ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু
বিসমিল্লাহির
রহমানির রহিম
بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
শরীয়তের
বিধান হলো চাদরে কিংবা কাপড়ে নাপাকি লাগলে তিনবার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং প্রত্যেকবার
ভালো করে চাপ দিয়ে নিংড়াতে হবে। ভালো করে নিংড়িয়ে ধোয়ার পরও যদি দুর্গন্ধ থেকে যায়
কিংবা দাগ থাকে তাতে কোনো দোষ নেই। এতেই চাদর কিংবা কাপড় পবিত্র হয়ে যাবে। (হাশিয়ায়ে তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃষ্ঠা নং ১৬১, বেহেশতি জিওর ২/৭৭ )
وغير المرئية بغسلهاثلاثا والعصر كل مرة
অদৃশ্যমান
নাপাক বস্তু তিন বার ধৌত করত্র হবে। এবং প্রত্যেকবার নিংড়াতে হবে। (নুরুল ইযাহ- ৫৬)
উল্লেখ্য, তিনবারের কথা বলা হয়, যাতে সন্দেহ না থাকে।
অন্যথায় যদি প্রবাহমান পানি যেমন, নদী,
পুকুরে
বা টেপের পানিতে এত বেশি করে ধোয়া হয়, যাতে নাপাকি দূর হওয়ার ব্যাপারে প্রবল
ধারণা হয়ে যায় তাহলে তা পাক হয়ে যায়। এক্ষেত্রে তিনবার নিংড়িয়ে ধোয়া জরুরি নয়।
(রদ্দুল মুহতার ১/৩৩৩ আলবাহরুর রায়েক ১/২৩৭ শরহুল মুনইয়া ১৮৩)
হাদীস
শরীফে এসেছে-
يَا عَمَّارُ إِنَّمَا يُغْسَلُ الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ: مِنَ
الْغَائِطِ وَالْبَوْلِ وَالْقَيْءِ وَالدَّمِ وَالْمَنِيِّ
আম্মার
বিন ইয়াসার রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-নিশ্চয় ৫টি কারণে কাপড় ধৌত করতে
হয়, যথা-১-পায়খানা, ২-প্রশ্রাব, ৩-বমি, ৪-রক্ত, ৫-বীর্য। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৪৫৮}
সুতরাং
বীর্য নাপাক।
তাই
বীর্য লেগে থাকা কাপড় পবিত্র করতেন হবে। বীর্য শুকিয়ে যাওয়ার
পর যদি পরিস্কার কাপড়ের সাথে স্পর্শ লাগে, এক্ষেত্রে সেই পবিত্র কাপড় যদি শুকনো হয়, তাহলে কোনো সমস্যা নেই।
পবিত্র
কাপড় নাপাক হবেনা, পাক থাকবে। আর যদি সেই পবিত্র কাপড়
ভেজা হয়,সেক্ষেত্রে বিধানঃ
وَكَذَا
لَوْ لَفَّ الثَّوْبَ النَّجَسَ فِي ثَوْبٍ طَاهِرٍ وَالنَّجَسُ رَطْبٌ مُبْتَلٌّ
وَظَهَرَتْ نَدْوَتُهُ فِي الثَّوْبِ الطَّاهِرِ لَكِنْ لَمْ يَصِرْ بِحَالٍ لَوْ
عُصِرَ يَسِيلُ مِنْهُ شَيْءٌ مُتَقَاطِرٌ لَا يَصِيرُ نَجَسًا. اهـ
যদি
ভিজা নাজাসত সম্ভলিত কাপড়কে পবিত্র কাপড়ের সাথে লেপ্টিয়ে দেয়া হয় বা ভাজ করা হয়,এবং শুকনা কাপড়ে নাজাসতের
চিহ্ন পরিলক্ষিত হয়,যদি
শুকনো কাপড় এমন পর্যায়ে পৌছে না যে,তাকে চিপানো হলে, তা থেকে কিছু বের হবে,তাহলে এমতাবস্থায় উক্ত
কাপড় নাপাক হবে না।(আল-বাহরুর রায়েক-১/২৪৪)
আল্লামা
হাসক্বাফী রাহ লিখেন,
لُفَّ طَاهِرٌ فِي نَجِسٍ مُبْتَلٍّ بِمَاءٍ إنْ بِحَيْثُ لَوْ عُصِرَ
قَطَرَ تَنَجَّسَ وَإِلَّا لَا. وَلَوْ لُفَّ فِي مُبْتَلٍّ بِنَحْوِ بَوْلٍ، إنْ
ظَهَرَ نَدَاوَتُهُ أَوْ أَثَرُهُ تَنَجَّسَ وَإِلَّا لَا.
যদি
পবিত্র কাপড়কে -অপবিত্র এমন কাপড় যা পানি দ্বারা ভিজা থাকে- এর সাথে ভাজ করা হয়ে থাকে, যদি পবিত্র শুকনো কাপড়
এমনভাবে ভিজে যে,তা
তাকে চিপানো হলে তা থেকে কিছু বের হবে,তাহলে সেই শুকনো পবিত্র কাপড়ও অপবিত্র
হয়ে যাবে। নতুবা অপবিত্র হবে না।আর যদি শুকনো কাপড়কে প্রস্রাব ইত্যাদি দ্বারা ভিজা
কাপড়ের সাথে ভাজ করা হয় বা লেপ্টানো হয়,যদি পবিত্র কাপড়ে নাজাসতের কোনে চিহ্ন
পরিলক্ষণ করা যায়,তাহলে
উক্ত পবিত্র কাপড়ও অপবিত্র হবে, নতুবা অপবিত্র হবে না।(রদ্দুল মুহতার-১/৩৪৭)
আরো
জানুনঃ https://ifatwa.info/7947/
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
১. জ্বী না উক্ত কাপড় পরিধান করে সালাত আদায় করা
জায়েয নেই। কারণ, বীর্য নাপাক। কাপড়ে, বিছানার
চাদরে বা কাঁথায় বীর্য লাগার পর সেটি যদি পরিষ্কার না করা হয় এবং পরবর্তীতে
যদি ভেজা হাত/ ভেজা শরীরে ওই জায়গাটা স্পর্শ করা হয়, তাহলে কাপড় বা শরীরে যেখানে লাগবে, সেই জায়গা নাপাক হয়ে যাবে।
এবং ঐ হাত দ্বারা কিছুকে স্পর্শ করলে সেই জিনিষও নাপাক হয়ে যাবে। তবে যদি বিছানায় বা
কাথায় বীর্য লাগার পর বীর্যের চিহ্ন পর্যন্ত নিঃচিহ্ন হয়ে যায়, এবং ভিজার পর তাতে আর
কিছু দেখা না যায়,
তাহলে
ঐ স্থানে ভিজা হাত স্পর্শ করলেও তা আর নাপাক হবে না।
২.
কোনো কাপড়ে নাজাসত লাগলে, সেই নাজাসত যদি অদৃশ্যমান হয়, যেমন প্রস্রাব বা তরল
পানির মত বীর্য তাহলে উক্ত কাপড়কে তিনবার ধৌত করতে হবে। আর নাপাক যদি দৃশ্যমান হয় তাহলে নাজাসতকে দূর করলেই কাপড়
পবিত্র হবে।
৩.
নাপাক কাপড় পবিত্র করার পদ্ধতি উপরে বর্ণনা করা হয়েছে। তবে এসম্পর্কে আরো
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন:
https://ifatwa.info/6227/
https://ifatwa.info/18030/