আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ।
গুছিয়ে বলতে পারবো কিনা জানি না শাইখ। চেষ্টা করছি।
আমি আমার সাধ্যমতো যথেষ্ট চেষ্টা করি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার প্রতিটি বিধান মেনে চলার। হালাল-হারাম,জায়েয-নাযায়েয,মাকরুহ প্রতিটা বিষয়ের আঞ্জাম দেয়ার জন্য আমি মনে-প্রাণে সচেষ্ট থাকি। কোথাও বাহিরে জরুরতে বা সফরে গেলে ট্রেনে বা বাসে হলেও সলাত আদায় করি,উযু বা সম্ভব না হলে তায়াম্মুম করি,ব্যাগে ভরে মাটি নিয়ে যাই। বারান্দায় নিকাব পড়ে জামা শুকাতে দেই। বিভিন্ন পণ্যের গায়ে মানুষের ছবি থাকলে মার্কার দিয়ে দাগিয়ে দেই,মুরগি খেলে তা হালাল জবাই হয়েছে কিনা নিশ্চিত করি,সময়বিশেষে খাই না,কোনো গাইরে মাহরাম অতি প্রয়োজনীয় বিষয়ে একটা মেসেজ দিলে, আমি কোনদিনও রিপ্লাই করি না। বিষয়টি শুধু দেখে রেখে দেই। আমার সামনে ফোন চালাতে গিয়ে বেয়াব্রু বা একটু দৃষ্টিকটু পোশাকের কাউকে দেখলে সাথে সাথে এভয়েড করে চলে যাই। মোটকথায় আমি আমার জান-প্রাণ দিয়ে আমার পক্ষে খোদা তা'য়ালার কোনো বিধান ভংগ করার সাহসও করি না। তাহাজ্জুদসহ অন্যান্য যিকির আযকারের পাবন্দি করি। আমার শত কষ্ট সত্বেও আমি পড়াশুনা+সংসার+অনলাইনে মাদ্রাসাহর পড়া সব করি,আমার আল্লাহু 'আলাম।
কিন্তু আমার জাওয এনিমেশন কার্টুন দেখেন,মুভির গল্প শোনেন ইউটিউবে এবং মুভিও দেখেন এখন। (এমন না মুভিতে মেয়ে-ছেলের রোমান্স দেখার জন্য দেখেন,কিন্তু উনার নাকি মুভি এনিম,কার্টুন না দেখলে হয় না)। তাকওয়া অনেক কম উনার। আমি বুঝিয়ে কোনোদিন কোনো লাভ হয়নি। দুয়াও জারি আছে। কোনো পরিবর্তন হয়নি। বিয়ের আগে আরও হারামে ছিলো,সেসব এখন করে না(যেমন-জন্মদিন পালন,ফ্রি মিক্সিং ইত্যাদি) কিন্তু আমার সাথে তার ঈমান-আমল ও তাকওয়ার বিস্তর ফারাক আমাকে পাগল বানিয়ে দিচ্ছে মানসিকভাবে, চিন্তায় থাকি কখন গাফেল হয়ে যাই। মাঝে মাঝে ইশার নামায না পড়ে ঘুমিয়ে যায়। কখনো আবার এটার জন্য আফসোস করে যে ঘুমিয়ে গেলাম।কখনো করে না। ফজরে উঠে মাঝে মাঝে আবার দেরি করে ঘুমিয়ে কাযাও দেয়। মুভি দেখলে তো সামনে মেয়ে আসেই। আর এটা আমার অন্তর ছিন্নভিন্ন করে দেয়। আমি কোনো ছেলেদের চেহারা দেখিনা,সর্বোচ্চ চেষ্টা করি ফেইসে না তাকানোর। উনি আগে আমাকে তাগাদা দিতো নামায পড়,উনি কুরআন,তাহাজ্জুদ পড়তো। ইসলামিক বই এখনও কিনে আনে। দু তিনদিন পড়ে। এরপর ছেড়ে দেয়। একবার তাবলীগের একটা ছোট সফরে গেছিলো।১-২ দিন বা দু-তিনদিন আমার মনে নাই। কিন্তু সে আর যায়নাই।বললেও যাবে না। ৪০ দিন যাওয়ার জন্য বলি। লাভ হবে না আমার কথা গুরুত্ব মনে হয়না দেয় কখনো। আমার বেশ ইচ্ছা করে আমার জাওয হবে অনেক ঈমানের অধিকারী,সবসময় দ্বীনের কথা বলবে,আমাকে শেখাবে,আলেম হবে। কিন্তু আমার বুঝ কম ছিলো বিয়ের সময়,তাই তখন আলিমের মর্যাদা বুঝিনি। কিন্তু এখন আমি চাই। তিনি এর কাছেও নেই। আমি কালো বোরখা,নিকাব পড়ি। উনি কালো চায়না। মডার্ন বোরখা চায়,পর্দা করি এটাও চায়। মা-খালাদের মতো বোরখা তার পছন্দ না,স্ট্যান্ডার্ড দেখায় এরকম পছন্দ।আমাদের তাকওয়ার বিস্তর ফারাক হয়ে গেছে এখন। আমার মন এটাতেই ইচ্ছুক সংসারের সমস্ত বিষয় হবে দ্বীনকে কেন্দ্র করে,সলাতকে কেন্দ্র করে। কিন্তু উনার সাথে চললে কখনোই "দ্বীন বিষয়ক কথা হয়না বাসায়,শুধু দুনিয়াবি কথা। " **এই বিষয়টা আমি কোনোভাবেই মানতে পারি না।
উনি যে এরকম, সংসার কিভাবে করবো আর?যদি আল্লাহ দেন,বাচ্চাদের তরবিয়ত দিতে আমি একা কিভাবে লড়বো?বিয়ের তিন বছর। সন্তানের চেষ্টা করিনি। আমি কিভাবে এখানে কন্টিনিউ করবো? নাকি কন্টিনিউ করা উচিত নয়? কি করবো আমি পরামর্শ চাই। দুয়া জারি রেখেছিলাম,তিন বছর। সবরের বাধ আগেই ভেঙে গিয়েছে। এভাবে কিভাবে সম্ভব?
উল্লেখ্যঃ নারীঘটিত সমস্যা নাই। অতো কেয়ার করে না,রোগ-শোক বুঝবে না,কাজ করা চাই। ভাল খাবার খাওয়াবে মুখে তুলে,ভাল জামা দেয়ার চেষ্টা করবে,কসমেটিকস। কিছু কিছু বিষয়ে ভালোই কেয়ার করবে,যখন তার মন চায়। কিন্তু একজন প্র‍্যাক্টিসিং আল্লাহর বান্দীর আসলে এগুলো দিয়ে কি হবে? মূল রসদটাই তো নাই-একটা দ্বীনি সংসার।