আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
177 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (14 points)
আসসালামু আলাইকুম।  আমি বেশীর ভাগ সময় ই খেয়াল করে দেখেছি টাকা জমা করতে শুরু করসি তখন ই বিপদ এসে উপস্থিত হয়। যেমন একবার হাত এ ৩ হাজার টাকা রেখে চিন্তা করলাম সামনে মাসেও এর সাথে আরও কিছু করে রাখবো । তখনই আমার কম্পিউটার নষ্ট হল। এরপর রাখতে গিয়ে মোবাইল নষ্ট হল। এভাবে কোন না কোন ঘটনা ঘটে, হয় হাতে টাকা রাখলে অসুস্থ হই, নয়তো আমার মেহমান আসেন।  কোন না কোন ভাবে একটু জমা করতে গেলে ব্যাপার গুলো দেখি এবং এটা ৫/৬ বছর থেকেই মোটামুটি খেয়াল করে দেখছি। হাতে টাকা  জমানো না থাকলে ব্যাপার গুলো এতো বেশি ঘটে না। এখন বিষয় টা কি আমার মনের ভুল? মনের ভুল হলে বার বার ই কেন এমন হয়। আমি জানতে চাচ্ছিলাম ইসলামি দিক থেকে টাকা জমানো কতটা ন্যায় সঙ্গত। এভাবে কষ্ট করে বার বার জমাতে চেষ্টা করা যাবে নাকি না জমানোর চেষ্টা করে যতটুকু দরকার লাগে সেটা খরচ করায় উত্তম? আমি একটা চাকরী করি, খুব বেশি ও না বেতন,  বেতন দিয়ে নিজের চলার পর চেষ্টা করি বাবা , মা, বোন কে অল্প কিছু দেয়ার। সেক্ষেত্রে জমানো টা কষ্ট হয়ে যায়, কিন্তু কাও ক না দিলে, কষ্ট করে চললে কিছুটা হয়তো রাখা যাবে।  পরে কি হবে এটা চিন্তা না করে যতটুকু সম্ভব বাবা, মা , বোন কে দেয়া উত্তম নাকি জমালে ও সেটা পাপ হবে না। উত্তর টা পেলে উপকার হতো, গুসিয়ে হয়তো লিখতে পারি নি আফওয়ান।

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 
 
https://ifatwa.info/8302/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
সুরা তাওবার ৩৪ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন 

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّ کَثِیۡرًا مِّنَ الۡاَحۡبَارِ وَ الرُّہۡبَانِ لَیَاۡکُلُوۡنَ اَمۡوَالَ النَّاسِ بِالۡبَاطِلِ وَ یَصُدُّوۡنَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ؕ وَ الَّذِیۡنَ یَکۡنِزُوۡنَ الذَّہَبَ وَ الۡفِضَّۃَ وَ لَا یُنۡفِقُوۡنَہَا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ۙ فَبَشِّرۡہُمۡ بِعَذَابٍ اَلِیۡمٍ ﴿ۙ۳۴﴾

