*আপনাকে সত্যিকার অর্থে তওবা করতে হবে। আল্লাহর দিকে ফিরে যেতে হবে। অতীতে যা করেছেন তার জন্য লজ্জিত হতে হবে। বেশি-বেশি দোয়া করতে হবে এবং কায়মনোবাক্যে আকুতি করতে হবে আল্লাহ যেন আপনাকে ক্ষমা করে দেন। তিনি যেন আপনাকে এই বিষয় থেকে নিষ্কৃতি পেতে সহায়তা করেন। কারণ, যদি সীমালংঘনকারী সত্যিকার অর্থে দৃঢ়চিত্তে তাওবা করে, তাহলে আল্লাহ তাআলা তার তাওবা কবুল করেন এবং তাকে ক্ষমা করে দেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِلَّا مَن تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ عَمَلًا صَالِحًا فَأُوْلَئِكَ يُبَدِّلُ اللَّهُ سَيِّئَاتِهِمْ حَسَنَاتٍ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًارَّحِيمًا
তবে যে তাওবা করে ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে। পরিণামে আল্লাহ তাদের পাপগুলোকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা আল ফুরকান ৭০)
*আল্লাহওয়ালাদের সোহবত গ্রহন করুন। তাদের মজলিসে আসা যাওয়া করুন। এতে নফস নিয়ন্ত্রণ করা এবং তাওবার উপর অটল থাকা আপনার জন্য সহজ হবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ وَكُونُواْ مَعَ الصَّادِقِينَ
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক। (সূরা আত তাওবাহ ১১৯)
★নিজের স্ত্রীর উপর দৃষ্টি নিবিদ্ধ রাখুন।
অন্য নারীদের দিকে তাকাবেননা।
মনে করবেন,তাদের যা আছে,আপনার স্ত্রীরও তাই আছে।
অধিক সহবাস করতে পারেন।
*যখন গুনাহ করার মনস্কামনা সৃষ্টি হবে অথবা এই পাপে লিপ্ত হওয়ার জন্য শয়তানের ওয়াসওয়াসা অনুভূত হবে, তখন স্মরণ করবেন যে, আপনার এইসব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাল কিয়ামতের মাঠে আপনার বিরুদ্ধে সাক্ষী হয়ে দাঁড়াবে। আল্লাহ তাআলা বলেন–
حَتَّى إِذَا مَا جَاؤُوهَا شَهِدَ عَلَيْهِمْ سَمْعُهُمْ وَأَبْصَارُهُمْ وَجُلُودُهُمْ بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ وَقَالُوا لِجُلُودِهِمْ لِمَ شَهِدتُّمْ عَلَيْنَا قَالُوا أَنطَقَنَا اللَّهُ الَّذِي أَنطَقَ كُلَّ شَيْءٍ
‘অবশেষে যখন তারা জাহান্নামের কাছে পৌঁছবে, তখন তাদের কান, তাদের চোখ ও তাদের চামড়া তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে। তখন তারা তাদের চামড়াকে বলবে, তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছ কেন? উত্তর দিবে,আল্লাহ আমাদেরকে বাকশক্তি দান করেছেন, যিনি বাকশক্তি দান করেছেন প্রতিটি জিনিসকে।’ (সূরা হা-মীম আসসাজদাহ্ : ২০,২১)
*কখনো একাকী নিভৃতে থাকবেন না। কেননা একাকীত্ব গোনাহ চিন্তা করার কারণ হতে পারে। আর আপনার সময়কে উপকারী বিষয়ে ব্যয় করতে সচেষ্ট হোন। যেমন- সৎকাজ, কুরআন তিলাওয়াত, যিকির, নামাজ ইত্যাদি।
*পরকালের মুরাকাবা করুন।
মহান আল্লাহ বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَلْتَنظُرْ نَفْسٌ مَّا قَدَّمَتْ لِغَدٍ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَاتَعْمَلُونَ
‘হে ঈমানদাররা তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং তোমাদের প্রত্যেকেরই চিন্তা করা উচিত আগামীকালের জন্য (পরকালের জন্য) সে কী প্রেরণ করেছে।’ (সূরা হাশর : ১৯)
★ঈমান মুমিনের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ।একজন মুমিন ঈমানের বদৌলতে দুনিয়ার জীবনে যেমন মহান আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ করেন।তেমনিভাবে মৃত্যুর পরবর্তী জীবনেও চিরসুখের জান্নাত লাভ করবেন।
ঈমান বৃদ্ধির আমলঃ
ঈমান বৃদ্ধির জন্য ইসলামের ফরজ বিধান যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
বেশি বেশি নেককার লোকদের সাহচর্য গ্রহণ করতে হবে।
বেশি বেশি নেক আমলের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
আল্লাহর গুণবাচক নাম ও গুণাবলী সম্বন্ধে সম্পর্কে বেশী জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
বেশি বেশী প্রিয় নবীজীর বিশুদ্ধ জীবনী ও সাহাবীদের জীবনী পাঠ করতে হবে।
আল্লাহর জন্য মানুষকে ভালোবাসা ও আল্লাহর জন্যই ঘৃণা করার আমলের বেশি বেশি প্রাকটিস করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে আল্লাহর জন্য ভালোবাসে, আল্লাহর জন্য ঘৃণা করে, আল্লাহর জন্য প্রদান করে এবং আল্লাহর জন্য প্রদান থেকে বিরত থাকে, সে ঈমান পরিপূর্ণ করেছে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৬৮১)
★ আপনি এমন লোকদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলুন, যাঁদের সংস্পর্শে গেলে আমল বেড়ে যায়। যাঁরা অন্যকে আমলের প্রতি উদ্বুদ্ধ করেন। তাবলিগ জামাতে যেতে পারেন।
বেশি পরিমাণে কোরআন তিলাওয়াত করুন বা শ্রবণ করুন।
নবীদের সিরাত, সাহাবায়ে কেরামের জীবনী পড়ুন। কেননা মহান আল্লাহ মহানবী (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের অন্তর প্রশান্ত করার জন্য পবিত্র কোরআনে নবীদের ঘটনা বর্ণনা করেছেন। আর তিনি সাহাবায়ে কেরামের ঈমানকে আমাদের ঈমানের জন্য আদর্শ বানিয়েছেন।
অধিক হারে আল্লাহর জিকির করুন। কেননা দুর্বল ঈমানের সুস্থতার জন্য জিকির খুবই উপকারী। আল্লাহর জিকির অন্তরে ঈমানের বীজ বপন করে। মুমিনের অন্তর জিকিরের মাধ্যমে প্রশান্ত হয়।