ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
রমজান মাসে বা শুক্রুবারে মৃত্যু বরণ করলে কি কবরের আযাব মাফ হবে?এ সম্পর্কে উলামাদের মতবিরোধ রয়েছে,
(ক)কিছুসংখ্যক উলামা বলেন,
রমজান মাসে বা শুক্রুবারে মৃত্যু বরণ করলেও কবরের আযাব মাফ হবে না। তাদের দলীল হল,
বিনা হিসাবে এবং বিনা আযাবে,যারা জান্নাতে যাবে,তাদের সম্পর্কে ইবনে আব্বাস রাযি বর্ণনা করেছেন, সেখানে তাদের আলোচনা আসেনি।
عن ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑْﻦُ ﻋَﺒَّﺎﺱ ، ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ٍ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗﺎﻝ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢ َ: ﻋُﺮِﺿَﺖْ ﻋَﻠَﻲَّ ﺍﻷُﻣَﻢُ ﻓَﺮَﺃَﻳْﺖُ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﻭَﻣَﻌَﻪُ ﺍﻟﺮُّﻫَﻴْﻂُ ( ﺟﻤﺎﻋﺔ ﻗﻠﻴﻠﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﺎﺱ ) ﻭَﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﻭَﻣَﻌَﻪُ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﻭَﺍﻟﺮَّﺟُﻼﻥِ ، ﻭَﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﻟَﻴْﺲَ ﻣَﻌَﻪُ ﺃَﺣَﺪ ٌ. ﺇِﺫْ ﺭُﻓِﻊَ ﻟِﻲ ﺳَﻮَﺍﺩٌ ﻋَﻈِﻴﻢٌ ، ﻓَﻈَﻨَﻨْﺖُ ﺃَﻧَّﻬُﻢْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ . ﻓَﻘِﻴﻞَ ﻟِﻲ : ﻫَﺬَﺍ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ، ﻭَﻗَﻮْﻣُﻪُ ﻭَﻟَﻜِﻦْ ﺍﻧْﻈُﺮْ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻷُﻓُﻖِ ، ﻓَﻨَﻈَﺮْﺕُ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺳَﻮَﺍﺩٌ ﻋَﻈِﻴﻢٌ ، ﻓَﻘِﻴﻞَ ﻟِﻲ : ﺍﻧْﻈُﺮْ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻷُﻓُﻖِ ﺍﻵﺧَﺮِ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺳَﻮَﺍﺩٌ ﻋَﻈِﻴﻢٌ ، ﻓَﻘِﻴﻞَ ﻟِﻲ : ﻫَﺬِﻩِ ﺃُﻣَّﺘُﻚَ ﻭَﻣَﻌَﻬُﻢْ ﺳَﺒْﻌُﻮﻥَ ﺃَﻟْﻔًﺎ ﻳَﺪْﺧُﻠُﻮﻥَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﺣِﺴَﺎﺏٍ ﻭَﻻ ﻋَﺬَﺍﺏٍ . ﺛُﻢَّ ﻧَﻬَﺾَ ﻓَﺪَﺧَﻞَ ﻣَﻨْﺰِﻟَﻪُ ﻓَﺨَﺎﺽَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻓِﻲ ﺃُﻭﻟَﺌِﻚَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺪْﺧُﻠُﻮﻥَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﺣِﺴَﺎﺏٍ ﻭَﻻ ﻋَﺬَﺍﺏٍ ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ ﻓَﻠَﻌَﻠَّﻬُﻢْ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺻَﺤِﺒُﻮﺍ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ ﻓَﻠَﻌَﻠَّﻬُﻢْ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻭُﻟِﺪُﻭﺍ ﻓِﻲ ﺍﻹِﺳْﻼﻡِ ﻭَﻟَﻢْ ﻳُﺸْﺮِﻛُﻮﺍ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪ ِ، ﻭَﺫَﻛَﺮُﻭﺍ ﺃَﺷْﻴَﺎﺀَ . ﻓَﺨَﺮَﺝَ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻣَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺗَﺨُﻮﺿُﻮﻥَ ﻓِﻴﻪ ؟ِ ﻓَﺄَﺧْﺒَﺮُﻭﻩُ ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻫُﻢْ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ َﻻ ﻳَﺴْﺘَﺮْﻗُﻮﻥَ ﻭَﻻ ﻳَﺘَﻄَﻴَّﺮُﻭﻥَ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺭَﺑِّﻬِﻢْ ﻳَﺘَﻮَﻛَّﻠُﻮﻥَ . ﻓَﻘَﺎﻡَ ﻋُﻜَّﺎﺷَﺔُ ﺑْﻦُ ﻣِﺤْﺼَﻦٍ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﺩْﻉُ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺃَﻥْ ﻳَﺠْﻌَﻠَﻨِﻲ ﻣِﻨْﻬُﻢْ . ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺃَﻧْﺖَ ﻣِﻨْﻬُﻢْ . ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻡَ ﺭَﺟُﻞٌ ﺁﺧَﺮُ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺍﺩْﻉُ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺃَﻥْ ﻳَﺠْﻌَﻠَﻨِﻲ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺳَﺒَﻘَﻚَ ﺑِﻬَﺎ ﻋُﻜَّﺎﺷَﺔُ "
