জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান হলো শরীয়ত সম্মত মান্নত পূরন করা ওয়াজিব।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,
يُوفُونَ بِالنَّذْرِ. (الإنسان:
‘‘তারা মান্নত পূরা করে’’ (ইনসানঃ ৭)
আল্লাহ তাআলা আরো ইরশাদ করেছেন,
وَمَا أَنْفَقْتُمْ مِنْ نَفَقَةٍ أَوْ نَذَرْتُمْ مِنْ نَذْرٍ فَإِنَّ اللَّهَ يَعْلَمُهُ (البقرة: ২৭০)
‘‘তোমরা যা কিছু খরচ করেছো আর যে মান্নত মেনেছো, তা আল্লাহ জানেন’’ (বাকারা : ২৭০)
সহীহ বুখারীতে আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,
من نذر أن يطيع الله فليطيعه ومن نذر أن يعصى الله فلا يعصه.
‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর আনুগত্যের কাজে মান্নত করে সে যেন তা পূরা করার মাধ্যমে তাঁর আনুগত্য করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর নাফরমানীমূলক কাজে মান্নত করে সে যেন তাঁর নাফরমানী না করে।’’ [অথাৎ মান্নত যেন পূরা না করে।’’
,
দারুল উলুম দেওবন্দ এর 155166 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
যখন কোন ব্যক্তি বছরে দশ দিন রোযা রাখার মান্নত করে, তখন তার জন্য বছরে দশ দিন রোজা রাখা ওয়াজিব।
অসুস্থতার কারণে যদি সে এক বছর রোযা রাখতে অক্ষম হয় তবে তার উচিত পরে তার কাজা আদায় করা।
যদি সে অসুস্থতার কারনে একেবারেই অক্ষম থাকে যে, প্রতি বছর রোজা রাখতে এবং আগের মিস হওয়া রোযা রাখতে সক্ষম হওয়ার প্রত্যাশা করে না, তাহলে সে প্রতিবছর শেষে দশ দিনের রোযার ফিদিয়া আদায় করতে বাধ্য থাকবে।
জামিয়া বিন নুরি পাকিস্তানের 144004200948 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
যদি কোনো ব্যক্তি এক বছর ধরে রোজা রাখার মান্নত করে,
তাহলে তাকে এক বছরের জন্য রোজা রাখতে হবে এবং যতক্ষণ তার রোজা রাখার শক্তি রয়েছে ততক্ষণ রোজার জন্য মুক্তির কোনও সুযোগ থাকবে না।
,
যদি তার দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা বা চরম রোগ হয়, বা বার্ধক্য হওয়ার কারনে যদি রোজা রাখতে না পারে, এবং ভবিষ্যতে আবার রোজা রাখার আশা না থাকে তাহলে প্রতিটি রোযার জন্য একটি ফিদাহ (সাদাকা আল-ফিতরের পরিমাণ) প্রদান করা প্রয়োজন এবং যদি জীবনে কোন কারণেই কোন ফিদিয়া দিয়ে যেতে না পারে,তাহলে সে অছিয়ত করে যাবে।
তার উত্তরাধিকারীরা তার সম্পদের তিন ভাগের এক ভাগ থেকে তার এই অছিয়ত পূরন করবে।
الفتاوى الهندية (2/ 65):
"من نذر نذراً مطلقاً فعليه الوفاء به، كذا في الهداية.
ولو جعل عليه حجةً أو عمرةً أو صوماً أو صلاةً أو صدقةً أو ما أشبه ذلك مما هو طاعة إن فعل كذا ففعل لزمه ذلك الذي جعله على نفسه ولم تجب كفارة اليمين فيه في ظاهر الرواية عندنا.
وقد روي عن محمد - رحمه الله تعالى - قال: إن علق النذر بشرط يريد كونه كقوله: إن شفى الله مريضي أو رد غائبي لايخرج عنه بالكفارة كذا في المبسوط .
ويلزمه عين ما سمى، كذا في فتاوى قاضي خان".
সারমর্মঃ কেহ যদি মান্নত করে,যেমন নামাজ,ছদকাহ,ইত্যাদি তাহলে তার পূরন করা ওয়াজিব।
الفتاوى الهندية (1/ 210):
"ولو قال: لله علي صوم سنة، ولم يعين يصوم سنة بالأهلة ويقضي خمسة وثلاثين يوماً ثلاثين يوماً لرمضان وخمسة أيام قضاء عن يوم الفطر والنحر، وأيام التشريق".
الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (2/ 437):
"(ولو قال مريض: لله علي أن أصوم شهرا فمات قبل أن يصح لا شيء عليه، وإن صح) ولو (يوما) ولم يصمه (لزمه الوصية بجميعه) على الصحيح، كالصحيح إذا نذر ذلك ومات قبل تمام الشهر لزمه الوصية بالجميع بالإجماع كما في الخبازية، بخلاف القضاء فإن سببه إدراك العدة".
সারমর্মঃ কেহ যদি এক মাস রোযা রাখার মান্নত করে,এবং এক মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই মারা যায়,তাহলে তার উপর অছিয়ত করে যাওয়া জরুরি।
فتاوی ہندیہ : وإذا نذر أن یصوم کل خمیس یأتي علیہ فأفطر خمیسًا واحدًا فعلیہ قضاوٴہ کذا في المحید ولو أخر القضاء حتی صار شیخًا فانیًا أو کان النذر بصیام الأبد فعجز لذلک أو باشتغالہ بالمعیشة لکون صناعتہ شاقة فلہ أن یفطر ویطعم لکل یوم مسکینًا إلخ (۱/۳۰۲، ط: زکریا) نیز دیکھیں: فتاوی دارالعلوم ۱۲ (۷۷، ط: کراچی، سوال: ۲۳، کتاب النذور)
সারমর্মঃ যদি রোযা রাখতে একেবারে অক্ষম হয়ে যায়,তাহলে সে প্রত্যেক রোযার জন্য ছদকায়ে ফিতর সমপরিমাণ আদায় করবে।
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার মা বৃদ্ধা হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত উক্ত মান্নতের রোযা রেখেই যাবে।
যদি কোনো কারনে না রাখতে পারে,তাহলে পরবর্তীতে তার কাজা আদায় করে নিবে।
,
জীবনের কোনো এক সময়ে এসে যদি একেবারেই রোযা রাখতে সক্ষম না হয়,তাহলে প্রত্যেক রোযার জন্য ছদকায়ে ফিতর সমপরিমাণ ছদকাহ করবে।
,
জীবদ্দশায় যদি কিছু থেকেই যায়,তাহলে মারা যাওয়ার আগ দিয়ে অছিয়ত করে যাবে,যাতে তার উত্তরাধিকার গন ফিদিয়া আদায় করতে পারে।
,
ফিদিয়াহঃ
প্রত্যেক রোযার জন্য পৌনে দুই সের গম বা আটা অথবা এর বাজার মূল্য গরীব মিসকিনকে মালিক বানিয়ে দান করে দিতে হবে। অথবা প্রতি রোযার বদলে একজন গরীবকে দুই বেলা তৃপ্তি সহকারে খানা খাওয়াতে হবে। যা সদকায়ে ফিতির এর টাকা পরিমাণ হয়। (ফতাওয়া শামী-২/৭২)