আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
208 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (56 points)
এক বোনের প্রশ্ন


আসসালামুয়ালাইকুম
আমি মানসিক ভাবে খুব ভেঙ্গে পরেছি দয়া করে আমাকে সাহায্য করবেন।


আমি বিবাহিত একজন মেয়ে, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই হাসবেন্ড এর সথে আমার মাঝে মাঝে ঝামেলা হয় নানা বিষয় নিয়ে এবং সে আমাকে মাঝে মাঝে গায়েও হাত তুলে।


গত দেড় দুই মাস থেকে আমাদের সম্পর্ক খুব খারাপ যাচ্ছে। সব সময় রাগারাগী মারামারি দুজন লেগেই থাকে।


সে ঠিক মতো নামাজ পরেনা। ইসলাম ব্যপারে তেমন আগ্রহ করেনা। এটা নিয়েও তার সাথে অনেক ঝগড়া করি।


তো রিসেন্ট সে একদিন বাহিরে থেকে অনেক রাত করে বাসায় আসে। যদিও কিছু কাজ ছিলো। কিন্তু আমি এটা পছন্দ করিনা।আর সে ঠিক মতো নামাজ ও পরে না। তো, এই দুই ব্যাপার নিয়ে তার সাথে অনেক ঝগড়া করে কথা বলি। তখন জায়নামাজে বসা ছিলাম আমি। কথার মাঝে সে আমাকে জায়নামাজেই অনেক মারে ওখান থেকে উঠায়ে আবার মারে।


আর রাগের মাঝে আমি বার বার বলি আমাকে বাদ দিয়ে দাও। আর ভালো লাগেনা।আমি মন থেকে বলিনা,ওকে শুনানোর জন্য বলে থাকি। সে ও বলে বার বার চলে যাও ভালো না লাগলে। সেও মন থেকে বলেনা জানি তাই আমিও এভাবে বলে থাকি।


সে আমাকে অনেক ভালোবাসে।আমার জন্য অনেক কিছু করেও।কিন্তু আমার প্রশ্ন ভালোবাসলে কেনো এমন করে?


কিন্তু যখন কষ্ট হয় আমাকে মারে গালি দেয় আল্লাহ আল্লাহ বলি।আমি চায়না আমার কোনো অভিযোগ করাতে যার জন্য আমার হাসবেন্ড ওর উপর কোনো লানত হোক বা তার কোনো ক্ষতি হোক।


সব কিছু মিলায়ে খুব মানসিক কষ্ট হয়।আল্লাহর কছে ৫ ওয়াক্ত নামাজের পর দোয়া করি আমাদের গুনাহ গুলো মাফ করে দেন যেনো,আমাদের সম্পর্ক সব সময় মিল মহব্বতে থাকে যেনো।


এ অবস্থায় আমার কি করনিয়?
আমরা ২ জন ই অন্যয় করে থাকি ২ জন ২ জনকে সম্মান করিনা।আমরা কিভাবে ভালো থাকতে পারবো?


আমাদের দুজনের সম্পর্ক যখন ভালো থাকে আমরা খুবই ভালো থাকি খুব ফ্রেন্ডলি।কিন্তু দুজন দুজনকে ভালোবাসার পর ও কেনো এমনটা হয়?


আর যখন কষ্ট পাই আমি আমার কষ্টের জন্য কি আল্লাহ তাকে গুনাগার করবে বা কোনো বিপদে পরবে?


কোনো আমলের দ্বারা কি ভালো থাকা যায়?


আমি ৫ ওয়াক্ত নামাজ পরে তাহাজ্জুদ পরে নফল নামাজ পরে আমি আল্লাহর কাছে অনেক দোয়া করি
আমাদের হেদায়েত চাই।

এর বাহিরে আর কি করতে পারি.?


আমাকে জায়নামাজে মারার পর থেকে তার প্রতি আমার খুব ঘৃণা কাজ করছে,তার মধ্যে কোনো অনুশোচনা বোধ  নেই।আল্লাহর ভয় ও নেই।


আমরা কিভাবে ভালো থাকতে পারবো?

দুজন কিভাবে আল্লাহর রাস্তায় কবুল হতে পারবো?

দুজনের মধ্যে এতো দূরত্ব এই বাজে আচরন গুলো কিভাবে দূর করবো?


