আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
141 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
কখন কখন বীর্যপাত হালাল? সহাবাসের আগে কি হারাম এবং বীর্য বের হওয়ার সময় যৌনাঙ্গ থেকে বের করা হালাল ? শুধু স্ত্রী সহবাসের মাধ্যমেই বীর্পাত হালাল? কিছুটা মৈথুন করে বের করা যাবে না? যৌনাংংগের বাহিরে বীর্যযপাত হালাল হবার হাদিস?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

‘আযল’ হ’ল, স্ত্রীমিলনের সময় বাইরে বীর্যপাত করা। যার উদ্দেশ্য স্ত্রীকে গর্ভধারণ থেকে বিরত রাখা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْهُ قَالَ: إِنَّ رَجُلًا أَتَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: إِن لي جَارِيَةً هِيَ خَادِمَتُنَا وَأَنَا أَطُوفُ عَلَيْهَا وَأَكْرَهُ أَنْ تَحْمِلَ فَقَالَ: «اعْزِلْ عَنْهَا إِنْ شِئْتَ فَإِنَّهُ سَيَأْتِيهَا مَا قُدِّرَ لَهَا» . فَلَبِثَ الرَّجُلُ ثمَّ أَتَاهُ فَقَالَ: إِن الْجَارِيَة قد حبلت فَقَالَ: «قَدْ أَخْبَرْتُكَ أَنَّهُ سَيَأْتِيهَا مَا قُدِّرَ لَهَا» . رَوَاهُ مُسلم

হযরত জাবির (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে এসে বলল, আমার এক দাসী আছে, সে আমাদের কাজকর্ম করে। আমি তার সাথে সহবাস করি; কিন্তু সে গর্ভবতী হোক, এটা আমি চাই না? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি ইচ্ছা করলে ’আযল করতে পার। তবে জেনে রেখ তার জন্য যা তাকদীরে নির্ধারিত হয়েছে তা অবশ্যই ঘটবে। কিছু দিন পরে উক্ত ব্যক্তি এসে বলল, সে দাসী (’আযল করা সত্ত্বেও) গর্ভবতী হয়েছে। তাই তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমি তো পূর্বেই বলেছি, তার জন্য যা অবধারিত আছে তা অবশ্যই হবে।

(মুসলিম ১৪৩৯, আবূ দাঊদ ২১৭৩, আহমাদ ১৪৩৪৬, সহীহ আল জামি‘ ১০৫৩, মিশকাত ৩১৮৫)

https://ifatwa.info/31481/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
শরীয়তের বিধান হলো আকীদা বিশুদ্ধ রেখে স্ত্রী সহবাসের সময় স্ত্রীর অনুমতিক্রমে আযলের অনুমতি রয়েছে। 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا یَحِلُّ لَکُمۡ اَنۡ تَرِثُوا النِّسَآءَ کَرۡہًا ؕ وَ لَا تَعۡضُلُوۡہُنَّ لِتَذۡہَبُوۡا بِبَعۡضِ مَاۤ اٰتَیۡتُمُوۡہُنَّ اِلَّاۤ اَنۡ یَّاۡتِیۡنَ بِفَاحِشَۃٍ مُّبَیِّنَۃٍ ۚ وَ عَاشِرُوۡہُنَّ بِالۡمَعۡرُوۡفِ ۚ فَاِنۡ کَرِہۡتُمُوۡہُنَّ فَعَسٰۤی اَنۡ تَکۡرَہُوۡا شَیۡئًا وَّ یَجۡعَلَ اللّٰہُ فِیۡہِ خَیۡرًا کَثِیۡرًا ﴿۱۹﴾ 

হে ঈমানদারগণ! যবরদস্তি করে নারীদের উত্তরাধিকার হওয়া তোমাদের জন্য বৈধ নয়। তোমরা তাদেরকে যা দিয়েছ তা থেকে কিছু আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রেখো না, যদি না তারা স্পষ্ট খারাপ আচরণ করে। আর তোমরা তাদের সাথে সৎভাবে জীবন যাপন করবে; তোমরা যদি তাদেরকে অপছন্দ কর তবে এমন হতে পারে যে, আল্লাহ যাতে প্রভূত কল্যাণ রেখেছেন তোমরা তাকেই অপছন্দ করছ।
(সুরা নিসা ১৯)

