আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
111 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (129 points)
edited by
আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকা-তুহ

মুহতারাম, কারো উপার্জন হারাম হলে তা দুয়া কবুল/ইবাদাত প্রতিবন্ধক।

১,কারো যদি উপার্জন এ হালালের পরিমাণ বেশি থাকে হারাম কম থাকে,তবুও?

২,যতক্ষন না হারাম উপার্জন দান অথবা মূল মালিকের কাছে ফেরত না যাচ্ছে ততক্ষন কি দুয়া ইবাদাত কবুল হবেনা? নাকি আল্লাহর কাছে তওবা করলেই যথেষ্ট।

৩,পূর্বজীবনের কিছু হারাম ইনকাম আছে যা সাদাকা করতে হবে,আমি চাচ্ছিলাম আমার লোন গুলা শোধ হলে সাদাকা করে দিব। ততদিন অব্দি কি দুয়া কবুল হবেনা আমার? তাহলে করনীয় কি?

৪, আমার কিছু পাওনাদার আছে, যা অনেক আগের,তাদেরকে খুজলে হয়ত কাউকে কাউকে পাওয়া যাবে,আবার কাউকে যাবেনা। এসব ও কি হারাম উপার্জনের মধ্যে পড়বে যতদিন না শোধ করব? দুয়া কবুল হবেনা? আমি পরে দিতে চাচ্ছি যদি মালিক খুজে পাই,নয়ত পরে দান করে দিব

5,অনেক আগে জুয়া খেলতাম,সেখানে  কারো সাথে লাভের চেয়ে লস বেশি হয়েছে,কারো সাথে লাভ বেশি।তা যেহেতু হারাম ইনকাম তাহলে উক্ত টাকা কি এখন যার যার সাথে খেলতাম ফিরিয়ে আমারটা আমি নিব? আমার মনে হয়না সেসব কতটাকা হিসাবে আছে আর যারা লাভ করেছে আমার থেকে রাজি হবে কিনা

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হারাম সম্পদ ভক্ষন কারীর ইবাদত দোয়া কিছুই কবুল হয়না।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "

 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)

অন্য এক হাদীসে এসেছেঃ- 

ان العبد لیقذف اللقمة الحرام فی جوفہ ما یتقبل اللہ منہ عمل اربعین یوماً اھ (المعجم الاوسط، رقم: ۶۴۹۵)

সারমর্মঃ- বান্দা যদি এক লোকমা হারাম খাবার তার পেটে দেয়,আল্লাহ তায়ালা চল্লিশ দিন তার আমল কবুল করেননা।


হারাম টাকার বিধান হল, তা প্রাথমিকভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া।নতুবা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের মাঝে সদকা করে দেয়া।

 من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء
 (معارف السنن، كتاب الطهارة، باب ما جاء لا تقبل صلاة بغير طهور-1/34، الفتاوى الشامية، باب البيع الفاسد، مطلب فى من ورث مالا حراما-7/301، كتاب الحظر والإباحة، فصل فى البيع-9/554، بذل المجهود، كتاب الطهارة، باب فرض الوضوء- 1/37

যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব না হলে সেটি ফকিরদেরকে সদকাহ করে দিতে হবে।
(মাআরিফুস সুন্নাহ ১/৩৪)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
সে যদি সেই টাকা হতে কিছু ক্রয় করে খায়,সেক্ষেত্রেও তার ইবাদত দোয়া কবুল হবেনা।

(০২)
উপরোক্ত হাদীস থেকে বুঝা যায় যে,
যতবার বান্দা হারাম খাবে,তারপর থেকে ৪০ দিন তার দোয়া ইবাদত কবুল হবেনা।

(০৩)
হবে,ইনশাআল্লাহ। 
আপনি এখন থেকে আর কোনো হারাম ভক্ষন করবেননা।

(০৪)
হারাম উপার্জনের মধ্যে পড়বেনা।
এগুলো বান্দার হকের অন্তর্ভুক্ত। 

এক্ষেত্রে যাদেরকে খুজে পাওয়া যাবে,যাদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়,তাদের সাথে যোগাযোগ করে টাকা ফেরত দিতে হবে।

তাদেরকে পাওয়া না গেলে তাদের পাওনা টাকা তাদের ওয়ারিশদের দিবে,যাতে পৌছে দেয়।

কাউকেই পাওয়া না গেলে তাদের নামে গরিব মিসকিনকে সদকাহ করে দিবেন।

(০৫)
এক্ষেত্রে আপনি যত লাভ করেছেন,তাহা সেই মানুষকে ফেরত দিবেন।
সে আপনার টাকা ফেরত না দিলেও আপনি তার টাকা ফেরত দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...