নামাজ কি কাজা করতে হবে?

Question

আসসালামু আলাইকুম
উস্তায আমার বেবি ছোট তাই নামাজের কাপড় আলাদা রেখেছি।অনেক দিন যাবত অই আলাদা কাপড়ে নামাজ পড়ি কিন্তু আজ হঠাৎ করে দেখলাম কাপড় টা তে সাদা স্রাবের দাগ লেগে আছে ছোপ ছোপ ছোট ছোট এক্টু করে। আমি এত দিন খেয়াল করি নি তাহলে আমার এত দিনের নামাজ গুলো কি হয় নি?

এখন কি করার আছে?মাফ এর মাসালা আছে কি নাকি কাজা করতে হবে?

আমার প্রায় সাদা স্রাব থাকে ভালো ভাবে ধুয়ে ওযু করে নামাজ পড়ি তাও যদি কাপড়ে এমন দাগ লাগে করণীয় কি??নামাজ পড়া অবস্থায় যদি দাগ লাগে কি করব??

আর একটা কাপড়ে দাগ আছে সেটা শুধু ছোট্ট একটা অংশে দাগ ছিল সেটা শুধু ওই জায়গা টাই ধুয়ে দিয়ে নামাজ পড়া যাবে নাকি পুরো কাপড় টাই ধুতে হবে??

Answer 1

জবাবঃ-

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 

بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/5372/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عن أبي هريرة رضي الله عنه  عن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال : تعاد الصلاة من قدر الدرهم من الدم (سنن الدر قطنى، كتاب الصلاة، باب قدر النجاسة التي تبطل الصلاة، رقم الحديث-1)

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-এক দিরহাম পরিণাম রক্তের দরুন নামাযকে পুনরায় আদায় কর। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৩৮৯৬, জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-১০৭৮৩, মারেফাতুস সুনান ওয়াল আসার লিল বায়হাকী, হাদীস নং-১৩২৩, আল জামেউল কাবীর, হাদীস নং-২৩৮}

فلما ذكره صاحب الأسرار عن علي وبن مسعود أنهما قدرا النجاسة بالدرهم وكفى بهما حجة في الاقتداء وروي عن عمر أيضا أنه قدره بظفره(عمدة القارى شرح صحيح البخارى، كتاب الوضوء،  باب غسل الدم، رقم الحديث-227،3/140

হযরত আলী রাঃ এবং ইবনে মাসউদ রাঃ [কাপড়] নাপাক হওয়ার পরিমাণ নির্দিষ্ট করেছেন এক দিরহাম। আর আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ নির্ধারণ করেছেন  নখ পরিমাণ। {উমদাতুল কারী-৩/১৪০, আদিল্লাতুল হানাফিয়্যাহ-১০১}

قال محمد فى الآثار: أخبرنا أبو حنيفة رح عن حماد عن ابراهيم قال: إذا كان الدم قدر الدرهم والبول وغيره فأعد صلاتك، وإن كان أقل من قدر الدرهم فأمض على صلاتك، ص-28) فإن قلت: هذا إنما يدل على عفو الأقل عن الدرهم دون قدر الدرهم ومذهب الحنفية أوقدر الدرهم عفو ايضا، احاديث الإكتفاء بالأحجار فى الإستنجاء تفيد كون قدر الدرهم عفو، لأن موضع الاستنجاء مقدر به، (اعلاء السنن-1/405

এক দিরহাম নির্দিষ্ট করার সূরত হল, হাতের তালু সোজা করে রেখে তার উপর এক ফোটা পানি ফেলা, হাত নড়ানো বা কাত করা ছাড়া যতটুকু স্থান পরিব্যপ্ত হবে ততটুকুই হল এক দিরহামের আয়তন। 

,

এতটুকু পরিমাণ তরল গলীজ নাপাক হলে উক্ত কাপড়সহ নামায আদায় জায়েজ হবে।

https://ifatwa.info/9637/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 

এক দিরহাম বলতে প্রায় বর্তমানে প্রচলিত পাঁচ টাকার ব্যপ্তি পরিমাণ তথা একটা পাঁচ টাকার সিকির যে পরিমাণ ব্যপ্তি রয়েছে,সেই ব্যপ্তি পরিমাণ নাজাসত যদি কাপড় বা শরীরে লাগে,তাহলে সেই কাপড় বা শরীর সহকারে নামায হবে না।এর চেয়ে কম হলে যদিও নামায হয়ে যাবে,তবে ধৌত করা জরুরী।

বিঃদ্রঃ

শরীয়তের দৃষ্টিতে এক দিরহাম অর্থ প্রায় পাঁচ টাকার সমপরিমাণ একটি সিকি বা তার চেয়ে কিছুটা কম।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,

কাপড়ে যে সাদা স্রাব লেগে আছে,তার পরিমান যদি এক দিরহাম চেয়ে কম হয় সেক্ষেত্রে এতোদিনের আপনার সব নামাজ হয়েছে।

তবে যদি সেই সাদা স্রাব এর পরিমান এক দিরহাম সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি লাগে,সেক্ষেত্রে আপনার নামাজ হচ্ছেনা।

এক্ষেত্রে আপনি প্রবল ধারণা অনুপাতে ঠিক করবেন যে আনুমানিক এই সাদা স্রাব কবে এসেছিলো?

সেই দিন হতে নামাজ গুলির কাজা আদায় করে নিতে হবে। 

★নামাজের মধ্যে যখনই সাদা স্রাব বের হবে,সাথে সাথে উঠে গিয়ে সেই স্থান পাক করে অযু করে এসে যেখানে নামাজ রেখে গিয়েছিলেন,সেখান থেকেই নামাজ পড়বেন।

তবে যেতে আসতে কাহারো সাথে কথাবার্তা করা যাবেনা।

★শুধু সেই ছোট্র দাগ তিনবার ধুয়ে প্রত্যেকবার নিংড়িয়ে নেয়াই যথেষ্ট।  পুরো কাপড় ধোয়া আবশ্যক নয়।

Comments

নামাজ পড়া অবস্থান যদি সাদা স্রাব চলে আসে এবং কাপড়ে লাগে সেটা যদি বুঝতে পারা না যায় তাহলে কি করণীয়?আমার কাপড়ে যে দাগ লেগেছে সেটা তো আমি বুঝতেই পারি নি পরবর্তীতে খেয়াল করলে দেখতে পাই।

---

এক্ষেত্রে নামাজের পর চেক করতে হবে।

চেক করার পর সাদা স্রাব এর অস্তিত্ব পেলে কাপড় ও স্থানটি পাক করে  অযু করে এসে পুনরায় সেই নামাজ আদায় করতে হবে।

---

আমি কাপড়ে সাদা স্রাবের যে দাগ পেয়েছি সেটা হয়ত নামাজের সময় নির্গত হয়েছে কেননা সেটা শুধু নামাজের জন্য আলাদা কাপড়।কিন্তু আমি বুঝতে পারি নি নামাজের সময় নির্গত হওয়ার বিষয় টি।তাহলে আমার অই সব নামাজ কি হয় নি???

---

ঐ নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবে।