আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
190 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (26 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ।
গুছিয়ে বলতে পারবো কিনা জানি না শাইখ। চেষ্টা করছি।

আমি আমার সাধ্যমতো যথেষ্ট চেষ্টা করি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার প্রতিটি বিধান মেনে চলার। হালাল-হারাম,জায়েয-নাযায়েয,মাকরুহ প্রতিটা বিষয়ের আঞ্জাম দেয়ার জন্য আমি মনে-প্রাণে সচেষ্ট থাকি। কোথাও বাহিরে জরুরতে বা সফরে গেলে ট্রেনে বা বাসে হলেও সলাত আদায় করি,উযু বা সম্ভব না হলে তায়াম্মুম করি,ব্যাগে ভরে মাটি নিয়ে যাই। বারান্দায় নিকাব পড়ে জামা শুকাতে দেই। বিভিন্ন পণ্যের গায়ে মানুষের ছবি থাকলে মার্কার দিয়ে দাগিয়ে দেই,মুরগি খেলে তা হালাল জবাই হয়েছে কিনা নিশ্চিত করি,সময়বিশেষে খাই না,কোনো গাইরে মাহরাম অতি প্রয়োজনীয় বিষয়ে একটা মেসেজ দিলে, আমি কোনদিনও রিপ্লাই করি না। বিষয়টি শুধু দেখে রেখে দেই। আমার সামনে ফোন চালাতে গিয়ে বেয়াব্রু বা একটু দৃষ্টিকটু পোশাকের কাউকে দেখলে সাথে সাথে এভয়েড করে চলে যাই। মোটকথায় আমি আমার জান-প্রাণ দিয়ে আমার পক্ষে খোদা তা'য়ালার কোনো বিধান ভংগ করার সাহসও করি না। তাহাজ্জুদসহ অন্যান্য যিকির আযকারের পাবন্দি করি। আমার শত কষ্ট সত্বেও আমি পড়াশুনা+সংসার+অনলাইনে মাদ্রাসাহর পড়া সব করি,আমার আল্লাহু 'আলাম।

কিন্তু আমার জাওয এনিমেশন কার্টুন দেখেন,মুভির গল্প শোনেন ইউটিউবে এবং মুভিও দেখেন এখন। (এমন না মুভিতে মেয়ে-ছেলের রোমান্স দেখার জন্য দেখেন,কিন্তু উনার নাকি মুভি এনিম,কার্টুন না দেখলে হয় না)। তাকওয়া অনেক কম উনার। আমি বুঝিয়ে কোনোদিন কোনো লাভ হয়নি। দুয়াও জারি আছে। কোনো পরিবর্তন হয়নি। বিয়ের আগে আরও হারামে ছিলো,সেসব এখন করে না(যেমন-জন্মদিন পালন,ফ্রি মিক্সিং ইত্যাদি) কিন্তু আমার সাথে তার ঈমান-আমল ও তাকওয়ার বিস্তর ফারাক আমাকে পাগল বানিয়ে দিচ্ছে মানসিকভাবে, চিন্তায় থাকি কখন গাফেল হয়ে যাই। মাঝে মাঝে ইশার নামায না পড়ে ঘুমিয়ে যায়। কখনো আবার এটার জন্য আফসোস করে যে ঘুমিয়ে গেলাম।কখনো করে না। ফজরে উঠে মাঝে মাঝে আবার দেরি করে ঘুমিয়ে কাযাও দেয়। মুভি দেখলে তো সামনে মেয়ে আসেই। আর এটা আমার অন্তর ছিন্নভিন্ন করে দেয়। আমি কোনো ছেলেদের চেহারা দেখিনা,সর্বোচ্চ চেষ্টা করি ফেইসে না তাকানোর। উনি আগে আমাকে তাগাদা দিতো নামায পড়,উনি কুরআন,তাহাজ্জুদ পড়তো। ইসলামিক বই এখনও কিনে আনে। দু তিনদিন পড়ে। এরপর ছেড়ে দেয়। একবার তাবলীগের একটা ছোট সফরে গেছিলো।১-২ দিন বা দু-তিনদিন আমার মনে নাই। কিন্তু সে আর যায়নাই।বললেও যাবে না। ৪০ দিন যাওয়ার জন্য বলি। লাভ হবে না আমার কথা গুরুত্ব মনে হয়না দেয় কখনো। আমার বেশ ইচ্ছা করে আমার জাওয হবে অনেক ঈমানের অধিকারী,সবসময় দ্বীনের কথা বলবে,আমাকে শেখাবে,আলেম হবে। কিন্তু আমার বুঝ কম ছিলো বিয়ের সময়,তাই তখন আলিমের মর্যাদা বুঝিনি। কিন্তু এখন আমি চাই। তিনি এর কাছেও নেই। আমি কালো বোরখা,নিকাব পড়ি। উনি কালো চায়না। মডার্ন বোরখা চায়,পর্দা করি এটাও চায়। মা-খালাদের মতো বোরখা তার পছন্দ না,স্ট্যান্ডার্ড দেখায় এরকম পছন্দ।আমাদের তাকওয়ার বিস্তর ফারাক হয়ে গেছে এখন। আমার মন এটাতেই ইচ্ছুক সংসারের সমস্ত বিষয় হবে দ্বীনকে কেন্দ্র করে,সলাতকে কেন্দ্র করে। কিন্তু উনার সাথে চললে কখনোই "দ্বীন বিষয়ক কথা হয়না বাসায়,শুধু দুনিয়াবি কথা। " **এই বিষয়টা আমি কোনোভাবেই মানতে পারি না।

