জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান হলো সরকারী চাকুরী জায়েয।তবে কুরআন হাদীস বিরোধী কোনো কিছু বাস্তবায়ন করার কাজ হলে,বা এমন কোনো চাকুরী যেখানে গেলে কুরআন-হাদীসকে সঠিকভাবে অনুসরণ করা যায় না।তাহলে এমন চাকুরী কখনো বৈধ হবে না।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৭/৫০৪)
নিজে উপার্জন করে খাওয়ার কথা রাসুল সাঃ বলেছেন।
হাদীসে এসেছে,
হযরত মিক্বদাম ইবনে মা'দি কারুবা রাযি থেকে বর্ণিত
ﻋَﻦِ اﻟْﻤِﻘْﺪَاﻡِ ﺑْﻦِ ﻣَﻌْﺪِﻱ ﻛَﺮِﺏَ - ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ: ﻗَﺎﻝَ: ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ اﻟﻠَّﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - " «ﻣَﺎ ﺃَﻛَﻞَ ﺃَﺣَﺪٌ ﻃَﻌَﺎﻣًﺎ ﻗَﻂُّ ﺧَﻴْﺮًا ﻣِﻦْ ﺃَﻥْ ﻳَﺄْﻛُﻞَ ﻣِﻦْ ﻋَﻤَﻞِ ﻳَﺪَﻳْﻪِ، ﻭَﺇِﻥَّ ﻧَﺒِﻲَّ اﻟﻠَّﻪِ ﺩَاﻭُﺩَ - ﻋَﻠَﻴْﻪِ اﻟﺴَّﻼَﻡُ - ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺄْﻛُﻞُ ﻣِﻦْ ﻋَﻤَﻞِ ﻳَﺪَﻳْﻪِ» "
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
নিজ হাতের উপার্জন হতে অধিক উত্তম রিজিক কেউ কখনো আহার করেনি।
আর আল্লাহর নবী হযরত দাউদ আঃ নিজ হাতের উপার্জন দ্বারাই দিনাতিপাত করতেন।(মিশকাত-২৭৫৯)
হযরত ইবনে মাসউদ রাযি থেকে বর্ণিত
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «طَلَبُ كَسْبِ الْحَلَالِ فَرِيضَةٌ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ» " رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي " شُعَبِ الْإِيمَانِ.
রাসুলাল্লাহ সাঃ বলেন,হালাল রিযিক তালাশ করা অন্যন্য ফরয বিধানের পরই ফরয।(মিশকাতুল মাসাবিহ-২৭৮১)
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি যেহেতু সরকারী হালাল,বৈধ যেকোনো চাকুরী করতে পারবেন।
এবং এতে প্রাপ্ত বেতন বেসিক বেতন স্কেল গ্রহণ করতে পারবেন।
এতে শরীয়তের দৃষ্টিকোন থেকে কোনো সমস্যা নেই।
,
তবে সর্বদা হারাম ও নাজায়েয জিনিষ হতে বেঁচে থাকবেন। নামায সহ যাবতীয় ইবাদত আন্তরিকভাবে পালন করবেন।
,
এখানে যেহেতু প্রশ্নে উল্লেখ হয়েছে যে সরকার যেটা দিয়ে সরকারী চাকুরীজীবিদের বেতন দেয়,তাতে অনেক সূদ থাকে।
এখানে একটি মাসয়ালা স্পষ্ট করছিঃ
হারাম মাল থেকে বেতন পাওয়ার বিষয়ের ক্ষেত্রে শরয়ী মূলনীতি হল-যদি বেতনটি হালাল ও হারাম মালের সাথে মিশ্রিত হয়, আর হারাম মাল বেশি হয়, তাহলে তা নেয়া জায়েজ নয়। তবে যদি হারাম মাল কম হয় তাহলে বেতন নেয়া জায়েজ হবে।
ولا يجوز قبول هدية أمراء الجور لأن الغالب في مالهم الحرمة إلا إذا علم أن أكثر ماله حلال بأن كان صاحب تجارة أو زرع فلا بأس به لأن أموال الناس لا تخلو عن قليل حرام فالمعتبر الغالب (الفتاوى الهندية، كتاب الكراهية، الثاني عشر في الهدايا والضيافات-5/342)
অনুবাদ-জালেম বাদশাহর হাদিয়া গ্রহণ জায়েজ নয়। কেননা তার অধিকাংশ মাল হয় হারাম। তবে যদি জানা যায় যে, তার অধিকাংশ মাল হালাল, এ হিসেবে যে সে ব্যাবসায়ী বা জমিদার, তাহলে তার থেকে হাদিয়া গ্রহণ করাতে সমস্যা নেই। কেননা সাধারণত মানুষের মাল অল্প হারাম থেকে মুক্ত নয়। তাই এতে আধিক্যের বিষয়টি বিবেচিত হবে। { ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৪২}
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই
সরকার যেই ফান্ড থেকে চাকুরীজিবিদের বেতন দেয়,সেখানে সুদ ভিত্তিক বিদেশী ঋণ থেকে অর্থায়ন অনেক কম।
,
অন্যান্য অনেক ফান্ডের টাকা সেখানে জমা হয়,যাহা এই সুদি ঋনের টাকার তুলনায় অনেক অনেক বেশি।
এই সব ফান্ড মিলেই বেতন দেওয়া হয়।
,
যেহেতু এক্ষেত্রে অন্যান্য ফান্ড এর টাকাই বেশি,তাই সরকারী বেতন নেওয়া জায়েয।
আরো জানুনঃ
বিস্তারিত জানুনঃ
কিছু ব্যাক্তি সরকারী চাকুরীর ক্ষেত্রে কাজে অবহেলা করে,তেমন গুরুত্ব দেয়না।
বাহিরে,বাসায় বেশি সময় ব্যায় করে।
রাষ্ট্রীয় তথা জাতীয় সম্পদ থেকে বেতন নিয়ে এমন ধোকাবাজি করতে একটুও দ্বিধা করে না। তাদের ধারণা, সবাই তো করে যাচ্ছে তাই আমিও করলাম। এতে অসুবিধে কোথায়?
মূলত এ ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। কারণ, জাতীয় সম্পদ বলতে রাষ্ট্রের সকল মানুষের সম্পদকেই বুঝানো হয়। সুতরাং এর সাথে বহু লোকের অধিকারের সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষভাবে তাতে রয়েছে গরিব, দু:খী, ইয়াতীম, অনাথ ও বিধবাদের অধিকার। তাই ব্যক্তি সম্পদের তুলনায় এর গুরুত্ব অনেক বেশি এবং এর হিসেবও খুবই মারাত্মক।
,
তাই সরকারি চাকুরীতে কাজে অবহেলা করা কোনো ভাবেই জায়েজ নেই।