ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু
বিসমিল্লাহির রহমানির
রহিম
بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
https://www.ifatwa.info/19995
নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
ইবনে আবেদীন শামী রাহ লিখেন,
অপবিত্রতা তিন প্রকারের হতে পারে।যথা-
(১)পবিত্র জিনিষ হয়তো নাজাসতের অংশকে চুষে নিবে না যেমন পাথর বা তামার পাত্র কিংবা
চিনির পাত্র।
(২) অথবা নাজাসতের অংশকে সামান্য আকারে চুষে নিবে,
যেমন,
শরীর ইত্যাদি।
(৩) অথবা বেশী পরিমাণে নাজাসতের অংশকে চুষে নিবে।
(প্রথম প্রকারের হুকুম) প্রথম অবস্থায় দৃশ্যমান নাজাসতের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র নাজাসতকে
দূর করে নিলেই তা পবিত্র হয়ে যাবে। আর অদৃশ্যমান নাজাসতের ক্ষেত্রে তিনবার ধৌত করে
নিলেই তা পবিত্র হবে।
(দ্বিতীয় প্রকারের হুকুম) দ্বিতীয় প্রকারের
হুকুমও প্রথম প্রকারের মত।
(তৃতীয় প্রকারের হুকুম) যদি নিংড়ানো সম্ভব হয়, তাহলে নিংড়াতে হবে। যেমন কাপড়কে নিংড়িয়ে ধৌত করা
হয়ে থাকে। সুতরাং এ প্রকারের নাজাসতকে দূর করার দ্বারাই কাপড় পবিত্র হয়ে যাবে,
অথবা তিনবার ধৌত করার দ্বারা তা পবিত্র
হবে। আর যদি নিংড়ানো সম্ভব না হয়, যেমন চাটাই ইত্যাদি, যদি জানা যায় যে, উক্ত জিনিষ নাজাসতকে চুষে নেয়নি,
তাহলে বাহ্যিকভাবে নাজাসতকে দূর করার
দ্বারাই তা পবিত্র হয়ে যাবে। অথবা নিংড়ানো ব্যতিত তিন বার ধৌত করার দ্বারাই তা পবিত্র
হয়ে যাবে। আর যদি জানা যায় যে, উক্ত জিনিষ নাজাসতকে চুষে নিয়েছে,
তাহলে ইমাম মুহাম্মদ রাহ এর মতে উক্ত
জিনিষ কখনো পবিত্র হবে না। এবং ইমাম আবু-ইউসুফ রাহ এর মতে তিনবার পানি দ্বারা ধৌত করতে
হবে, এবং প্রত্যেকবার শুকাতে হবে।
সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
যে টাইলসে শোষণের ক্ষমতা নেই,
তাতে নাপাকি পড়লে,
সেই নাপাকি যদি শুকিয়ে যায়,
তাহলে যখনই নাপাকি শুকাবে,
তখনই সেই টাইলস পবিত্র হিসেবে বিবেচিত
হবে।কিন্তু পরবর্তীতে যখন ভিজা হাতে উক্ত টাইলসকে ধরা হবে,
বা উক্ত টাইলসে পানি পড়বে,তখন সেই টাইল আবার অপবিত্র হয়ে যাবে।
প্লাস্টিকের জিনিষে নাপাকি লাগার পর,
সেই নাপাকি শুকিয়ে গেলে উক্ত অদৃশ্যমান
নাজাসতের বেলায় এই প্লাস্টিককে পবিত্র হিসেবেই ধরে নেয়া হবে। কিন্তু ভিজে গেলে আবার
অপবিত্র হিসেবে ধরে নেয়া হবে।
মলত্যাগের পর শুচু করার পর হাত নাপাক
থাকেনা। হ্যা, হাতে দৃশ্যমান কিছু থাকলে,তখন হাতকে নাপাক ধরে নেয়া হবে।
রাসূলুল্লাহ সাঃ রাতের প্রথম অংশ থেকে
তথা এশার পর থেকে নিয়ে তাহাজ্জুদের পূর্ব পর্যন্ত ঘুমাতেন। এটাই সাধারণ নিয়ম ছিলো।
তবে এর ব্যতিক্রমও মাঝেমধ্যে হতো। যৎসামান্য পানি ব্যবহার করে গোসল করতেন। নামাযের সময় কোন শুকনো
নাপাক বস্তুতে শরীরের কোন অঙ্গ লাগলে নামায ভঙ্গ হবে না।
ইসলামি শরীয়াহ মতে মেঝেতে কোন নাপাকি
পড়লে তা সরিয়ে মেঝে মুছে ফেলতে হবে। তারপর তা শুকিয়ে গেলে ও নাপাকির প্রভাব নিঃশ্চিহ্ন
হয়ে গেলে সেই মেঝে নাপাকি থেকে পাক হয়ে যাবে। তারপর খালি পায়ে বা ভেজা পায়ে ঐ জায়গায় চলাচলে কোন
অসুবিধা নেই। (খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৪২)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. দেয়ালের উক্ত অংশটুকু ভালোভাবে
ভেজা হাত দিয়ে মুছে নেওয়ার পর নাপাকীর কোন আলামত দৃশ্যমান না হয় তাহলে
উক্ত অংশ পাক হবে ইনশাআল্লাহ।
২. শরীয়তের বিধান হলো
নাপাক কাপড়/বস্তু ধোয়ার সময় গড়িয়ে আসা পানি
নাপাক। নিশ্চিত ভাবে শরীরে বা কাপড়ে সেই ছিটে আসা/গড়িয়ে পড়া পানি লাগলে এক দিরহামের চেয়ে কম লাগলে
তাহা মাফ। কিন্তু এক দিরহামের চেয়ে বেশী লাগলে তা নাপাক হবে। সুতরাং উক্ত গড়িয়ে
পড়া পানি নাপাক হবে। এটিই অধিক সতর্কতার দাবী।