আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+2 votes
779 views
in সালাত(Prayer) by (9 points)
closed by
a) উস্তাদ মেয়েরা বাইরে যাওয়ার সময় খীমার পড়লে তায়াম্মুম করলে পর্দার খেলাফ হয়না। কিন্তু অযু করলে পর্দার খেলাফ হয়। এই ক্ষেত্রে বাইরে গেলে কোনটা করবে মেয়েরা?
b)একাকী নামাযে 3তাসবিহ পর পর জায়গা পরিবর্তন করে নামায পড়লে কি নামায ভাঙ্গবে?(কোন কারনে যদি নাপাকি গড়িয়ে আসিতে থাকে)
একা নামাযে তো পা থেকে সিজদাহ্ এর জায়গা পরিমাণ দূরত্ব যেকোন দিকে অতিক্রম করলেই নামায ভাঙ্গে জানতাম।
(জামাতে নামাযে সমস্যা নাই জানি)
c)জাকির নায়েক(যিনি নিজেকে হানাফি বলেন) বা আশেপাশের কোন হানাফী আলেম কেউ যদি রফ ইয়াদাইন করতে বলে আমাকে, তাহলে আমি কি তাদের উপর ভরসা করে করতে পারবো? মানে মাযহাব মিশিয়ে ফেলতে পারবো তাদের কথা মত? আমিও হানাফি।
d) আমাদের উস্তাদ দরসে বলেছিলেন যে সকল সুন্নাহ জীবনে একবার হলেও করা উচিত (4মাযহাব বিভিন্ন ইখতিলাফী মাসালা সবগুলা একবার করে করা জীবনে)। এইটা কিভাবে পালন করবো?
e) দরসে উস্তাদ বলেছেন, সিজদাহ্ তিলাওয়াত এ কাপড় শরীর পাক থাকা লাগবে। এইটা কি হানাফি মত? অন্য মাযহাব এ মত কি? বা হানাফি মাযহার এর অন্য ইমাম দের মত কি?
f) মহল্লার মসজিদে আযান না দিলেও কি বাসাতে আমি সুন্নাত বা ফরয নামায পড়তে পারবো? এক উস্তাদ বলেছিলেন পড়া যাবে না৷ কিন্তু আরেক উস্তাদ বলছেন যাবে।
closed

1 Answer

+1 vote
by (597,330 points)
edited by
 
Best answer
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(a)
ইসলামি রাষ্ট্রর জন্য ওয়াজিব যে, রাস্তার পাশে ও বাস/রেল ষ্টেশনে নারী পুরুষের জন্য পৃথক পৃথক নামাযের স্থান বা মসজিদ নির্মাণ করে দিবে। সাথে সাথে নারীদের জন্যও ওয়াজিব যে,তারা নামাযের ওয়াক্তকে বিবেচনা করে ঘরের বাইরে বের হবে।

যদি কখনো ঘরের বাহিরে থাকাবস্থায় নামাযের সময় হয়ে যায়,তাহলে নির্জনে পবত্রতা অর্জন ও নামায পড়া যায়, এমন কোনো স্থানের তালাশ করতে হবে। সাথের মাহরামকে নিয়ে নামাযের শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত নির্জন স্থানের তালাশে লেগে থাকতে হবে। নিরাপদ স্থান দেখে কোনো বাসা বাড়িতে নামাযের জন্য উঠতে হবে।এবং তথায় পর্দার সাথে অজু ও নামায পড়তে হবে। এই চেষ্টা নামাযের শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত করতে হবে।

যদি শতচেষ্টার পরও কোনো মহিলা পর্দা সম্মত অজু ও নামাযের স্থান না পায়। এবং তখন অজুর তুলনায় তায়াম্মুমকে পর্দার জন্য সুবিধাজনক মনে হয়, তাহলে মহিলা তায়াম্মুম করে নামাযকে আদায় করে নিবে। যেহেতু পর্দা সম্মত নামাযের ব্যবস্থার চেষ্টা সে শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত করেছে, তাই তায়াম্মুম দ্বারা আদায়কৃত ঐ নামাযকে আর দোহড়াতে হবে না। বরং তা যিম্মা থেকে আদায় হয়ে যাবে।

