আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
141 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (4 points)

আস্সালামুআলাইকুম হুজুর,

**হুজুর আমি বালেগা হবার পর থেকে কত রাকাত সালাত কাজা হয়েছে মনে নেই ! আমি সব সময় আমার পূর্বের কাজা সালাতের নিয়ত এভাবে করি "হে আল্লাহ আমার জীবনের ফজরের যত কাজা সালাত আছে,তার মধ্যো থেকে একফজরের সালাত আদায় করার নিয়ত করলাম ,,,,' এভাবেই যদি সংখ্যা অথবা কততম কাজা সালাত আদায় করছি তা  উল্লেখ না করি ,তাহলেকি আমার সালাত গুলো আদায় হবে !? আমি যদি সারাজীবন এভাবেই নিয়ত করে পড়ি,আর সমস্ত  জীবনে যদি আল্লাহর রহমতে সব কাজ সালাত অদায় করা পূর্ণ হয়ে যায়,তারপরেও যদি এভাবে কাজা সালাতের নিয়ত করে পড়তেই থাকি ,তাহলে বাকি সালাত গুলোর সওয়াব কি পাবো !? কি হিসেবে গণ্য হবে ওগুলো !? এভাবেই যদি কাজা রোজার নিয়ত করি!,, আবার এতবছর মাসিকের সময় কতগুলো করে রোজা বাকি আছে হিসাববে নেই ,আমি যদি এই কাজা রোজাগুলোও এভাবে নিয়ত করে  পূরণ করি ,

**সালাতের নিষিদ্ধ সময় কোনগুলো !?

** হে আল্লাহ তুমি এই দুনিয়ার প্রত্যেকটা মানুষকে হেদায়েত দাও,সবাইকে বিনা হিসেবে জান্নাতে দিয়ে দাও ,এই দুনিয়ার যত মানুষ মারা গিয়েছে সবার কবরের আজাব তুমি মাফ করে দাও ,তুমি সবাইকে বিনা হিসেবে জান্নাতে দিয়ে দাও গো আল্লাহ ''''' ছোট বেলা থেকেই এই দুআটা আমি সব সময় করি,এভাবে দুআ করা কি ঠিক !

**হুজুর !!! আমার সৎ বাবার বিভিন্ন আচরণের কারণে শরীয়তের ভাষা অনুযায়ী আমার মায়ের সাথে তার তালাক হয়ে গিয়েছে ,তারা এগুলো মানেনা ,তারা মনে করে কাগজে কলমে তালাক দিলেই শুধু তালাক হয় ,সৎ বাবা আমাকে খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে স্পর্শ করে ,তালাক হয়েছে এখানেই উত্তর পেয়েছি ,আবার উনি অনেক আগেই মাকে চলে যেতে বলতো,একরকম বাধ্য হয়েই আছে  বা ছিল  মা...হুজুর আমি মায়ের  বড় মেয়ে আমার ভাই খুব ছোট ,ভালোভাবে কথা বলতে শিখেছে মাত্র,৬/৭ বছর হবে ওর,,,মায়ের আমি ছাড়া আর কেউ নেই,,এমতাবস্থায় আমার মেয়ে হিসেবে কি করা উচিত !?? মা এখন অন্য জায়গায় বিবাহ করা কোনোভাবেই সম্ভব না!! আর একজন মহিলা মানুষ এইটুকু একটা বাচ্চাকে নিয়ে কিভাবে থাকবে ! আমিতো মেয়ে ,আমার তো কোনো না কোনো একদিন আল্লাহর হুকুমে বিয়েও হয়ে যেতে পারে তখনতো আমিও মায়ের সাথে আর থাকতে পারবোনা ,আবার সৎ বাবার টাকাও হারাম ,এগুলোই মা ভাইকে বাধ্য  হয়ে খেতে হচ্ছে!!! আমিও খেয়েছি ,,,আমি মনে মনে নিয়ত করেছি যে আমি সাদগাহ করে দিবো ইনশাআল্লাহ!! কিন্তু হুজুর এমন পরিস্তিতিতে আমার কি করা উচিত মেয়ে হিসেবে !? আমার কোনোভাবেই মাথা কাজ করছেনা  ,আর আমার বাবা ,মা জাহান্নামে যাবে এটা কোনোভাবেই সন্তান হয়ে আমি কিভাবে হতে দেই!!  দোহাই লাগে হুজুর দয়াকরে বিস্তারিত বলে সঠিক সমাধান দিন ,আমাকে কোনো হাদিসের বেখ্যা দিতে হবেনা হুজুর!

