আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
120 views
in হজ ও উমরা (Hajj and Umrah) by (21 points)
আসসালামুয়ালাইকুম,

১। কোন বয়স্ক বাক্তি অসুস্থতাজনিত কারনে প্রস্রাব সংক্রান্ত সমস্যায় আক্রান্ত হলে, তাওওাফ এবং সা'য়ি করার সময় কি করনীয়? মুয়াল্লেম বলেছেন ডায়াপার পরে করা সম্ভব,  এক্ষেত্রে কি অন্যকোন নিয়ম মানতে হবে?
২। বদলি রোজার ক্ষেত্রে কি ইফতার ও সেহেরি করার বাজার করে দেয়া যাবে না অই বাবদ টাকা দিয়ে দিতে হবে।

একটু জানাবেন।

যাজাকাল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (575,580 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
কোনো অসুস্থ ব্যক্তি শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য শর্ত হলো,

شرط ثبوت العذر ابتداء أن يستوعب استمراره وقت الصلاة كاملا وهو الأظهر كالانقطاع لا يثبت ما لم يستوعب الوقت كله-

শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য কোনো নামাযের শুরু থেকে শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত উযর স্থায়ী থাকা শর্ত।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪০)


حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا أَبُو بِشْرٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، أَنَّ أُمَّ حَبِيبَةَ بِنْتَ جَحْشٍ، اسْتُحِيضَتْ فَأَمَرَهَا النَّبِيُّ صلي الله عليه وسلم أَنْ تَنْتَظِرَ أَيَّامَ أَقْرَائِهَا ثُمَّ تَغْتَسِلُ وَتُصَلِّي فَإِنْ رَأَتْ شَيْئًا مِنْ ذَلِكَ تَوَضَّأَتْ وَصَلَّتْ

‘ইকরিমাহ (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মু হাবীবাহ বিনতু জাহশের ইস্তিহাযা হলো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে হায়িযের দিনসমূহে (সলাত ইত্যাদির জন্য) অপেক্ষা করার পর গোসল করে সলাত আদায় করার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর অযু করে এক ওয়াক্ত সলাত আদায়ের পর রক্ত দেখা গেলে পরের ওয়াক্তের জন্য পুনরায় অযু করে সলাত আদায় করতে বললেন।
(আবু দাউদ ৩০৫)

حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ سُمَىٍّ، مَوْلَى أَبِي بَكْرٍ أَنَّ الْقَعْقَاعَ، وَزَيْدَ بْنَ أَسْلَمَ، أَرْسَلَاهُ إِلَى سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ يَسْأَلُهُ كَيْفَ تَغْتَسِلُ الْمُسْتَحَاضَةُ فَقَالَ تَغْتَسِلُ مِنْ ظُهْرٍ إِلَى ظُهْرٍ، وَتَتَوَضَّأُ لِكُلِّ صَلَاةٍ، فَإِنْ غَلَبَهَا الدَّمُ اسْتَثْفَرَتْ بِثَوْبٍ

আবূ বাকর (রাঃ)-এর আযাদকৃত গোলাম সুমাই সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, কা‘কা‘আ এবং যায়িদ ইবনু আসলাম (রহঃ) সুমাইকে সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাবের নিকট পাঠালেন। যাতে সুমাই তাকে জিজ্ঞেস করেন, মুস্তাহাযা কিভাবে গোসল করবে? সাঈদ (রাঃ) বললেন, মুস্তাহাযা গোসল করবে যুহর থেকে যুহর পর্যন্ত (অর্থাৎ প্রত্যেক যুহর সলাতের পূর্বে গোসল করবে)। আর ওযু করবে প্রত্যেক সলাতের জন্য। যদি অত্যধিক রক্তস্রাব হয় তাহলে যেন কাপড়ের পট্টি পরিধান করে।
(আবু দাউদ ৩০১)

বিস্তারিত জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির ক্ষেত্রে আগে দেখতে হবে যে সে শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে মা'যুর কিনা?

যদি কোনো একটি নামাযের ওয়াক্তের শুরু থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত তথা সম্পূর্ণ ওয়াক্ত তার এমনভাবে অতিবাহিত হয় যে,উক্ত সমস্যা বন্ধ না হয়,বরং চলতেই থাকে,এই উযরের কারণে অল্প সময়ে ছোট ছুরা দিয়ে হলেও সেই ওয়াক্তের মধ্যে ফরয নামায পড়া তার জন্য কোনোভাবেই সম্ভবপর না হয়,তাহলে তিনি মা'যুর। 