হে মুমিনগণ! নিশ্চয় অনেক পন্ডিত-পুরোহিত মানুষের ধন-সম্পদ অন্যায় উপায়ে ভক্ষণ করে এবং আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করে থাকে।আর যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না, তুমি তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ শুনিয়ে দাও। 
,
আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) বলেন যে, এটা যাকাত ফরয হওয়ার পূর্বের আদেশ। যাকাতের হুকুম অবতীর্ণ হওয়ার পর যাকাত দ্বারা আল্লাহ তাআলা মাল-ধনকে পবিত্র করার মাধ্যম বানিয়েছেন। এই জন্য উলামাগণ বলেন, যে মাল থেকে যাকাত বের করা হবে সে মাল (আয়াতে নিন্দনীয়) ‘জমা করে রাখা’ মাল নয়। আর যে মাল থেকে যাকাত বের করা হবে না, সে মালই হবে ‘জমা করে রাখা’ ধনভান্ডার; যার জন্য রয়েছে এই কুরআনী ধমক। 
,
ইয়াহুদী নাসারা গোষ্ঠীর আলেম সম্প্রদায়ের মিথ্যা ফতোয়া দানের ব্যাধি সৃষ্টি হয় অর্থের লোভ লালসা থেকে। এজন্যে আয়াতে অর্থলিন্সার করুণ পরিণতি ও কঠোর সাজার কথা বর্ণিত হয়। এরশাদ হয়েছেঃ “যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য জমা করে রাখে, তা খরচ করে না আল্লাহর পথে, তাদের কঠোর আযাবের সুসংবাদ দিন”। এখানে “আর তা খরচ করে না আল্লাহর পথে” বাক্য থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, যারা বিধানমতে আল্লাহর ওয়াস্তে খরচ করে, তাদের পক্ষে তাদের অবশিষ্ট অর্থ সম্পদ ক্ষতিকর নয়। হাদীস শরীফে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “যে মালামালের যাকাত দেয়া হয়, তা জমা রাখা সঞ্চিত ধন-রত্রের শামিল নয়।” [আবু দাউদ: ১৫৬৪]। এ থেকে বোঝা যায় যে, যাকাত আদায়ের পর যা অবশিষ্ট থাকে, তা জমা রাখা গোনাহ নয়।
,
পূর্ণ হাদীস হলোঃ
 
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا عَتَّابٌ، - يَعْنِي ابْنَ بَشِيرٍ - عَنْ ثَابِتِ بْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ كُنْتُ أَلْبَسُ أَوْضَاحًا مِنْ ذَهَبٍ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَكَنْزٌ هُوَ فَقَالَ " مَا بَلَغَ أَنْ تُؤَدَّى زَكَاتُهُ فَزُكِّيَ فَلَيْسَ بِكَنْزٍ " .

মুহাম্মাদ ইব্ন ঈসা (রহঃ) ...... উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি স্বর্ণালংকার ব্যবহার করতাম। একদা আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার এই অলংকার “কান্য” হিসেবে গণ্য হবে কী? তিনি বলেনঃ যে মালের পরিমাণ এতটা হবে যার উপর যাকাত ধার্য হয়, তার যাকাত দিতে হবে, তা (ভূগর্ভে) গচ্ছিত ধন নয়।
(আবু দাউদ ১৫৬৪)

 মুয়াবিয়া রাঃ সহ অসংখ্য ছাহাবায়ে কেরামগন মনে করতেন, যাকাত আদায় করাই যথেষ্ট, এরপর আর কিছু সঞ্চয় করাটা দোষের নয়।
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
টাকা জমিয়ে রেখে সেই টাকা থেকে যাকাত আদায় করলে টাকা জমানো জায়েজ হবে।
এতে শরীয়তের দৃষ্টিকোণ হতে কোনো সমস্যা নেই।   

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এখন কথা হলো আপনার বাবা মা ও বোনকে টাকা দেয়া জরুরী কিনা?

এক্ষেত্রে লক্ষনীয় বিষয় হলো আপনার বোনের স্বামী আছে কিনা?
যদি তার স্বামী থাকে,সেক্ষেত্রে তাকে টাকা দেয়া আপনার উপর আবশ্যক নয়।

আর যদি তার স্বামী না থাকে,বিবাহ না হয়,আর আপনার বাবা মা যদি এমন দরিদ্র হয় যে তাঁরা নিজের মালিকানার সম্পদে চলতে অক্ষম।

এবং মালিকানার সম্পত্তি বা উপার্জনকৃত আয়ের দ্বারা নিজের ও নিজের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির স্বাভাবিক ভরণ-পোষণের পর অতিরিক্ত সম্পদ থাকে,সেক্ষেত্রে আপনার বাবা মা ও বোনকে টাকা দেয়া আপনার উপর আবশ্যক হবে।

অন্যথায় শরীয়তের দৃষ্টিকোণ হতে তাদেরকে টাকা দেয়া আবশ্যক হবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...