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার সামনে সকল উম্মাতকে পেশ করা হয়েছিল। তখন আমি দেখেছি) দু’একজন নবী পথ চলতে লাগলেন এমতাবস্থায় যে, তাঁদের সঙ্গে রয়েছে লোকজনের ছোট ছোট দল। কোন কোন নবী এমনও আছেন যাঁর সঙ্গে একজনও নেই। অবশেষে আমার সামনে তুলে ধরা হল বিশাল দল। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ এটা কী? এ কি আমার উম্মাত? উত্তর দেয়া হলঃ না, ইনি মূসা আঃ) এবং তাঁর কওম। আমাকে বলা হলঃ আপনি ঊর্ধ্বাকাশের দিকে তাকান। তখন দেখলামঃ বিশাল একটি দল যা দিগন্তকে ঢেকে রেখেছে।
তারপর আমাকে বলা হলঃ আকাশের দিগন্তসমূহ ঢেকে দিয়েছে এমন একটি বিশাল দলের প্রতি লক্ষ্য করুন। তখন বলা হলঃ এরা হল আপনার উম্মাত। আর তাদের মধ্য থেকে সত্তর হাজার লোক বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে চলে গেলেন। উপস্থিতদের কাছে কথাটির কোন ব্যাখ্যা প্রদান করলেন না। যে বিনা হিসাবের লোক কারা হবে?) ফলে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে তর্ক বিতর্ক শুরু হল। তারা বললঃ আমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর অনুসরণ করে থাকি। সুতরাং আমরাই তাদের অন্তর্ভুক্ত। কিংবা তারা হল আমাদের সে সকল সন্তান-সন্ততি যারা ইসলামের যুগে জন্মগ্রহণ করেছে। আর আমাদের জন্ম হয়েছে জাহিলী যুগে।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ সংবাদ পৌঁছলে তিনি বেরিয়ে আসলেন এবং বললেনঃ তারা হল সে সব লোক যারা মন্ত্র পাঠ করে না, পাখির মাধ্যমে কোন কাজের ভাল-মন্দ নির্ণয় করে না এবং আগুনের সাহায্যে দাগ লাগায় না। বরং তারা তো তাদের রবের উপরই ভরসা করে থাকে। তখন উক্কাশা ইবনু মিহসান বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! তাদের মধ্যে কি আমি আছি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তখন আরেকজন দাঁড়িয়ে বললঃ তাদের মধ্যে কি আমিও আছি? তিনি বললেনঃ ‘উক্কাশাহ এ সুযোগ তোমার আগেই নিয়ে নিয়েছে। [সহীহ বোখারী-৫৭০৫,সহীহ মুসলিম-২২০)
দেখুন উক্ত লিস্টে শুক্রবার বা রমজান মাসে মৃত্যুবরণ কারীদের কোনো আলোচনা আসেনি।বরং খাস ঈমানদারদেরই আযাব হবে না মর্মে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।সুতরাং শুক্রুবার বা রমজান মাসে মৃত্যুবরণ কারীদের কবরের আযাব হবে না মর্মে বিশুদ্ধ কোনো হাদীস পাওয়া যায়নি।
(খ) অন্যদিকে হানাফি উলামায়ে কেরাম বলেন,
রমজান মাসে বা শুক্রুবারে মৃত্যু বরণ করলে কবরের আযাব মাফ হবে। চিরস্থায়ী মাফ হবে না শুধুমাত্র রমজান মাস বা শুক্রুবারের জন্য মাফ হবে? এ নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে? বিশুদ্ধমতানুযায়ী চিরস্থায়ী মাফ হবে। রমজান মাসে বা শুক্রুবারে কোনো অমুসলিম কেউ মারা গেলে শুধুমাত্র রমজান মাস বা শুক্রুবারে কবরের আযাবকে হটিয়ে দেয়া হয়, আবার পরবর্তীতে তাদের সামনে আযাব চলে আসে।
حکیم الامت حضرت مولانا اشرف علی تھانوی کے ملفوظات میں ہے:
” فرمایا: رمضان میں اگر انتقال ہو تو ایک قول یہ ہے کہ قیامت کے دن حساب نہیں ہوتا ۔ یہی جی کو لگتا ہے اور أنا عند ظن عبدي بيپر عمل کرے۔ “(26/405)
'' قال أهل السنة والجماعة: عذاب القبر حق وسؤال منكر ونكير وضغطة القبر حق، لكن إن كان كافراً فعذابه يدوم إلى يوم القيامة ويرفع عنه يوم الجمعة وشهر رمضان، فيعذب اللحم متصلاً بالروح والروح متصلاً بالجسم فيتألم الروح مع الجسد، وإن كان خارجاً عنه، والمؤمن المطيع لا يعذب بل له ضغطة يجد هول ذلك وخوفه، والعاصي يعذب ويضغط لكن ينقطع عنه العذاب يوم الجمعة وليلتها، ثم لا يعود وإن مات يومها أو ليلتها يكون العذاب ساعةً واحدةً وضغطة القبر ثم يقطع، كذا في المعتقدات للشيخ أبي المعين النسفي الحنفي من حاشية الحنفي ملخصاً ''۔ (فتاوی شامی 2/165)فقط واللہ اعلم