ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির কর্তব্য হ’ল ঋণ পরিশোধের ব্যপারে সর্বদা আল্লাহর উপর ভরসা করা। আল্লাহ বলেন,
وَمَنْ يَتَّقِ اللهَ يَجْعَلْ لَهُ مَخْرَجًا،
‘যে আল্লাহর উপর ভরসা করে আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট’ (ত্বালাক ৬৫/৩)।
আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,
مَنْ أَخَذَ أَمْوَالَ النَّاسِ يُرِيْدُ أَدَاءَهَا أَدَّى اللهُ عَنْهُ، وَمَنْ أَخَذَ يُرِيْدُ إِتْلاَفَهَا أَتْلَفَهُ اللهُ،
‘যে ব্যক্তি মানুষের মাল (ধার) নেয় পরিশোধ করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ তা আদায়ের ব্যবস্থা করে দেন। আর যে ব্যক্তি মানুষের সম্পদ গ্রাস করার উদ্দেশ্যে তা গ্রহণ করে, আল্লাহ তাকে ধ্বংস করবেন’।(নদসহীহ বোখারী-২৩৮৭; সুনানু ইবনি মাজাহ-২৪১১)
ক্বিয়ামতের দিন সে চোর হিসাবে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে।(ইবনু মাজাহ-২৪১০)
অন্যত্র তিনি বলেন,
مَنْ أَخَذَ دَيْنًا وَهُوَ يُرِيْدُ أَنْ يُؤَدِّيَهُ، أَعَانَهُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ،
‘যে ব্যক্তি ঋণ পরিশোধের নিয়তে ঋণ গ্রহণ করে, আল্লাহ তাকে ঋণ পরিশোধে সহযোগিতা করেন’।(নাসাঈ-৪৬৮৭)
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,
مَنْ مَاتَ وَعَلَيْهِ دَيْنٌ، فَلَيْسَ ثَمَّ دِينَارٌ، وَلَا دِرْهَمٌ، وَلَكِنَّهَا الْحَسَنَاتُ وَالسَّيِّئَاتُ،
‘কেউ ঋণগ্রস্ত অবস্থায় মারা গেলে (ক্বিয়ামতের দিন) তার সেই ঋণ পরিশোধ করার জন্য কোন দীনার বা দিরহাম থাকবে না; বরং পাপ ও নেকীগুলোই অবশিষ্ট থাকবে’।(হাকেম-২২২২)
অর্থাৎ ক্বিয়ামতের ময়দানে নেকীর মাধ্যমে হ’লেও ঋণ পরিশোধ করতে হবে। যদি ঋণী ব্যক্তির কোন নেকী না থাকে, তাহ’লে ঋণ দাতার পাপ থেকে তার উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,
مَنْ كَانَتْ عِنْدَهُ مَظْلِمَةٌ لِأَخِيهِ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهَا، فَإِنَّهُ لَيْسَ ثَمَّ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ، مِنْ قَبْلِ أَنْ يُؤْخَذَ لِأَخِيهِ مِنْ حَسَنَاتِهِ، فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ أَخِيهِ فَطُرِحَتْ عَلَيْهِ
‘যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের উপর যুলুম করেছে, সে যেন তার কাছ থেকে ক্ষমা নিয়ে নেয়, তার ভাইয়ের পক্ষে তার নিকট হ’তে পুণ্য কেটে নেওয়ার আগেই। কারণ সেখানে কোন দীনার বা দিরহাম পাওয়া যাবে না। তার কাছে যদি পুণ্য না থাকে তবে তার (মাযলূম) ভাইয়ের গোনাহ্ এনে তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে’।(বুখারী-৬৫৩৪; তিরমিযী-২৪১৯)
সুতরাং মৃত্যুর আগেই এই ভয়াবহ ঋণ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা অবশ্য কর্তব্য।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার আব্বুর কাছে সত্যিই টাকা পায় কি না? সেটাকে ভালোভাবে তাহক্বীক করে নিতে হবে। যদি ঐ ব্যক্তি সত্যিই আপনার বাবার কাছে টাকা পায়, তাহলে পরিশোধ করে দিতে হবে। আর যদি ঋণ না পায়, তাহলে তো দেয়ার কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই। যদি আপনাদের ভাড়া বাবৎ কিছু পাওনা থাকে, তাহলে সেটা উসূল করবেন। অথবা আপনার বাবার ঋণ বাবৎ কাটাকাটি করে নিবেন।যদি আপনারা সত্যিই ঋণ পান, আর ঐ ব্যক্তি অস্বীকার করে, তাহলে ঋণ পরিশোধ করার জন্য যাবতীয় চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারবেন।