আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
229 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমি একটি স্বনামধন্য পাবলিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছি ৫ বছর হলো। পাশ করার সাথে সাথেই দ্বীনের বুঝ আসা শুরু করে এবং ফ্রি মিক্সিং, ফিতনার কথা মাথায় রেখে আমি সিদ্ধান্ত নিই যে ক্যারিয়ার গড়া বা জব করবো নাহ। দ্বীনদার পাত্র দেখে বিয়ে করে ফেলবো। প্রথম দিকে পরিবার মেনে নিতে চায় নি,কিন্তু সময়ের সাথে সাথে রিএক্ট করা সহনীয় পর্যায়ের ছিল।তারপর পরিবার বিয়ের চেষ্টা করছিল এখনো দ্বীনদার পাত্র খুজে পাইনি। যাইহোক এখনো আল্লাহর হুকুমে অবিবাহিত আছি এবং মা মারা যাওয়ায় পরিবারে বাবা, ছোট দুই বোনের দেখাশুনা করছি। এইদিকে সব মিলিয়ে পাত্র খুজে না পাওয়ায় আমার বাবা ভাবছে আমি জব করি নাহ বিধায় আমার বিয়ে হচ্ছে নাহ। আমার পরিবার আর্থিকভাবে যথেষ্ট স্বচ্ছল আলহামদুলিল্লাহ।আমাদের পাচ বোনের সবার নামেই কিছু এসেট আছে যা একা থাকলেও সারাজীবন চলে যাওয়ার মত আলহামদুলিল্লাহ।    কিন্তু বাবার দ্বীনের বুঝ না থাকায় বার বার বলে জব করার কথা বিশেষ করে বিসিএস দেবার কথা যেন আমি একজন ক্যাডার হতে পারি। সমাজের বা প্রতিবেশী কারো ভালো চাকরি হলে বা সাকসেসফুল হলে এই চাপ আরো বেড়ে যায়। আমি বুঝাতে গেলে বুঝে নাহ উলটো অভিশাপ দিতে থাকে এই বলে যে আমার কোন দিন বিয়ে হবে নাহ বা আমি কোন দিন জান্নাতে যেতে পারবো নাহ। উনি এতটাই পরশ্রীকাতর হয়ে পড়েন যে বলেন উনার বুকের ভেতর রক্তক্ষরণ হচ্ছে।কান্না করে বলেন যে এত টাকা পয়সা খরচ করে কষ্ট করে লেখাপড়া করিয়েছেন অথচ আমি কোন আউটপুট দিচ্ছি নাহ, সমাজের মানুষের সামনে মাথা নিচু করে চলতে হয়, গর্ব করে বলতে পারছেন নাহ মেয়ে ভালো চাকরি করে। এইক্ষেত্রে আমি কি করতে পারি? বিসিএস চাকরির জন্য  চেষ্টা করা আমার জন্য কি জায়েজ হবে? মেয়েদের ক্যাডার সার্ভিসে যাওয়া কতটুকু যুক্তি যুক্ত? এইদিকে আমার বাবা আমাকে যে অভিশাপ দিচ্ছেন সেগুলা কি আমার উপর লেগে যাবে?  আমি ভয় পাচ্ছি।

1 Answer

+1 vote
by (583,410 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
আল্লাহ তা'আলা পুরুষ এবং নারী দু'টি ভিন্ন জাতিকে তৈরী করেছেন।এবং তাদের কাজকেও বন্টন করে দিয়েছেন।এভাবে যে, সাধারণত পুরুষ বাহিরে কাজে ব্যস্ত থাকবে এবং নারীরা ঘরের ভিতর সামাল দিবে।এবং সন্তানসন্ততি কে শিক্ষাদীক্ষা দেয়ার মত মহান কাজ আঞ্জাম দিবে।

নারীশ্রম কে ইসলাম নিরোৎসাহিত করেছে।তবে শরয়ী জরুরুতে অনুমোদনও দিয়েছে।নারীশ্রমের শরয়ী বিধান জানতে ভিজিট করুন করুন- https://www.ifatwa.info/632