কিন্তু যদি কেউ পর্দার সাথে অজু ও নামায পড়ার চেষ্টা ব্যতীত ওয়াক্তের প্রথমেই তায়াম্মুম করে নেয়,এবং ঐ তায়াম্মুম দ্বারা নামায আদায় করে নেয়, তাহলে এই তায়াম্মুম দ্বারা আদায়কৃত নামাযকে পানি দ্বারা অজু সহ আবার পূনরায় আদায় করতে হবে।

(b)
الْمَشْيُ فِي الصَّلَاةِ إذَا كَانَ مُسْتَقْبِلَ الْقِبْلَةِ لَا يُفْسِدُ إذَا لَمْ يَكُنْ مُتَلَاحِقًا وَلَمْ يَخْرُجْ مِنْ الْمَسْجِدِ وَفِي الْفَضَاءِ مَا لَمْ يَخْرُجْ مِنْ الصُّفُوفِ. كَذَا فِي الْمُنْيَةِ وَإِذَا اسْتَدْبَرَ الْقِبْلَةَ فَسَدَتْ. كَذَا فِي الظَّهِيرِيَّةِ
وَلَوْ مَشَى فِي صَلَاتِهِ مِقْدَارَ صَفٍّ وَاحِدٍ لَمْ تَفْسُدْ صَلَاتُهُ وَلَوْ كَانَ مِقْدَارَ صَفَّيْنِ إنْ مَشَى دَفْعَةً وَاحِدَةً فَسَدَتْ صَلَاتُهُ وَإِنْ مَشَى إلَى صَفٍّ وَوَقَفَ ثُمَّ إلَى صَفٍّ لَا تَفْسُدُ. كَذَا فِي فَتَاوَى قَاضِي خَانْ.
নামাযে কিবলামূখী হাটার দরুণ নামায ফাসিদ হয় না।যখন তা পিছন ফিরে হবে না এবং মসজিদ থেকে বের হয়েও হবে না।এবং মসজিদের বাহিরে হলে,যতক্ষণ পর্যন্ত সফের সীমানা অতিক্রম করা হবে না,ততক্ষণ পর্যন্ত নামায ফাসিদ হবে না।তবে কিবলাকে পিছনে রেখে হাটা শুরু করলে নামায ফাসিদ হয়ে যাবে।যদি কেউ নামাযে এক সফ অতিক্রম করে,তাহলে নামায ফাসিদ হবে না।তবে যদি কেউ এক সাথে দুই সফ অতিক্রম করে ফেলে,তাহলে তার নামায ফাসিদ হয়ে যাবে।কিন্তু যদি কেউ এক সফ অতিক্রম করার পর এক রুকুন(তিন তাসবিহ) সমপরিমাণ সময় বিরতি নেয়,অতঃপর আবার অতিক্রম করা শুরু করে,তাহলে তার নামায ফাসিদ হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১০৩)

(c)না, এভাবে মাযহাবকে মিশিয়ে নিতে পারবেন না। হানাফি মাযহাবমতে রফে ইয়াদাইন মুস্তাহাব নয়। তাই কেউ যদি নিজেকে হানাফি বলে, আপনাকে রফে ইয়াদাইন করতে বলে,তাহলে তার অনুসরণ আপনি করতে পারবেন না। যে যে মাযহাবকে ফলো করবে,সর্বক্ষেত্রে ঐ মাযহাবকেই সে ফলো করবে। হ্যা ’মুজতাহিদ ফিল মাযহাব’ পর্যায়ের কোনো আলেমের কাছে নিজ মাযহাবের কোনো মাস'আলার দলীল অন্য মাযহাবের চেয়ে দুর্বল প্রমাণিত হলে, তখন উনার জন্য শক্তিশালী মাযহাবকে ফলো করা ওয়াজিব হয়ে যাবে। নতুবা যে মাযহাবকে ফলো করা হচ্ছে,সেই মাযহাবের সকল মাস'আলা কে অনুসরণ করতে হবে, এবং করাটাই ওয়াজিব। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1936

