আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
91 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)
এক বোনের পক্ষ থেকে প্রশ্নটি করা।

এপ্রিল মাসের ১ তারিখে আমার মাসিক হয় তারপর আমার নিয়মিত অভ্যাস অনুযায়ী দশ দিন থাকে এবং ১১ তারিখ ফজর ওয়াক্তে আমি গোসল করে নামাজ পড়ি তারপর একই মাসের(এপ্রিল) ১৯ তারিখে আমার বিয়ে হয় আলহামদুলিল্লাহ এবং প্রথম রাত্রে সহবাসের দরুন রক্তপাত ঘটে যা সকাল হতে হতে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ১৯ তারিখ থেকে প্রায় প্রতিদিনই আমাদের সহবাস হয়েছিল কিন্তু কখনোই মাসিকের মত সারাদিন রক্ত আসতো না কিন্তু হঠাৎ খুব সম্ভবত ২২ অথবা ২৪ তারিখ রাত থেকে একেবারে মাসিকের মত রক্ত আসা শুরু করে মাসিকে যে রকম শুরু হওয়ার আগের দিন আমার ব্যথা হয় ঠিক সেরকম আগের দিন রাত্রে ব্যথা ছিল তারপরের দিন থেকেই রক্ত আসছে এমনকি আমার মাসিকের ধরন যেমন প্রথম তিনদিন একটু বেশি যায় তারপর আস্তে আস্তে কমে যায় আবার ৫/৭ দিনের দিন আবার হয় আবার ৯-১০ দিনের দিন, ঠিক এরকমটাই ছিল কিন্তু এটা তো পবিত্র থাকার পনেরো দিনের পূর্বেই হয়েছে এজন্য আমি ইস্তেহাজা ধরে সব কাজই করেছি নামাজ রোজা এবং সহবাস এখন ২২ তারিখ থেকে এটা চলতি মাসের আর কি মে মাসের ২-৩ তারিখ পর্যন্ত চলেছে একেবারেই হালকা সারাদিনে এক দুই ফোঁটা খয়রি রক্ত হলেও এসেছে তাই আমি ইসতেহাজার নিয়মের ভিতরে যেরকম মাসিকের অভ্যাসের দিনগুলো মাসিক ধরতে হয় তাই ১ তারিখ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত মাসিক ধরতে চেয়েছিলাম কিন্তু ৪ তারিখ সকাল থেকে পাঁচ তারিখ আজ দুপুর তিনটা পর্যন্ত কিছুই হয়নি বলা যায় কোন রক্তই আসেনি মনে হচ্ছে বন্ধ হয়ে গিয়েছে এখন আমি কি করবো বুঝতে পারছি না।


১) নাকি রক্ত বন্ধ হয়ে গিয়েছে দেখে গোসল করে নামাজ আদায় করে নিব এবং যেহেতু নামাজ শুরু করেছি সেহেতু সহবাস করা যাবে কি?


২) আর ১০ দিনের ভিতরে যদি আবার রক্ত দেখা দেয় এবং এই ১০ দিনের ভিতরে যদি আমি সহবাস করে ফেলি তাহলে কি কাফফারা আদায় করতে হবে?
৩) মে মাসের ১ তারিখ থেকে যে আমি মাসিক ধরেছি এটা কি আদৌ ঠিক ছিল?
৪) মে মাসের দশ তারিখের পর যদি পবিত্র থাকার ১৫ দিনের পূর্বেই আবার রক্ত আসে তাহলে এটা কি আমি ইস্তেহাজা ধরবো না মাসিক ধরবো? (৩ নং প্রশ্নের উত্তরের উপর নির্ভর করে)


৫) এবং পূর্বে এপ্রিল মাসে ২২/২৪ তারিখের দিকে যে রক্ত এসেছিল সেটাকে যে আমি ইস্তেহাজা ধরেছে সেটা কি ঠিক ছিল? তখন যে সহবাস হয়েছে এতে কি গুনাহ হয়েছে?
৫) জীবনের প্রথম সহবাসে এরকম মাসিকের ওলট-পালট হয়ে যাওয়াটা কি স্বাভাবিক?


