অশ্লীলতা মানুষের দুনিয়া ও আখিরাত ধ্বংস করে। এ জন্য মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের অশ্লীলতা থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে ,
قُلۡ اِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّیَ الۡفَوَاحِشَ مَا ظَہَرَ مِنۡہَا وَ مَا بَطَنَ وَ الۡاِثۡمَ وَ الۡبَغۡیَ بِغَیۡرِ الۡحَقِّ وَ اَنۡ تُشۡرِکُوۡا بِاللّٰہِ مَا لَمۡ یُنَزِّلۡ بِہٖ سُلۡطٰنًا وَّ اَنۡ تَقُوۡلُوۡا عَلَی اللّٰہِ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۳۳﴾
আপনি বলুন, আমার রব প্রকাশ্য, অপ্রকাশ্য অশ্লীলতা, পাপকাজ, অন্যায় ও অসংগত বিদ্রোহ ও বিরোধিতা এবং আল্লাহর সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক করা, যার পক্ষে আল্লাহ কোনো দলিল-প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি, আর আল্লাহ সম্বন্ধে এমন কিছু বলা, যা সম্বন্ধে তোমাদের কোনো জ্ঞানই নেই, (ইত্যাদি কাজ ও বিষয়) নিষিদ্ধ করেছেন। (সুরা আরাফ, আয়াত : ৩৩)
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,
اِنَّ الَّذِیۡنَ یُحِبُّوۡنَ اَنۡ تَشِیۡعَ الۡفَاحِشَۃُ فِی الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ۙ فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ ؕ وَ اللّٰہُ یَعۡلَمُ وَ اَنۡتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۹﴾
‘নিশ্চয়ই যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে, তাদের জন্য আছে দুনিয়া ও আখিরাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আর আল্লাহ জানেন, তোমরা জানো না।’ (সুরা : নুর, আয়াত : ১৯)
পবিত্র কোরআনের এই আয়াতে অশ্লীলতার আরবি শব্দ ‘ফাহেশা’ ব্যবহার করা হয়েছে, যার অর্থ অশ্লীলতা, নির্লজ্জতা ইত্যাদি। আবার পবিত্র কোরআনের কোনো কোনো জায়গায় ব্যভিচারকেও ‘ফাহেশা’ বলা হয়েছে।
যেমন সুরা বনি ইসরাঈলে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেও না, নিশ্চয়ই তা অশ্লীল ও মন্দ পথ।’ (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৩২)
তাই প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সব ধরনের অশ্লীলতা থেকে নিজেদের দূরে রাখা কর্তব্য।
হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবদুল্লাহ বিন উমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বললেন, হে মুহাজিরগণ! তোমরা পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হবে।
তবে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন তোমরা তার সম্মুখীন না হও। যখন কোনো জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারি আকারে প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তা ছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা আগেকার লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি। যখন কোনো জাতি ওজন ও পরিমাপে কারচুপি করে তখন তাদের ওপর নেমে আসে দুর্ভিক্ষ, কঠিন বিপদ-মুসিবত।
যখন জাকাত আদায় করে না তখন আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। যদি ভূপৃষ্ঠে চতুষ্পদ জন্তু ও নির্বাক প্রাণী না থাকত তাহলে আর কখনো বৃষ্টিপাত হতো না। যখন কোনো জাতি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, তখন আল্লাহ তাদের ওপর তাদের বিজাতীয় দুশমনকে ক্ষমতাসীন করেন এবং সে তাদের সহায়-সম্পদ সব কিছু কেড়ে নেয়। যখন তোমাদের শাসকরা আল্লাহর কিতাব মোতাবেক মীমাংসা করে না এবং আল্লাহর নাজিলকৃত বিধানকে গ্রহণ করে না, তখন আল্লাহ তাদের পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪০১৯)
উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে অশ্লীলতা হল এমন কোন উচ্চারণ বা কাজ যা সেই সময়ের প্রচলিত নৈতিকতাকে তীব্রভাবে আঘাত করে । এটি অশালীন" থেকে উদ্ভূত। সাধারণত, শব্দটি "অশ্লীল লাভ " এবং "যুদ্ধের অশ্লীলতা" এর মতো অভিব্যক্তিতে শক্তিশালী নৈতিক অবমাননা এবং ক্ষোভ বোঝাতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
অশালীন পোশাক,চেহারা ছাড়া অন্য কোনো অঙ্গের প্রকাশ,চেহারা দ্বারা অশ্লীল অঙ্গি ভঙ্গি অশ্লীলতার অন্তর্ভুক্ত হবে।
অনেক সমাজে শুধু বুক হতে হাটু পর্যন্ত ঢাকলেই আর অশ্লীলতার অন্তর্ভুক্ত থাকেনা বলা হয়।
তবে অশ্লীল ভাষায় গালি দেয়া বা অশ্লীল শব্দ সম্বলিত গান শুনা অশ্লীল কাজের অন্তর্ভুক্ত ।