(d)
”সকল সুন্নাহ জীবনে একবার হলেও করা উচিত’ এটা সবার জন্য নয়। বরং যাদের দ্বীনের সঠিক বুঝ রয়েছে।এবং যারা দ্বীন সম্পর্কে সম্পূর্ণ বিজ্ঞ, শুধুমাত্র তারাই সকল সুন্নাহকে আ’মলে নিয়ে আাসবে।

(e)
প্রসিদ্ধ চার ইমাম সহ সমস্ত ফুকাহায়ে কেরামের মতে তিলাওয়াতে সিজদার  জন্য পবিত্রতা শর্ত। যেভাবে নামাযের সিজদার জন্য পবিত্রতা শর্ত। ইমাম বোখারী রাহ,ইমাম শাওকানী রাহ,ইবনে হাযাম জাহেরী রাহ গণের মতে পবিত্রতা শর্ত নয়।
«وَقَال الْقُرْطُبِيُّ: لَا خِلَافَ فِي أَنَّ سُجُودَ الْقُرْآنِ يَحْتَاجُ إِلَى مَا تَحْتَاجُ إِلَيْهِ الصَّلَاةُ مِنْ طَهَارَةِ حَدَثٍ وَنَجَسٍ. . إِلَاّ مَا ذَكَرَ الْبُخَارِيُّ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُمَا أَنَّهُ كَانَ يَسْجُدُ عَلَى غَيْرِ طَهَارَةٍ. وَذَكَرَهُ ابْنُ الْمُنْذِرِ عَنِ الشَّعْبِيِّ.» - «الموسوعة الفقهية الكويتية» (24/ 214)

(f)
আযান প্রচলনের হেকমত বা রহস্য হিসেবে চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ "আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় "বর্ণিত রয়েছে,
شُرِعَ الأَْذَانُ لِلإِْعْلاَمِ بِدُخُول وَقْتِ الصَّلاَةِ، وَإِعْلاَءِ اسْمِ اللَّهِ بِالتَّكْبِيرِ، وَإِظْهَارِ شَرْعِهِ وَرِفْعَةِ رَسُولِهِ، وَنِدَاءِ النَّاسِ إِلَى الْفَلاَحِ وَالنَّجَاحِ
তরজমাঃ- নামাযের ওয়াক্ত প্রবেশ হয়েছে, একথা বোঝানোর জন্য আযানের প্রচলন শুরু হয়।শুধু তাই নয় বরং তাকবীরের মাধ্যমে আল্লাহর নামকে উচু করার স্বার্থে। এবং আল্লাহ তা'আলার বিধি-বিধানকে প্রকাশ করতে ও তার রাসূল সাঃ এর মর্যদাকে বৃদ্ধি করতে সর্বোপরি লোকদিগকে কল্যাণ ও কামিয়াবির দিকে ডাকতে আযানের প্রচলন শুরু হয়।(২/৩৫৯)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
ফুকাহায়ে কেরামদের উপরোক্ত  আলোচনা দ্বারা বুঝা যায় যে,আযান হচ্ছে নামাযের ওয়াক্ত প্রবেশের ঘোষক।কিন্তু যেহেতু আযানের পরপরই নামায শুরু করাটা সুবিধাজনক। তাই ওয়াক্ত প্রবেশের সাথে সাথেই আযান না দিয়ে বরং হাদীসে বর্ণিত মুস্তাহাব ওয়াক্তের কিছু পূর্বে আযান দেয়া হয়ে থাকে।সুতরাং প্রত্যেক নামাযের ওয়াক্ত হয়ে গেলে আযান হোক বা নাই হোক, শোনা যাক বা নাই যাক।নামায পড়ে নিলে নামায আদায় হয়ে যাবে। তবে প্রত্যেক নামাযের মুস্তাহাব ওয়াক্তেই নামায পড়া উত্তম।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/3575

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মহল্লার মসজিদে আযান না দিলেও বাসাতে  সুন্নাত বা ফরয নামায পড়া যাবে,যদি নামাযের ওয়াক্ত হয়ে যায়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।সবগুলোর উত্তর একত্রিত করে দেয়া হয়েছে।
by (9 points)
edited by
এবং মসজিদের বাহিরে হলে,যতক্ষণ পর্যন্ত সফের সীমানা অতিক্রম করা হবে না 

মানে বুঝি নাই উস্তাদ 
জাযাকাল্লাহ খাইরান 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...