ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাব,
১. বিবাহের নিয়তে প্রস্তাব দিয়ে পাত্রের জন্য পাত্রীকে দেখার অনুমতি
রয়েছে। এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন কোন নারীকে বিবাহের
প্রস্তাব দিবে তখন সম্ভব হলে তার এমন কিছু যেন দেখে নেয় যা তাকে বিবাহে উৎসাহিত করে।
আবু দাউদ: ২০৮২।
তবে ইসলামে কোনো নারীকে বিবাহের প্রস্তাব দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ
কোনো প্রথা কিংবা রীতিনীতি নেই। এঙ্গেজমেন্টের নামে আমাদের সমাজে প্রচলিত আংটি বদলের
যেই রেওয়াজ আছে তা সম্পূর্ণ শরীয়তবিরোধী। মূলত এঙ্গেজমেন্টের সাথে আংটি বদলের কোনো
সম্পর্ক নেই।
অনেকে মনে করেন, বিবাহের পূর্বে পাত্র-পাত্রীর মাঝে আংটি
বদল করলে উভয়ের মধ্যে ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। এটি একটি সামাজিক কুসংস্কার ও অজ্ঞতা
বৈ কিছুই নয়। ইসলামী শরীয়তে এর কোনো ভিত্তি নেই।
বিবাহপূর্ব পাত্র কর্তৃক পাত্রীকে আংটি পরিয়ে দেওয়ার এই প্রথাটি
মূলত ইহুদি-খৃষ্টানদের থেকে এসেছে। এই প্রথার সাথে মুসলমানদের কোনো সম্পর্ক নেই। আর
নবীজি সা. বলেছেন,
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ "
আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের
সাদৃশ্য গ্রহণ করবে, সে তাদেরই অন্তরভুক্ত (হয়ে যাবে)।
(আবূ দাঊদ ৪০৩১,; আল জামি‘উস্ সগীর ১১০৯৪,
সহীহুল জামি‘ ৬১৪৯, ইরওয়া ২৬৯১)
শাইখ বিন বায রহ. বলেন, এই আংটি প্রথার কোনো ভিত্তি ইসলামী শরীয়তে
নেই। এটি অমুসলিমদের প্রথার অনুকরণ ছাড়া কিছু নয়। কাজেই এটি পরিত্যাগ করা জরুরি। বর
ও কনের সম্মতিই যথেষ্ট বিয়ে শাদীর জন্য। এখানে আংটি পরানোর কোনো প্রয়োজন নেই। আকদের
মাধ্যমেই বিয়ে সম্পন্ন হবে,
এর আগে যেসব প্রথা সমাজে চালু আছে তা পরিহার করা উচিত। প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলামী
কালচার অনুসরণ করা উচিত এবং অনৈসলামিক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকা উচিত [ফাতাওয়াশ শায়খ
বিন বায]।
উল্লেখ্য যে, বিবাহের জন্য পাত্রী দেখতে গিয়ে এই
সময় পাত্রীর মন বড় করার জন্য এবং বিবাহের আগ্রহ প্রকাশার্থে পাত্রীকে কিছু টাকা বা
কোনও উপহার সামগ্রী দেওয়া দূষণীয় নয়। এটা আমাদের সামাজিক রীতি ও দেশাচার। আর ইসলামী
শরীয়তে দেশাচার ও সামাজিক প্রথা, ও আঞ্চলিক রীতিনীতিকে হারাম সাব্যস্ত করে নি যতক্ষণ না তাতে
শরিয়া বিরোধী কিছু থাকে।
২. https://www.ifatwa.info/78707/
লিংকে দেওয়া আমলের পাশাপাশি
একটি দোয়ার ওপর আমল করা যেতে পারে এতে আল্লাহ তায়ালা বরকত দান করবেন। দোয়াটি হলো-
اللهم اكْفِنِي بِحَلَالِكَ عن حَرَامِكَ ،
وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাকফিনি বি হালালিকা আন হারামিকা, ওয়া আগনিনি
বিফাদলিকা আম্মান সিওয়াক।
অর্থ : হে আল্লাহ! হারামের পরিবর্তে তোমার হালাল রুজি আমার জন্য
যথেষ্ট করো। আর তোমাকে ছাড়া আমাকে কারো মুখাপেক্ষী কোরো না এবং স্বীয় অনুগ্রহ দ্বারা
আমাকে স্বচ্ছলতা দান কর। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৬৩; মুসনাদ আহমদ, হাদিস : ১৩২১)
৩. প্রশান্তি লাভ করতে বেশী বেশী ইস্তেগফারের পাশাপাশি নিম্নোক্ত আমলগুলো করতে
পারেন।
রাসুল (সা.) চিন্তিত হয়ে
পড়লে একটি বিশেষ দোয়া পড়তেন। দোয়াটি হলো—
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الهَمِّ
وَالحَزَنِ، وَالعَجزِ وَالكَسَلِ، وَالبُخلِ وَالجُبنِ، وَضَلَعِ الدَّينِ
وَقَهْرِ الرِّجَالِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হুযনি, ওয়া আউজু বিকা
মিনাল আজযি ওয়াল-কাসালি,
ওয়া আউজু বিকা মিনাল বুখলি ওয়াল জুবনি, ওয়া আউজু বিকা মিন গালাবাতিদ দাইনি ওয়া
কাহরির রিজাল।
অর্থ: হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা
থেকে, কৃপণতা
ও ভীরুতা থেকে, ঋণের
ভার ও মানুষদের দমন-পীড়ন থেকে আপনার আশ্রয় নিচ্ছি। হযরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.)
চিন্তাগ্রস্ত অবস্থায় এই দোয়া পড়তেন। (বুখারি, হাদিস: ২৮৯৩)
আল্লাহ জিকির ও দোয়া করলে হতাশা দূর হওয়ার পাশাপাশি মনে অনাবিল
প্রশান্তি অনুভূত হয়। আল কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-
الَّذِينَ آمَنُواْ وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم
بِذِكْرِ اللّهِ أَلاَ بِذِكْرِ اللّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ
‘যারা
বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর জিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর জিকির
দ্বারা অন্তরে স্থিরতা ও শান্তি আসে।’ (সুরা রাদ: আয়াত ২৮)
৪. জ্বী আপনার জন্য বৈধ ভাবে কাজ করার কারণে বেতন গ্রহণ করা জায়েয আছে। তবে উক্ত
ব্যক্তিকে স্বীয় কৃতকর্মের জন্য শাস্তি ভোগ করতে হবে। তবে আপনি চাইলে এর চেয়েও উত্তম
কর্মসংস্থান সন্ধান করতে পারেন এবং সেটিই আপনার জন্য অধিক শ্রেয় হবে ইনশাআল্লাহ।