উনি যে এরকম, সংসার কিভাবে করবো আর?যদি আল্লাহ দেন,বাচ্চাদের তরবিয়ত দিতে আমি একা কিভাবে লড়বো?বিয়ের তিন বছর। সন্তানের চেষ্টা করিনি। আমি কিভাবে এখানে কন্টিনিউ করবো? নাকি কন্টিনিউ করা উচিত নয়? কি করবো আমি পরামর্শ চাই। দুয়া জারি রেখেছিলাম,তিন বছর। সবরের বাধ আগেই ভেঙে গিয়েছে। এভাবে কিভাবে সম্ভব?

উল্লেখ্যঃ নারীঘটিত সমস্যা নাই। অতো কেয়ার করে না,রোগ-শোক বুঝবে না,কাজ করা চাই। ভাল খাবার খাওয়াবে মুখে তুলে,ভাল জামা দেয়ার চেষ্টা করবে,কসমেটিকস। কিছু কিছু বিষয়ে ভালোই কেয়ার করবে,যখন তার মন চায়। কিন্তু একজন প্র‍্যাক্টিসিং আল্লাহর বান্দীর আসলে এগুলো দিয়ে কি হবে? মূল রসদটাই তো নাই-একটা দ্বীনি সংসার।

1 Answer

0 votes
by (58,470 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

নেককার স্বামী/স্ত্রী পাওয়া এবং সুস্থ সবল সন্তানের পিতা-মাতা হওয়া, বান্দার উপর আল্লাহ তা'আলার এক বিশেষ নেয়ামত।এজন্য প্রত্যেক স্বামী/স্ত্রী এর জন্য মহান রবের শুকরিয়া আদায় করা উচিৎ।এ বিশেষ নেয়ামতের অকৃতজ্ঞা প্রকাশ করার অর্থই হল নিজের জীবনকে বিপর্যয়ের দিকে ঢেলে দেয়া।

ল্লাহ তা'আলা বলেন,

ﻭَﺇِﺫْ ﺗَﺄَﺫَّﻥَ ﺭَﺑُّﻜُﻢْ ﻟَﺌِﻦ ﺷَﻜَﺮْﺗُﻢْ ﻷَﺯِﻳﺪَﻧَّﻜُﻢْ ﻭَﻟَﺌِﻦ ﻛَﻔَﺮْﺗُﻢْ ﺇِﻥَّ ﻋَﺬَﺍﺑِﻲ ﻟَﺸَﺪِﻳﺪٌ

যখন তোমাদের পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে আরও দেব এবং যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর।(সূরা ইবরাহিম-৭)

স্বামীর সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার জন্য আপনি আল্লাহর কাছে দু'আ করুন। সালাতুল হাজত পড়ে দু'আ করুন। সালাতুল হাজতের নিয়ম জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1453

একাকি ফরয নামায বা নফল নামাযের শেষ বৈঠকে তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ,সহ দু'আয়ে মাছুরা পড়ার পর সূরায়ে ফুরকানের ৭৪ নং আয়াতও পড়তে পারেন।অনেক বুজুর্গানে কেরাম ও শায়েখগণ এ আ'মলের পরামর্শ দিয়েছেন।

আমাদের মনে রাখতে হবে, পরকালে আমাদের সবাইকে নিজ নিজ আ'মলের হিসাব নিকাশ দিতে হবে।কারো পাপের বোঝাকে অন্য কেহ বহন করবে না।

আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ

ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺰِﺭُ ﻭَﺍﺯِﺭَﺓٌ ﻭِﺯْﺭَ ﺃُﺧْﺮَﻯ ﻭَﺇِﻥ ﺗَﺪْﻉُ ﻣُﺜْﻘَﻠَﺔٌ ﺇِﻟَﻰ ﺣِﻤْﻠِﻬَﺎ ﻟَﺎ ﻳُﺤْﻤَﻞْ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْﺀٌ ﻭَﻟَﻮْ ﻛَﺎﻥَ ﺫَﺍ ﻗُﺮْﺑَﻰ الخ

কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কেউ যদি তার গুরুতর ভার বহন করতে অন্যকে আহবান করে কেউ তা বহন করবে না-যদি সে নিকটবর্তী আত্নীয়ও হয়। (সূরা ফাতির-১৮

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

বর্তমান পরিস্থিতে স্বামীকে বুঝিয়ে উক্ত গোনাহের কাজ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা অব্যাহত রাখুন। ধর্য্য সহকারে পরিস্থিতির মোকাবেলা করার চেষ্টা করুন। আল্লাহ অবশ্যই এর জন্য আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করবেন। আপনার কথা অনুযায়ী যেহেতু পূর্বের চেয়ে পরিবর্তন এসেছে আশা করি তিনি অদূর ভবিষ্যতে প্রকৃত দ্বীনদার হবেন ইশাআল্লাহ। তবে হতাশ হওয়া যাবে না। আল্লাহর কাছে দোয়া চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি তাকে স্থানীয় হ্ক্বানী উলামায়ে কেরাম ও দ্বীনদার ব্যক্তিদের সাথে চলাফেরা করতে হেকমাহ অবলম্বন করুন।

সাথে সাথে কোন নির্ভরযোগ্য মান্যবর আলেমের সাথে তাকে কথা বলানোর চেষ্টা করবেন, যিনি তাকে ইবাদতে যত্নশীল হতে দাওয়াত দিবেন ও বুঝাবেন। আল্লাহ তায়ালার একটি নাম মুকাল্লিবুল কুলুব (অন্তর পরিবর্তনকারী)। আল্লাহ তায়ালা চাইলে মহূর্তের মধ্যেই তার অন্তর পরিবর্তন করে তাকে পূর্ণ হেদায়েত দিতে পারেন। সেই সাথে সন্তান নিতে বিলম্ব না করাই শ্রেয়। কারণ, সন্তন ভূমিষ্ট হওয়ার পর এধরণের অনেক ভাইয়ের জীবনে পরিবর্তন আসে। আল্লাহ তায়ালা আপনার মেহনত কবুল করুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...