আরেকটা প্রশ্ন- হাসবেন্ড বেনামাজি হলে তাকে কিভাবে নামাজে আনা যায়?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
لَأَنْ يَهْدِيَ اللَّهُ بِكَ رَجُلًا وَاحِدًا خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ يَكُونَ لَكَ حُمْرُ النَّعَمِ

“তোমার মাধ্যমে যদি আল্লাহ একজন লোককেও হেদায়েত দেন তবে তা তোমার জন্য একটি লাল উট পাওয়া থেকেও উত্তম।” (বুখারী ১২/৩৭)

তিনি আরো বলেন:

مَنْ دَعَا إِلَى هُدًى كَانَ لَهُ مِنْ الْأَجْرِ مِثْلُ أُجُورِ مَنْ تَبِعَهُ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا

“যে ব্যক্তি হেদায়েতের পথে আহবান করে সে ঐ পরিমাণ সওয়াবের অধিকারী হয় যে ব্যক্তি তদনুযায়ী আমল করে। কিন্তু এতে আহ্বানকারীর সওয়াব কমানো হয় না।”(সুনানু আবি দাউদ-৪৬০৯)

★আল্লাহর কাছে দোয়ার পাশাপাশি আপনার স্বামীকে কিছু আমল করতে বলবেনঃ-

আনাস রাযি. বলেন, রাসুল ﷺ (উম্মতকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য) সব সময় এই দোয়া করতেন, 

يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّتْ قَلْبِىْ عَلىٰ دِيْنِكَ 

হে অন্তর পরিবর্তনকারী! আমার অন্তর আপনার দীনের উপর দৃঢ় করে দিন।

আনাস রাযি. বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা আপনার উপর এবং আপনার আনিত শিক্ষার উপর ঈমান এনেছি। এখন আপনার মনে কি আমাদের সম্পর্কে কোনো সন্দেহ আছে? ( যে বেশি বেশি এই দোয়া করেন!) রাসুল ﷺ উত্তর দিলেন হ্যাঁ! সব অন্তর আল্লাহর দুই আঙ্গুলের মধ্যে পড়ে আছে। আল্লাহ যেভাবে চান, এগুলোকে পরিবর্তন করেন। (তিরমিযি ২১৪০ তাকদির অধ্যায়)

রাসূলুল্লাহ্ ﷺ দোয়া করতেন,

اللَّهُمَّ آتِ نَفْسِي تَقْوَاهَا، وَزَكِّهَا أَنْتَ خَيْرُ مَن زَكَّاهَا، أَنْتَ وَلِيُّهَا وَمَوْلَاهَا

হে আল্লাহ আমাকে তাকওয়ার তওফীক দান করুন এবং নাফসকে পবিত্র করুন, আপনিই তো উত্তম পবিত্রকারী। আর আপনিই আমার নাফসের মুরুব্বী ও পৃষ্ঠপোষক। (মুসলিম ২৭২২)

সুতরাং দোয়াটি করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

নেককারদের সোহবত গ্রহণ করতে হবে। তাদের সাথে বেশি উঠাবসা করতে হবে।

দাওয়াত তাবলিগের মেহনতের সাথে যুক্ত হতে হবে। কমপক্ষে এক চিল্লা দেয়ার পরামর্শ থাকবে। 
অথবা কোনো হক্কানী শায়েখের নিকটে যাওয়ার পরামর্শ থাকবে। 

এতে নফস নিয়ন্ত্রণ করা এবং তাওবার উপর অটল থাকা তার জন্য সহজ হবে। 

 আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ وَكُونُواْ مَعَ الصَّادِقِينَ

হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক। (সূরা আত তাওবাহ ১১৯)

অধিকহারে ইস্তেগফার করতে হবে। প্রয়োজনে এর জন্য প্রত্যেক নামাজের পর একটা নিয়ম করে নিন। যেমন, প্রত্যেক নামাজের পর ৫০/১০০/২০০ বার أسْتَغْفِرُ اللهَ   অথবা أسْتَغْفِرُ اللهَ وَأتُوبُ إلَيهِ অথবা  اللَّهُمَّ اغْفِرْ لي পড়ার নিয়ম করে নিতে পারেন। 

★কখনো একাকী নিভৃতে থাকা যাবেনা। সময়কে উপকারী বিষয়ে ব্যয় করতে সচেষ্ট হবে। ঈমান ও ইসলামের পরিবেশে সময় ব্যয় করতে হবে।

বেশি পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করার ও শোনার পরামর্শ দিচ্ছি। এ মর্মে আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيمَانًا

আর যখন তাদের সামনে পাঠ করা হয় কালাম, তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায়। (সূরা আনফাল ২)

অনুরূপভাবে আমরা বুঝে বুঝে নবীদের কাহিনী, সাহাবায়ে কেরামের জীবনী পড়ার পরামর্শ দিচ্ছি। 

★অধিকহারে আল্লাহর যিকির করুন। কেননা, দুর্বল ঈমানের সুস্থতার জন্য যিকির খুবই উপকারী। আল্লাহর যিকির অন্তরে ঈমানের বীজ বপন করে। মুমিনের অন্তর যিকিরের মাধ্যমে প্রশান্ত হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,

الَّذِينَ آمَنُواْ وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللّهِ أَلاَ بِذِكْرِ اللّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ

যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়। (সূরা রা’দ ২৮)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...