আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
145 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (13 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
শায়েখ, আমি পেশায় একজন প্রকৌশলী ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত; ফরজিয়াতের পাবন্ধি একজন সাথি। একটি মেয়ের সাথে বিয়ের আলাপ হচ্ছিলো। মেয়ের দ্বীনদ্বারি, মেধা ও পারিবারিক অবস্থান সন্তোষজনক পর্যায়ে ছিলো। মেইলযোগে কিছু আলাপে পাত্রীকদ অত্যন্ত ব্যক্তিসম্পনা ও সহানুভূতিশীল মনে হয়েছিলো। দ্বীনদারি, ইলমের আগ্রহ ও মেধা চমৎকার মনে হয়েছে যা পাত্রের পয়েন্টস অফ ফোকাস। এছাড়া,  পর্দার কারণ দেখিয়ে পাত্রী নিজের ব্যক্তিগত পার্টিকুলারস (ওজন উচ্চতা রঙ) পাত্র পক্ষকে জানাননি। দ্বীনদ্বারী মৌলিক বিষয় পাত্রীর মধ্যে বিদ্যমান থাকায় পাত্রপক্ষ নেক নিয়াতে সম্প্রতি সরাসরি সাক্ষাৎ করে। সাক্ষাতকালে পাত্রীর শারীরিক ফিটনেস প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম পরিলক্ষিত হয় (পর্দার খাতিরে বিস্তারিত লিখলাম না, তবে বাহ্যিক ঘাটতিটি মাত্রাতিরিক্ত!)। এখন, পাত্রপক্ষ দ্বিধায় পড়ে গেছে। যেহেতু যোগ্য মেয়ের জন্য যোগ্য দ্বীনদার ছেলে মেলানো বর্তমানে কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায়, পাত্র চিন্তিত ও বিচলিত হয়ে পড়েছে নিজ করণীয় নিয়ে। বাহ্যিক ঘাটতির কারণে একটি দ্বীনদ্বার মেয়েকে এড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টি কি ঠিক হবে? ভাবতেই হৃদয় খুবই সহানুভূতিশীল হয়ে পড়ছে। চোখ ছলছল বটে! আবার, ছাড় দেবার চেষ্টা করেও যদি উনাকে পছন্দ না হয়ে বিয়ে করলে পরে শারীরিক ও দাম্পত্য জীবনে যদি কলহের মুখে পড়তে হয়! সে বিষয়ে পাত্র বেশ চিন্তিত। পাত্র ইস্তেখাড়া করে উল্লেখযোগ্য ফল পায়নি। ইস্তেখাড়া চলমান। পাত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী তিনি ইতিবাচক ফল পেয়েছেন এবং এ সম্পর্ক এগিয়ে নেবার ব্যাপারে অত্যন্ত আগ্রহী।

এমতাবস্থায়,

 (১) পাত্রের করণীয় কি

 (২) পাত্র/পাত্রীর সরাসরি সাক্ষাৎকালে পারস্পরিক পছন্দের ন্যুনতম মানদণ্ড কি সে ব্যাপারে শরয়ী অনুশাসন কি?

এব্যাপারে জানালে ভালো হয়।

1 Answer

0 votes
by (566,100 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি থেকে বর্ণিত,
(إِذَا خَطَبَ أَحَدُكُمْ الْمَرْأَةَ ، فَإِنْ اسْتَطَاعَ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى مَا يَدْعُوهُ إِلَى نِكَاحِهَا ، فَلْيَفْعَلْ)
যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে চায়,তাহলে সে যেন যযথাসম্ভব ঐ মহিলাকে দেখে নেয়।(সুনানু আবি দাউদ-২০৮২)

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
عن أبي هريرة، قال: كنت عند النبي صلى الله عليه وسلم، فأتاه رجل فأخبره أنه تزوج امرأة من الأنصار، فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم: «أنظرت إليها؟»، قال: لا، قال: «فاذهب فانظر إليها، فإن في أعين الأنصارشيئا»
তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পাশে বসা ছিলাম।একব্যক্তি এসে বলল, আমি আনসারি এক মহিলাকে বিয়ে করতে চাই।রাসূলুল্লাহ বললেন,তুমি কি পাত্রী দেখেছো?তিনি বললেন,না।রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,যাও গিয়ে পাত্রী দেখে আসো।কেননা আনসারীদের চোখে নীল বা এ জাতীয় কিছু থাকে।
(সহীহ মুসলিম-১৪২৪)

" يَجُوزُ تَكْرَارُ النَّظَرِ إِنِ احْتَاجَ إِلَيْهِ لِيَتَبَيَّنَ هيئتها ، فَلاَ يَنْدَمُ بَعْدَ النِّكَاحِ ، إِذْ لاَ يَحْصُل الْغَرَضُ غَالِبًا بِأَوَّل نَظْرَةٍ ".
বারংবার দৃষ্টি দেয়া জায়েয।যাতেকরে পাত্রীর পূর্ণ অবয়ব পরিস্কার ভাবে ফুটে উঠে।এবং যাতেকরে বিয়ে পরবর্তী লজ্জিত হতে না হয়।কেননা একবারের দৃষ্টি অধিকাংশ সময়ে যথেষ্ট নাও হতে পারে।(আল-মাওসুআতুল ফিকহিয়্যাহ-২২/১৭)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

বিবাহের ক্ষেত্রে রাসূল সা: ‘কুফু’র বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। 

وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)!
সহীহ : বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)
,
আরো জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নের বিবরন মতে উল্লেখিত পাত্রীর শারীরিক ফিটনেস প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম পরিলক্ষিত হয়েছে। সুতরাং এমতাবস্থায় পাত্রের সাথে শারীরিক ফিটনেস সমান হলে সেক্ষেত্রে কুফুর সামঞ্জস্যতা আছে বলেই ধরা হবে। এমতাবস্থায় বিবাহের পরামর্শ থাকবে। 

আর যদি পাত্রের শারীরিক ফিটনেস (সৌন্দর্যতা,উচ্চতা ইত্যাদি)  হতে মেয়ের শারীরিক ফিটনেস (সৌন্দর্যতা,উচ্চতা ইত্যাদি) অনেক কম হলে এক্ষেত্রে কুফুর সামঞ্জস্যতা পূর্ণ ভাবে হয়নি।

সুতরাং এমতাবস্থায় ইস্তেখারা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ থাকবে। 

বিবাহ পরবর্তী জীবনে এ নিয়ে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে অন্যত্রে পাত্রী দেখতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...