আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন,
قَدۡ نَرٰی تَقَلُّبَ وَجۡہِکَ فِی السَّمَآءِ ۚ فَلَنُوَلِّیَنَّکَ قِبۡلَۃً تَرۡضٰہَا ۪ فَوَلِّ وَجۡہَکَ شَطۡرَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَرَامِ ؕ وَ حَیۡثُ مَا کُنۡتُمۡ فَوَلُّوۡا وُجُوۡہَکُمۡ شَطۡرَہٗ ؕ وَ اِنَّ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ لَیَعۡلَمُوۡنَ اَنَّہُ الۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّہِمۡ ؕ وَ مَا اللّٰہُ بِغَافِلٍ عَمَّا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۴۴﴾
আকাশের দিকে বার বার তোমার মুখ ফিরানো আমি অবশ্যই দেখছি। অতএব আমি অবশ্যই তোমাকে এমন কিবলার দিকে ফিরাব, যা তুমি পছন্দ কর। সুতরাং তোমার চেহারা মাসজিদুল হারামের দিকে ফিরাও এবং তোমরা যেখানেই থাক, তার দিকেই তোমাদের চেহারা ফিরাও। আর নিশ্চয় যারা কিতাবপ্রাপ্ত হয়েছে, তারা অবশ্যই জানে যে, তা তাদের রবের পক্ষ থেকে সত্য এবং তারা যা করে, সে ব্যাপারে আল্লাহ গাফিল নন।
(সুরা বাকারা ১৪৪)
فَلۡیَعۡبُدُوۡا رَبَّ ہٰذَا الۡبَیۡتِ ۙ﴿۳﴾
অতএব তারা যেন এবাদত করে এই (কাবা) ঘরের পালনকর্তার।
(সুরা কুরাইশ ০৩)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا عَاصِمٌ الأَحْوَلُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَرْجِسَ، قَالَ رَأَيْتُ الأُصَيْلِعَ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ يُقَبِّلُ الْحَجَرَ وَيَقُولُ إِنِّي لأُقَبِّلُكَ وَإِنِّي لأَعْلَمُ أَنَّكَ حَجَرٌ لاَ تَضُرُّ وَلاَ تَنْفَعُ وَلَوْلاَ أَنِّي رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يُقَبِّلُكَ مَا قَبَّلْتُكَ .
আবদুল্লাহ ইবনে সারজিস (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল-উসায়লিহ্ অর্থাৎ উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) কে দেখলাম যে, তিনি হাজরে আসওয়াদে চুমা দিচ্ছেন আর বলছেন, আমি অবশ্যি তোমাকে চুম্বন করছি। আমি নিশ্চিত জানি যে, তুমি একটি পাথর মাত্র, তুমি ক্ষতিও করতে পারো না এবং উপকারও করতে পারো না। আমি যদি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে তোমায় চুমা দিতে না দেখতাম তাহলে আমিও তোমায় চুমা দিতাম না।
(সহীহুল বুখারী ১৫৯৭, ১৬০৫, ১৬১০, মুসলিম ১২৭০, ১২৭১, তিরমিযী ৮৬০, নাসায়ী ১৫৫৮, ২৯৩৬, ২৯৩৭, ২৯৩৮, আবূ দাউদ ১৮৭৩, ইবনে মাজাহ ২৯৪৩.আহমাদ ১০০, ১৩২, ১৭৭, ২২৭, ২৫৫, ২৭৬, ৩২৭, ৩৬৩, ৩৮২, ৩৮৩, মুয়াত্তা মালেক ১৮৬৪, ১৮৬৫, রাওদুন নাদীর ৭২৩, সহীহ আবু দাউদ ১৬৩৬।)
কাবা হচ্ছে মুসলিমদের সালাত আদায় করার দিক নির্দেশন স্থান। মুসলিমরা কাবার দিকে মুখ করে সালাত আদায় করে কিন্তু কাবার পূজা করেনা। আল্লাহ ব্যতিত অন্য কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর সামনে মাথা নত করা ইসলামে ‘শিরক’
সালাত আদায় করার জন্য যদি নিদির্ষ্ট কোনো দিক নির্ণয় না করা থাকতো তাহলে কেউ হয়তো উত্তর দিকে সালাত আদায় করার ইচ্ছে পোষণ করবে, কেউ হয়তো দক্ষিণ দিকে, কেউ হয়তো বা পূর্ব বা পশ্চিম দিকে মুখ করে সালাত আদায় করার ইচ্ছে করবে। যার ফলে ইবাদত নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতো।
মুসলিমরা পৃথিবীর যেই স্থানেই থাকুক, এক আল্লাহর ইবাদতে চূড়ান্ত ভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আল্লাহ কাবার দিকে মুখ ফিরিয়ে ইবাদত করার নির্দেশ দিয়েছে। ফলে যেসব মুসলিমরা কা’বার পশ্চিমে বাস করে তারা পূর্ব দিকে ফিরে, যারা পূর্বে বসবাস করে তারা পশ্চিম দিকে মুখ ফিরে সালাত আদায় করে। আবার, কাবার দক্ষিণে বসবাস করা লোকেরা উত্তর দিকে ও উত্তরে বসবাস করা লোকেরা দক্ষিণ দিক ফিরে সালাত আদায় করে। বিশ্ব মানচিত্রে কা’বা পৃথিবীর কেন্দ্রে অবস্থান করে। পৃথিবীর প্রথম মানচিত্র অংকন করে মুসলিমরা। যদিও পরবর্তিতে পশ্চিমারা নতুনভাবে মানচিত্র অংকন করে।
কিন্তু তবুও কা’বা পৃথিবীর কেন্দ্রে অবস্থান করে।
মুসলিমরা কাবার ইবাদত করেনা বরং কাবা হচ্ছে আল্লাহর ইবাদতের প্রতিক।