আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
606 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (3 points)


আসসালামু আলাইকুম। 
জন্মদিন পালন করা হালাল হওয়া সম্পর্কে একটি মতামত-

"জন্মদিন পালন নেহাৎই দুনিয়াবি জিনিস, মুআমালাতের অন্তর্ভুক্ত।আর কাফিরদের অনুকরণ ধর্মীয় বিষয়ে হারাম,দুনিয়াবি বিষয়ে নয়।যেমন কাফিররা যেভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ করে,তা দেখে শিখে আমরাও বহুতল ভবন নির্মাণ করি।কাফিররা যেভাবে জাহাজ,অস্ত্র, স্যাটেলাইট বানায় তা দেখে শিখে আমরাও এসব বানাই।এসব ক্ষেত্রে তাদের অনুকরণকে আমরা হারাম বলিনা।একইভাবে জন্মদিন পালনের মত একটি দুনিয়াবি বিষয়ে অনুকরণও হারাম হবেনা ।তাই হালাল পন্থায় জন্মদিন পালন করতে সমস্যা নেই।"

উল্লেখিত মতামতটিকে কি  ভুল প্রমাণ করা যাবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


মুসলমানদের কোনো কাজ শরীয়তের খেলাফ হতে পারেনা। 
চাই তাহা যেই কাজই হোক।

আল্লাহ তাআ’লা বলেন,

اتَّبِعُواْ مَا أُنزِلَ إِلَيْكُم مِّن رَّبِّكُمْ وَلاَ تَتَّبِعُواْ مِن دُونِهِ أَوْلِيَاء

তোমরা অনুসরণ কর, যা তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কোন বন্ধু বা অভিভাবকের অনুসরণ করো না। (সূরা আ’রাফ ৩)

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, 
مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ 
যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের অনুরূপ অবলম্বন করে, সে তাঁদেরই দলভুক্ত। (আবূ দাঊদ ৪০৩১)

দিবস পালন করা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ 

★জন্মদিন সম্পর্কে উইকিপিডিয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে জন্মদিন হচ্ছে পঞ্জিকা অনুযায়ী মানুষের জন্মগ্রহণের দিবস। সাধারণত জন্মবার্ষিকীতে কারো জন্মদিন উৎসবের মাধ্যমে পালন করা হয়। সাধারণতঃ বৎসরের একটি নির্দিষ্ট মাসের নির্দিষ্ট তারিখে শিশুর পক্ষে তার পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন কিংবা ব্যক্তি কর্তৃক উদযাপিত হয় এই দিবসটি। অর্থাৎ, বৎসরের নির্দিষ্ট দিনে জন্মগ্রহণকারী শিশু বা ব্যক্তির জন্ম উপলক্ষে যে আনন্দঘন উৎসব-আয়োজনের পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়, তাই জন্মদিন নামে আখ্যায়িত করা হয়। সাধারণতঃ শিশুদেরকে কেন্দ্র করেই এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তাছাড়াও, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতীসহ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদেরকেও জন্মদিন পালন করতে দেখা যায়। সাড়ম্বর উদযাপন ছাড়াও জন্মদিন উদযাপনের প্রধান মাধ্যম শুভেচ্ছা জ্ঞাপন।
,
কেক কেটে জন্মদিন পালনের উদ্ভব হয় পশ্চিমা দেশগুলোতে। আর জন্মদিনের সূচনা হয় ফিরাউন থেকে। বাইবেলের বুক অব জেনেসিসে এসেছে, ‘তৃতীয় দিনটা ছিল ফিরাউনের জন্মদিন। ফিরাউন তার সব দাসদের জন্য ভোজের আয়োজন করলেন। সেই সময় ফিরাউন রুটিওয়ালা ও খাদ্যদ্রব্য পরিবেশককে কারাগার থেকে মুক্তি দিলেন।’ (আদি পুস্তক : ৪০২)
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
বুঝা গেলো যে এটি আনন্দের একটি অনুষ্ঠান।
মুসলমানদের ঘটা করে কোনো আনন্দ উদযাপনের দিন ঠিক করা দিবস আকারে,এটি জায়েজ নেই।  
মুসলমানদের কোনো দিন পালন নেই।
,
বর্তমানে সাধারণ মানুষের মাঝে ‘জন্মদিন’ পালনের নামে বিশেষ দিন উদযাপনের যে প্রথা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে— এটি বিদআত ও শরিয়ত বিরোধী। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা ছাড়া মুসলমানদের আর কোন উৎসব (দিন পালন) নেই।

আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তার অনুসরণ কর। তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য কারও অনুসরণ কর না। তোমরা খুব অল্পই উপদেশ গ্রহণ কর।’ (সূরা আরাফ : ৩)
,
হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, অবশ্যই তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তী জাতির অনুসরণ করবে বিঘত-বিঘত এবং হাত-হাতের সমপরিমাণ। এমনকি তারা যদি সাপের গর্তে প্রবেশ করে, তা হলে তোমরাও তাদের পেছন পেছন যাবে।’ সাহাবায়ে কেরাম (রা.) বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি ইহুদি ও নাসারাদের অনুকরণ করার কথা বলছেন?’ নবী করিম (সা.) বললেন, ‘তবে আর কার?’ (বুখারি : ২৬৬৯)

অন্য একটি হাদিসে নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি যে জাতির নমুনা অবলম্বন করবে, সে ব্যক্তি সেই জাতিরই দলভুক্ত।’ (সহিহুল জামে : ৬০২৫)

নবী করিম (সা.) আরও বলেন, ‘সে ব্যক্তি আমার দলভুক্ত নয়, যে আমাদের ছেড়ে অন্য কোনো জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে। তোমরা ইহুদিদের সাদৃশ্য অবলম্বন কর না, খ্রিস্টানদেরও সাদৃশ্য অবলম্বন কর না।’ (সিলসিলাহ সহিহা : ২১৯৪)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
এটি একটি দিন পালন, 
আর মুসলমানদের  দুই ঈদ ব্যাতিত কোনো দিন পালন নেই।
,
মুসলমানদের কোনো কাজ শরীয়তের খেলাফ হতে পারেনা।
এটি পুরোপুরি শরীয়ত বিরোধী কাজ।
,
কাফের দের দেখে কোনো কিছু নির্মান করা আর কোনো দিন পালন করা,কোনো দিবস পালন করা এক নয়।
,
বহুতল ভবন নির্মান জাহাজ অস্ত্র বানানো ইত্যাদি নির্মান জাতীয় এটা আজকে থেকে শুরু হয়নি।
দুনিয়ার  শুরু থেকেই কিছু কিছু চলতেই ছিলো।
 মুসলিম রাষ্ট্র গুলোতে কি এমন অস্ত্র নেই,এমন জাহাজ নেই,এমন বহুতল ভবন নেই? 
তাই এটি পুরোপুরি বলা যায়না যে এগুলো কাফেরদেরই অনুকরণ।  
,
★যদি মেনেও নেওয়া হয় যে কিছু বিষয় খাছ করে  কাফের দেরই বানানো।
তাহলে সেটি এখন যেহেতু ব্যপক আকারে মুসলিমরাও ব্যবহার করছে,এবং কেহ সেটাকে নাজায়েজ বলছেনা, শরয়ী সীমারেখার মধ্যেই আছে, তাই সেটা করা যাবে।
,
তবে জন্মদিন পালনের ক্ষেত্রে পুরো বিশ্বের সমস্ত উলামায়ে কেরামগন একমত যে এটি নাজায়েজ। 
   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...