1 Answer

0 votes
by (61,200 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

উমুরী কাযা নামায পড়ার নিয়ম: নামায হয়তো কারো এক ওয়াক্ত কাযা হতে পারে,আবার কখনো কয়েক ওয়াক্ত কাযা হয়ে যেতে পারে। কারোর বা অনেক অনেক ওয়াক্ত কাযা হয়ে যেতে পারে। যদি কারো জীবনে অনেক অনেক ওয়াক্ত নামায কাযা হয়ে যায় তাহলে তার সারা জীবনের সকল নামাযকে উমুরী কাযা বলে।

ইবনে আবেদীন শামী রাহ কাযা নামায পড়ার নিয়ম এভাবে দিয়েছেন যে,

ﻭﻓﻰ ﺍﻟﺪﺭ ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭ - ﻛَﺜُﺮَﺕْ ﺍﻟْﻔَﻮَﺍﺋِﺖُ ﻧَﻮَﻯ ﺃَﻭَّﻝَ ﻇُﻬْﺮٍ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺃَﻭْ ﺁﺧِﺮَﻩُ،

ﻭﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﻋﺎﺑﺪﻳﻦ ﺍﻟﺸﺎﻣﻰ – ( ﻗَﻮْﻟُﻪُ ﻛَﺜُﺮَﺕْ ﺍﻟْﻔَﻮَﺍﺋِﺖُ ﺇﻟَﺦْ ) ﻣِﺜَﺎﻟُﻪُ : ﻟَﻮْ ﻓَﺎﺗَﻪُ ﺻَﻠَﺎﺓُ ﺍﻟْﺨَﻤِﻴﺲِ ﻭَﺍﻟْﺠُﻤُﻌَﺔِ ﻭَﺍﻟﺴَّﺒْﺖِ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻗَﻀَﺎﻫَﺎ ﻟَﺎ ﺑُﺪَّ ﻣِﻦْ ﺍﻟﺘَّﻌْﻴِﻴﻦِ ﻟِﺄَﻥَّ ﻓَﺠْﺮَ ﺍﻟْﺨَﻤِﻴﺲِ ﻣَﺜَﻠًﺎ ﻏَﻴْﺮُ ﻓَﺠْﺮِ ﺍﻟْﺠُﻤُﻌَﺔِ، ﻓَﺈِﻥْ ﺃَﺭَﺍﺩَ ﺗَﺴْﻬِﻴﻞَ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮِ، ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺃَﻭَّﻝَ ﻓَﺠْﺮٍ ﻣَﺜَﻠًﺎ، ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﺇﺫَﺍ ﺻَﻠَّﺎﻩُ ﻳَﺼِﻴﺮُ ﻣَﺎ ﻳَﻠِﻴﻪِ ﺃَﻭَّﻟًﺎ ﺃَﻭْ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺁﺧِﺮَ ﻓَﺠْﺮٍ، ﻓَﺈِﻥَّ ﻣَﺎ ﻗَﺒْﻠَﻪُ ﻳَﺼِﻴﺮُ ﺁﺧِﺮًﺍ، ﻭَﻟَﺎ ﻳَﻀُﺮُّﻩُ ﻋَﻜْﺲُ ﺍﻟﺘَّﺮْﺗِﻴﺐِ ﻟِﺴُﻘُﻮﻃِﻪِ ﺑِﻜَﺜْﺮَﺓِ ﺍﻟْﻔَﻮَﺍﺋِﺖِ . ( ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺼﻼﺓ، ﺑﺎﺏ ﻗﻀﺎﺀ ﺍﻟﻔﻮﺍﺋﺖ - 2/538