সেক্ষেত্রে তিনি প্রতি ওয়াক্তের জন্য অযু করবেন,এই অযু দিয়ে উক্ত ওয়াক্তের মধ্যে যত ইচ্ছা তওয়াফ করতে করতে পারবেন।
(যদি পেশাব ব্যাতিত অন্য কোনো অযু ভঙ্গকারী কিছু না পাওয়া যায়।)
এক্ষেত্রে তিনি ডায়াপার ব্যবহার করতে পারেন,সমস্যা নেই।

ওয়াক্ত চলে গেলে পরের ওয়াক্তে আবারো তওয়াফ করতে চাইলে পুনরায় অযু করে নিতে হবে।

★আর যদি উপরোক্ত বিবরণ মতে তিনি মা'যুর না হোন,সেক্ষেত্রে তাকে পূর্ণ পবিত্রতার সহিত তওয়াফ করতে হবে।
তওয়াফ চলাকালীন পেশাব আসলে তওয়াফ বন্ধ রেখে পবিত্র হয়ে এসে যেখানে রেখে গিয়েছিলো,ঠিক সেখান থেকে পুনরায় তওয়াফ শুরু করে।
একেবারে ১ম থেকে তওয়াফ শুরু করতে হবেনা।
তবে কথাবার্তা বলা যাবেনা।

উল্লেখ্য, সা'য়ি করার জন্য অযু অবস্থায় থাকা আবশ্যক নয়।
তাই উক্ত ব্যাক্তি ডায়াপার ব্যবহার করে সা'য়ি করতে পারেন,এতে পেশাব আসলেও সমস্যা নেই।
সা'য়ি হয়ে যাবে।

غنية الناسك

"ولو خرج من الطواف إلی تجدید وضوء ثم عاد بنی لو کان ذلك بعد إتیان أکثره، …ویستحب الاستیناف في الطواف إذا کان ذلك قبل إتیان أکثره،…وصاحب العذر الدائم إذا طاف أربعة أشواط ثم خرج الوقت توضأ وبنی ولا شیٴ علیه، وکذا إذا طاف أقل منها إلا أن الإعادة حینئذ أفضل". 

( قبیل باب السعي بین الصفا والمروة، ص:48)
সারমর্মঃ-
যদি তওয়াফ চলাকালীন নতুন অযুর জন্য বের হতে হয়,অতঃপর অযু করে পুনরায় ফিরে আসে,সেক্ষেত্রে সে বেনা করতে পারবে,যদি অধিকবার এমন হয়। তবে নতুন করে তওয়াফ শুরু করাই মুস্তাহাব।

(০২)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
রোজার কোনো বদলি হয়না।
এক্ষেত্রে নিজেরই কাজা আদায় করতে হবে।

অসুস্থতার দরুন কাজা আদায়ের সক্ষমতা না থাকলে প্রতি রোযার জন্য ফিদইয়াহ আদায় করতে হবে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ    

أَيَّامًا مَّعْدُودَاتٍ ۚ فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ۚ وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ ۖ فَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًا فَهُوَ خَيْرٌ لَّهُ ۚ وَأَن تَصُومُوا خَيْرٌ لَّكُمْ ۖ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ [[٢:١٨٤]

গণনার কয়েকটি দিনের জন্য অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে, অসুখ থাকবে অথবা সফরে থাকবে, তার পক্ষে অন্য সময়ে সে রোজা পূরণ করে নিতে হবে। আর এটি যাদের জন্য অত্যন্ত কষ্ট দায়ক হয়, তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাদ্যদান করবে। যে ব্যক্তি খুশীর সাথে সৎকর্ম করে, তা তার জন্য কল্যাণ কর হয়। আর যদি রোজা রাখ, তবে তোমাদের জন্যে বিশেষ কল্যাণকর, যদি তোমরা তা বুঝতে পার। [সূরা বাকারা-১৮৩-১৮৪]

★যদি এমন অসুস্থতা হয় যা সুস্থ হয়ে রোজা রাখার মতো সম্ভাবনা না থাকে বা কম থাকে অথবা বার্ধক্যজনিত কারণে রোজা পালনে সম্পূর্ণ অক্ষম হন, তাহলে প্রতি রোজার জন্য এক ফিতরা পরিমাণ ফিদইয়া দিতে হবে।

যদি এমন অসুস্থ্য হন যে, রোযা রাখতেই পারেন না, এমতাবস্থাই তার মৃত্যু চলে আসে, তাহলে তার রোযার ফিদিয়া ও আদায় করতে হবে না।
যদি কষ্টকর হয়, কিন্তু আদায়ে সক্ষম হন, তাহলে ফিদিয়া আদায় করতে হবে।
প্রতিটি রোযার ফিদিয়া হল, গরীব মিসকিনকে প্রতিটি রোযার বদলে সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা বা গম, চাল, যব ইত্যাদি প্রদান করা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 138 views
0 votes
1 answer 138 views
...