আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
অনলাইনে প্রায় অনেক জায়গায় আলোচনা ও লেখায় বলা হচ্ছে, রাতে ঘুমানোর আগে কয়েকটি সুন্নতের মধ্যে এটিও একটি সুন্নত যে - "ঘরের বাতি নিভিয়ে দেওয়া"।
এই ক্ষেত্রে আমি জানতে চাচ্ছি, আসলেই কি ঘুমানোর আগে বাতি নিভিয়ে দেওয়া সুন্নত ?
এই আমল কি ঐ স্থানের জন্যই প্রযোজ্য যেইখানে এমন ধরণের বাতি বা কুপি ব্যবহার করা হয়, যেইগুলোতে আগুন এর উপস্থিতি থাকে?
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যে ধরণের বাতি নিভিয়ে দিতে বলেছেন, ঐটা দ্বারা-তো তেল দ্বারা প্রজ্জ্বলিত বাতি, কুপি বুঝায়, যেইখানে আগুনের উপস্থিতি থাকে, তাই নয় কি ? মোমবাতি-ও হতে পারে, যেহেতু এইটা তেল ছাড়া।
এই ক্ষেত্রে হিকমত এমন হতে পারে, মানুষ ঘুমিয়ে গেলো, কোনো প্রাণী যেমন বিড়াল, ইঁদুর ইত্যাদির ধাক্কা লাগলো ঐ বাতি বা কুপিতে, এর ফলে ঐগুলো পড়ে গিয়ে আগুন দ্বারা দুর্ঘটনার আশংকা থাকে। এইটা আমার অনুমান, ধারণা। আল্লাহ মাফ করুক, যদি ভুল হয় বা এমন অনুমান বা ধারণা করার দ্বারা আমার গুনাহ হয়। আমি ফতওয়া দিচ্ছি না, জাস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করছি, এইটা ঠিক কি না। আপনারাই সঠিক-টি বলবেন ইনশাল্লাহ।
বর্তমানে আমরা বৈদ্যুতিক বাতি ব্যবহার করলে এই ধরণের দুর্ঘটনার আশংকা তো নেই, যেহেতু আগুনের ব্যবহার নেই। এই ক্ষেত্রে এইগুলো জ্বালিয়ে তো ঘুমানো যায়, অনেকে চাইলে ডিম্-লাইট ব্যবহার করতে পারে, আলো কমানোর জন্য। যেইটা অধিক গ্রহণযোগ্য রাত্রিবেলা ঘুমানোর ক্ষেত্রে। এই ক্ষেত্রে ডিম-লাইটের রং এরও একটা ব্যাপার কাজ করে।
বর্তমানে যদি পীড়াপীড়ি করা হয় বাতি নিভিয়ে দেওয়ার জন্য, সুন্নত দাবি করে, সেই ক্ষেত্রে কি করা উচিত ? যেন কোনো ঝামেলা না হয়, যদি একাধিক মানুষ একই রুমে অবস্থান করে ঘুমানোর জন্য ? ডিম-লাইট ভালো সমাধান। কেউ যদি পাক্কা সুন্নতের উপর আমল হিসেবে ডিম-লাইটও জ্বালাতে না দেয় ? !
পুরো অন্ধকার করে ফেললে তো ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। রাতে প্রয়োজনে কেউ ঘুম থেকে উঠে বাহিরে যাওয়ার জন্য বের হলো আর এর মধ্যে কারো পা, পেট, মুখ ইত্যাদি মাড়িয়ে চলে গেলো, যেহেতু অন্ধকার ! হতে পারে। এমনটা হবেই, তা বলছি না। অনেক সময় হয়। স্বল্প আলোতেও এমন দুর্ঘটনা ঘটে।
এইটা নিয়ে কি একটু বাড়াবাড়ি হচ্ছে না এই যুগে ? বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবহার এর যুগে ? অবশ্য, গ্রামে বা সফরে যেইখানে এখনো আগুন-ওয়ালা বাতি/কূপি, মোমবাতি ব্যবহার করা হয়, ঐখানে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর এই আদেশ অবশ্যই পালন করা উচিত বলে মনে হয়।