قال الكاساني الحنفي رحمه الله :
" يكره للزوج أن يعزل عن امرأته الحرة بغير رضاها ؛ لأن الوطء عن إنزال سبب لحصول الولد ، ولها في الولد حق ، وبالعزل يفوت الولد ، فكان سببا لفوات حقها " .
انتهى من " بدائع الصنائع " (2/334) .
সারমর্মঃ
স্বামীর জন্য আযাদ স্ত্রীর সাথে আযল করা তার অনুমতি ব্যাতিত মাকরুহ।
কেননা সহবাস সন্তান অর্জনের কারন।
আর স্ত্রীরও এক্ষেত্রে হক রয়েছে।
আর আযলের দ্বারা সন্তান জন্মের বিষয়টি শেষ হয়ে যায়। সুতরাং এটি স্ত্রীর হক নষ্টের কারন।   
  
وقال الخرشي المالكي رحمه الله :
" يجوز للرجل أن يعزل عن زوجته ... إن كانت حرة ويكفي إذنها " .
انتهى من " شرح مختصر خليل " (3/225) .
সারমর্মঃ
স্বামীর জন্য তার স্ত্রী থেকে আযল করা জায়েজ আছে।
যদি স্ত্রী আযাদ হয়,তাহলে তার অনুমতি যথেষ্ট।    

وقال المرداوي الحنبلي رحمه الله :
" لا يعزل عن الحرة إلا بإذنها... هذا هو المذهب [يعني مذهب الإمام أحمد] " .
انتهى من " الإنصاف " (8/348) .
সারমর্মঃ
আযাদ স্ত্রী থেকে আযল করা তার অনুমতি ব্যাতিত জায়েজ নেই।   

আযল করলে প্রতি সহবাসেই আযল করতে স্ত্রীর অনুমতি নিতে হবে।
হ্যাঁ যদি স্ত্রী এভাবে বলে যে তোমার প্রতি সহবাসের ক্ষেত্রে আযলের অনুমতি নিতে হবেনা।
তুমি আযল করতে পারো।
তাহলে প্রতি সহবাসেই আযল করতে স্ত্রীর অনুমতি নিতে হবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
শুধুমাত্র স্ত্রীর সাথে সহবাসের দরুন বীর্যপাত হালাল। নতুবা মৈথুন করে বীর্যপাত করা জায়েজ নয়।

তবে স্ত্রী হায়েজ নেফাস অবস্থায় থাকলে বা কঠিন অসুস্থ অবস্থায় থাকলে সেক্ষেত্রে গুনাহ থেকে বাঁচতে স্ত্রীর হাত দিয়ে হস্তমৈথুন করে নিয়ে বীর্যপাত করার অনুমতি কিছু ইসলামী স্কলারগন দিয়েছেন।
তবে নিজ হাত দ্বারা মৈথুন করা কোনোক্রমেই জায়েজ হবেনা।

 স্বপ্নদোষের মাধ্যমে বীর্যপাত হয়ে গেলে এতে গুনাহ নেই।

সহবাসের পর নিজের হাত দিয়ে মৈথুন করে বীর্য বের করা যাবে না।
এক্ষেত্রে সহবাসের দরুন বীর্যপাত হলে এটি হস্তমৈথুনের অন্তর্ভুক্ত হবেনা। 

আর হস্তমৈথুনের দরুন বীর্যপাত হলে এটি হস্তমৈথুনের অন্তর্ভুক্ত হবে।
সেক্ষেত্রে গুনাহ হবে।

সহবাসের পর যৌনাংগের বাহিরে বীর্যপাত সংক্রান্ত আলোচনা উপরে আযলের অধ্যায়ে উল্লেখ রয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...