আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
140 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম
নিচে দুই আর্টিকেলের মূলভাব:
খারাপ কাজের নিয়ত করলে না করলেও গুনাহ হবে।
আবার আরেক হাদিসে বলা আছে, খারাপ কাজের নিয়ত করে না করলে একটা সওয়াব লিখা হবে।
মূলভাবগুলো সাংঘর্ষিক হয়ে গেলো।
কনফিউশান ক্লিয়ার করে দিলে উপকৃত হতাম

article 1:
://sistersforuminislam.com/articles/tafsir/%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A6%BE-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%83-%E0%A7%AA%E0%A7%A6%E0%A6%A4%E0%A6%AE-%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%95%E0%A7%81-%E0%A7%A8%E0%A7%AE/
article 2: সূরা কলামে বলা আছে( তাদাম্বুরে কুরআন- আদিল মুহাম্মদ খলিল- pdf 368 page point no 2)

আল্লাহ রব্বুল আলামিন রাতের পরিকল্পিত গুনাহ করার পূর্বেই বাগানের
মালিকদেরকে শাস্তি দিয়েছিলেন। কারণ বান্দা যখন অন্তরে গুনাহের নিয়ত
পাকা করে ফেলে এবং গুনাহ করার সংকল্প করে ফেলে, তখন সে আর
আল্লাহর শাস্তি থেকে নিরাপদ থাকতে পারে না। কারণ এমতাবস্থায় সে গুনাহ
না করলেও গুনাহকারীর সমতুল্য । এর অনেক উদাহরণ দেওয়া যায় :
যে ব্যক্তি রমাদানে রোজা ভেঙে ফেলার নিয়ত করেছে, কিন্তু অনেক খুঁজেও
খাওয়ার জন্য কিছুই পায়নি—পেলে রোজা ভেঙে ফেলত—এমন ব্যক্তি
রোজা ভঙ্গকারীর সমতুল্য। আল্লাহর কাছে সে গুনাহগার বলে গণ্য হবে ।
যে ব্যক্তি চুরি করার নিয়তে কোনো বাড়িতে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছে,
কিন্তু বাড়ির প্রাচীর শক্ত ও দুর্ভেদ্য হওয়ার কারণে প্রবেশ করতে পারেনি—
পারলে চুরি না করে ফিরত না—সে চোরের সমতুল্য। চুরি না করলেও
সে চুরি করেছে বলে ধরা হবে। সে আল্লাহর কাছে গুনাহগার সাব্যস্ত হবে।
অবশ্য তার ওপর চুরির হ্রদ বা দণ্ড জারি করা হবে না ।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
গোনাহের নিয়ত করার পর যদি উক্ত গোনাহের কাজ করা না হয়, তাহলে কি গোনাহ হবে?
এ সম্পর্কে পরস্পর বিরোধী দু'টি হাদীস পাওয়া যায়,

ইবনে আব্বাস রাযি এর হাদীস থেকে বুঝা যায় যে, গোনাহের নিয়ত করার পর যদি কোনো কারণে উক্ত গোনাহের কাজ করা না হয়, তাহলে গোনাহ হবে না। তবে আবূ কাবশা আল-আনমারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীস থেকে বুঝা যায় গোনাহ হবে। প্রথমে হাদীস দু'টি  দেখে নেই,
ইবনু আব্বাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, 
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِيمَا يَرْوِي عَنْ رَبِّهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى قَالَ " إِنَّ اللَّهَ كَتَبَ الْحَسَنَاتِ وَالسَّيِّئَاتِ ثُمَّ بَيَّنَ ذَلِكَ فَمَنْ هَمَّ بِحَسَنَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللَّهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً وَإِنْ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ عِنْدَهُ عَشْرَ حَسَنَاتٍ إِلَى سَبْعِمِائَةِ ضِعْفٍ إِلَى أَضْعَافٍ كَثِيرَةٍ وَإِنْ هَمَّ بِسَيِّئَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللَّهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً وَإِنْ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللَّهُ سَيِّئَةً وَاحِدَةً " .
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে তিনি বলেন, আল্লাহ তা’আলা ভালো এবং মন্দ উভয়টিকে লিপিবদ্ধ করেন। অতঃপর তিনি এভাবে বর্ণনা করেছেন, যে ব্যক্তি কোন ভালো কাজ করার ইচ্ছা করে অথচ তা এখনও বাস্তবে পরিণত করেনি, তার জন্যে আল্লাহ নিজের কাছে একটি পূর্ণাঙ্গ সাওয়াব লিপিবদ্ধ করেন। আর যদি সে কোন ভালো কাজ করার ইচ্ছা করে এবং তা বাস্তবেও পরিণত করে, তখন আল্লাহ নিজের কাছে দশ থেকে সাতশ’ বা আরো অনেক গুণ বেশী সাওয়াব লিপিবদ্ধ করেন। আর যদি সে কোন মন্দ কাজ করার ইচ্ছা করে এবং তা বাস্তবে পরিণত না করে, তখন আল্লাহ নিজের কাছে একটি পরিপূর্ণ সাওয়াব লিখেন, কিন্তু যদি সে মন্দ কাজটি বাস্তবে পরিণত করে, তখন আল্লাহ তা’আলা কেবলমাত্র একটি পাপই লিপিবদ্ধ করেন। (সহীহ মুসলিম-২৩৬/২৩৮/২৪৬)

