খানা চাদরে লেগে থাকে, মসারিতে লেগেছে কিনা দেখ হয় নি।আলসেমি করে চাদর ধোওয়া হয় নি।এখন মনে নাই পরিষ্কার করে কোথায় লেগেছিল। চাদরে আরো কয়েক জায়গায় কালো দাগ আছে যার কারণে বোঝা মুসকিল। এখন পুরো চাদর ৩ বার ধূলে কি পবিত্র হয়ে যাবে।প্রত্যেকটা দাগ খুজে বের করে ধোয়া অনেক কষ্টকর।অন্য কাপড়ের সাথে মিলিয়ে ধূলে কি সব কাপড় অপবিত্র হয়ে যাবে? নাপাকির পরিমাণ যেহেতু এক দিরহামের কম তাহলে অন্য কাপড়ও কি নাপাক হয়ে যাবে।

২. নামাজে সেজদা থেকে উঠে দাড়ানোর সময় কি হাটু ধরে ওঠা কি সুন্নত।
৩. ফেসবুকে বিভিন্ন প্রোডাক্ট মার্কেটিং করার জন্য নিজের অরিজিনাল  প্রোফাইল বানানোর জন্য প্রোফাইলে কি নিজের ছবি দেওয়া যাবে? মার্কেটিং এড এ মহিলাদের ছবি থাকলে পণ্য বিক্রয়ের লাভ কি হারাম হবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
এখন পুরো চাদর ৩ বার ধুয়ে প্রত্যেকবার নিংড়িয়ে নিলে পবিত্র হয়ে যাবে। 

এক্ষেত্রে অন্য কাপড়ের সাথে মিলিয়ে ধূলে সব কাপড় অপবিত্র হয়ে যাবে।

(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

باب مَا جَاءَ فِي وَضْعِ الرُّكْبَتَيْنِ قَبْلَ الْيَدَيْنِ فِي السُّجُودِ حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ، وَأَحْمَدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ، وَالْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْحُلْوَانِيُّ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُنِيرٍ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا شَرِيكٌ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ، قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا سَجَدَ يَضَعُ رُكْبَتَيْهِ قَبْلَ يَدَيْهِ وَإِذَا نَهَضَ رَفَعَ يَدَيْهِ قَبْلَ رُكْبَتَيْهِ . قَالَ زَادَ الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ فِي حَدِيثِهِ قَالَ يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ وَلَمْ يَرْوِ شَرِيكٌ عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ إِلاَّ هَذَا الْحَدِيثَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُ أَحَدًا رَوَاهُ مِثْلَ هَذَا عَنْ شَرِيكٍ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ يَرَوْنَ أَنْ يَضَعَ الرَّجُلُ رُكْبَتَيْهِ قَبْلَ يَدَيْهِ وَإِذَا نَهَضَ رَفَعَ يَدَيْهِ قَبْلَ رُكْبَتَيْهِ . وَرَوَى هَمَّامٌ عَنْ عَاصِمٍ هَذَا مُرْسَلاً وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ وَائِلَ بْنَ حُجْرٍ .

ওয়াইল ইবনু হুজ্বর (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি- তিনি যখন সিজদা করতেন তখন মাটিতে হাত রাখার আগে হাটু রাখতেন এবং যখন তিনি (সিজদা হতে) উঠতেন তখন হাটু উঠানোর আগে হাত উঠাতেন।
(ইবনু মাজাহ (৮৮২)

হাসান ইবনু আলী তার হাদীসে উল্লেখ করেছেন, ইয়াযীদ ইবনু হারূন বলেছেন। আসিমের নিকট হতে শারীক শুধু এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। শারীক ছাড়া আর কেউ এ হাদীস বর্ণনা করেছেন বলে আমাদের জানা নেই। বেশিরভাগ মনীষীই এ হাদীসের উপর আমল করেছেন এবং বলেছেন, সিজদায় যাওয়ার সময় মাটিতে প্রথমে হাটু ও পরে হাত রাখতে হবে এবং উঠার সময় আগে হাত ও পরে হাটু তুলতে হবে।

হাম্মাম আসিমের নিকট হতে এ হাদীস মুরসাল হিসাবে বর্ণনা করেছেন, কিন্তু তাতে ওয়াইল ইবনু হুজরের নাম উল্লেখ করেননি।
(সূনান আত তিরমিজী [তাহকীককৃত]
অধ্যায়ঃ ২/ রাসূলুল্লাহ ﷺ হতে নামাযের সময়সূচী (كتاب الصلاة عن رسول الله ﷺ)
হাদিস নম্বরঃ ২৬৮)

عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ قَالَ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا سَجَدَ وَضَعَ رُكْبَتَيْهِ قَبْلَ يَدَيْهِ وَإِذَا نَهَضَ رَفَعَ يَدَيْهِ قَبْلَ رُكْبَتَيْهِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ 

ওয়ায়িল ইবনু হূজর (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করার সময় মাটিতে তাঁর হাত রাখার আগে হাঁটু রাখতে ও সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) হতে উঠতে হাঁটুর আগে হাত উঠাতে দেখেছি।

(আবূ দাঊদ ৮০৮, তিরমিযী ২৬৮, নাসায়ী ১০৮৯, ইবনু মাজাহ্ ৮৮২, ইরওয়া ৩৫৭, দারিমী ১৩৫৯,মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
অধ্যায়ঃ পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)
হাদিস নম্বরঃ ৮৯৮)

ব্যাখ্যা: (إِذَا سَجَدَ) যখন সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করবে হাঁটু আগে রাখবে তার পরে হাত।

যারা সাজদার সময় হাতের পূর্বে হাঁটু রাখার পক্ষে গেছেন- এ হাদীসটি দলীল হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন।

(وَإِذَا نَهَضَ) সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) থেকে দাঁড়ানোর সময় হাত উঠাতেন হাঁটুর পূর্বে যারা হাদীসটিকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করেছেন তারা বলেন, সালাতে সিজদা্ থেকে উঠার সময় হাতকে আগে উঠাতে হবে।

তাদের দলীলঃ ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন সালাতে সিজদা্ হতে দাঁড়ানোর সময় দু’ হাতের উপর ভর করে দাঁড়াতে।

তবে আবূ দাঊদ-এর এ রিওয়ায়াতটি শায তথা প্রসিদ্ধ সিক্বাহ্ বাবীর বর্ণিত হাদীসের বিপরীত তথা দুর্বল হাদীস।

সহীহ যা আবূ দাঊদ বর্ণনা করেছেন আহমাদ হতে বর্ণিত, সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়কারী ব্যক্তি যেন সালাতে হাতের উপর ভর না দিয়ে বসে।

আর ইমাম মালিক ও শাফি‘ঈ বলেন, সুন্নাত হলো উঠার সময় যেন হাতের উপর ভর দিয়ে উঠে। কেননা মালিক ইবনু হুওয়াইরিস রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাতের বৈশিষ্ট্যে বলেনঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দ্বিতীয় সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) হতে তার মাথা উঠাতেন ধীরস্থিরভাবে বসতেন। অতঃপর জমিনের উপর ভর দিয়ে উঠতেন- (নাসায়ী)। আর বুখারীর বর্ণনায় এসেছে, বসতেন এর জমিনের উপর ভর দিতেন, অতঃপর দাঁড়াতেন।

আর ‘আবদুর রাযযাক্ব বর্ণনা করেন ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে, ‘‘তিনি সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) হতে যখন মাথা উঠাতেন তখন দু’ হাতের উপর ভর করে উঠতেন দু’ হাত উঠানোর পূর্বে।’’

আর এটা সুস্পষ্ট কথা যে, এটি সালাত আদায়কারী ব্যক্তিকে সাহায্য করে।

সুতরাং আমাদের নিকট প্রাধান্য, যে ব্যক্তি হাঁটুদ্বয় আগে উঠাবে হাতের পূর্বে আর হাত জমিনের উপর ভর দিবে হাঁটু জমিনের উপর ভর দিবে না।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
সেজদাহ হতে হতে উঠতে হাঁটুর আগে হাত উঠানো সুন্নাত। সুতরাং এক্ষেত্রে হাঁটুর আগে হাত উঠিয়ে হাটু ধরে ওঠা সুন্নত বলে প্রমানিত হলো।

উল্লেখ্য, এটা নামাজের ওয়াজিব বা ফরজ বিধান নয়। সুতরাং কেহ এর বিপরীত করলে সেক্ষেত্রেও নামাজ হয়ে যাবে। 

(০৩)
আপনি যদি পুরুষ হয়ে থাকেন,সেক্ষেত্রে প্রোফাইলে আপনার ছবি দেয়া যাবে।
আপনি মহিলা হলে সেক্ষেত্রে ছবি দেয়া যাবেনা।

পন্য হালাল হলে মার্কেটিং এড এ মহিলাদের ছবি থাকলে উক্ত পণ্য বিক্রয়ের লাভ হারাম হবেনা। হালাল থাকবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 115 views
...