আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
143 views
in পবিত্রতা (Purity) by (23 points)
আসসালামু আলাইকুম জনাব!

বাথরুমের দেওয়ালে নাপাকি লেগেছিলো। পরে হাত ভিজিয়ে শুধু ওই নাপাক লাগা অংশ (তিনবার) মুছে ফেলেছিলাম। উল্লেখ্য যে, দেওয়াল টাইলস করা।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে,

১. উক্ত অংশ কী পাক হয়েছে?

২. ভেজা হাত দিয়ে যেহেতু নাপাক লাগা অংশ (তিনবার) মুছে ফেলেছি; তো মোছার সময় কিছু পানি নিচের দিকে গড়ায়ে পড়েছিলো। এতে করে কী গড়ানো পানি যে যে অংশে লেগেছে, সেটুকও নাপাক হয়ে যাবে?

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://www.ifatwa.info/19995  নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, ইবনে আবেদীন শামী রাহ লিখেন, অপবিত্রতা তিন প্রকারের হতে পারে।যথা-

(১)পবিত্র জিনিষ হয়তো নাজাসতের অংশকে চুষে নিবে না যেমন পাথর বা তামার পাত্র কিংবা চিনির পাত্র।

(২) অথবা নাজাসতের অংশকে সামান্য আকারে চুষে নিবে, যেমন, শরীর ইত্যাদি।

(৩) অথবা বেশী পরিমাণে নাজাসতের অংশকে চুষে নিবে।

(প্রথম প্রকারের হুকুম) প্রথম অবস্থায় দৃশ্যমান নাজাসতের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র নাজাসতকে দূর করে নিলেই তা পবিত্র হয়ে যাবে। আর অদৃশ্যমান নাজাসতের ক্ষেত্রে তিনবার ধৌত করে নিলেই তা পবিত্র হবে।

(দ্বিতীয় প্রকারের হুকুম)  দ্বিতীয় প্রকারের হুকুমও প্রথম প্রকারের মত।

(তৃতীয় প্রকারের হুকুম) যদি নিংড়ানো সম্ভব হয়, তাহলে নিংড়াতে হবে। যেমন কাপড়কে নিংড়িয়ে ধৌত করা হয়ে থাকে। সুতরাং এ প্রকারের নাজাসতকে দূর করার দ্বারাই কাপড় পবিত্র হয়ে যাবে, অথবা তিনবার ধৌত করার দ্বারা তা পবিত্র হবে। আর যদি নিংড়ানো সম্ভব না হয়, যেমন চাটাই ইত্যাদি, যদি জানা যায় যে, উক্ত জিনিষ নাজাসতকে চুষে নেয়নি, তাহলে বাহ্যিকভাবে নাজাসতকে দূর করার দ্বারাই তা পবিত্র হয়ে যাবে। অথবা নিংড়ানো ব্যতিত তিন বার ধৌত করার দ্বারাই তা পবিত্র হয়ে যাবে। আর যদি জানা যায় যে, উক্ত জিনিষ নাজাসতকে চুষে নিয়েছে, তাহলে ইমাম মুহাম্মদ রাহ এর মতে উক্ত জিনিষ কখনো পবিত্র হবে না। এবং ইমাম আবু-ইউসুফ রাহ এর মতে তিনবার পানি দ্বারা ধৌত করতে হবে, এবং প্রত্যেকবার শুকাতে হবে।

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

যে টাইলসে শোষণের ক্ষমতা নেই, তাতে নাপাকি পড়লে, সেই নাপাকি যদি শুকিয়ে যায়, তাহলে যখনই নাপাকি শুকাবে, তখনই সেই টাইলস পবিত্র হিসেবে বিবেচিত হবে।কিন্তু পরবর্তীতে যখন ভিজা হাতে উক্ত টাইলসকে ধরা হবে, বা উক্ত টাইলসে পানি পড়বে,তখন সেই টাইল আবার অপবিত্র হয়ে যাবে।

প্লাস্টিকের জিনিষে নাপাকি লাগার পর, সেই নাপাকি শুকিয়ে গেলে উক্ত অদৃশ্যমান নাজাসতের বেলায় এই প্লাস্টিককে পবিত্র হিসেবেই ধরে নেয়া হবে। কিন্তু ভিজে গেলে আবার অপবিত্র হিসেবে ধরে নেয়া হবে।

মলত্যাগের পর শুচু করার পর হাত নাপাক থাকেনা। হ্যা, হাতে দৃশ্যমান কিছু থাকলে,তখন হাতকে নাপাক ধরে নেয়া হবে।

রাসূলুল্লাহ সাঃ রাতের প্রথম অংশ থেকে তথা এশার পর থেকে নিয়ে তাহাজ্জুদের পূর্ব পর্যন্ত ঘুমাতেন। এটাই সাধারণ নিয়ম ছিলো। তবে এর ব্যতিক্রমও মাঝেমধ্যে হতো। যৎসামান্য পানি ব্যবহার করে গোসল করতেন। নামাযের সময় কোন শুকনো নাপাক বস্তুতে শরীরের কোন অঙ্গ লাগলে নামায ভঙ্গ হবে না।

ইসলামি শরীয়াহ মতে মেঝেতে কোন নাপাকি পড়লে তা সরিয়ে মেঝে মুছে ফেলতে হবে। তারপর তা শুকিয়ে গেলে ও নাপাকির প্রভাব নিঃশ্চিহ্ন হয়ে গেলে সেই মেঝে নাপাকি থেকে পাক হয়ে যাবে। তারপর  খালি পায়ে বা ভেজা পায়ে ঐ জায়গায় চলাচলে কোন অসুবিধা নেই। (খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৪২)

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. দেয়ালের উক্ত অংশটুকু ভালোভাবে ভেজা হাত দিয়ে মুছে নেওয়ার পর নাপাকীর কোন আলামত দৃশ্যমান না হয় তাহলে উক্ত অংশ পাক হবে ইনশাআল্লাহ।

২. শরীয়তের বিধান হলো নাপাক কাপড়/বস্তু ধোয়ার সময় গড়িয়ে আসা পানি নাপাক। নিশ্চিত ভাবে শরীরে বা কাপড়ে সেই ছিটে আসা/গড়িয়ে পড়া পানি লাগলে এক দিরহামের চেয়ে কম লাগলে তাহা মাফ। কিন্তু এক দিরহামের চেয়ে বেশী লাগলে তা নাপাক হবে। সুতরাং উক্ত গড়িয়ে পড়া পানি নাপাক হবে। এটিই অধিক সতর্কতার দাবী। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 132 views
...