আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
322 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (34 points)
প্রশ্ন: একটা মেয়ে বড়ো হয়ে যখন জানতে পারবে সে তার বাবা-মায়ের নিজ-সন্তান নয়, পালক সন্তান। তখন সেই সন্তানের করনীয় কি?

নোট ১: বাবা-মা জানে না, তাদের মেয়ে যে ব্যপারটা জানে।

নোট ২: মেয়েটিকে অন্য কেউ জানিয়েছে এই ব্যপারটা। তাই এর সত্যতা মেয়েটি যাচাই করে পজিটিভ পেয়েছে।

নোট ৩: মেয়েটি অলরেডি পালক সন্তান নিয়ে ইসলামের বিধিনিষেধের অনেক লেকচার শুনে ফেলেছে। শায়খ আহমাদুল্লাহর ভিডিও শুনেছে।

উপরোক্ত দিকগুলো বিবেচনা করে একটি সঠিক উত্তর চাই ইন শা আল্লহ

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

ইসলামে অন্য কারো সন্তান লালন-পালন ও তার অভিভাবকত্ব নেওয়ার অনুমতি রয়েছে। যদি কোনো এতিম, গৃহহীন বা অবহেলিত শিশুকে নিজের সন্তানের ন্যায় অন্ন-বস্ত্র ও সব ধরনের সহযোগিতার মাধ্যমে লালন-পালন করে অথবা নিঃসন্তান দম্পতি কোনো শিশুকে স্নেহ করে লালন-পালন করে তাকে স্বেচ্ছায় কিছু দান করে, তাহলে শরিয়তে তা নিষিদ্ধ নয়। এতিম-অনাথ ও গরিব শিশুর অভিভাবকত্ব নিয়ে তার দেখাশোনার দায়িত্ব গ্রহণ করে তাকে যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাকে ইসলাম উত্সাহিত করে। ইসলাম এ ধরনের কাজকে অনেক বেশি সওয়াবের কাজ বলে ঘোষণা করেছে। নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আমি ও এতিমের অভিভাবক জান্নাতে দুই আঙুলের ন্যায় অতি কাছাকাছি থাকব।’ (বুখারি : ৬০০৫)
,
নবী করিম (সা.) আরো ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি এতিমের খোরপোশ ও লালন-পালনের যাবতীয় দায়িত্ব গ্রহণ করে, আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাত দান করবেন।’ (তিরমিজি : ১৯১৭)
,
পিতৃপরিচয় ছিন্ন করা অবৈধ।

হযরত আবু-যর রাযি থেকে বর্ণিত,

عَنْ أَبِي ذَرٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: (لَيْسَ مِنْ رَجُلٍ ادَّعَى لِغَيْرِ أَبِيهِ وَهُوَ يَعْلَمُهُ إِلا كَفَرَ، وَمَنْ ادَّعَى قَوْمًا لَيْسَ لَهُ فِيهِمْ نَسَبٌ فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنْ النَّارِ)

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,

যে ব্যক্তি নিজ পিতা ব্যতীত সেচ্ছায় অন্য কারো দিকে নিজের পিতৃত্ব কে সম্পৃক্ত করল,বা যে ব্যক্তি নিজে গোষ্ঠী ব্যতীত ভিন্ন কোনো গোষ্টি থেকে আপন বংশধারা সাব্যস্ত করল, সে যেন তার শেষ ঠিকানা জাহান্নামকে বানিয়ে নেয়। (সহীহ বুখারী-৩৫০৮, সহীহ মুসলিম-৬১)

