ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাব,
শরীয়তের বিধান হলো উত্তেজনা ব্যতীত বীর্য বের হলে গোসল
ফরজ হয় না। কেননা, গোসল ফরজ
হওয়ার জন্য শর্ত হল, বীর্য বের
হওয়ার সময় উত্তেজনা থাকতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَإِن كُنتُمْ جُنُبًا فَاطَّهَّرُواْ
তোমরা যদি জুনুবি হও তবে (গোসল
করে) সারা দেহ পবিত্র করে নাও। (সূরা মায়েদাহ ৬)
আর জুনুবি বলা হয়, ওই ব্যক্তিকে যার বীর্য সবেগে ও উত্তেজনার
সঙ্গে বের হয়েছে।
যেমন, আল্লাহ তাআলা বলেন,
فَلْيَنظُرِ الْإِنسَانُ مِمَّ خُلِقَ خُلِقَ مِن مَّاءٍ دَافِقٍ
অতএব, মানুষের দেখা উচিত কি বস্তু থেকে সে সৃজিত
হয়েছে, সে সৃজিত হয়েছে সবেগে স্খলিত
পানি থেকে। (সূরা আত্ব-তারিক্ব ৫, ৬)
রাসূলুল্লাহ ﷺ আলী রাযি.-কে
বলেছিলেন,
فَإِذَا فَضَخْتَ الْمَاءَ فَاغْتَسِلْ
যদি উত্তেজনা বশতঃ বীর্য নির্গত হয় তবে গোসল করবে। (আবুদাউদ
২০৬)
**প্রস্রাব ব্যতীত যৌনাঙ্গ থেকে যা কিছু বাহির
হয় তা তিন প্রকারঃ-
(১)মনি(বীর্য)
وَمَنِيُّ الرَّجُلِ خَاثِرٌ
أَبْيَضُ رَائِحَتُهُ كَرَائِحَةِ الطَّلْعِ فِيهِ لُزُوجَةٌ يَنْكَسِرُ الذَّكَرُ
عِنْدَ خُرُوجِهِ، وَمَنِيُّ الْمَرْأَةِ رَقِيقٌ أَصْفَر
পুরুষের মনি বা বীর্য হলঃ-যা সাদা গাঢ় একপ্রকার গন্ধমাখা
পিচ্ছিল পানি যা উত্তেজনার সাথে আটকিয়ে আটকিয়ে বের হয়,এবং বের হওয়ার সাথে সাথে পুঃলিঙ্গ নেতিয়ে
পড়ে,আর মহিলার বীর্য হল,পাতলা প্রায় হলুদ বর্ণের ।
(২)মযি
وَالْمَذْيُ رَقِيقٌ يَضْرِبُ إلَى
الْبَيَاضِ يَبْدُو خُرُوجُهُ عِنْدَ الْمُلَاعَبَةِ مَعَ أَهْلِهِ بِالشَّهْوَةِ
মযিঃ-
যা স্ত্রীকে কামুত্তেজনায় স্পর্শের পূর্বে বাহির হয় এবং যা দেখতে প্রায় সাদা রঙ
এর। এবং মহিলার ও বের হয় তবে তাকে "কাযয়ুন"বলা হয়।
(৩)ওদী
وَالْوَدْيُ بَوْلٌ غَلِيظٌ وَقِيلَ مَاءٌ
يَخْرُجُ بَعْدَ الِاغْتِسَالِ مِنْ الْجِمَاعِ وَبَعْدَ الْبَوْلِ. كَذَا فِي
التَّبْيِينِ.
ওদীঃ-
গাঢ় প্রস্রাব, কেউ কেউ বলেনঃঐ পানি যা সহবাসের পরে গোপনাঙ্গ
ধৌত করা পর বাহির হয় এবং যা প্রস্রাবের পর বাহির হয়।
উপরোক্ত তিনপ্রকারেরর মধ্যে শুধুমাত্র মনি বের হলে গোসল
ফরজ হবে। অন্যান্যগুলো বের হলে গোসল ফরজ হবেনা।বরং গোপনাঙ্গ ধৌত করে ওজু করে নিলেই
পবিত্রিতা অর্জিত হবে।এক্ষেত্রে গোসলের কোনো প্রয়োজন পড়বেনা।
যেমনঃ- ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছে.............
الْمَذْيُ يَنْقُضُ الْوُضُوءَ وَكَذَا
الْوَدْيُ وَالْمَنِيُّ إذَا خَرَجَ مِنْ غَيْرِ شَهْوَةٍ
মযি অজুকে ভেঙ্গে দেয় ঠিক তেমনিভাবে ওদী এবং ঐ মনি যা
কামুত্তেজনা বতীত বাহির হয় তাও ওজুকে ভেঙ্গে দেয়। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া -১/১০)
https://ifatwa.info/22451/
নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মেয়েদের সাদা
স্রাব নাপাক।
তরল বা স্রাব বের হয়ে যদি
পায়জামায় লাগে,তাহলে
যদি এক দিরহাম চেয়ে কম লাগে,তাহলে ঐ পায়জামা পরে নামাজ হবে,আর যদি এক দিরহাম বা তার চেয়ে বেশি লাগে,তাহলে সেই পায়জামা পড়ে নামাজ হবেনা।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
قَالَ
عَطَاءٌ: «تَوَضَّأْ مِنْ كُلِّ حَدَثٍ مِنَ الْبَوْلِ، وَالْخَلَاءِ،
وَالْفُسَاءِ، وَالضُّرَاطِ، وَمِنْ كُلِّ حَدَثٍ يَخْرُجُ مِنَ الْإِنْسَانِ
হযরত আত্বা রহঃ বলেন,
অযু কর প্রত্যেক হদসের কারণে। যেমন পেশাব,
পায়খানা,
বায়ু বের হওয়া শব্দসহ বা শব্দ ছাড়া। প্রতিটি
বস্তু যা মানুষের শরীর থেকে বের হয়। [মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক-১/১৩৯,
হাদীস নং-৫২৭]
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
১. উত্তেজনার সাথে বীর্যপাত হলেই গোসল করা
আবশ্যক। যদিও
স্বামী স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হয়নি। তাই যেকোনো ভাবে উত্তেজনার সাথে বীর্যপাত হলে অবশ্যই গোসল করে নামায পড়তে হবে। শুধু অজু করার দ্বারা
পবিত্রতা অর্জিত হবে না। তবে যদি কোন ধরণের উত্তেজনা ছাড়াই বীর্যপাত
হয় সেক্ষেত্রে বিধান হল, ওজু ভেঙ্গে যাবে, তবে গোসল ফরয হবে না।
২.প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি টিস্যু লজ্জাস্থানে রাখবেন। নামাযের
পূর্বে টিস্যু চেক করবেন, যদি
টিস্যু ভিজে যায়, তাহলে
বুঝতে হবে, স্রাব
নির্গত হয়েছে এবং অজু ভঙ্গ
হয়ে গেছে। অন্যথায় অজু ভঙ্গ হবে না।