আসসালামু আলাইকুম
১) কুরআনে কি এমন কোনো আয়াত আছে যেখানে গান কে সরাসরি হারাম বলা হয়েছে? কারণ অনেক অতি পন্ডিত বলে যে গান হারাম এইটার রেফারেন্স হাদিস থেকে না দিয়ে কুরআন থেকে দিতে, তাই জানতে চাই।
২) ফেসবুকে আমি নিম্নের লেখাটি পেলাম
বিখ্যাত ইতিহাসবিদ আবুল ফারাজ আল-ইস্ফাহানি বর্ণনা করেন, রাসুল ﷺ এর বিখ্যাত সাহাবি এবং কবি হাসান বিন সাবিত সঙ্গীত উপভোগ করতেন।
বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম আল আবু বকর আল-আদফাওই পঞ্চম খুলাফায়ে রাশেদিন ‘উমার বিন আব্দুল ’আযিয থেকে বর্ণনা করেন যে, খালিফ হওয়ার পূর্বে তিনি সঙ্গীত শুনতেন।
আল-আদফাওই আরও বলেন, মদিনাবাসীদের মধ্যে কোন মতপার্থক্য ছিল না যে মদিনার কাযি ইবরহিম ইবন সা’দ সঙ্গীত শুনতেন এবং তা অনুমোদনযোগ্য বলতেন।
বিখ্যাত শাফি’ই আলেম ইবন মাহাসিন আল-রুইয়ানি, কাফআল থেকে বর্ণনা করেন, মালিকি মাযহাব অনুযায়ী সুর, বাদ্যযন্ত্র এবং সঙ্গীত অনুমোদিত, আবু মানসুর ফাওরানি এই বক্তব্য মালিকি মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম মালিক থেকেও বর্ণনা করেছেন।
বিখ্যাত শাফি’ই আলেম আবু তালিব আল-মাক্কি তার গ্রন্থ কুতুল কুলুব এ বর্ণনা করেন, বিখ্যাত মুহাদ্দিস মানহাল ইবন আমর তার প্রাসাদে বাদ্যযন্ত্র উপভোগ করতেন।” [নায়েল আল-আওতার, অধ্যায়-৮, পৃষ্ঠা ১০৪-১০৫]
দেখা যাক আবু মুহাম্মাদ ইবন হাযাম তার আল-মুহাল্লা গ্রন্থে বাদ্যযন্ত্রের ব্যাপারে কি বলেছেন:
“রাসুল বলেন: প্রতিটি কাজের বিচার সে কাজের নিয়ত অনুযায়ী হবে। তাই, কেউ যদি আল্লাহকে অমান্য করার উদ্দেশ্যে গান-বাজনা শুনে থাকে তবে সে একজন গুনাহগার হিসেবেই বিবেচিত হবে। সঙ্গীত ছাড়াও এটি সকল ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কিন্তু কেউ যদি আল্লাহর ইবাদতে উদ্যমী ও মনযোগী হওয়ার উদ্দেশ্যে নিজেকে শান্ত করার জন্য সঙ্গীত শুনে তবে একজন ভালো এবং বাধ্য বান্দা হিসেবে তার জন্য তা অনুমোদিত হবে। কিন্তু কেউ যদি ভালো খারাপ কোন উদ্দেশ্য ছাড়াই সঙ্গীত শুনে থাকে তবে তা লাঘ্বও (অযথা কাজ) হিসেবে বিবেচিত হবে এবং তা ক্ষমা ও উপেক্ষা করা হবে [আল্লাহ্‌ কর্তৃক]। এটি পার্কে হাঁটার মতো কাজ হিসেবেই [তানাযযুহ] বিবেচ্য হবে।” [আল-মুহাল্লা, অধ্যায়-৯, পৃষ্ঠা ৬০]
সকল বিষয়ের প্রেক্ষিতে আমাদের মালিকি উস্তাদ সিদি মুহাম্মাদ ইকবাল বলেন:
“আমাদের মাযহাবের মাশহুর মত হচ্ছে, বিভিন্নি ক্ষেত্রে গান-বাজনা অনুমোদিত যেমন, সুন্নতে-খাতনা, বিয়ে, মেহমানদের স্বাগত জানাতে, ঈদ ইত্যাদি। তাই এইসকল আনুষ্ঠানিক উপলক্ষ ছাড়া এটি অপছন্দনীয়। কিন্তু, অনেক মালিকি উলামাই গান-বাজনা সম্পূর্ণরূপে হালাল বলেছেন যেমন, কাযি আবু বকর ইবন আল-আরাবি এবং প্রমুখ। আমি ব্যাক্তিগতভাবে, এই ব্যাপারে ইমাম জুনাইদ আল-বাগদাদি এর মত পছন্দ করি। যা হচ্ছে, সঠিক সময়ে, সঠিক স্থানে এবং সঠিক লোকজনের সাথে। আর আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন।”
আমার প্রশ্ন হচ্ছে উপরোক্ত কথাগুলো কি সঠিক বা নির্ভরযোগ্য? নাকি এইগুলো সব ভিত্তিহীন বা বানোয়াট কথা?