ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাব,
https://ifatwa.info/9968/
ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,
নিয়মিত নামায আদায় করতে হবে এবং আল্লাহর
কাছে মুনাজাত করে, তাঁকে
স্মরণ করে, তাঁর
কিতাব তেলাওয়াত করে স্বাদ অনুভব করতে হবে।
আল্লাহ্ তাআলা বলেন,
اتْلُ مَا
أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى
عَنِ الْفَحْشَاء وَالْمُنكَرِ وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ وَاللَّهُ يَعْلَمُ
مَا تَصْنَعُونَ
আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট
কিতাব পাঠ করুন এবং নামায কায়েম করুন। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত
রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর। (সূরা আনকাবুত ৪৫)
একবার সাহাবারা রাসূলুল্লাহ
ﷺ-কে বলল,
অমুক সাহাবী বিভিন্ন ধরনের খারাপ কাজে
জড়িয়ে পড়েছে। রাসূলুল্লাহ ﷺ জিজ্ঞেস করলেন, সে
কি এখনো নামাজ পড়ে? সবাই
বলল, হ্যাঁ,
পড়ে। রাসূলুল্লাহ ﷺ
বললেন, সে যদি নামাজ পড়তে থাকে তাহলে নামাজ তাকে অবশ্যই একদিন
খারাপ কাজ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। (মুসনাদে আহমাদ ২/৪৪৭)
গোপন গুনাহ থেকে বাঁচতে নিম্নে প্রদত্ত
আমলগুলো করুন:
★বেশি বেশি যিকির করতে হবে।
★মাঝে মাঝেই দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতে সময় লাগাতে পারেন।
★বেশির ভাগ সময় মসজিদে কাটানোর চেষ্টা করুন।
★নিজের ভিতর থেকে হতাশা সম্পূর্ন ভাবে দূর করে দিন। আলোর
পথে আসুন।
★নিজ মহল্লার মসজিদের ইমাম সাহেব,
মুয়াজ্জিন সাহেব থেকে সাজেশন নেওয়ার চেষ্টা
করুন। তাদের
সাথে ফ্রি হয়ে কিভাবে আমলের পথে চলা যায়, সেটা জানুন। তাদেত সাথেই বেশিরভাগ সময় কাটানোর চেষ্টা করুন।
★অসৎ সাথীদের সাথে ঘুরাফেরা বন্ধ করুন।
★যেই জায়গা,যেই কাজ করলেই ঐ বিষয় গুলো মাথায় আসে,সেই জায়গায় যাওয়া সেই কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
★হক্কানী শায়েখদের কাছে যান,
ট্তাদের দেওয়া সবক আদায় করতে
পারেন।
★মাঝে মাঝে কবর যিয়ারত করবেন।
★কোনোভাবেই একাকী থাকা যাবেনা।
কিভাবে কারো সাথে থাকা যায়,
সেই ব্যবস্থা করুন। বিশেষ করে একাকী রাত কোনোভাবেই
কাটানো যাবেনা। আপনার রুমে অন্য কাহারো থাকা নিশ্চিত করুন। প্রয়োজন মেসে থাকতে পারেন।
হাদিসে এসেছে নবী ﷺ
কোন পুরুষকে একাকী রাত কাটাতে নিষেধ করেছেন।
(মুসনাদে আহমাদ ২/৯১)
ঘুমানোর সময় ইসলামী আদবগুলো
মেনে চলতে হবে। যেমন ঘুমানোর দোয়াগুলো পড়া, ডান পার্শ্বে কাত হয়ে শোয়া,
পেটের উপর ভর দিয়ে না-ঘুমানো;
যেহেতু এ সম্পর্কে নবী ﷺ-এর নিষেধ
আছে।
★কাছে মোবাইল বা কম্পিউটার রাখা যাবেনা, সেটি অন্য ঘরে রেখে আসতে হবে।
যথাসম্ভব মাগরিবের পর থেকেই
মোবাইল থেকে দূরে থাকতে হবে।
★রাতে খাবার খাওয়ার কমপক্ষে এক দেড় ঘন্টা পর বিছানায় যাবেন।
★অনৈসলামিক কোনো কিছুই মোবাইল,
কম্পিউটারে রাখা যাবেনা।
★নেটে এজাতীয় সাইটে কোনোভাবেই যাওয়া যাবেনা।
★★হাদীস
শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا
زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، - يَعْنِي ابْنَ عُلَيَّةَ - عَنْ
عَبْدِ الْعَزِيزِ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" لاَ يَتَمَنَّيَنَّ أَحَدُكُمُ الْمَوْتَ لِضُرٍّ نَزَلَ بِهِ فَإِنْ كَانَ
لاَ بُدَّ مُتَمَنِّيًا فَلْيَقُلِ اللَّهُمَّ أَحْيِنِي مَا كَانَتِ الْحَيَاةُ
خَيْرًا لِي وَتَوَفَّنِي إِذَا كَانَتِ الْوَفَاةُ خَيْرًا لِي " .
যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ)
..... আনাস (রাযিঃ) এর সানাদে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, রসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ যেন বিপদে পড়ার কারণে মৃত্যু
আকাঙ্খা না করে। তবে মৃত্যু তার কামনা হয় তাহলে সে যেন বলে- "হে আল্লাহ! আপনি
আমাকে জীবিত রাখুন যতক্ষণ পর্যন্ত আমার হায়াত আমার জন্য কল্যাণকর হয়। আর যদি আমার
জন্য মৃত্যু কল্যাণকর হয়, তবে
আমাকে মৃত্যু দিয়ে দিন।" (মুসলিম ৬৭০৭.ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৫৭০,
ইসলামিক সেন্টার ৬৬২৪)
حَدَّثَنَا
مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ،
عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، قَالَ هَذَا مَا حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ
رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ أَحَادِيثَ مِنْهَا وَقَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ يَتَمَنَّى أَحَدُكُمُ الْمَوْتَ وَلاَ
يَدْعُ بِهِ مِنْ قَبْلِ أَنْ يَأْتِيَهُ إِنَّهُ إِذَا مَاتَ أَحَدُكُمُ
انْقَطَعَ عَمَلُهُ وَإِنَّهُ لاَ يَزِيدُ الْمُؤْمِنَ عُمْرُهُ إِلاَّ خَيْرًا "
মুহাম্মাদ ইবনু রাফি’ (রহঃ)
..... হাম্মাম ইবনু মুনব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) এর সূত্রে
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে আমাদের নিকট যা বর্ণনা করেছেন,
অতঃপর তিনি কয়েকটি হাদীস বর্ণনা করলেন।
তার অন্যতম একটি এই যে, রসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন মৃত্যু কামনা না করে এবং মৃত্যু
আসার আগে যেন মৃত্যুর জন্য দুআ না করে। কেননা তোমাদের মধ্যে কেউ মারা গেলে তার আমাল
বন্ধ হয়ে যায়। আর মুমিন লোকের বয়স তার কল্যাণই বাড়িয়ে থাকে। (মুসলিম ৬৭১২.ইসলামিক
ফাউন্ডেশন ৬৫৭৫, ইসলামিক
সেন্টার ৬৬২৯)
★★ইসলামী শরীয়ত মতে
মৃত্যু কামনা করা বৈধ নয়। মৃত্যু হলে গুনাহ থেকে বেঁচে
যেতাম, এমন
চিন্তা থেকে মৃত্যু কামনা অবৈধ নয়। (মা’আরেফুল কোরআন)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে পর্নোগ্রাফি থেকে বাঁচতে আপনি উপরে উল্লেখিত পরামর্শ গুলো মেনে চলার চেষ্টা
করবেন। সাথে সাথে আপনি যদি অবিবাহিত হয়ে থাকেন দ্রুত বিয়ে করবেন
ইনশাআল্লাহ। আর বিবাহিত হয়ে থাকলে স্ত্রীর সাথে সময়
কাটাবেন ও তার সাথে রাত্রি যাপন করবেন। নিয়মিত স্ত্রী সহবাস করতে
পারেন। স্ত্রী ছাড়া একাকী রাত কাটাবেন না।
একাকিত্ব পরিহার করে চলবেন। প্রয়োজনে স্মার্ট ফোন ব্যবহার
ছেড়ে দিয়ে সাধারণ সেট ব্যবহার করবেন।
নিজের মৃত্যু কামনা করা জায়েয নেই। তবে উপরোক্ত হাদীসে বর্ণিত পদ্ধতিতে
দোয়া করা যাবে।
অর্থাৎ اللَّهُمَّ
أَحْيِنِي مَا كَانَتِ الْحَيَاةُ خَيْرًا لِي وَتَوَفَّنِي إِذَا كَانَتِ
الْوَفَاةُ خَيْرًا لِي অর্থ: "হে আল্লাহ! আপনি আমাকে জীবিত রাখুন যতক্ষণ পর্যন্ত আমার হায়াত আমার জন্য
কল্যাণকর হয়। আর যদি আমার জন্য মৃত্যু কল্যাণকর হয়,
তবে আমাকে মৃত্যু দিয়ে দিন।"
সুতরাং আপনি আপনার পূর্বে কৃত কথা থেকে
খালেস অন্তরে ইস্তেগফার করলে আল্লাহ তায়ালা আপনাকে ক্ষমা করবেন ইনশাআল্লাহ। বিধায় বিচলিত
হওয়ার কোন কারণ নেই।