ফিৎনার আশংকা না থাকলে নারীদের জন্য একদিন একরাত (পায়ে হেটে)সফর পরিমাণ দূরত্ব তথা (৭৭÷৩=২৫.৬)২৫.৬ কিলোমিটার বা তার চেয়ে কম পরিমাণ জায়গা সফর করা মাহরাম ব্যতীত জায়েয আছে।তবে ফিৎনার আশংকা থাকলে জায়েয হবে না।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/212

পর্দা করা ফরয।পর্দার তিনটি স্থর রয়েছে পর্যায়ক্রমে।প্রথম স্থর হল,ঘরে বসে পর্দা করা।বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/572

মানবিক প্রয়োজন,যার জন্য বের না হলেই নয়।যেমন মাহরাম না থাকাবস্থায় খাবার দাবার ও পোষাক ইত্যাদি ক্রয় বা চিকিৎসা কিংবা মাহরাম আত্মীয় স্বজনকে দেখা ইত্যাদির জন্য বাহিরে যাওয়া।সুতরাং বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাহিরে না যাওয়াতে ফরয বিধান পালন হবে।

আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى وَأَقِمْنَ الصَّلَاةَ وَآتِينَ الزَّكَاةَ وَأَطِعْنَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا
তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে-মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে। হে নবী পরিবারের সদস্যবর্গ। আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পূত-পবিত্র রাখতে।(সূরা আহযাব-৩৩)বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/3247

ফ্রি মিক্সিং পরিবেশ ব্যতীত পর্দা সম্মত হালাল যেকোনো চাকুরী করতে পারবে।তবে অবশ্যই পিতা বা স্বামীর অনুমতি সাপেক্ষ্যে।বিনা প্রয়োজনে চাকুরীতে না যাওয়াই উত্তম।যদি ফ্রি মিক্সিং চাকুরী করা ব্যতীত খোরাকীর অন্য কোনো ব্যবস্থা না থাকে,তাহলে ইস্তেগফারের সাথে রুখসত হবে।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/3503

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যেহেতু আপনি সচ্ছল, চাকুরী না করলেও সারা জীবন ঘরে বসে খেতে পারবেন, তাই পর্দাকে লঙ্গন করে চাকুরী করা কোনো মতেই আপনার জন্য জায়েয হবে না। 
এখন প্রশ্ন হল আপনার বিয়ে বা বাবা ও বাবার সামাজিক অবস্থান ও বর্তমান সামাজিক পরিস্থিতি।
এসবকিছু বিবেচনায় আমরা বলতে পারি যে, যেহেতু আপনি এমন এক অবস্থানে রয়েছেন যে, আপনার বাবা বা আত্মীয় স্বজন কোনো গরীব দ্বীনদার পাত্রকে গ্রহণ করবে না, দ্বীনি লাইনের গরীব পাত্রকে মেনে নিবে না। বরং আপনাদের সমপর্যায়ের কেউ হতে হবে।দ্বীনদার হলেও আপনার বাবা সম্ভবত আপত্তি করবে না। তাই আপনি দুইটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে বিসিএসে অগ্রসর হতে পারবেন।
(১) 
ইসলাম ও মুসলমান এবং দেশের স্বার্থে অগ্রসর হওয়া।

(২)
বিসিএস ক্যাডারের প্রধানতম উদ্দেশ্য হল, দ্বীনদার সমপর্যায়ের কারো সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া।এবং স্থায়ী চাকুরী না করা।

চাকুরী ঢুকে গেলে পরবর্তীতে বেড়িয়ে আসাটা অত্যান্ত কষ্টকর। তাই ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

পরবর্তীতে যদি পরিবেশ পরিস্থিতি বদলে যায়, তাহলে দ্বীনি লাইনের কাউকে জীবন সাথী বানিয়ে নেওয়াটাও হয়তো সহজতম হতে পারে। আল্লাহ সবকিছু সহজ করে দেউক।আমীন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...