সুতরাং দত্তক নেওয়ার সময় স্মরণ রাখতে হবে, চুক্তিপত্রে সই করে সন্তানের পিতৃপরিচয়স্বত্ব ত্যাগ করে এমনভাবে দেওয়া যাবে না যে মা-বাবা আর কখনো ওই শিশুর মা-বাবা হিসেবে পরিচয় প্রকাশ করতে পারবে না। ইসলাম এ কাজ কখনো সমর্থন করে না। কেননা ইসলাম সওয়াবের নিয়তে অসহায়ের পাশে দাঁড়াতে বলেছে, কিন্তু সন্তান দখল করা কিংবা তার প্রকৃত পরিচয় বিলুপ্ত করার অনুমতি দেয়নি। অনেক সময় দেখা যায়, টাকার বিনিময়ে গরিব মা-বাবা সন্তান দত্তক দেন। এটাকে এক ধরনের সন্তান বেচাকেনাও বলা যেতে পারে। এটি কেবল অমানবিকই নয়, ঘৃণ্যও বটে। ইসলামে এ ধরনের স্বাধীন মানুষ ক্রয়-বিক্রয় সম্পূর্ণ হারাম। 
,
নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘কিয়ামতের দিন আমি তিন ব্যক্তির প্রতিপক্ষ হব—এক. ওই ব্যক্তি, যে কোনো কাজে আমার নামে কারো সঙ্গে কসম করার পর তা ভঙ্গ করেছে। দুই. যে ব্যক্তি কোনো স্বাধীন মানুষ বিক্রি করে সম্পদ অর্জন করেছে। তিন. আর যে ব্যক্তি কোনো লোক দিয়ে কাজ করিয়ে তার বিনিময় দেয়নি।’ (বুখারি : ২২২৭)
,
★লালন-পালনকারীর সঙ্গে পালিত সন্তান পর্দার ক্ষেত্রেও পুরোপুরি ইসলামের বিধান রক্ষা করে চলতে হবে। নিজ হাতে লালন-পালন করেছি বলে পর্দার বিধান লঙ্ঘনের কোনো সুযোগ নেই। অর্থাত্ পালক নেওয়া শিশুটি ছেলে হলে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তাকে পালক নেওয়া মায়ের সঙ্গে পর্দা করতে হবে। অন্যদিকে পালক নেওয়া শিশুটি মেয়ে হলে তাকে পালক নেওয়া বাবার সঙ্গে পর্দা রক্ষা করে চলতে হবে। কেননা ইসলামী শরিয়ত মতে, দত্তকসংক্রান্ত সম্পর্ক কখনো বংশীয় সম্পর্কে পরিণত হয় না। এমনকি তাদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্কও অন্য সাধারণ মানুষের ন্যায়ই বৈধ। এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই। (তুহফাতুল ফুকাহা : ২/১২৩)

আরো জানুনঃ 
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত মেয়েটির জন্য করনীয় হলো বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হলে তাহলে সেক্ষেত্রে সে তার পালক বাবা সহ ঐ পরিবারের সমস্ত পুরুষ সদস্য সাথে পর্দা করবে।

নিজের আসল বাবা মার নাম যাচাই করে বের করে জন্ম সনদ ও ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করবে। অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলোও যথাসম্ভব সংশোধন করবে।
নিজের আসল বাবা মার নাম সেখানে দিতে হবে।

নিজ আসল বাবা মার সাথে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করবে,দেখা করবে। সম্ভব হলে সেখানে গিয়েও থাকবে।

সকলকে নিজ আসল বাবা মার পরিচয় দিতে হবে। সমস্যা হলে উভয় পরিবার মিলে বৈঠক করে ইসলামের মাসয়ালা, বিধি বিধান জানাতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
আসসালামু আলাইকুম, এই উত্তরের প্রতিউত্তরে আরো কিছু জানতে চাচ্ছি ইন শা আল্লহ। 

এখানে বলা হয়েছে আসল বাবা-মাকে খুঁজতে। কিন্তু সন্তানের লালিত পিতামাতা (যারা সন্তানকে পালক নিয়েছে) যদি জানতে পারে যে, তাদের সন্তান সঠিক তথ্য জেনে গেছে। তখন তারা স্ট্রোকও করতে পারে। তারা চায় না তাদের সন্তান হারিয়ে যাক। অনেক বেশি ভালোবাসে যে। আসলে, তাদের কোনো সন্তান নেই, পালক সন্তানকে ঘিরেই যত স্বপ্ন তাদের। 

সেক্ষেত্রে এমন কি করা যায় না, পালিত বাবা-মা মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত কোনোকিছু তাদেরকে না জানানো। তাদের মৃত্যুর পর নিজের বাবা-মায়ের খুঁজ করা, যোগাযোগ রাখা। এতে কি সন্তানের কোনো গুনাহ হবে? 


by (574,260 points)
এক্ষেত্রে সমস্যা ২ টি।
এক, পালক বাবা সহ ঐ পরিবারের সমস্ত পুরুষ সদস্যদের সাথে মেয়েটির পূর্ণ পর্দা করতে হবে।

দুই, জন্ম সনদ, ভোটার আইডি কার্ড সহ জরুরী কাগজ পত্রগুলোতে নিজের আসল বাবা মার নাম লিখতে হবে।

★সুতরাং এমতাবস্থায় উপরে যাহা উল্লেখ রয়েছে,এটিই শরীয়তের নির্দেশ।
by (574,260 points)
মেয়েটি এমন করতে পারে,কৌশলে তাদেরকে বুঝতে না দিয়ে জন্ম সনদ, ভোটার আইডি কার্ড সহ জরুরী কাগজ পত্রগুলোতে নিজের আসল বাবা মার নাম লিখবে

এক্ষেত্রে আগের জন্ম সনদ, ভোটার আইডি কার্ড এর কপি তার পালক বাবা মাকে দেখাবে।
তাতে তারাও অসন্তুষ্ট হবেনা।

দুই, পালক বাবা সহ ঐ পরিবারের সমস্ত পুরুষ সদস্যদের সাথে মেয়েটি কৌশলে পর্দা করবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...