জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে উম্মতকে কবরের কাছে যেতে নিষেধ করেছিলেন। এরপর যখন ঐ জাহিলিয়াত এর সময়ের রসম-রেওয়াজ ভালোভাবে দূর হল তখন তিনি কবর-যিয়ারতের অনুমতি দিয়ে বলেছেন-
كنت نهيتكم عن زيارة القبور، فزوروها، فإنها تزهد في الدنيا وتذكر الآخرة.
আমি তোমাদের কবর-যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। (এখন ঐ নিষেধ মানসূখ করা হচ্ছে) এখন তোমরা কবর যিয়ারত করতে পার। কারণ তা দুনিয়ার মোহ দূর করে এবং আখিরাতকে মনে করিয়ে দেয়। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৫৭১; মিশকাত পৃ. ১৫৪
সুতরাং কবরস্থানে যাওয়ার অনুমতি আছে। তবে মহিলাদের জন্য কবরস্থানে যাওয়া বিষয়ে কিছু মতভেদ রয়েছে।
কেহ কেহ বলেছেন যে এ অনুমতি নারী-পুরুষ সবার জন্য, না শুধু পুরুষের জন্য। কিছু মনীষীর মতে নারীদের অনুমতি নেই। কারণ এক হাদীসে আবু হুরায়রা রা. বলেন-
أن رسول الله صلى الله عليه وسلم لعن زوارات القبور
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবর যিয়ারতকারী নারীদের উপর অভিসম্পাত করেছেন। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৮৪৪৯; জামে তিরমিযী, হাদীস ১০৫৬; সুনানে ইবনে মাজাহ,হাদীস ১৫৭৫; মিশকাত পৃ. ১৫৪
আর কেউ কেউ বলেন, এটি অনুমতির আগের। এখন পুরুষের মতো নারীদেরও কবর যিয়ারতের অনুমতি আছে।
নারীদের নিষেধ করার তাৎপর্য এই যে, ইলম ও সবরের স্বল্পতার কারণে তারা ওখানে গিয়ে অস্থিরতা, কান্নাকাটি এবং বিদআত ও গায়রে শরয়ী আচরণ থেকে বিরত থাকতে পারে না। যেহেতু তাদের ওখানে যাওয়ায় ফিতনার আশঙ্কাই প্রবল তাই তাদেরকে বিশেষভাবে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং যদি কোনো নারী ওখানে গিয়ে কোনো প্রকারের বিদআত ও গায়রে শরয়ী কার্যকলাপে লিপ্ত না হন তাহলে তার অনুমতি আছে। তবে বৃদ্ধা নারীরা যেতে পারেন, যুবতীদের না যাওয়াই ভালো। -ফাতাওয়ায়ে শামী খ. ২ পৃ. ২৪২, নতুন মুদ্রণ, মিশর
,
দারুল উলুম দেওবন্দ এর ৩৬১৪৪ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে মহিলারা যদি নিজেক কন্ট্রোল করতে পারে,আহাজারি যদি না করে,তাহলে মহিলাদের জন্য নিজ নিকটস্থ আত্মীয় স্বজনদের কবর যিয়ারত করা জায়েজ আছে।
তব সেখানে গিয়ে কোনো শরীয়ত বহির্ভূত কাজ করা যাবেনা।
★সুতরাং মহিলাগন উপরোক্ত শর্ত মেনে কবর যিয়ারত করতে যেতে পারবে।
কবর যিয়ারতের পদ্ধতি সম্পর্কে জানুনঃ
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
দিন তারিখ ধার্য করে একত্রিত হয়ে আলাদা আলাদাভাবে কবর যিয়ারত করা জায়েজ আছে। তবে শর্ত হলো এটিকে আবশ্যকীয় মনে করা যাবেনা। এমনটি মনে করা যাবেনা।
শুধু সেদিনেই যেতে হবে,অন্য দিন যাওয়া যাবেনা, শুধু সেদিন গেলেই যিয়ারত করা যাবে,অন্য দিন গেলে যিয়ারত করা যাবেনা,বা যিয়ারতের ছওয়াব হবেনা,এমনটি মনে করা যাবেনা।
নির্দিষ্ট দিনেই যেতে হবে,এটিকে শরীয়তের পক্ষ থেকে নিয়ম বলে মনে করা যাবেনা।
তবে এই পদ্ধতিকে আবশ্যকীয় মনে করে পালন করলে তাহা বিদ'আত হবে।
রাসুল সাঃ বলেন-
وَإِيّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ، فَإِنّ كُلّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ، وَكُلّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ.
আর সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় থেকে দূরে থাকবে। কারণ, সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় বিদআত। আর সকল বিদআত গোমরাহী ও ভ্রষ্টতা।’ (দ্র. মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৭১৪২, ১৭১৪৫)
আরেক হাদীসে আছে-
مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدّ .
‘যে আমাদের এই বিষয়ে (অর্থাৎ দ্বীন ও শরীয়তে) এমন কিছু উদ্ভাবন করবে, যা তার অংশ নয়, তা প্রত্যাখাত।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৭১৮; সহীহ বুখারী, হাদীস ২৬৯৭