আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
129 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (23 points)
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته

এক বোনের প্রশ্ন -

আমার দেড় বছরের একটা বাচ্চা আছে। বর্তমানে আমি কনসিভ করেছি দেড় মাস হলো। কিন্তু আমার স্বামী বাচ্চাটা রাখতে চাচ্ছেন না।

* আমার শাশুড়ির অসুস্থ। এছাড়া আমার আম্মা নেই দেখাশুনা করার জন্য, আমার যাওজ এখন অনেক ঋণগ্রস্ত। তিনি সব কিছু চিন্তা করে বাচ্চাটা রাখতে চাচ্ছেন না।

* আমি কি বাচ্চাটা নষ্ট করতে পারবো? যদি নাযায়েজ হয় তাহলে স্বামীর অবাধ্য হওয়ায় আমার স্বামী যদি আমার উপর অসন্তুষ্ট হয় আমি কি গোনাহগার  হব? মেহেরবানী করে আমার করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে বলুন শায়েখ!

1 Answer

0 votes
by (574,080 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান হলো  যদি মহিলা অত্যাধিক দুর্বল হয়, যার কারণে গর্ভধারণ তার জন্য আশঙ্কাজনক হয় এবং গর্ভধারণের মেয়াদ চার মাসের কম হয়। তাহলে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক গর্ভপাত বৈধ হবে। মেয়াদ চার মাসের অধিক হলে কোনোভাবেই বৈধ হবেনা।

খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান ইত্যাদির অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে, দৈহিক সৌন্দর্য বা ফিগার ঠিক রাখার উদ্দেশ্যে ,কন্যাসন্তান জন্ম নেয়ার ভয়ে (যাতে পরবর্তীতে এদের বিয়ে শাদীর ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়),অধিক সন্তান নেয়াকে লজ্জার বিষয় মনে করে গর্ভপাত বিশেষত অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে গর্ভপাত করলে আল্লাহর উপর বিশ্বাস ও ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। কেননা রিজিকের মালিক আল্লাহ।

আল্লাহ তায়ালা  বলেছেন, 

ولا تقتلوا أولادكم خشية إملاق، نحن نرزقهم وإيّاكم إنّ قتلهم كان خطأ كبيراً. 

‘’দারিদ্রতার ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানকে হত্যা কর না। তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই খাদ্য প্রদান করে থাকি।নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ…’’(সূরা ইসরা, আয়াত-৩১)

অন্যত্র তিনি বলেন, الشَّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ . “শয়তান তোমাদের অভাবের ওয়াদা দেয়।” (সূরা আল-বাক্বারা)

আধুনিক যুগে ভ্রুণহত্যা জাহেলি যুগে কন্যাসন্তানকে
জীবন্ত সমাধিস্থ করার নামান্তর। তখন বাবা নিজ মেয়েকে গর্তে পুঁতে ফেলত; আর এখন আধুনিক যন্ত্রপাতি দ্বারা
মায়ের পেটেই শিশুকে মেরে ফেলা হয়। এ দুই হত্যার মধ্যে বাহ্যত কোনো তফাত নেই। এজন্য

রাসুলুল্লাহ (সা.) ভ্রুণহত্যাকে ‘গুপ্তহত্যা’ বলে উল্লেখ করেছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘স্মরণ কর ওই
দিনকে, যেদিন জীবন্ত সমাধিস্থ নিষ্পাপ
বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করা হবে, তোমাকে কোন অপরাধের কারণে হত্যা করা হয়েছে?’ (সূরা তাকয়ির :৮)।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
চার মাসের পূর্বে বিশেষ কিছু কারণে শরীয়ত গর্ভপাতকে অনুমোদন প্রদান করে থাকে।
,
(ক)বর্তমানে কোলে দুধের একটি শিশু রয়েছে,অপরদিকে উক্ত মহিলার গর্ভাশয়ে নতুন সন্তানও উৎপাদিত হচ্ছে। গর্ভের দরুন দুধ একেবারে শুকিয়ে গেছে।অপরদিকে উক্ত সন্তানকে অন্যকোনো উপায়ে লালনপালন করা যাচ্ছেনা। মায়ের দুধ ব্যতীত অন্যকিছুতে সে মূখই দিচ্ছে না।এমতাবস্থায় চারমাস হয়নি এমন গর্ভকে গর্ভপাত করা বৈধ রয়েছে।
,
(খ)কোনো মুসলমান বিজ্ঞ ডাক্তার উক্ত গর্ভবতী মহিলাকে পরিদর্শন করে বলে যে,গর্ভপাত না করলে মহিলার জান বা কোনো অঙ্গ বিনাশের আশঙ্কা রয়েছে।

প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে যে আপনি রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারেননা ,শরীর অনেক শুকিয়ে গেছে।
গর্ভের সন্তানের দরুন আপনার শারীরিক ক্ষতি হলে এটি ওযর হবে।

আরো জানুনঃ 
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
আপনার এখন দেড় বছরের একটা বাচ্চা আছে।
এক্ষেত্রে যদি ১/ গর্ভের দরুন আপনার দুধ একেবারে শুকিয়ে যায়,যার কারনে দুধের শিশুকে দুধ পান করাতে না পারেন,বা ২/ এই পরিমান দুধ শুকিয়ে যায় যে কোলের সন্তানের ক্ষুধা নিবারনের মতো দুধ না পায়,বা ৩/ কোনো বিজ্ঞ মুসলিম ডাক্তার যদি বলে যে এই মুহূর্তে বাচ্চা নিলে আপনার বা কোলের শিশুর বা গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হতে পারে।

সেক্ষেত্রে আপনার গর্ভের বয়স যেহেতু চার মাসের কম(দেড় মাস), সুতরাং এক্ষেত্রে কেবল প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি গর্ভপাত করতে পারবেন। অর্থাৎ এমতাবস্থায় আপনি বাচ্চাটা নষ্ট করতে পারবেন।
,
নতুবা গর্ভপাত করা জায়েজ হবেনা।

(এক্ষেত্রে  স্বামীর অবাধ্য হওয়ায় আপনার স্বামী যদি আপনার উপর অসন্তুষ্ট হয়, আপনি গোনাহগার হবেননা।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...