আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
126 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (10 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারাকাতুহ।আমি পর্ণগ্রাফি ভিডিও দেখতাম।আসক্ত না থাকলেও মাঝেমধ্যেই দেখতাম।তো নিজেকে বিরত রাখার জন্য বলেছিলাম যে "যদি এরপরের বার পর্ণগ্রাফি ভিডিও দেখি তাহলে মৃত্যু হবে"। এটি চাওয়ার পরে আবার আমি পর্ণ দেখে ফেলেছি।এমন কয়েকবার হয়েছে।এখন একাধিকবার এমন করে মাফ চেয়ে আবার এমন করার কারণে কি আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন?আর আমি যে মৃত্যু চেয়েছি এই বিষয় দেখা নিয়ে এর কারণে যাতে মৃত্যু না হয় বা পর্ণ দেখার জন্য মৃত্যু কামনাটি যাতে কবুল না হয় সেটা কিভাবে চাইবো?

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

জবাব,

https://ifatwa.info/9968/  ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে, নিয়মিত নামায আদায় করতে হবে এবং আল্লাহর কাছে মুনাজাত করে, তাঁকে স্মরণ করে, তাঁর কিতাব তেলাওয়াত করে স্বাদ অনুভব করতে হবে।

আল্লাহ্ তাআলা বলেন,

اتْلُ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاء وَالْمُنكَرِ وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَصْنَعُونَ

আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামায কায়েম করুন। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর। (সূরা আনকাবুত ৪৫)

একবার সাহাবারা রাসূলুল্লাহ -কে বলল, অমুক সাহাবী বিভিন্ন ধরনের খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়েছে। রাসূলুল্লাহ জিজ্ঞেস করলেন, সে কি এখনো নামাজ পড়ে? সবাই বলল, হ্যাঁ, পড়ে। রাসূলুল্লাহ বললেন, সে যদি নামাজ পড়তে থাকে তাহলে নামাজ তাকে অবশ্যই একদিন খারাপ কাজ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। (মুসনাদে আহমাদ ২/৪৪৭)

গোপন গুনাহ থেকে বাঁচতে নিম্নে প্রদত্ত আমলগুলো করুন:

বেশি বেশি যিকির করতে হবে।

মাঝে মাঝেই দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতে সময় লাগাতে পারেন।

বেশির ভাগ সময় মসজিদে কাটানোর চেষ্টা করুন।

নিজের ভিতর থেকে হতাশা সম্পূর্ন ভাবে দূর করে দিন। আলোর পথে আসুন।

নিজ মহল্লার মসজিদের ইমাম সাহেব, মুয়াজ্জিন সাহেব থেকে সাজেশন নেওয়ার চেষ্টা করুন। তাদের সাথে ফ্রি হয়ে কিভাবে আমলের পথে চলা যায়, সেটা জানুন। তাদেত সাথেই বেশিরভাগ সময় কাটানোর চেষ্টা করুন।  

অসৎ সাথীদে সাথে ঘুরাফেরা বন্ধ করুন।

যেই জায়গা,যেই কাজ করলেই ঐ বিষয় গুলো মাথায় আসে,সেই জায়গায় যাওয়া সেই কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।

হক্কানী শায়েখদের কাছে যান, ট্তাদের দেওয়া সবক আদায় করতে পারেন।

মাঝে মাঝে কবর যিয়ারত করবেন।

কোনোভাবেই একাকী থাকা যাবেনা। কিভাবে কারো সাথে থাকা যায়, সেই ব্যবস্থা করুন। বিশেষ করে একাকী রাত কোনোভাবেই কাটানো যাবেনা।  আপনার রুমে অন্য কাহারো থাকা নিশ্চিত করুন। প্রয়োজন মেসে থাকতে পারেন। 

হাদিসে এসেছে নবী কোন পুরুষকে একাকী রাত কাটাতে নিষেধ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ ২/৯১)

ঘুমানোর সময় ইসলামী আদবগুলো মেনে চলতে হবে। যেমন ঘুমানোর দোয়াগুলো পড়া, ডান পার্শ্বে কাত হয়ে শোয়া, পেটের উপর ভর দিয়ে না-ঘুমানো; যেহেতু এ সম্পর্কে নবী -এর নিষেধ আছে।

কাছে মোবাইল বা কম্পিউটার  রাখা যাবেনা, সেটি অন্য ঘরে রেখে আসতে হবে।

যথাসম্ভব মাগরিবের পর থেকেই মোবাইল থেকে দূরে থাকতে হবে।

রাতে খাবার খাওয়ার কমপক্ষে  এক দেড় ঘন্টা পর বিছানায় যাবেন।

অনৈসলামিক কোনো কিছুই মোবাইল, কম্পিউটারে রাখা যাবেনা।

নেটে এজাতীয় সাইটে কোনোভাবেই যাওয়া যাবেনা।  

★★হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، - يَعْنِي ابْنَ عُلَيَّةَ - عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ يَتَمَنَّيَنَّ أَحَدُكُمُ الْمَوْتَ لِضُرٍّ نَزَلَ بِهِ فَإِنْ كَانَ لاَ بُدَّ مُتَمَنِّيًا فَلْيَقُلِ اللَّهُمَّ أَحْيِنِي مَا كَانَتِ الْحَيَاةُ خَيْرًا لِي وَتَوَفَّنِي إِذَا كَانَتِ الْوَفَاةُ خَيْرًا لِي " .

যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ..... আনাস (রাযিঃ) এর সানাদে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ যেন বিপদে পড়ার কারণে মৃত্যু আকাঙ্খা না করে। তবে মৃত্যু তার কামনা হয় তাহলে সে যেন বলে- "হে আল্লাহ! আপনি আমাকে জীবিত রাখুন যতক্ষণ পর্যন্ত আমার হায়াত আমার জন্য কল্যাণকর হয়। আর যদি আমার জন্য মৃত্যু কল্যাণকর হয়, তবে আমাকে মৃত্যু দিয়ে দিন।" (মুসলিম ৬৭০৭.ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৫৭০, ইসলামিক সেন্টার ৬৬২৪)

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، قَالَ هَذَا مَا حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ أَحَادِيثَ مِنْهَا وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ يَتَمَنَّى أَحَدُكُمُ الْمَوْتَ وَلاَ يَدْعُ بِهِ مِنْ قَبْلِ أَنْ يَأْتِيَهُ إِنَّهُ إِذَا مَاتَ أَحَدُكُمُ انْقَطَعَ عَمَلُهُ وَإِنَّهُ لاَ يَزِيدُ الْمُؤْمِنَ عُمْرُهُ إِلاَّ خَيْرًا "

মুহাম্মাদ ইবনু রাফি’ (রহঃ) ..... হাম্মাম ইবনু মুনব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) এর সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে আমাদের নিকট যা বর্ণনা করেছেন, অতঃপর তিনি কয়েকটি হাদীস বর্ণনা করলেন। তার অন্যতম একটি এই যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন মৃত্যু কামনা না করে এবং মৃত্যু আসার আগে যেন মৃত্যুর জন্য দুআ না করে। কেননা তোমাদের মধ্যে কেউ মারা গেলে তার আমাল বন্ধ হয়ে যায়। আর মুমিন লোকের বয়স তার কল্যাণই বাড়িয়ে থাকে। (মুসলিম ৬৭১২.ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৫৭৫, ইসলামিক সেন্টার ৬৬২৯)

★★ইসলামী শরী মতে মৃত্যু কামনা করা বৈধ নয়। মৃত্যু হলে গুনাহ থেকে বেঁচে যেতাম, এমন চিন্তা থেকে মৃত্যু কামনা অবৈধ নয়। (মা’আরেফুল কোরআন)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে পর্নোগ্রাফি থেকে বাঁচতে আপনি উপরে উল্লেখিত পরামর্শ গুলো মেনে চলার চেষ্টা করবেনসাথে সাথে আপনি যদি অবিবাহিত হয়ে থাকেন দ্রুত বিয়ে করবেন ইনশাআল্লাহ। আর বিবাহিত হয়ে থাকলে স্ত্রীর সাথে সময় কাটাবেন ও তার সাথে রাত্রি যাপন করবেন। নিয়মিত স্ত্রী সহবাস করতে পারেন স্ত্রী ছাড়া একাকী রাত কাটাবেন না। একাকিত্ব পরিহার করে চলবেন। প্রয়োজনে স্মার্ট ফোন ব্যবহার ছেড়ে দিয়ে সাধারণ সেট ব্যবহার করবেন।

নিজের মৃত্যু কামনা করা জায়েয নেই।  তবে উপরোক্ত হাদীসে বর্ণিত পদ্ধতিতে দোয়া করা যাবে।

অর্থাৎ اللَّهُمَّ أَحْيِنِي مَا كَانَتِ الْحَيَاةُ خَيْرًا لِي وَتَوَفَّنِي إِذَا كَانَتِ الْوَفَاةُ خَيْرًا لِي  অর্থ: "হে আল্লাহ! আপনি আমাকে জীবিত রাখুন যতক্ষণ পর্যন্ত আমার হায়াত আমার জন্য কল্যাণকর হয়। আর যদি আমার জন্য মৃত্যু কল্যাণকর হয়, তবে আমাকে মৃত্যু দিয়ে দিন।"

সুতরাং আপনি আপনার পূর্বে কৃত কথা থেকে খালেস অন্তরে ইস্তেগফার করলে আল্লাহ তায়ালা আপনাকে ক্ষমা করবেন ইনশাআল্লাহ। বিধায় বিচলিত হওয়ার কোন কারণ নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...