আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
270 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারোকাতুহ, উস্তাদ। আমার পরিবার বাকি দশটা সেকুলার পরিবারের মতোই।কিন্তু আল্লাহ দয়া করে আমাকে দ্বীনের বুঝ দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু আড়াই বছর হয়ে গিয়েছে আমি পুরোপুরিভাবে দ্বীনে ফেরার চেষ্টা করছি, দিন দিন আমার অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যাচ্ছে। বাসার পরিবেশের সঙ্গে আমি নিজেকে মানাতে পারছি না। সবাই চাপ প্রয়োগ করছে যেন সরকারি মেডিক্যাল এর জন্য প্রস্তুতি নেই, ইন্টারে বাসায় অনেক বুঝিয়ে সহশিক্ষা ত্যাগ করেছি কিন্তু মহিলা কলেজে গিয়েও আমার মন একদম ভেঙে গিয়েছে,ওখানের পরিবেশও ভালো না।আমি আর এসব পড়াশোনায় থাকতে চাচ্ছি না কিন্তু বাসা থেকে এই অনুমতি আমি কোনোভাবেই পাবো না।পুরোপুরি পর্দাও আমি এখনো শুরু করতে পারিনি। ফরজ জ্ঞানের অভাব আছে বলে আইওএম এ ভর্তি হয়েছি এটাও বাসার সবার অগোচরে। পড়াশোনায় ভালো বলে আব্বু আম্মু অনেক আশা করে বসে আছেন।আমি উনাদের মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতেও পারি না।আবার নিজের এত খারাপ পরিণতিও সহ্য করতে পারছি না।কোনো আমল ঠিকমতো করতে পারছি না ইদানীং পড়াশোনাও কিছু মাথায় ঢুকে না।আমি প্রচন্ড রকম হতাশ অনুভব করছি। বারবার উঠে দাঁড়াতে চেয়েও পারছি না।আমার এখন কি করা উচিত? লিখার ক্ষেত্রে অনেক ভুল থাকতে পারে আর অগোছালোও হতে পারে।ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।

1 Answer

0 votes
by (573,660 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

দ্বীনি শিক্ষা হোক,বা দুনিয়াবি শিক্ষা হোক,ইসলামের বিধান হলো ছেলেরা ছেলেদের প্রতিষ্ঠানে এবং মেয়েরা মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে পড়বে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে এর প্রতি সর্বোচ্চ লক্ষ রাখা ও গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক। 

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء

মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী…। (সূরা আলি ইমরান ১৪)

রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنْ النِّسَاءِ

আমি আমার পরে মানুষের মাঝে পুরুষদের জন্য নারীদের চাইতে অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাই নি।(বুখারী ৪৮০৮ মুসলিম ২৭৪০)

ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাতে এসেছে,

 فلا يجوز للمرأة أن تَدرس أو تعمل في مكان مختلط بالرجال والنساء ، ولا يجوز لوليها أن يأذن لها بذلك

সুতরাং মেয়েদের জন্য এমন প্রতিষ্ঠানে পড়া-লেখা কিংবা চাকরি করা জায়েয হবে না যেখানে নারী-পুরুষের সহাবস্থান রয়েছে এবং অভিবাকের জন্য জায়েয হবে না তাকে এর অনুমতি দেয়া।  (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১২/১৫৬)

★ একান্ত অপারগ অবস্থায় বা বিকল্প কোন পথ না পেলে এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা জায়েয আছে। কেননা, الضرورات تبيح المحظورات     জরুরত নিষিদ্ধ কাজকে সিদ্ধ করে দেয়। (আলআশবাহ ওয়াননাযাইর ১/৭৮)

তবে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, যাতে পর্দা লঙ্ঘন বা আল্লাহর অসন্তুষ্টি মূলক কার্যক্রম সংঘটিত না হয়।

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ

অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর। (সূরা তাগাবুন ১৬)
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
যতদিন পর্যন্ত এই দেশে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে উলামায়ে কেরামগন  কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেন।

১/শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।

২/চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে,প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না।মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের  সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না।সর্বদা অন্য লিঙ্গর শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।
ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১;

সহ শিক্ষা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এ শর্তাবলি পুরোপুরি ভাবে মেনে পূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করে আপনার জন্য জেনারেল পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া জায়েজ হবে। 

এক্ষেত্রে আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে ক্লাশ না করে শুধুমাত্র পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করা।
তাহলে আশা করা যায় কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হবেনা। পাশাপাশি পূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করা ও উপরোক্ত শর্তাবলি মানা সহজ হবে।
,
পরামর্শঃ-
আপনি এখন আপাপাতত নিজ বাবা মার কথা মাফিক মহিলা কলেজে মন দিয়ে লেখাপড়া করবেন।
সমস্যা হলে শুধুমাত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। পাশাপাশি অনলাইনে দ্বীন শিখার কার্যক্রম অব্যাহত রাখবেন।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...