রোযা ইসলামের পাঁচটি রোকনের অন্যতম। ইসলামের মৌলিক ফরযের অন্তর্ভুক্ত। বিনা ওজরে রোযা না রাখা কবীরা গুনাহ। আখেরাতে এর জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে। আর রমযান মাসে রোযা না রেখে প্রকাশ্যে পানাহার করা আরো ভয়াবহ গুনাহ। এটা আল্লাহ তাআলার সুস্পষ্ট হুকুমের প্রতি ধৃষ্টতা প্রদর্শন, যা মূলত কুফরীতুল্য গুনাহ।
তাই রমযানে দিনের বেলা হোটেল খোলা রেখে কাউকে পানাহার করানো নাজায়েজ।
এতে হারাম কাজের সহযোগিতা করা হবে।
আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻭَﺗَﻌَﺎﻭَﻧُﻮﺍْ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﺒﺮِّ ﻭَﺍﻟﺘَّﻘْﻮَﻯ ﻭَﻻَ ﺗَﻌَﺎﻭَﻧُﻮﺍْ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻹِﺛْﻢِ ﻭَﺍﻟْﻌُﺪْﻭَﺍﻥِ ﻭَﺍﺗَّﻘُﻮﺍْ ﺍﻟﻠّﻪَ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﺷَﺪِﻳﺪُ ﺍﻟْﻌِﻘَﺎﺏ
ِ তরজমাঃ সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। সূরা মায়েদা-২
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَا مِنْ دَاعٍ يَدْعُو إِلَى هُدًى إِلَّا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ مَنْ اتَّبَعَهُ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا وَمَا مِنْ دَاعٍ يَدْعُو إِلَى ضَلَالَةٍ إِلَّا كَانَ عَلَيْهِ مِثْلُ أَوْزَارِهِمْ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَيْئًا
মালিক (রহঃ) বলেনঃ তাহার নিকট খবর পৌছিয়াছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেনঃ যেকোন আহবানকারী হিদায়াতের দিকে আহবান করিবে তবে তাহাকে তাহার অনুসরণকারীদের সমান পুণ্য দেওয়া হইবে। অনুসরণকারীদের পুণ্য হইতে বিন্দুমাত্র কম করা হইবে না। আর যেকোন আহবানকারী পথভ্রষ্টতার দিকে আহবান করিবে, তবে তাহার উপর অনুসরণকারীদের পাপসমূহের সমান পাপ বৰ্তাইবে। তাহাতে অনুসরণকারীদের পাপসমূহের এতটুকুও কম করা হইবে না।
(মুয়াত্তা মালিক ৪৯৬)
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}
যে ব্যক্তি শরয়ী উজর ছাড়া রমজান মাসে দিনের বেলা খানা খেতে আসে, আর একথা জেনে শুনে তার কাছে খানা বিক্রি করা জায়েজ হবে না। আর যদি জানা না থাকে বা উজরওয়ালা ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে তাহলে জায়েজ আছে। {ফাতওয়া উসমানী-৩/৮৪}
রমজান মাসের দিনের বেলায় কোন অমুসলিমকে খাবার পরিবেশন করা কোন মুসলিমের জন্য জায়েয নয়। কারণ কাফেররা শরিয়তের শাখাগত বিষয়সমূহ পালনের ব্যাপারে আদিষ্ট।
“নিহায়াতুল মুহতাজ” (৫/২৭৪) গ্রন্থে আলেমগণ হতে উল্লেখ করা হয়েছে যে তাঁরা রমজান মাসের দিনের বেলায় কাফেরদের কাছে খাবার বিক্রি করা হারাম সাব্যস্ত করেছেন।
রমজান মাসে কোনো মুসলিম ব্যক্তি যদি শরয়ি কোনো ওযর ছাড়াই হোটেলে খেতে আসে আর আপনি সেই বিষয়টি ধরতে পারেন তাহলে এমন ব্যক্তির কাছে খাবার বিক্রি করা বৈধ হবে না। কারণ, তখন হারাম কাজে সহযোগিতা হয়। আর হারাম কাজে সহযোগিতাও শরিয়তের দৃষ্টিতে হারাম।