আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
130 views
in সাওম (Fasting) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম,
১। সুবহে সাদিক হলেই কি রমযানে ফজরের আযান দেয় নাকি সুবহে সাদিক মানে সাহরির সময় শেষ, তাহাজ্জুদের সময়৷ শেষ? আমি তো জানতাম সুবহে সাদিকের ৫/৬ মিনিট পরে ফজরের ওয়াক্ত শুরু হলে ফজরের আযান দেয়।

২। আজকে রমযানের ক্যালেন্ডারে ছিল সাহরির শেষ সময় ৪.৩১। আর ফজরের ওয়াক্ত শুরু ৪.৩৭। এক ভাই বলছে সাহরি ৪.৩৭ পর্যন্ত নাকি সাহরি করা যাবে। এই নিয়ে শায়েখ আহমাদুল্লাহ, ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর সাহেব, ড. জাকির নায়েক ইত্যাদি আলেমদের ভিডিও পাঠাচ্ছে। তারা বলছেন রাসূল (সা:) সাহরির সময়৷ শেষ হওয়ার আগেই সাহরি করে ফেলতেন এমন আগে যে সাহরি করে কমপক্ষে ১০০ আয়াত তেলাওয়াত করা যেত। কিন্তু ফজর এর আযান বা সুবহে সাদিকের সময় পর্যন্ত সাহরি করা যাবে। তারা বলছেন ফজর বা সুবহে সাদিক এটা ঠিক কিনা। আর তাদের সাহরি করার  শেষ সময়ের হাদিসটি অনুযায়ী আমল করা যাবে কিনা

৩। ২ নং প্রশ্নে উল্লিখিত শায়েখগণ তো কওমী আলেম নন। তারা কি হানাফি মাযহাব অনুযায়ী সব ফতওয়া দেন?  সব সমাধান কি তাদের থেকে নেওয়া যাবে? ইউটিউবের আলেমদের থেকে সমস্যার সমাধান না নিয়ে কওমী আলেমদের থেকে নেওয়ার যৌক্তিকতা একটু বুঝিয়ে দিবেন।

এক ভাই বলছেন তারা তো হাদিস এর রেফারেন্স দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছেন। এলাকার মসজিদের আলেমদের কে জিজ্ঞাসা করলে তো এভাবে উত্তর দিবেন না। তাই অনুগ্রহ করে উপযুক্ত কুরআন-সুন্নাহর দলিল দিয়ে বুঝিয়ে দিলে উপকার হয় ভাইটিকে বুঝাতে।

1 Answer

+1 vote
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
আল্লাহ তায়ালা বলেন-

أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلَىٰ نِسَائِكُمْ ۚ هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ ۗ عَلِمَ اللَّهُ أَنَّكُمْ كُنتُمْ تَخْتَانُونَ أَنفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنكُمْ ۖ فَالْآنَ بَاشِرُوهُنَّ وَابْتَغُوا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَكُمْ ۚ وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ۖ ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ ۚ وَلَا تُبَاشِرُوهُنَّ وَأَنتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ ۗ تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ فَلَا تَقْرَبُوهَا ۗ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ آيَاتِهِ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ

রোযার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ অবগত রয়েছেন যে, তোমরা আত্নপ্রতারণা করছিলে, সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিয়েছেন। অতঃপর তোমরা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর এবং যা কিছু তোমাদের জন্য আল্লাহ দান করেছেন, তা আহরন কর। আর পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রোযা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত। আর যতক্ষণ তোমরা এতেকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কর, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে মিশো না। এই হলো আল্লাহ কর্তৃক বেঁধে দেয়া সীমানা। অতএব, এর কাছেও যেও না। এমনিভাবে বর্ণনা করেন আল্লাহ নিজের আয়াত সমূহ মানুষের জন্য, যাতে তারা বাঁচতে পারে। সূরা বাকারা,১৮৭

আয়াতে রাতের অন্ধকারকে কালো রেখা এবং ভোরের আলো ফোটাকে সাদা রেখার সাথে তুলনা করে সাওমের শুরু এবং খানা-পিনা হারাম হওয়ার সঠিক সময়টি বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। অধিকন্তু এ সময়-সীমার মধ্যে কম-বেশী হওয়ার সম্ভাবনা যাতে না থাকে সে জন্য (حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ) শব্দটিও যোগ করে দেয়া হয়েছে। এতে সুস্পষ্টভাবে বলে দেয়া হয়েছে যে, সন্দেহপ্রবণ লোকদের ন্যায় সুবহে-সাদিক দেখা দেয়ার আগেই খানা-পিনা হারাম মনে করো না অথবা এমন অসাবধানতাও অবলম্বন করো না যে, সুবহে-সাদিকের আলো ফোটার পরও খানা-পিনা করতে থাকবে। বরং খানা-পিনা এবং সাওমের মধ্যে সুবহে-সাদিকের উদয় সঠিকভাবে নির্ণয়ই হচ্ছে সীমারেখা। এ সীমারেখা উদয় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত খানা-পিনা বন্ধ করা জরুরী মনে করা যেমন জায়েয নয়, তেমনি সুবহে-সাদিক উদয় হওয়ার ব্যাপারে ইয়াকীন হয়ে যাওয়ার পর খানা-পিনা করাও হারাম এবং সাওম নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণ, তা এক মিনিটের জন্য হলেও। সুবহে-সাদিক উদয় হওয়া সম্পর্কে ইয়াকীন হওয়া পর্যন্তই সেহরীর শেষ সময়। [মা'আরিফুল কুরআন]

★উপরোক্ত আয়াত থেকে সাব্যস্ত হয় যে সুবহে-সাদিক উদয় হওয়ার পর খানা পিনা করা স্পষ্ট হারাম।

★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সুবহে সাদিক উদিত হওয়া মানেই সাহরির সময় শেষ,তাহাজ্জুদের সময় শেষ,এবং ফজরের ওয়াক্ত শুরু।
সবই এই সুবহে সাদিক উদিত হওয়ার সাথে সম্পর্কযুক্ত।

মূলত সুবহে-সাদিক উদিত হওয়ার আগ পর্যন্ত সাহরি খাওয়া যাবে।

তবে আমাদের দেশের স্থায়ী ক্যালেন্ডার দেখেই যেহেতু রোযার ক্যালেন্ডার গুলি বানানো হয়,আর এই স্থায়ী ক্যালেন্ডারে সাহরীর শেষ সময় কয়েক মিনিট সতর্কতা মূলক আগে দেওয়া থাকে৷

আর আযানও সুবহে-সাদিক উদিত হওয়ার কয়েক মিনিট পর দেয়া হয়ে থাকে।

সুতরাং আপনি সাহরির শেষ সময়ের আগেই 
সাহরী খাওয়া শেষ করবেন।

আরো জানুনঃ- 

(০২)
শেষ সময়ের হাদিস অনুযায়ী আমল করা যাবে।

(০৩)
নিজ মাযহাব ব্যাতিত অন্য কোনো মাযহাব থেকে ফাতওয়া না নেয়ার পরামর্শ সতর্কতামূলক ভাবে উলামায়ে কেরামগন প্রদান করে থাকে।

এক্ষেত্রে কেহ যদি ফাতওয়া নেয়,সেক্ষেত্রে নিন মাযহাব বিরোধী ফাতওয়া হলে সেই ফাতওয়ার উপর আমল করা যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

–1 vote
1 answer 205 views
...