অতি যৌন সংবেদনশীলতা, ঘন ঘন মোযীর সমস্যা ও ইউরিনারি ইনকন্টিনেন্সের ফলে অতিষ্ঠ ও অস্বাভাবিক হয়ে যাওয়া জীবনের সমাধান কী?

Question

আসসালামু আলাইকুম।গত বেশ কয়েক বছর ধরে আমি যৌন বিষয়ে খুব সংবেদনশীল।যত চেষ্টা করেই চলাফেরা করি না কেন সামান্য বিষয়েই যৌন অনুভূতির সৃষ্টি এবং ফলস্বরূপ মোযী নির্গত হয় যা একেবারেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না।এলোপ্যাথি,হোমিওপ্যাথি সকল চিকিৎসা নিয়েছি।উপকার হয় নি।ফলে আলিমগণের পরামর্শ মোতাবেক সার্বক্ষণিক আন্ডার গার্মেন্টস পরে থাকা, মাঝে কিছুদিন আন্ডার গার্মেন্টসের ভেতর মোটা করে টিস্যুও ব্যবহার করেছি।যদিও এগুলো খুবই কষ্টকর তবুও করেছি।কিন্তু টিস্যু ব্যবহার করেও লাভ হয় নি।চলাফেরার সময় এটি এর ঠিকঠাক থাকে না।২৪ ঘণ্টা আন্ডার গার্মেন্টস ব্যবহার করি যা খুবই অস্বস্তি দেয়।তবুও শান্তি পাচ্ছি না।পানির কল ব্যবহার করে শান্তি নেই, গরমের দিনে ভারী কাজ করে শান্তি নেই।পানির ছিঁটা ফোঁটা আন্ডারগার্মেন্টসের উপরের কাপড়ে এসে পরা থেকে বাঁচতে অস্বাভাবিক রকম চেষ্টা করা লাগে।গরমের দিন ভারী কাজ করে তো রেহাই ই নেই।প্রচুর ঘাম হয় ফলে আন্ডারগার্মেন্টস ভিজে উপরের কাপড়েও ঘাম লাগে।ফলে সব ধুয়ে পবিত্র করতে হয়।তবে বাইরে চলাফেরা করার সময় তো আর সম্ভব হয় না।গত কয়েক বছর ধরে সামর্থ্যের ৫০ ভাগও ব্যবহার করতে পারছি না কোনো বিষয়ে এসব কারণে।এখন আবার তলপেটে চাপ পরলে খুব সামান্য পস্রাব বের হয় মনে হলো।এর জন্যও চিকিৎসা শুরু করছি।জানি না কবে নাগাদ ঠিক হবে বা আদৌ হবে কিনা!যতবার চেষ্টা করি মনোবল ধরে রেখে জীবনটা চালিয়ে নিতে ততবার জটিলতা বাড়ে মনে হচ্ছে।আমার বয়স ২৫।ভেবেছিলাম এবং শুনেছিলাম বিয়ের পর অন্তত মোযীর সমস্যা থেকে এবং যৌন সংবেদনশীলতা থেকে মুক্তি পাবো।এখন জীবন এমন জটিলতার বেড়াজালে আটকে গেছে যে বিয়ে করতে আরো বহু দেরী যদি ভাগ্যে থাকে। বন্দেগী ও খুবই কঠিন হয়ে গেছে এসব কারণে।পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে কাপড় বদলানোর বা পানি ছিঁটা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন একজন মুফতি সাহেব।তা করার জন্য আমার বাসায় অবস্থান করা লাগবে সারাদিন।এটাকে আর জীবন মনে হচ্ছে না।আমি শুধু একটি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে চাই।যদি সম্ভব হয় আমাকে উত্তর দিয়ে পথ দেখাবেন দয়া করে।

Answer 1

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
আলক্বামাহ (রহ.) হতে বর্ণিত।
عن علقمة، قال: كنت مع عبد الله، فلقيه عثمان بمنى، فقال: يا أبا عبد الرحمن إن لي إليك حاجة فخلوا، فقال عثمان: هل لك يا أبا عبد الرحمن في أن نزوجك بكرا، تذكرك ما كنت تعهد؟ فلما رأى عبد الله أن ليس له حاجة إلى هذا أشار إلي، فقال: يا علقمة، فانتهيت إليه وهو يقول: أما لئن قلت ذلك، لقد قال لنا النبي صلى الله عليه وسلم: «يا معشر الشبابمن استطاع منكم الباءة فليتزوج، ومن لم يستطع فعليه بالصوم فإنه له وجاء»
‘তিনি বলেন, যখন আমি ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ)-এর সঙ্গে ছিলাম, ‘উসমান (রাঃ) তাঁর সঙ্গে মিনাতে দেখা করে বলেন, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আপনার সাথে আমার কিছু দরকার আছে। অতঃপর তারা দু’জনে এক পাশে গেলেন। তারপর ‘উসমান (রাঃ) বললেন, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আমি কি আপনার সঙ্গে এমন একটি কুমারী মেয়ের বিয়ে দিব, যে আপনাকে আপনার অতীত কালকে স্মরণ করিয়ে দিবে? ‘আবদুল্লাহ্ যখন দেখলেন, তার এ বিয়ের দরকার নেই তখন তিনি আমাকে ‘হে ‘আলক্বামাহ’ বলে ইঙ্গিত করলেন। আমি তাঁর কাছে গিয়ে বলতে শুনলাম, আপনি আমাকে এ কথা বলছেন (এ ব্যাপারে) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বলেছেন, হে যুবকের দল! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিয়ে করে এবং যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে না, সে যেন ‘সওম’ পালন করে। কেননা, সওম যৌন ক্ষমতাকে দমন করে।(সহীহ বোখারী-৫০৬৫)

«النِّكَاحُ حَالَةَ الِاعْتِدَالِ سُنَّةٌ مُؤَكَّدَةٌ مَرْغُوبَةٌ، وَحَالَةَ التَّوَقَانِ وَاجِبٌ، وَحَالَةَ الْخَوْفِ مِنَ الْجَوْرِ مَكْرُوهٌ.» - «الاختيار لتعليل المختار»
স্বাভাবিক অবস্থায় বিয়ে করা সুন্নতে মু’আক্কাদা। আর যিনা ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনায় বিয়ে করা ওয়াজিব। আর স্ত্রীর জুলুম করার আশংকা থাকলে তখন বিয়ে করা মাকরুহ।(আল-এখতিয়ার লি তা’লিলিল মুখতার-৩/৮২)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/2276

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি অতিদ্রুত বিয়ে করে নিবেন। এর পাশাপাশি ডাক্তার দেখাবেন। এবং যেইসব মুফতি সাহেবগণ আপনাকে যেভাবে পরামর্শ দিয়েছেন, সেভাবেই আপাতত কষ্টকরে চলবেন।আল্লাহ আপনাকে তাওফিক দান করুক।আমীন।