৬) প্রথম দিকে এজন্য আমার সহবাসে একটু সমস্যা হয় তার বীর্য্যপাত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা বা সঞ্চালন আমার জন্য এখনই প্রায় অসম্ভব তাই দেখা যায় যে কিছুটা প্রবেশ করিয়ে বের করতে হয় তারপর আমি হাত দিয়ে ধরে তার বীর্য্যপাত করে দেই তখন বাথরুমে বীর্যটা পড়ে যায় এতে কি কোন গুনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (560,640 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী তুহর তথা দুই হায়েজের মাঝে পবিত্রতার সর্বনিম্ন সীমা পনেরো দিন।
এই পনেরো দিনের মধ্যে কোনো রক্ত আসলে সেটি হায়েজ নয়,বরং সেটি ইস্তেহাজা তথা অসুস্থতা।
এই সময়ে নামাজ রোযা আদায় করতে হবে।    
হজরত হান্নাদ [রহ] আম্মাজান আয়েশা [রা]-এর হাদিস বর্ণনা করেছেন যে, ফাতিমা বিনতে হুবাইশ নামক এক নারী একবার রাসুল [সা]-এর সমীপে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল, আমি একজন ইস্তেহাযাগ্রস্ত মেয়ে। আমি তো পাক হই না। তাই আমি কি নামাজ পড়া ছেড়ে দেবো? রাসুল [সা] বললেন, না, কারণ এ রক্ত হায়েযের নয়; বরং এ হলো শিরা থেকে বেরিয়ে আসা রক্ত। সুতরাং যখন তোমার হায়েযের নির্ধারিত দিনগুলি আসে তখন সে দিনগুলি নামাজ ছেড়ে দেবে। আর হায়েযের দিন চলে গেলে তোমার রক্ত ধুয়ে নেবে এবং নামাজ আদায় করবে। [তিরমিজি, হাদিস-১২৫]
     
لما قال الحصکفیؒ: واقل الطہر بین الحیضتین او النفاس والحیض خمسۃ عشر یومًا ولیالیھا اجماعًا۔ (الدرالمختارعلی صدر ردّالمحتار:ج؍۱،ص؍۲۸۵، باب الحیض)
সারমর্মঃ দুই হায়েজ বা নিফাস ও হায়েজের মধ্যে পবিত্রতার সর্বনিম্ন সীমা সর্বসম্মতিক্রমে পনেরো দিন পনেরো রাত।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে ২৬ শে এপ্রিল থেকে মে মাসের ২-৩ তারিখ (রক্ত বন্ধ হওয়ার দিন) পর্যন্ত হায়েজ বলে গন্য করতে হবে।

(০১)
এখন আপনি ফরজ গোসল করে নামাজ আদায় করবেন।
রক্ত যেদিন যেই ওয়াক্ত হতে বন্ধ হয়েছে,আজ পর্যন্ত সব নামাজের কাজা আদায় করে নিবেন।

এমতাবস্থায় সহবাস করা যাবে।

(০২)
আর ১০ দিনের ভিতরে যদি আবার রক্ত দেখা দেয়,তাহলে সেটি ইস্তেহাজা বলে গন্য হবে।

এবং এই ১০ দিনের ভিতরে যদি আপনি সহবাস করে ফেলেন, তাহলে কাফফারা আদায় করতে হবেনা।

মে মাসের ১৮ তারিখের পর রক্ত আসলে সেক্ষেত্রে তাহা সর্বনিম্ন ৩ দিন ৩ রাত হলে সেটি হায়েজ বলে গন্য হবে।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরন মতে ২৬ শে এপ্রিল থেকে মে মাসের ২-৩ তারিখ (রক্ত বন্ধ হওয়ার দিন) পর্যন্ত হায়েজ বলে গন্য করতে হবে।

(০৪)
উপরের উত্তর গুলি দ্রষ্টব্য।

(০৫)
সেটা হায়েজ ছিলো।
তাই সেই সময়ে সহবাস হারাম হয়েছে।

এর জন্য তওবা আবশ্যক। 

(০৬)
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের স্বরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ থাকবে। 

(০৭)
শারীরিক অসুস্থতা থাকলে গুনাহ হবেনা।

বিষয়টি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
স্বাভাবিক না হলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...