আবূ কাবশা আল-আনমারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। 
عَنْ أَبِي كَبْشَةَ الأَنْمَارِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " مَثَلُ هَذِهِ الأُمَّةِ كَمَثَلِ أَرْبَعَةِ نَفَرٍ : رَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ مَالاً وَعِلْمًا فَهُوَ يَعْمَلُ بِعِلْمِهِ فِي مَالِهِ يُنْفِقُهُ فِي حَقِّهِ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ عِلْمًا وَلَمْ يُؤْتِهِ مَالاً فَهُوَ يَقُولُ : لَوْ كَانَ لِي مِثْلُ هَذَا عَمِلْتُ فِيهِ مِثْلَ الَّذِي يَعْمَلُ " . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " فَهُمَا فِي الأَجْرِ سَوَاءٌ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ مَالاً وَلَمْ يُؤْتِهِ عِلْمًا فَهُوَ يَخْبِطُ فِي مَالِهِ يُنْفِقُهُ فِي غَيْرِ حَقِّهِ وَرَجُلٌ لَمْ يُؤْتِهِ اللَّهُ عِلْمًا وَلاَ مَالاً فَهُوَ يَقُولُ : لَوْ كَانَ لِي مِثْلُ مَالِ هَذَا عَمِلْتُ فِيهِ مِثْلَ الَّذِي يَعْمَلُ " . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " فَهُمَا فِي الْوِزْرِ سَوَاءٌ "
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ এ উম্মাতের দৃষ্টান্ত চার ব্যক্তি সদৃশ। (এক) এক ব্যক্তিকে আল্লাহ ধন-সম্পদ ও জ্ঞান দান করেছেন এবং সে তার জ্ঞান দ্বারা তার মাল ব্যবহার করে, যথার্থ খাতে তা ব্যয় করে। (দুই) এক ব্যক্তিকে আল্লাহ জ্ঞান দান করেছেন কিন্তু সম্পদ দান করেননি। সে বলে, ঐ ব্যক্তির অনুরূপ আমার সম্পদ থাকলে আমি তার মত তা কাজে লাগাতাম। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেনঃ এ দু’জন সমান পুরস্কার লাভের অধিকারী। (তিন) এক ব্যক্তিকে আল্লাহ সম্পদ দান করেছেন, কিন্তু জ্ঞান দান করেননি। সে তার মালে ভ্রষ্টনীতি গ্রহণ করে, তা অন্যায় পথে ব্যয় করে। (চার) এক ব্যক্তিকে আল্লাহ জ্ঞান ও সম্পদ কোনটাই দান করেননি। সে বলে, তার অনুরূপ আমার সম্পদ থাকলে আমি তার মত (ভ্রষ্ট) কাজে লাগাতাম। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেনঃ এই দু’ ব্যক্তি সমান অপরাধী।
(সুনানু ইবনি মা'জা-৪২২৮তিরমিযী ২৩২৫, আত-তালীকুর রাগীব ১/২৭)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রথম হাদীসে বলা হচ্ছে, গোনাহের নিয়ত করার পর যদি গোনাহ করার পাক্কা ইরাদা না থাকে, এবং কোনো না কোনো ক্ষেত্রে আল্লাহর ভয়ে সেই ব্যক্তি গোনাহকে পরিত্যাগ করে, তাহলে ঐ ব্যক্তির কোনো গোনাহ হবে না। কিন্তু যদি গোনাহ করার পাক্কা ইরাদা থাকে, এবং ঐ ব্যক্তি উক্ত গেনাহের কাজ করার জন্য পূর্ণ ইরাদাকারী হয়, এবং করতে না পারার কারণে আফছোছ করতে থাকে, তাহলে ঐ ব্যক্তির গোনাহ হবে। যা শেষোক্ত হাদীসে বর্ণনা করা হয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...