ভাবানুবাদঃ-

উমুরী কাযা নামায আদায় করতে হলে প্রথমে কোন ওয়াক্তের কতটা নামায কাযা হয়েছে তা নির্ণয় করবে।যদি সেটা নির্ণয় করা সম্ভব না হয়। তাহলে অনুমান করে নিবে। অনুমান করে কোন ওয়াক্তের কতটি নামায কাযা হয়েছে সেটা নির্ধারণ করে নিবে। তারপর ধারাবাহিকভাবে একে একে সবগুলোকে  আদায় করে নিবে।

যেমন: ফজরের নামায সর্বমোট ১০০ ওয়াক্তের কাযা হয়েছে। তখন কাযা নামায আদায় করার সময় এভাবে নিয়ত করবে যে, আমার জিম্মায় যত ফজরের নামায কাযা রয়েছে, সে অনাদায়কৃত নামায সমূহের মধ্য থেকে প্রথম ফজরের নামাযকে এখন কাযা আদায় করছি” এমন নিয়তে নামায আদায় করবে।এভাবে হিসেবে করে পড়তে থাকবে। প্রতিবার অনাদায়কৃত প্রথম ফজরের নামায বলার দ্বারা তার যিম্মায় যতগুলো নামায বাকি ছিলো, সেগুলোর প্রথম নামাযের নিয়ত হচ্ছে, তাই এক্ষেত্রে নিয়তটি নির্দিষ্ট নামাযেরই হচ্ছে।ঠিক উল্টোভাবেও করা যায়। অর্থাৎ যত নামায কাযা আছে তার সর্বশেষ অনাদায়কৃত কাযার নিয়ত করছি। এভাবেও পূর্বোক্ত পদ্ধতিতে বাকি নামাযের কাযা আদায় করা যাবে। (রদ্দুল মুহতার-২/৫৩৮)

এ ধারাবাহিকতায় বাকি নামায সমূহের ক্বাযা আদায় করবে। যোহর, আছর, মাগরিব, ইশা এবং সাথে বিতিরের নামাযকে ও এভাবেই আদায় করে নিবে।বিতিরের নামাযের ক্বাযা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-৬২৯একদিনে যত দিনের ইচ্ছে কাযা আদায় করা যাবে। কোন সমস্যা নেই। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/968

কা'যা রোযা সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/2187

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. আশা করা যায় যে, আপনার পূর্বের কাযা সালাতগুলো আদায় হয়েছে। তবে উত্তম হলো যে, যখনই কাযা নামায/রোযা আদায় করা হবে, তখনই জীবনের প্রথম বা শেষ নামায বা রোযার কাযার নিয়ত করতে হবে। কেননা একটা কাযা আদায় করার পর আবার যখন কাযা আদায় করা হবে তখন এই নামায/রোযা সর্বপ্রথম বা সর্বশেষ কাযা থাকবে, কারণ যেগুলো আদায় করা হয়ে যাবে, সেগুলোর হিসাব শেষ হয়ে যাবে।

. তিনটি সময়ে রাসুল আমাদেরকে নামাজ পড়তে এবং মৃতের দাফন করতে নিষেধ করতেন। সূর্য উদয়ের সময়; যতোক্ষণ না তা পুরোপুরি উঁচু হয়ে যায়। সূর্য মধ্যাকাশে অবস্থানের সময় থেকে নিয়ে তা পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়া পর্যন্ত। যখন সূর্য অস্ত যায়। (সহীহ মুসলিম ১৩৭৩)

৩. জ্বী এভাবে দোয়া করা যাবে। তবে সকল মৃত মুসলমানের জন্য দোয়া করা জায়েয আছে। কিন্তু অমুসলিমের মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করার জায়েয নেই।

৪. আপনার মা ও বাবার বিষয়ে স্থানীয় নির্ভরযোগ্য উলামায়ে কেরামের সাথে পরামর্শ করে তাদের মাধ্যমে আপনার বাবাকে বুঝানোর চেষ্টা করতে থাকুন ও অধিক হারে দোয়া করতে থাকুন। আল্লাহ চাহে তো পরিস্থিতি অনুকূলে আসবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...