বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
হাদিসে রাসুল সাঃ ছোটদের প্রতি দয়া করতে এবং বড়দের সম্মান প্রদর্শন করতে আদেশ দিয়েছেন।
আমর ইবনে শুআইব রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর পিতা থেকে এবং তিনি (শুআইব) তাঁর (আমরের) দাদা (আব্দুল্লাহর ইবনে আমর) রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন,
وَعَن عَمرِو بنِ شُعَيبٍ، عَن أبِيهِ، عَن جَدِّهِ رضي الله عنه، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: «لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَمْ يَرْحَمْ غِيرنَا، وَيَعْرِفْ شَرَفَ كَبيرِنَا»حديث صحيح رواه أَبُو داود والترمذي، وَقالَ الترمذي: «حديث حسن صحيح»وَفي رِوَايَةِ أبي دَاوُد: «حَقَّ كَبيرِنَا».
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সে আমার দলভুক্ত নয়, যে ব্যক্তি আমাদের ছোটদের প্রতি দয়া করে না এবং আমাদের বড়দের সম্মান জানে না।’’আবু দাঊদের এক বর্ণনায় আছেঃ আমাদের বড়দের অধিকার জানে না।’’ [তিরমিযি ১৯২০, আহমদ ৬৬৯৪, ৬৮৯৬, ৭০৩৩]
ছোটরা বড়দেরকে সম্মান করবে,আর বড়রা ছোটদেরকে স্নেহ করবে।এটাই মূলত নিয়ম।
বিয়ের দরুণ দেবর ননদ ইত্যাদিকে বিশেষ কোনো সম্মান প্রদর্শন বা বিশেষ প্রকারের আচার-ব্যবহারের কোনো নিয়ম শরীয়তে নেই।স্বামীর বড় হলে সম্মান করতে হবে,আর স্বামীর ছোট হলে নাম ধরে ডাকা যাবে,এমন কোনো শ্রেণীবিভাগ শরীয়তে নেই।বরং প্রত্যেক মানুষ তার চেয়ে বয়সে বড়দেরকে সম্মান করবে,এবং তার চেয়ে বয়সে ছোটদেরকে স্নেহ করবে।চায় স্বামীর বড় হোক বা স্বামীর ছোট হোক,এটাই মূলত নিয়ম।
তাছাড়া নিজ থেকে কেউ বয়সে বড় হলেই যে তাবে নাম ব্যতীত অন্য কোনো উপাধি দিয়ে ডাকতে হবে,এবং ছোট হলে তাকে নাম ধরে ডাকতে হবে,এমন কোনো বিশেষ নিয়মও শরীয়তে নেই।
বরং বড়দের এমন ভাবে আহবান করতে হবে,যা সম্মান বুঝাবে।কোথাও যদি নাম উচ্ছারণ অসম্মানের কারণ হয়,তাহলে সেই সমাজে বড়দেরকে নাম ধরে ডাকা যাবে না।এবং কোথাও যদি নাম উচ্ছারণ অসম্মানের কারণ না হয়,তাহলে সেখানে বড়দেরকে নাম ধরে ডাকতেও বাধা নেই।
এ সম্পর্কীয় একটি প্রশ্নোত্তর লক্ষণীয়---
স্বামী-স্ত্রী এক অপরকে সম্মান সূচক নাম ব্যবহার করে ডাকবে। বিশেষ করে স্ত্রী তার স্বামীকে সর্বক্ষেত্রে সম্মান প্রদর্শন করবে।পরিবারের মধ্যে যেহেতু স্বামীর মর্যাদা স্ত্রীর চেয়ে একটু উপরে তাই স্ত্রী কখনো তার স্বামীর নাম ধরে ডাকবে না। কেননা এতে বেয়দবী মূলক আচরণের বহির্প্রকাশ ঘটে।
এ সম্পর্কে ফাতাওয়া শামীতে বর্ণিত আছে।
( ﻭﻳﻜﺮﻩ ﺃﻥ ﻳﺪﻋﻮ ﺍﻟﺮﺟﻞ ﺃﺑﺎﻩ ﻭﺃﻥ ﺗﺪﻋﻮ ﺍﻟﻤﺮﺃﺓ ﺯﻭﺟﻬﺎ ﺑﺎﺳﻤﻪ ) ﺍ ﻫـ ﺑﻠﻔﻈﻪ-
ছেলে কর্তৃক তার পিতাকে এবং স্ত্রী কর্তৃক তার স্বামীকে নাম ধরে ডাকা মাকরুহ।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ননদ দেবর যদি বয়সে ছোট হয়,এবং এই সমাজে ছোটদেরবে নাম ধরে ডাকার প্রচলন থাকে,তাহলে নাম ধরে ডাকা যাবে।(দেবর গায়রে মাহরাম।সুতরাং দেবরের সাথে পূর্ণ পর্দা করতে হবে)
আর যদি সেখানে নাম ধরার কোনো নিয়ম না থাকে,তাহলে তুমি/তুই ইত্যাদি যেকোনো একটি দ্বারা সম্বোধন করা যাবে।আর যদি দেবর ননদ বয়সে বড় হয়,তাহলে সমাজের প্রচলন অনুযায়ী তাদেরকে সম্মান প্রদর্শন করতে হবে।
এক্ষেত্রে মূলনীতি হল,
বড়কে সম্মান করা ও ছোটকে স্নেহ করা।সম্মান ও স্নেহ সমাজের প্রচলন অনুযায়ী নির্ধারিত হবে।
উত্তম এটাই যে,দেবর ননদ কে তুমি বা আপনি বলে সম্বোধন করা।